এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • নির্মোহ সাভারকর চর্চাঃ সবে মিলে - ১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ আগস্ট ২০২২ | ৩৯১৩ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • [ কাল কেসি সায়েবের সাজেশনটি আমার মনে ধরেছে। তাই দুগগা বলে ঝুলে পড়লাম। সবাই হাত লাগান। আমি আলোচনাটিকে কোটেশন-কন্টকিত, ফুটনোট-ভারাক্রান্ত করতে চাই নে। যার ঝুলিতে যা কিছু মণিমাণিক্য রয়েছে এখানে উজাড় করে দিন। তবে কোন বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন হলে নিশ্চয়ই তথ্যসূত্র দিতে হবে। ]

    সাভারকর চরিত্র :

    আমার এই বয়সের প্রতীতি হল সত্যের রঙ সাদা কালো নয় ধূসর। হ্যাঁ বা না ঝগড়ায় অনেক সময় হারিয়ে যায় ঘটনার প্রেক্ষিত, ঐতিহাসিক সময়ের বাধ্যতা এবং সমসাময়িক সমস্যার ফ্যাক্টরগুলো। যেমন সাভারকর, এক জটিল এবং মনস্তত্ত্বের ছাত্রের জন্য ইন্টারেস্টং। তুলনামূলক ভাবে গান্ধীজি অনেক সাদামাটা লিনিয়র এবং বোরিং। দেখুন সাভারকর বড় হয়েছেন শাস্ত্রপাঠ, সংস্কৃত অধ্যয়ন মনুসঙ্ঘিতা পড়ে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ভাবনা চিন্তা, গ্যারিবল্ডি ম্যাজ্জিনির ভক্ত। ম্যাজ্জিনির জীবনী নিজে অনুবাদ করেছিলেন। উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট। অল্প বয়েসে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্য মাথায় রেখে অভিনব ভারত নামের সংস্থার প্রতিষ্ঠা। ছাত্র আন্দোলনের জন্য পুণের ফার্গুসন কলেজ থেকে বিতাড়িত।
    লণ্ডনে বামপন্থী চিন্তার শ্যামজী কৃষ্ণবর্মার বদান্যতায় আইন পড়তে যাওয়া। কিন্তু সেখানে ইন্ডিয়া হাউসের একচ্ছত্র নেতৃত্ব এবং মদনলাল ধিংড়াকে উস্কে দিয়ে জনৈক মাইনর ইংরেজ অফিসিয়ালকে হত্যার সঙ্গে তাঁর নাম ইন্টেলিজেন্স রেকর্ডে ওঠে। ফলে ভালভাবে ব্যারিস্টারি পাশ করলেও লাইসেন্স পেলেন না।

    জন্মসূত্রে চিতপাবন মারাঠি ব্রাহ্মণ। কিন্তু মাছ-মাংসে বিশেষ অনুরাগ। গান্ধীজি যখন দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্দোলন রত ভারতীয়দের সাহায্যের জন্য লন্ডন এসে প্রবাসী ভারতীয় ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন তখন সাভারকর চিংড়ি মাছ রান্না করছিলেন। গান্ধীজি সবিনয়ে জানালেন যে তিনি জাহাজে ওঠার আগে মাকে কথা দিয়েছেন যে আজীবন শাকাহারী থাকবেন। উনি খালি পেটে ফিরে গেলেন।

    সাভারকর নাকি মন্তব্য করেছিলেন -- শাকপাতা খেয়ে ইংরেজের সংগে লড়াই!

    সাভারকরের নাস্তিকতা নিয়ে একসময় পুণের (নাসিকের) ব্রাহ্মণরা কমিশনারকে চিঠি লিখেছিল যে নাস্তিক সাভারকরকে অবিলম্বে 'জেলাবদর' করা হোক। নইলে আমাদের ধর্মকর্ম সব গেল বলে!

    জাতপাত মানতেন না, মনে করতেন হিন্দুদের এই বিভেদ দুর্বল করছে।
    গো কে মাতা বলতেন না। উপকারী পশু বলতেন। গো হবে বাছুরের মাতা, আমার নয়।
    অথচ এই ভদ্রলোক হলেন হিন্দুরাষ্ট্র এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের মুখর প্রবক্তা। এছাড়া হিংসা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তিহত্যায় কোন অরুচি নেই, বরং বিশেষ রুচি।
    ওঁর হিন্দুত্ব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক হিন্দুত্ব, ধার্মিক নয়।

    জিন্নার সাথে কী মিল!

    জিন্নাও নাস্তিক, নিষিদ্ধ আহারবিহারে উৎসাহী। নামাজ পড়া নিয়ে । একেবারে কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু লড়ে গেলেন পাকিস্তান নির্মাণে। একেবারে সাভারকরের অল্টার-ইগো!

    ওদিকে গান্ধীজি গুজরাতি বানিয়া। প্রথম জীবনে স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কোন মাথাব্যথা ছিল -- মনে হয় না। উনিও বিলেতফেরত ব্যারিস্টার। কিন্তু নিজের দেশে পসার জমল না। তাই অর্থনৈতিক সাফল্যের স্বপ্নে সাউথ আফ্রিকা গেলেন। তারপর কী হইল জানে শ্যামলাল!

    গান্ধীজি নিজেকে বলতেন -- নিষ্ঠাবান সনাতনী হিন্দু। জাতিভেদকে একসময় উপযোগী ছিল বলে মনে করতেন। কিন্তু তাঁর অনীহা সশস্ত্র সংগ্রামে। তিনি ছাগলের দুধ খাওয়া অহিংসার পূজারী। গোহত্যার বিরোধী। অথচ তাঁর কল্পনার স্বাধীন ভারতে সমস্ত ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের সমান অধিকার। সর্বদা মাইনরিটির স্বার্থে দাঁড়াতে চাইতেন। এর জন্যে প্রাণ দিলেন।

    কিন্তু একটা কথা। কাকে বীর বলব?

    আমার মতে যে নিজের কৃতকর্মের দায় এড়িয়ে না গিয়ে স্বীকার করে।
    ক্ষমাভিক্ষা করে না। যে বিপদের সময় সামনে থেকে লীড করে।

    গান্ধীজি -- নোয়াখালি দাঙ্গা দেখুন অথবা সিডিশন চার্জে শাস্তি চাওয়া।

    ভগত সিং -- যে মৃত্যুদণ্ড পেয়ে মার্জনা ভিক্ষা চাইতে অস্বীকার করে এবং বলে ফাঁসি না দিয়ে আমায় তোপের মুখে উড়িয়ে দিন।

    সাভারকর -- ওপরের দুটো মাপকাঠিতে কোথায় দাঁড়ান পরে আলোচনা করব।

    তবে সাভারকর নিজেকে জন্মসূত্রে নায়ক ভাবতেন। ভাইকে চিঠিতে লিখেছিলেন -- একদিন ইতিহাসে ভারতের এই সময় "সাভারকর যুগ" বলে অভিহিত হবে। তাই বোধহয় নিজে সামনে না এসে ফুট সোলজারদের এগিয়ে দিতেন।

    এবার কেসি। এবং অন্যেরা ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৩৯738345
  • অমিত,
    Unlike Commiunist party or  RSS, কংগ্রেস ছিল mass party .
    আম জনতার জন্যে কংগ্রেসের অবারিত প্রবেশ ছিল।  নেতাজি বলছেন executive লেভেলের জন্য।  এবং savarkar হিন্দু মহাসভাr তখন প্রেসিডেন্ট,  যেমন Jinna মুসলিম লীগের  ।
  • Amit | 115.64.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৪৪738346
  • হ্যা। নেতাজির জিন্নাহ আর সাভারকার সম্পর্কে একই মূল্যায়ন। সেটা ঠিক আছে। আর ওনার আর্মিতে সাভারকার বা জিন্নাহ র নাম দিয়ে যে কোনো ব্রিগেড ছিলনা সেটা খুবই স্বাভাবিক। একটা ফাইটিং ​​​​​​​আর্মিতে ​​​​​​​হিন্দু ​​​​​​​মুসলিম ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​রিফট ​​​​​​​হোক ​​​​​​​সেটা শুধু নেতাজি ​​​​​​​কেন ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​কমান্ডার ​​​​​​​ই ​​​​​​​চাইবে ​​​​​​​না। 
     
    সাভারকার ​​​​​​​​​​​​​​চাইলে যুদ্ধ ​​​​​​​করতেই ​​​​​​​পারতেন। চাননি ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​তার ​​​​​​​চয়েস। ​​​​​​​একইভাবে ​​​​​​​অরবিন্দ ​​​​​​​জেল ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​বেরিয়ে ​​​​​​​আশ্রম বানিয়ে ​​​​​​​রিটায়ারমেন্ট ​​​​​​​এ ​​​​​​​চলে ​​​​​​​যান। ​​​​​​​তাকে ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​এই ​​​​​​​একই প্রশ্ন ​​​​​​​টা ​​​​​​​ওঠে ​​​​​​​কি ? 
     
    মূল প্রশ্নটা কিন্তু এখনো উত্তর পেলাম না। কংগ্রেস এর ইলেক্টিভ মেম্বার হওয়া যাবেনা মহাসভা বা লীগের মেম্বার হলে। এইটা একুয়াল ডিসটেন্স রাখা হচ্ছে দুটো কম্যুনাল ফোর্স র থেকে। এগ্রিড। কিন্তু  জেনারেল মেম্বারশিপ এ লীগ আর মহাসভার মধ্যে কোনো ডিস্ক্রিমিনেট করা হতো কি ? সেটা হলে সাভারকরের ক্লেমটা সত্যি। নাহলে মিথ্যে। 
  • Ranjan Roy | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:১৩738347
  • অমিত,
     ১  না, কংগ্রেসের জেনারেল মেম্বারশিপের ব্যাপারে কোন ডিস্ক্রিমিনেশন হত না। 
    ২ একদম ঠিক বলেছেন।
     শুধু সাভারকর কেন , অরবিন্দ, বারীন্দ্র, উপেন্দ্র, গান্ধীজি জিন্না, রবীন্দ্রনাথ, আপনি-আমি সবারই নিজের জীবন বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। সেটা নিয়ে কেউ  প্রশ্ন করতে পারে না।
     অরবিন্দ বিপ্লবের রাস্তা ছেড়ে ঋষি হয়েছেন? বেশ করেছেন, ওটা তাঁর চয়েস। বারীন্দ্র উপেন্দ্র কালাপানি থেকে ফিরে এসে গৃহস্থ এবং লেখক হয়েছেন? বেশ করেছেন, কোন কথা হবে না। 
    সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস ছেড়ে অন্য দল বানিয়েছেন এবং জার্মানিতে পালিয়ে গেছেন? বেশ করেছেন।
    গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিং কালাপানি ফেরত কমিউনিস্ট হয়ে গেলেন? ওটা ওনাদের চয়েস।
     
    একইভাবে সাভারকর কালাপানি ফেরত সশস্ত্র বিপ্লবের পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক পথের রাজনীতি করছেন? বেশ করেছেন।  তাতে উনি অন্যদের থেকে ছোট হয়ে যান না, বা তাঁর মতামতের গুরুত্ব কমে যায় না। হিন্দু মহাসভার সভাপতি হয়ে দলকে চাঙ্গা করেছেন? বেশ করেছেন। 
     
    ৩ তাহলে আজ সাভারকরকে নিয়ে এত কথা এত প্রশ্ন কেন? উনি তো শেষজীবনে শান্তিতে থাকতে চেয়ে ভারত সরকারকে লিখে দিয়েছিলেন যে ওঁকে ছেড়ে দিলে বাড়িতে থাকবেন, সক্রিয় রাজনীতি করবেন না। যতদূর জানি,  লালবাহাদুর শাস্ত্রী তাঁর জন্যে  পেনশন চালু করেছিলেন। 
    তাহলে?
    --আসলে এতদিন  কেউ প্রশ্ন তোলে নি। হঠাৎ দু'দশক আগে থেকে শুরু হল ওঁর মত স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরল। উনি আসল নেতা ছিলেন। ঘরে বসে থেকেও  ওনার পরামর্শেই জাপানে রাসবেহারী বোস এবং জার্মানীতে নেতাজি লড়াই করে গেছেন।
    এবং উনি কোন মার্সি পিটিশন দেননি।  এক মন্ত্রী বললেন --উনি তো গান্ধীজির নির্দেশে মাফিনামা দিয়েছিলেন।
    বলা হল, উনি দশবছর ধরে তেলের ঘানি ঘুরিয়েছেন। ওঁর মত অত্যাচার আর কারও সঙ্গে হয়নি। 
    সাভারকরও  ৫০ বছর পরে স্মৃতিকথা লিখতে গিয়ে গদর পার্টির প্রতিষ্ঠাতা লালা হরদয়ালকে তাঁর শিষ্য এবং প্রায় হিন্দু মহাসভার সদস্য বানিয়ে ফেলেছিলেন। 
    উনি তাঁর স্মৃতিকথায় ৬টা পিটিশনের উল্লেখ করেন নি।
     এখন আর্কাইভ থেকে ৫টা পিটিশন পাবলিক ডোমেইনে, প্রথমটির উল্লেখ দ্বিতীয়টিতে আচে।   
    এইভাবে ইতিহাস চর্চার  হদ্দমুদ্দ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
    চাপা পড়ে যাচ্ছে ১৯৩০ সালের চট্টগ্রামের পাহাড়ে লড়াইয়ে কয়েক গণ্ডা ইংরেজ সৈনিকের মৃত্যু। সূর্য সেনের ফাঁসি, বাঘা যতীনের পাঁচ জনের ট্রেঞ্চ থেকে গুলির লড়াই।  শচীন্দ্রের দ্বিতীয়বার কালাপানি যাওয়া।
     
    উল্লেখ করার মত যে আমাদের হোম মিনিস্টার অমিত শাহজী  অক্টোবর ২০১১তে সেলুলার জেলে গিয়ে শচীন্দ্র সান্যালকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেছেন। উনি বলেছেন --শচীন্দ্রনাথ সম্ভবতঃ একমাত্র সংগ্রামী যাঁকে দুই বার আন্দামানে পাঠানো হয়েছে।
     
    আমার বিনীত প্রশ্নঃ 
     সাভারকরের নেতৃত্বে  বিপ্লবী  কার্যকলাপে  লণ্ডন এবং পুণেতে দুই সিভিলিয়ান ইংরেজ রাজপুরুষ এবং একজন পার্শি ডাক্তার  নিহত হয়েছেন। নিজেও দশ বছর আন্দামানে কঠিন জীবন কাটিয়েছেন।
    কিন্তু এর থেকে বেশি তো আরও অনেকেই কাটিয়েছেন , এবং মিলিটারিলি অনেক বেশি অ্যাচিভ করেছেন।   এবংঘটনাচক্রে তাঁদের অধিকাংশই বাঙালী। 
    তাহলে সবাইকে ছাপিয়ে উনি কী করে কাল্ট ফিগার হয়ে যান?  কিছু মিথ্যে গালগল্প বাজারে ছাড়ার কী দরকার? উনি যা করেছেন তাঁর জন্যেই স্মরণীয়।
     
     
  • Amit | 115.64.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:২৫738348
  • অবভিয়াসলি মোদী শাহ দের একটা ফিগার দরকার যাকে গান্ধী নেহরুর এগেনস্ট এ কাউন্টার করা যায়। সাভারকার ফিটস দা মৌল্ড। 
     
    উল্টোদিকে এটাও সত্যি যে বাঙালি বিপ্লবী দের কংগ্রেস সরকার ও এতো বছর কোনো কৃতিত্ব দেয়নি- আলাদা করে মোদী শাহকে বলে লাভ নেই। গান্ধী নেহরুকে লার্জার দ্যান লাইফ ডেপিক্ট করা হয়েছে যেহেতু তাদের বংশই রুল করেছে এতো বছর। এবার পাশা উল্টেছে। পাল্টা কাউন্টার ও নামছে। 
  • vc | 2405:8100:8000:5ca1::3c:***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:৫৩738349
  • কংগ্রেস একটি ঢিলাঢালা গণসংগঠন যারা খিলাফত আন্দোলনে উৎসাহী। মোপলাদের অত্যাচার দেখলে তারা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। এই সেকুলার ট্রাডিশনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি আজ দেখে যান।
  • kc | 188.236.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:৪৪738352
  • সাভারকারের এরকম করে ফ্যানাটিক হয়ে ওঠার পেছনে যুক্তি খুঁজতে হলে অবশ্য অবশ্যই পড়তে হবে বিনায়ক চতুর্বেদির বইটা, নেটে এখনও আসেনি, দামও করেছে হাজার টাকা, তবে ওয়ার্থ। আরএসএস তথা বিজেপি কিভাবে সাভারকারের থেকে আলাদা এটাও বুঝতে গেলে এই বইটা মাস্ট।
     
    আর পুরন্দরে পড়ে আমার মনে হয়েছে সম্পতের অ্যাব্রিজড এডিশন, সম্পতের প্রশংসা করেছেন জয়রাম রমেশও।
     
    চতুর্বেদির বইটার রিভিউ করেছেন যোগেন্দ্র যাদব। মোটামুটি প্রশংসাই করেছেন বই হিসেবে।
  • Ranjan Roy | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:১৪738353
  • কেসি,
     বিনায়ক চতুর্বেদীর বইটা পড়া শুরু করেছি, খামচে খামচে। বিশ্লেষণাত্মক লেখা, একজন নিখাদ অ্যাকাডেমিশিয়ানের।
    আপাততঃ দ্য ইম্পসিবল হিস্ট্রি অধ্যায় শেষ করেছি, কম পাতার বলে। এবার ধরেছি মোডস অফ হিন্দু হিস্ট্রি--আসল বক্তব্যটি। দাম অনেক, কিন্তু মনে হল, ওই আপনারই মত, সাভারকরকে বুঝতে হলে এই বইটি না পড়ে উপায় নেই।
    উনি সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন  যে সাভারকরের স্বপ্ন ছিল ভারত ইতিহাসের পুনর্নিমাণ, এবং তাঁর চোখে হিন্দুত্বই ভারত, হিন্দু ইতিহাসই ভারতের ইতিহাস। কথাটা নিখাদ সত্যি।
     তাই তাঁর হিন্দুত্ব নামের পাতলা বইটিতে বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহ্যকে এক কথায় খারিজ করা হয়। অশোকের কাল কে সবচেয়ে খারাপ সময় বলা হয়। 
     
    কিন্তু সম্পতের সঙ্গে পুরন্দরের একটু তফাৎ আছে।
     সম্পত অনেক জায়গায় সোর্স উল্লেখ করেন না। বিপরীত সাক্ষ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন না। কিছু তথ্য স্রেফ চেপে যান। যদিও উনি প্রফেশনাল হিস্টরিয়ান।
     ওনার লেখার গণ্ডগোল নিয়ে যথাসময়ে বলব।
     
    পুরন্দরে প্রফেশনাল সাংবাদিক। 'মারাঠি মানুস' হিসেবে সাভারকরকে নিয়ে দুর্বলতা আছে। যেমন বাঙালীর রয়েছে রবীন্দ্রনাথ এবং সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে।
     কিন্তু পুরন্দরের লেখার গুণ প্রচুর ভেরিফায়েবল রেফারেন্স। আর ওনার নিজের পছন্দ যাই হোক, উপলব্ধ সবরকম মতামত এবং রেফারেন্সকে জায়গা দেয়া। এটা সম্পতে নেই। ধনঞ্জয় কীরের লেখয় সেটুকুও নেই, যেন চণ্ডীচরণের লেখা বিদ্যাসাগর পড়ছি! 
     
    কাজেই কালানুক্রমিক  বিবরণ এবং তথ্যের জন্য পুরন্দরে ভাল আকরগ্রন্থ।
     
     
  • Ranjan Roy | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৩৪738355
  • দেব,
    আমি আপনার কাছে একটা ভুল স্বীকার করছি। 
     
    সাভারকরের  মুম্বাইয়ে বিচারের রায়েই ওনার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আদেশ ছিল। 
    আপনিই ঠিক, আমি ভুল। 
    আমার চোখ এড়িয়ে গেছল। এটা একেবারে বাজে রকমের ভুল। 
    অত্যন্ত দুঃখিত। 
    আব্রও ভুল দেখতে পেলে ধরিয়ে দেবেন প্লীজ।
  • guru | 103.135.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৪০738361
  • গান্ধী ও সাভারকার এর লক্ষ্য একই ছিল | কিন্তু তাদের পথ আলাদা | দুজনেই মূলত হিন্দু আধিপত্য বাদে ও অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন পার্থক্য শুধু এটাই যে গান্ধী নরম হিন্দুত্ব ও সাভারকার সশস্ত্র হিন্দুত্বে বিশ্বাসী ছিলেন |
     
    গান্ধী চাইতেন মূলতঃ তার গুজরাটি জৈন বানিয়া জাতি ভারতে রাজত্ব করবে অন্যদিকে সাভারকার চাইতেন মারাঠা সাম্রাজ্য ভার্সন ২ |  
    বর্তমান ভারত কে দেখলে মনে হয় দুজনেই সফল তাদের লক্ষ্যে | সত্যি এখন ৪ জন গুজরাটি বানিয়া সমগ্র দেশ শাসন করছে অন্যদিকে এই ৪ জনকে নিয়ন্ত্রণ করে আরএসএস নতুন মারাঠা সাম্রাজ্যের স্বপ্ন দেখছে |
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন