এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জল দাও

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৪৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • ০৮।০১. ২০২০ কর্ণাটকের মনিপাল থেকে বেরিয়ে‌ছিলাম ৬৪ রাতের একাকী ভ্রমণে। সে ভ্রমণের শুরু হয়েছিল ঝাঁসি থেকে। ২৭শে ফেব্রুয়ারী মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর থেকে গেছি সাতারা। ওখানে কৃষ্ণা নদীর তীরে হাইওয়ে থেকে দু কিমি ভেতরে অরণ‍্যময় সুন্দর পরিবেশে তিন  রাত ছিলুম এক আশ্রমে। সুন্দর সে অভিজ্ঞতা। সেসব কখনো আসতে‌ও পারে “একা বেড়ানোর আনন্দে” - সিরিজে। এখানে অন‍্য প্রসঙ্গ।


     
    ২৯.২ সেই আশ্রম থেকে ১৬ কিমি দুরে  চলেছি এই পাহাড়ের মাথায় এক হনুমান মন্দিরে - এক বেলার ডে আউট। আশ্রম থেকে ২ কিমি জঙ্গলে‌র পায়ে চলা পথে হেঁটে উঠলাম হাই‌ওয়েতে। সেখান থেকে সাতারা কোরেগাঁ‌ও বাসে গেলাম ৮ কিমি। বাস থেকে নেমে বাইকে হিচহাইক করে গেলাম আরো ৩ কিমি। অতঃপর সমূদ্রতল থেকে তিন হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের মাথায় গেলাম ৩ কিমি পদব্রজে। 


    হাই‌ওয়ে থেকে দুরে দেখা যায় সেই পাহাড়

    বাইক যেখানে ছেড়ে দিল সেখান থেকে পিচরাস্তায় দেড় কিমি হেঁটে গেলে শুরু হবে পাহাড়ে ওঠার পথ।


    পাহাড়ের ওপর থেকে নীচের দৃশ‍্য মনোরম


    কিন্তু পাহাড়ে ওঠার পথে যা দেখলাম মন ভরে গেল। সাতারা বনদপ্তর মাঝে মাঝে গাছ থেকে ঝুলিয়ে রেখেছে এমন মবিলের কাটা ডাব্বা। সাথে লেখা মারাঠি ভাষায় কাব‍্যিক আবেদন - 
    এক‌ই বাতাস 
    (যাতে আমরা সবাই শ্বাস নি‌ই)
    পারলে এতে একটু জল রাখুন 
    (পাখিদের জন‍্য)


     চলার পথে এমন অনেকগুলো দেখেছিলাম। কোনোটায় হিন্দি‌তে লেখা:
    চিড়িয়া করে এক হী পুকার
    মুঝে বাঁচাও, না করো
    মেরা সংহার



    কোথাও শুধু লেখা হনুমান‌জীর বন্দনা
    মহারুদ্র হনুমান‌কী জয়

    এসবের উদ্দ‍্যেশ‍্য একটা‌ই - সাতারা রুক্ষ এলাকা - রোজ বনকর্মীদের পক্ষে  উঁচু পাহাড়ে উঠে সব ডাব্বায় জল।দিয়ে আসা সম্ভব নয়, তাই এই সব বাণী, আবেদন দেখে যদি ভক্ত যাত্রী‌রা ডাব্বায় জল দেয় তো ভালো হয়। আমি প্রতিটা‌র কাছে গিয়ে দেখেছি - সবেতে কিছু না কিছু জল আছে। মনে হয় মন্দিরে যাওয়া আসার পথে অনেকেই তাতে জল দেয়। দেখে ভালো লেগেছিল বেশ‌।
    এই নাভিশ্বাস ওঠা গরমে কলকাতা‌য় আমাদের ফ্ল‍্যাটে‌ বারান্দা‌র কোনেও একটা বাটিতে জল রেখেছি পাখিদের জন‍্য। 


    আমাদের আটতলার ব‍্যালকনির কোনে কাপড় শোকানোর তারে ফিট করে দিয়েছি বাটিটা। চড়াই এখানে দেখাই যায় না। তবে আছে অনেক পারাবত‍। তারা‌ই আসে জলপান করতে। কয়েকটি ছবির ফ্রেমে‌ও উড়ছে।

    ওদের ক'জন বেলা ২ টো নাগাদ ডাইনিং রুমের জানলার বাইরে সিলে এসে বসে গুঁকর কোঁ - গুঁকর কোঁ করে ডাকে।  বক্তব্য - কী হোলো ভাত টাত যা দেবার দাও - লাঞ্চের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তো? বৌ রোজ সিলে ভাত দিয়ে দিয়ে ওদের এমন অব‍্যেস করেছে। 

    কথায় বলে - ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না। তবে এখানে কাকাবাবুদের বিশেষ দেখা যায় না। তারা থাকেন কালীঘাটে।

    তবে এখানে আছে অনেক পায়রা। গৃহস্থ যখন খর দুপুরে এসি চালায় - ওরা আউটডোর ইউনিটের তলায় ছায়ায় এসে বসে। এভাবেই চলে Mutual Coexistence. 

     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • বিপ্লব রহমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৫০531254
  • "ওদের ক'জন বেলা ২ টো নাগাদ ডাইনিং রুমের জানলার বাইরে সিলে এসে বসে গুঁকর কোঁ - গুঁকর কোঁ করে ডাকে।  বক্তব্য - কী হোলো ভাত টাত যা দেবার দাও - লাঞ্চের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তো?"
     
    আরে দারুণ! এবারের পর্বে বর্ণনা কম মনে হলো, ছবিগুলো যথারীতি সেরাম। 
  • সমরেশ মুখার্জী | ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২৮531259
  • One picture is equivalent to thousand words এমন একটা প্রবচন শুনেছি - সম্ভবত চাইনিজ। 
     
    জল দাও লেখা‌য় লেখার বিশেষ কিছু ছিল না - ওটা একটা আবেদন। ছবিগুলো‌ই নানা কথা বলেছে। 
     
    তাই প্রসঙ্গ‌টি ক'জনকে ছুঁয়ে গেছে। তাঁরা মন খুলে মন্তব্য করেছেন। ভবিষ্যতে যারা লেখাটি পড়বে - তাদের ঐ মন্তব্য‌গুলি‌ও ছুঁয়ে যাবে। আজকের তোলা ছবিতে পুটপুট করে তাকানো শ্বেতাদি তো একদম মাখা সন্দেশ। কী মিষ্টি কি মিষ্টি। চতুর্দিকে নানা শব্দদূষণে‌র মাঝে শ্বেতাদি‌রা শান্তির চামর আমার বোলায় মনে। heart
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন