শুনেই উথাল পাথাল মন। আসছে..সে আসছে। তার পৌঁছবার পদধ্বনি ওই শোনা গেল বুঝি। দিনের গতির সাথে, আলোর বাড়া কমা। মধুমালতীর পাতায় পাতায় ছায়ামাখা মেঘের ইশারা। চামেলীর সরু সরু ডালে, পাতার ঝিলিমিলি ছায়ায় প্রতীক্ষার প্রহর কি শেষ হবে তাহলে.. দক্ষিণের বারান্দার পুবের কোণে থামের আড়ালে, শ্বেত অপরাজিতা আর ছোট টবে আমগাছের কচি পাতায় ছায়াদের লুকোচুরি।
আজ খুব ভোরেই চলে এসেছে পটা। ওহ্, চিনতে পারোনি বুঝি !.. ও হলো কাঠবেড়ালি। নাম দিয়েছি পটা। বাড়ির পাশেই ওই যে রাধাচূড়া গাছটা আছেনা..ওর কোটরেই পটার ছোট্ট কেঠো ঘর। খুব হ্যাঁংলা। তাই, পটা পেটুক। যা পায় তাই খায়। মধুুমালতীর কুঁড়ি, পাঁচিলের গায়ে গজিয়ে ওঠা ঝুপসি গাছেদের ছোট ছোট হলুদ ফুল। এছাড়া, বিস্কুট চানাচুর বাদাম রুটি ভাত , এমনকি ডাঁঁটার ছিবড়েও।
বেলা বাড়তেই ছায়ামাখা উঠোনে এলো, ছোট্ট দোয়েল টুকটুক। ইতিউতি ঘুরে বেড়ানোর পর, জল বিস্কুট খাচ্ছিল ও। চড়াইগুলো দিল ওকে তাড়িয়ে। বেচারি শিঁ শিঁ ডেকে উড়ে গিয়ে বসলো জাম গাছের ডালে। ছোট্ট টুকটুকের ছোট্ট বন্ধু গাছ। টবের মাটিতেই একটু একটু করে বেড়ে উঠছে ও।
জামের চিকন মোলায়েম পাতায় মেঘলা আকাশের ফিসফিস। ডালপালা নাড়িয়ে কথা বলছে কতো !..
বৃষ্টি আসার দিনক্ষণ জেনে নিচ্ছে হয়তো।
ক'দিন ধরেই উঠোনে এক মস্ত ডেঁয়ো । একা একাই ঘোরে। একটা পুঁচকি সুড়সুড়ির সাথে শুঁড় উঁচিয়ে কি যেন সব বললো। ধমকালো কি ?!..
অনেকদিন পর আজ টুনি এলো। টুনটুনি। বেশী করে জল খেয়ে, ও উড়ে গিয়ে বসলো চামেলির ডালে। "বৃষ্টি কদ্দূর..চামেলি দিদি" ...
আকাশের দিকে হাত তুলে ঝিরিঝিরি পাতা নাড়িয়ে চামেলি বলে, " আসছে, সে আসছে.."
মন আটকে থাকা শান্তির এই দুনিয়া ছেড়ে, উঠোন পেরিয়ে ঘরে ঢুকি। এ বি পি আনন্দের স্ক্রল বারে লেখা ফুটে ওঠে.. আজ আকাশ আংশিক মেঘলা। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।