এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • গরল

    Sayantani Putatunda লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ | ২৮৮১ বার পঠিত
  • ১.
    রান্নাঘরে বাসনপত্র পড়ার প্রবল শব্দ!
    নীলিমা শুনেও না শোনার ভান করেন। এমন কত শব্দই তো সারাদিন ধরে অবিশ্রান্ত কানের কাছে চলছে। কখনও ঠুকঠুক। কখনও কুটকুট—কুটুর কুটুর। কখনও তীক্ষ্ণ দাঁতে পুরনো জুতো কাটার শব্দ। কখনও বা একটা লম্বা লেজ সর্‌সর্‌ করে চলে যায় এদিক থেকে ওদিকে। তাকে সবসময় দেখা যায় না বটে। কিন্তু বাসনের ঘটাং ঘটাং-এ, খুট খুট, কুট-কুট-এ সে রীতিমত সদর্পে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করে চলেছে।
    নীলিমা মাঝেমধ্যে মাঝরাতে বাথরুমে যাওয়ার পথে কখনও কখনও তাকে একঝলক দেখেছেন । যদিও বয়েসের সাথে সাথে দৃষ্টি শক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে। সবকিছু ঠিকমত দেখতে পান না। কিন্তু ব্যাটাকে দেখতে তাঁর ভুল হয়নি। কান দুটো খাড়া খাড়া। জুলজুলে দুটো চোখ। ছুঁচলো মুখের পাশে খোঁচা খোঁচা গোঁফ। পায়ের শব্দ পেলেই সুড়ুৎ করে পালিয়ে যায়। তখন তার মুখের বদলে সরু লেজটাই দেখা যায় বেশি।
    --‘কে?...কে?’
    ভিতরের ঘর থেকে তাঁর রুগ্ন স্বামী চেঁচিয়ে ওঠেন—‘কে এলো? কে গো?’
    এই হয়েছে মুস্কিল! দেহে শক্তি নেই, পক্ষাঘাতে শরীরের আধখানা বিকল। তবু ভাস্করের কান দুটো সবসময়ই খাড়া থাকে। কোনরকম আওয়াজ পেলেই তাঁর বদ্ধমূল ধারণা হয় যে, সেই মানুষটিই বোধহয় দরজায় কড়া নাড়ছে। যেমন এক গভীর রাতে এসে হামলে পড়েছিল সে দরজার উপরে...ত্রস্ত হাতে করাঘাত করতে করতে বলেছিল...

    --‘মা...মা...দরজা খোলো...! দরজা খোলো মা...’
    আতঙ্কে তার মুখটাও কেমন যেন ইঁদুরের মত দেখাচ্ছিল। মুখ আতঙ্কে সরু। চোখে সন্দিগ্ধ ত্রাস। নীলিমা দরজা খুলে দিতেই তাড়াতাড়ি ঢুকে পড়ে দরজা এঁটে দিয়েছিল।
    --‘ও কি খোকা! কি করছিস্‌?’
    খোকা ভয়ার্ত কন্ঠে বলে—‘পুলিশ...পুলিশ আমার পিছনে...’।
    --‘পুলিশ! পুলিশ কেন বাবা!’ নীলিমা আঁৎকে ওঠেন—‘কি করেছিস তুই? অ্যাঁ...!’
    --‘আমি...আমি...’। খোকা ডুকরে কেঁদে ওঠে—‘আমি জানি না মা...জানি না কেমন করে হয়ে গেল...মেয়েটা রাতে শুনশান রাস্তায় একা একা ফিরছিল...আমি ওকে...কেন জানি না...জানি না...!’
    বাকিটা বুঝতে অসুবিধে হয়নি। খোকা একটা মেয়েকে...! কিন্তু কেন? কি জন্য! খোকা তো এমন ছিল না! চিরকালই সে ভদ্র-সভ্য ছেলে বলে সমাজে পরিচিত! তবে কেন এমন হল! রাগে, লজ্জায়, আশঙ্কায় পাথর হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মুখে কিছু বলতে পারেন নি। কিন্তু তাঁর দৃষ্টি বারবার জিজ্ঞাসা করছিল—মেয়েটা?...মেয়েটা কি...!
    খোকা আর কিছু বলেনি। বলতে পারেনি। তার কান্নাজড়ানো কন্ঠস্বর চুঁইয়ে পড়ছিল শুধু আতঙ্ক—‘মেয়েটা মরে গেছে মা...আমি ওকে মারতে চাইনি... আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম... ও খুব চেঁচাচ্ছিল...তাই ভয় পেয়ে গলা টিপে ধরেছিলাম...আমার জেল হবে...ওরা আমাকে ফাঁসি দেবে...’।
    নীলিমার পায়ের তলার পৃথিবী থর্‌থর্‌ করে কেঁপে উঠেছিল। যদিও সে কম্পনের বিন্দুমাত্রও প্রকাশ পায়নি তার চোখে মুখে। বরং কেমন যেন পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়েছিলেন। দূর্গা প্রতিমার আনকোরা মুখের মত ভাবলেশহীন হয়ে উঠেছিল তার মুখ। সে মুখে তখনও কোনও রঙ লাগেনি, আঁকা হয়নি চোখ। দৃষ্টিতে জমাট বোবা অন্ধকার!
    ভাস্কর সেদিনও ভিতরের ঘর থেকে চেঁচিয়ে বলেছিলেন—‘কি হয়েছে? খোকা কি বলছে?’
    --‘কিছু না’। নীলিমা তাঁর কথাকে অগ্রাহ্য করে আস্তে আস্তে বললেন—‘পুলিশ তোর বাড়ির ঠিকানা জানে?’
    --‘জানি না...কিচ্ছু জানি না মা...’। খোকা বিড়বিড় করে বলে—‘তবে ওরা ঠিক আমাকে খুঁজে বের করবে...তারপর ফাঁসি... আমি কি করবো...কোথায় লুকোবো... কোথায় যাবো মা...’।
    নীলিমার চোখ জলে ভরে আসে। খোকার এই অসহায় অবস্থা তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। যেমন সহ্য করতে পারছিলেন না তার কান্না। ছোটবেলায় খোকা কাঁদলেই সব কাজ ফেলে ছুটে আসতেন। কোলে নিয়ে, আদর করে সব দুঃখ, সব ব্যথা ভুলিয়ে দিতেন।
    এখন সে বড় হয়েছে। আর তাকে ভোলানো যায় না। নীলিমা মনে মনে কি যেন ভাবছেন। হয়তো এ সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছেন। আজ হোক্‌, কাল হোক্‌ পুলিশ এ বাড়িতে এসে পৌঁছবেই। খোকার হাতে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাবে। ভাবতে ভাবতেই তাঁর মনে অন্য একটা চিন্তাও উঁকি মারল। খোকা একটা মেয়েকে নষ্ট করেছে...তাকে খুন করেছে! এ শিক্ষা সে পেল কোথায়! এমন শিক্ষা কি তাকে দিয়েছিলেন তাঁরা! তবে কেন সে এমন করল...! ছিঃ!
    নীলিমার বমি পাচ্ছিল। কোনরকমে বাথরুমে ঢুকে গলায় আঙুল দিয়ে বমি করলেন। সবে সামান্য সুস্থ বোধ করছেন, এমন সময়ই এসে জুটল আপদ! কে আবার! ইঁদুরটা! হুড়মুড় করে নীলিমার পায়ের উপর দিয়ে দৌড়ে চলে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রান্নাঘরের বাসন-পত্র ঝনঝন করে উলটে পড়ল! নীলিমা ক্ষিপ্ত হয়ে চেঁচিয়ে ওঠেন—‘গুপি...গুপি...’।
    গুপি নীলিমাদের বিশ্বস্ত পরিচারক। দুনিয়ায় এমন কোনও কাজ নেই যা সে পারে না। যখন ভাস্করের পূর্বপুরুষদের জমিদারির আমল ছিল তখন থেকেই গুপির বাপ-দাদারা এ বাড়িতে বংশপরম্পরাক্রমে চাকরি করে আসছে। এখন এ বাড়ির ভগ্নদশা। বাদবাকি শরিকরা সব গতাসু। এ ধ্বংসস্তূপ আঁকড়ে এখন শুধু এক অক্ষম বুড়ো আর এক বুড়ি থাকে। সঙ্গে কম্বাইন্ড হ্যান্ড গুপি।
    গুপির মাথার চুলগুলো সব পাকা। দেহের বাঁধুনি আঁটোসাঁটো হলেও মুখের বলিরেখা আর গলার ঝুলে পড়া চামড়া সাক্ষ্য দেয় যে সে হয়তো বয়সে নীলিমার চেয়ে অনেকটাই বড়ো। তবু মালকিন বলে কথা। একডাকেই সে ছুটতে ছুটতে এল—‘মা?’
    তার দিকে মরা মাছের মত নিস্পৃহ চোখে তাকিয়ে বললেন তিনি—‘ইঁদুরের উৎপাত বড় বেড়েছে। চিলেকোঠা থেকে ইঁদুরের বিষটা নিয়ে আয় তো। আর কয়েকটা আলুর চপ ভেজে দে...!’
    --‘আচ্ছা, মা’।
    গুপি বেরিয়ে যেতেই নিলীমা ফিরে এলেন খোকার কাছে। তার কাঁধে হাত রেখে শান্ত গলায় বললেন—‘ভয় পাস্‌ না খোকা। কিছু একটা ব্যবস্থা হবেই। তুই বরং খেতে আয়...’।
    সেরাতেই ফেরার হয়ে গিয়েছিল খোকা। ভোররাতে পুলিশ এসে বাড়ি সার্চ করেছিল। কিন্তু কাউকে খুঁজে পায়নি। আঙুল তুলে হুমকি দিয়েছিল—‘একটা রেপিস্ট-মার্ডারারকে আপনারা আশ্রয় দিয়েছেন, পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন...এর ফল ভালো হবে না। সোজাসুজি বলুন, ছেলেকে কোথায় রেখেছেন। নয়তো...!’
    নীলিমা নীরব দৃষ্টি তুলে অফিসারের দিকে তাকিয়েছিলেন। পাথরের মত কঠিন সে দৃষ্টি। অস্ফুটে বলেছিলেন—‘জানি না...’...

    ...রান্নাঘরে আরও একচোট বাসনপত্র পড়ার আওয়াজে সচকিত হলেন নীলিমা। আপনমনেই দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। গুপি সেদিন ইঁদুর মারার বিষ আর আলুর চপ—দুটোই এনে দিয়েছিল।
    কিন্তু তারপরও ইঁদুরটা বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে!

    ২.
    লোকটা একদৃষ্টে বাড়িটাকে দেখছিল। প্রায় দশ বছর হয়ে গেল এ বাড়ির ছেলে ফেরার হয়ে গেছে। উঠতি বয়েসের ছেলে ছিল। একটি মেয়েকে রেপ করে খুন করে প্রায় দশ বছর আগে পালিয়ে গেছে। তারপর থেকে তার আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ অনেক খুঁজেও ছেলেটাকে বের করতে পারেনি। সন্দেহ, বাবা-মা—ই তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু সন্দেহের উপযুক্ত প্রমাণ কিছু নেই।
    বহুদিনের পুরনো বাড়িটা এখন পরিত্যক্ত দূর্গের মত ভেঙে পড়েছে। একসময়ে দুদিকে বাহু প্রসারিত করে দাঁড়িয়েছিল বাড়িটা। এখন একটা দিক পুরো ভগ্নস্তূপ! ওদিকটা বাসযোগ্য নয়। কয়েকটা দেওয়াল নিরুপায় সেপাইয়ের মত অতিকষ্টে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে কোনও দিন হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে। বাঁদিকটার অবস্থা তবু ভালো। তবে বাঁদিকের সবকটা ঘর বাসযোগ্য নয়। গোটা তিনেক ঘরে টিমটিমে আলোর রেখা দেখতে পেল সে। অর্থাৎ ঐ কয়েকটা ঘরে মানুষ আছে। বাদবাকিগুলো অন্ধকার।
    আগন্তুক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। মোটামুটি সমস্ত তথ্যই তার জানা। ঐ তিনটে ঘরের কোথায় কি আছে তাও সে জানে। নিজের জীবিকার খাতিরে তাকে জানতেই হয়। যে সমস্ত বাড়িতে অরক্ষিত সিনিয়র সিটিজেনরা থাকেন, সেই সব বাড়িই অপারেশনের পক্ষে সবচেয়ে ভালো জায়গা। আর এখানে তো সোনায় সোহাগা! এ বাড়ির ধারেকাছে আর কোনও বাড়ি নেই—অর্থাৎ ফাঁকা মাঠ। চেঁচালেও কেউ শুনবে না। বুড়ো পঙ্গু। বুড়ি চোখে ঠিকমত দেখতেও পায় না। থাকার মধ্যে আছে একটা চাকর। তারও এখন মরার বয়েস হয়েছে। ছেলে ছাড়া বুড়ো বুড়ির তিনকূলে কেউ নেই। তার উপর বুড়ো সম্প্রতি কিছু জমি বেচে দিয়েছে। সে টাকা এখনও ব্যাঙ্কে রাখা হয়নি। মানে ঘরেই আছে।
    সে তার হাতে ধরা স্যুটকেসের উপরে হাত বোলায়। ‘মাসিমা, আমি আপনার ছেলের বন্ধু...’—কথাটা কি ঠিক শোনাবে? অথবা, ‘আমি অরিন্দমের বন্ধু। অরিন্দম খুব বিপদে পড়েছে, নিজে আসতে পারছে না। তাই আমাকে পাঠাল’। উঁহু, ঠিক কনভিনসিং লাগছে না। তাহলে কি আগেই অ্যাটাক করা ভালো? অত ভ্যানতারা করারই বা দরকার কি? বুড়ো-বুড়ির ছেলে অরিন্দমের নামটা ছাড়া আর কিছুই জানে না সে। যদি তেমন কিছু জিজ্ঞাসা করে বসে, তবে উত্তর দিতে পারবে না। কি দরকার রিস্ক নেওয়ার?
    আগন্তুক আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। সে মনে মনে ঠিক করছিল, প্রথমে কোন্‌ অস্ত্রটাকে কাজে লাগাবে। নাইলনের দড়ি? এক ফাঁসেই বিনা রক্তপাতে কাজ খতম। হাতে রক্ত লাগার সম্ভাবনা নেই। কিংবা ভোজালি কেমন হবে? খুব বেশি কষ্টকর নয়, গলার শিরায় সামান্য একটা টান। তবে এখানে রক্তপাতের অব্যর্থ সম্ভাবনা। গলার শির কাটতেই ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোবে।
    ভাবতেই একটা অদ্ভুত তৃপ্তি অনুভব করল সে। আহ্‌! রক্তের গন্ধ সে ভালোবাসে। আরও ভালোবাসে অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধার মৃত্যুযন্ত্রণাময় গোঙানি। টাকাটা অবশ্যই প্রাথমিক উদ্দেশ্য। কিন্তু তার আনুষঙ্গিক নারকীয় ঘটনাগুলো তাকে আরও বেশি আনন্দ দেয়।
    আস্তে আস্তে সে বাড়ির দিকে পা বাড়াল। ...ঐ তো...ঠিক তিনটে ঘরেই আলো দেখা যাচ্ছে। ভিতরের ঘরে বুড়ো থাকে। প্যারালাইসিসে পঙ্গু। তার মুখে একটা বালিশ চেপে ধরলেই চলবে। সামনের ঘরটা বুড়ির। চোখে কম দেখে। তার জন্য দড়ি। আর চাকরটা বেশি বেগড়বাঁই করলে...
    লোকটা একটা মৃদু সিটি দেয়। আপনমনেই হাসছে সে। হ্যাঁ, চমৎকার আইডিয়া। পুরোপুরি ফুলপ্রুফ! এমন জায়গায় ওরা থাকে যে মরে পড়ে থাকলেও কেউ দেখতে আসবে না। পুলিশ খবর পাওয়ার আগেই অপরাধী নাগালের বাইরে।
    ভাবতে ভাবতেই সে সন্তর্পণে বাড়ির গেট খোলে। বহু পুরনো, মর্চে ধরা জগদ্দল লোহার গেট। খুলতেই রীতিমত ক্যাঁচকোঁচ শব্দ করে উঠল।
    --‘কে?’
    ফিল্মে ভুতুড়ে বাড়ির সিকোয়েন্স অনেকবার দেখেছে লোকটা। এখন যেন চোখের সামনেই হরর ফিল্মের দৃশ্যটা ভেসে উঠল। একটা কালো মিশমিশে চেহারার লোক যেন অন্ধকার ফুঁড়ে এসে দাঁড়াল তার সামনে। দেখলেই কেমন যেন গা শিমশিম করে ওঠে। অতবড় দুর্দান্ত খুনীরও গা ছমছম করে উঠল এই আকস্মিক আবির্ভাবে। কর্কশ কন্ঠস্বরে আবার বলল সে—‘ এতরাতে কে ওখানে?’
    --‘আমি...আমি কমলেশ’।
    সমস্ত প্ল্যান গুলিয়ে গেল তার। একটা বুড়ো চাকর থাকে, একথা শুনেছিল সে। কিন্তু বার্ধক্যেও কি আশ্চর্য বলিষ্ঠ লোকটার চেহারা! হাতে একটা লম্বা লাঠি। শুধু তাই নয়, ঐ লাঠির মোক্ষম বাড়িতে সে যে মাথা গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও রাখে, তাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
    কমলেশ তার আসল নাম নয়। হঠাৎ করেই নামটা মাথায় চলে এসেছে। লোকটার আসল নাম যা-ই হোক্‌, সে স্পষ্ট বুঝতে পারল প্ল্যান ‘এ’ এর উপর নির্ভর করে এগোতে গেলে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। বুড়ো চাকরটা মরার আগে অন্তত তার কয়েকটা হাড় গুঁড়ো করে দিয়ে যাবে। তাই নিজেকে অক্ষত রেখে এগোতে গেলে প্ল্যান ‘বি’—ই সম্বল।
    --‘কমলেশ? কমলেশ কে?’ চাকরটার কন্ঠস্বর আরও খড়খড়ে ঠেকল তার কানে।
    --‘আমি অরিন্দমের বন্ধু’।
    --‘অরিন্দম!’
    চাকরটা যেন কয়েকমুহূর্ত স্তম্ভিতের মত দাঁড়িয়ে থাকে। কি বলবে যেন ভেবে পাচ্ছে না। তারপর হাতের লাঠিটা সসম্ভ্রমে নামিয়ে রেখে কর্কশ স্বরটাকে কিঞ্চিৎ মোলায়েম করে বলে—‘দাদাবাবুর বন্ধু!’
    --‘হ্যাঁ’।
    --‘ভিতরে আসুন’।

    ৩.
    --‘তুমি খোকার বন্ধু?’ ভাস্কর তার অথর্ব শরীরটাকে কোনমতে সোজা করার চেষ্টা করছেন—‘কেমন আছে খোকা?...কোথায় আছে জানো তুমি?’
    কমলেশ গলা খাঁকারি দেয়। এখন মুখ খুললে তাকে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে কথা বলতে হবে। অরিন্দম, তথা বুড়ো-বুড়ির খোকা কোথায় আছে তা সে নিজেও জানে না। কি জবাব দেবে? ওদিকে বুড়ো অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
    --‘ছেলেটাকে একটু শ্বাস ফেলতে দেবে তো! আর এত উত্তেজনা তোমার শরীরের পক্ষেও ঠিক নয়।’ নীলিমা মৃদু একটা ধমক দিলেন ভাস্করকে। তিনি অতিথির জন্য চা-বিস্কুট এনেছেন। কমলেশের হাতে চায়ের কাপটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন—‘এসেছ যখন বাবা, ক’টা দিন থাকবে তো?’
    বাধ্য হয়েই এবার মুখ খুলল কমলেশ—‘থাকার সুযোগ নেই মাসিমা। ব্যবসার কাজে এদিকে এসেছিলাম। অরিন্দমের কাছে আপনাদের কথা অনেক শুনেছি। ভাবলাম একবার দেখা করে যাই’।
    --‘এমন হুটুক্কারি করে কি আসতে হয়?’ নীলিমার কন্ঠস্বরে প্রচ্ছন্ন অভিযোগ—‘ আজকের রাতটা তো থেকে যেতে পারো। তোমরা শহুরে মানুষ। আমাদের হাতের রান্না হয়তো রুচবে না। তবু দু মুঠো না খেয়ে গেলে দুঃখ পাবো। খোকার ঘরটা এখন ফাঁকা। গুপি ওখানেই তোমার শোওয়ার ব্যবস্থা করবে। একটু কষ্ট হবে। তবু একটা দিন থেকে যাও বাবা’।
    কমলেশ আর দ্বিরুক্তি না করে রাজি হয়ে যায়। কি লাভ এক অসহায় মায়ের মনে দুঃখ দিয়ে! এমনিতেই সে অনেক পাপ কাজ করেছে। এখনও করছে। ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে বলছে। এরপর...!
    সে মনস্থির করে নেয়। আজ রাতে নাহয় থেকেই যাবে। নীলিমার বলিরেখাকুঞ্চিত মুখের দিকে তাকিয়ে তার মনে হঠাৎই একটা পাপবোধ কাজ করতে থাকে। এমন পাপবোধ যে তার জীবনে আর হয়নি, তা নয়। বরং প্রায়ই হয়। প্রত্যেকবারই তার শিকারদের দিকে তাকিয়ে এমন একটা অন্যায্য দুঃখ বিবেকের উপর চেপে বসে। কিন্তু হাতে নাইলনের ফাঁস কিম্বা ভোজালি উঠে আসতেই বিবেক নামের বস্তুটা হাওয়া হয়ে যায়। তখন শুধু হিংসা, রক্ত আর লোভ! লোভ...আরও লোভ!
    কমলেশ জানে এই পাপবোধ সাময়িক। এই মুহূর্তে যে বয়স্ক মুখটার দিকে তাকিয়ে দুঃখ হচ্ছে, সেই মানুষটার গলাতেই ভোজালি বসাতে তার সবচেয়ে বেশি আনন্দ হবে। প্রত্যেকবারই তাই হয়। এবারও ব্যতিক্রম হওয়ার উপায় নেই।
    --‘বাবা, খোকা কেমন আছে?’ উৎসুক স্বরে ফের প্রশ্ন করেন ভাস্কর—‘ও আমাদের সাথে দেখা করতে আসে না কেন?’
    --‘চিন্তা করবেন না মেসোমশাই’। কমলেশ উত্তর দেয়—‘অরিন্দম খুব ভালো আছে। ও আপনাদের কথা খুব বলে। খুব মনে করে। কিন্তু আসতে পারে না। এখানে এলেই গ্রেফতার হবে। খুনের মামলার তামাদি হয় না তো!’
    --‘ও’। ভাস্করের মুখ বিষণ্ণ হয়ে যায়—‘তবে থাক্‌। এসে কাজ নেই। এ বাড়িতে তো ফোনও নেই যে ফোন করবে! অন্তত চিঠি তো লিখতে পারে’।
    প্রথমদিকে মিথ্যে কথা বলতে একটু অসুবিধে হয় বটে। কিন্তু একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে দিব্যি সড়াৎ সড়াৎ করে মিথ্যে কথা বেরিয়ে আসতে থাকে। কমলেশ বলে—‘ অরিন্দম খুব ব্যস্ত মেসোমশাই। ও তো এখানে নেই। সেরাতে পালিয়ে গিয়ে কয়েকদিন আন্ডারগ্রাউন্ড হয়েছিল। তারপর সোজা দুবাইয়ে কাজ নিয়ে চলে গেছে’।
    খোকার উন্নতির কথা শুনতে শুনতে বৃদ্ধের কোটরাগত চোখ বেয়ে জল পড়ে। ক্ষীণ দুটো হাত বারবার বিধাতার উদ্দেশ্যে উঠতে থাকে। অনেক শুনেও যেন তৃপ্তি হয় না। জ্বরগ্রস্ত রোগীর অনন্ত তৃষ্ণার মত খোকার কথা শুনে যান ভাস্কর। ছেলেমানুষের মত জিজ্ঞাসা করেন...’আচ্ছা, আমাদের কথা কিছু বলে?,... ওকে যে জন্মদিনে বাইক দিয়েছিলাম, সে কথা মনে আছে ওর?... সেরাতে ও কোথায় চলে গেল?...আমাদের কিছু না বলে...ওকে বোলো—ওর বুড়ো বাপ-মা এখনও অপেক্ষা করে আছে। ...আচ্ছা, খোকা কি বিয়ে করেছে?’
    অন্যমনস্ক ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে তীক্ষ্ণ চোখে ঘরটাকে জরিপ করতে থাকে সে। হুঁ...এ ঘরে সম্ভবত বুড়ো-বুড়ি থাকে। বিরাট মেহগনি কাঠের পালঙ্কটা বেচলে কতটাকা পাওয়া যাবে? ঐ যে পাশের লোহার সিন্দুক...! ওখানেই কি আছে টাকাটা?...
    এদিকে বুড়ো বকবক করেই চলেছে! কমলেশ বিরক্ত হয়! আঃ, বড্ড বেশি বকে এই লোকটা। আগে খাওয়া দাওয়া হয়ে যাক্‌...তারপর মধ্যরাত্রে প্রথমে এই লোকটার গলাতেই...

    ৪.
    নীলিমা নিজের মনেই কখন যেন এসে দাঁড়ালেন অট্টালিকার ভগ্নস্তূপের সামনে। এই ঘরটা জমিদার আমলে কোষাগার ছিল। চতুর্দিকে লোহার শিক। ঐ ভারি ভারি শিকের উপরে ট্রাঙ্ক, জাবদা খাতার দিস্তে রাখা হত। যদিও এখন ঘরটার ভগ্নদশা। ছাত ফুটো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে জল পরে। পূর্ণিমার দিনে চাঁদ দেখা যায়।
    এই ঘরটার একটা দেওয়াল অজানা কারণে ঠিক দশ বছর আগে মেরামত করা হয়েছিল। নীলিমা আস্তে আস্তে সেই দেওয়ালটার সামনেই এসে দাঁড়িয়েছেন। তার ঠোঁটে একটা অদ্ভুত হাসি।
    --‘খোকা, কে এসেছে বল্‌ তো?’ দেওয়ালের গায়ে পরমস্নেহে হাত বোলাতে বোলাতে ফিস্‌ফিস্‌ করে বলেন তিনি—‘তোর বন্ধু এসেছে। বলছে, তুই নাকি দুবাই চলে গেছিস্‌। ও জানে না যে তুই কোথায় গেছিস্‌! ওর জানা উচিৎ-- তাই না? তোর খুব একা একা লাগে...? চিন্তা করিস্‌ না। তোর বন্ধু এখন থেকে তোর সাথেই থাকবে’।
    খুব আদর করে দেওয়ালের গায়ে হাত বোলাতে বোলাতেই আঁৎকে উঠলেন নীলিমা। পায়ের উপর দিয়ে আবার সেই কুৎসিত প্রাণীটা চলে গেল! আগে একটাই ছিল। এখন রক্তবীজের বংশধরের মত পালে পালে বেড়েছে!
    তাঁর মুখ শক্ত হয়ে ওঠে। হিস্‌হিস্‌ করে বলেন—‘ইঁদুর!...ইঁদুরের উৎপাত বড় বেড়েছে!’
    হঠাৎ সেই ধ্বংসস্তূপের অন্ধকারের মধ্যেই শোনা গেল গুপির গলা—‘চিলেকোঠা থেকে ইঁদুরের বিষের শিশিটা আনব মা?’
    নীলিমা অন্ধকারের মধ্যেই হাসলেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ | ২৮৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Rit | ***:*** | ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ ০২:৫৯46558
  • সত্যি আনপুটডাউনেবল।
  • সিকি | ***:*** | ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৪:৫৯46560
  • উরিত্তারা!
  • cm | ***:*** | ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৫:২৩46561
  • এর জন্য পুরষ্কার চাই।
  • de | ***:*** | ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ ১২:৫০46559
  • উফ!
  • aka | ***:*** | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:৪০46562
  • উরি ত্তারা। কেমন শিউড়ে উঠলাম।
  • T | ***:*** | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:৪৮46563
  • আরে জ্জিও বস্‌।
  • kumu | ***:*** | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৩:৩১46564
  • সায়ন্তনী আপনার লেখা খুব ভাল লাগে বললে কম বলা হয়।জীবনের জটিলতা ও কিছু অন্ধকার দিকের ছবি আপনি অসাধারণ দক্ষতায় এঁকে ফেলেন।
    আপনার এই গল্পটি দেশে পড়েছিলাম।তখনো একটি প্রশ্ন জেগেছিল, আজ করে ফেলি।কোন মায়ের পক্ষে কি এত নির্মম হওয়া সম্ভব সত্যিই?মৃতদেহের গন্ধের ব্যাপার আছে, দেয়াল তোলাও একা গুপির পক্ষে সম্ভব কিন? মা ছেলের অপরাধের শাস্তি দিলেন এইভাবে ভাবলেও ঠিক পরিষ্কার হচ্ছে না।
  • aka | ***:*** | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৩:৪০46565
  • মা কি ছেলের অপরাধে শাস্তি দিলেন? নাকি ছেলেকে যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিলেন? কুমুদিকে একটা ভালো হিন্দি মুভি রেকো দিলাম বাস্তব - সঞ্জু বাবার।
  • ম্যামি | ***:*** | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ ০১:০১46568
  • লেখার মুন্সিয়ানা দেখার মত। অসাধারণ।
  • b | ***:*** | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ ১২:২১46567
  • গায়ে কাঁটা দেওয়া লেখা।
  • Ekak | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৬:৩০46569
  • বাহ ,একদম মাপা লেখা । ভাল্লাগলো ।
  • জিঙ্গল বেল | ***:*** | ২৯ জুলাই ২০১৪ ০৯:৫৮46570
  • অসাধারণ একটা গল্প...।।ভীষণ ভাল লাগল
  • prabin pathak | ***:*** | ৩০ জুলাই ২০১৪ ০৯:৪৬46571
  • লেখাটা ভাল। কিন্তু চোর ছেলেটা "বলিষ্ঠ চাকর" আরো দুজনকে ফাঁস দিয়ে বা ভোজালি দিয়ে খুন করবে। এ তো বেশ অসাধ্য কাজ হবে। লোহার সিন্দুকে টাকা থাকতে পারে এমন ধরনার ওপর খুন করা ? তাই প্লান বি টা কী জানা গেলে লজিকটা আরেকটু শক্তপোক্ত হত। আর মেহগিনি পালঙ্কের দাম যাই হোক না কেন। সেটা দুরমুশ ভারী। ও জিনিস কেন লোভ করছে ? খুন করে লুট করে এমন প্রফেশনাল হলেও চোরটা তো বেশ বোকা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন