সাধে কি আর ভাটিয়া৯তে চোখ রাখি রে বাবা !! সকড়ি আর এঁটোর ঝাপসা আইডিয়া পরিষ্কার হয়ে গেলো।এতো হিন্দু এলো কোথা থেকে আবার কি ? এদেশে যারা ছিলো, যখন ইসলাম, খ্রীস্টধর্ম আসেনি, তারা হয় হিন্দু, নয় বৌদ্ধ, নয় জৈন। জৈনর সংখ্যা কম। হিন্দুদের একটা বড়ো অংশ বুদ্ধকেও পুজো করতো, যেমন এখনো হিন্দুদের অনেকে স্বর্ণমন্দিরে যায় মানত টানত করতে। হিন্দুদের এ ব্যাপারটা তো ছিলোই। রাজনীতি ঢুকে সব ঘেঁটে গেছে।
খুব খম সংখ্যায় খ্রীস্টান ছিলো, আদিবাসীরাও ছিলো, যদিও রাজনীতি বাদ রাখলে আদিবাসীদের সঙ্গেও একটা পর্যায়ে মেশামিশি হয়েছিলো। চন্ডী, শিবের মতো দেবতা, মনসা (সম্ভবত), এবং একশো হাজার স্থানীয় দেবতার পুজো, জনপ্রিয়তা তার প্রমাণ। দক্ষিণ ভারতে
রইলো বাকি বৌদ্ধরা গেলো কোথায় ? ভারতে না, সামগ্রিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে কোথায় কোথায় মুসলিম জনসংখ্যা বেশি খেয়াল করুন। ঐ ঐ জায়গাগুলো বৌদ্ধ জনপদ ছিলো। স্টার্ট উইথ আফগানিস্তান।
সূত্র চাইলে এক্ষুণি দিতে পারবো না, কিন্তু পড়েই কথাগুলো বলছি। আর সূত্র না দিতে পারলে তো লিখতেও হবে প্রচুর। আপাতত ধরে নিন ঠিক বলছি। সুবিধার জন্য দুটো কথা বলে রাখি। আফগানিস্তানে দু'হাত মাটি খুঁড়লে বুদ্ধমূর্তি বা স্তুপ বেরোয়, মুজতবা আলি বলে গেছেন, না বলে গেলেও এটা আমরা সবাই জানি, এরকম একটা প্রসঙ্গ শরদিন্দুর কালের মন্দিরাতেও আছে, সেই যে বৌদ্ধমঠে রট্টা আর তার প্রেমিকের থাকা, গোধূমচূর্ণ প্রেরণের কথা ইত্যাদি (শরদিন্দু ইতিহাসবিদ এ কথা তাঁর অন্ধভক্তও বলবে না, আমি জাস্ট বোঝানোর জন্য টানলাম)। আজকের পাকিস্তানে সেই দূর অতীতে যখন ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি একটু একটু করে জমিয়ে বসছে, তখন বারবার অজস্র বৌদ্ধস্তুপ আর বুদ্ধমন্দিরের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো সে শক্তিকে। ফারসিতে বুদ্ধকে বলে বুৎ। এতো বিপুল পরিমাণে বুদ্ধউপাসনার অনুষঙ্গের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো তৎকালীন ইসলামিক রাজনৈতিক শক্তিকে যে মূর্তিপুজো বিষয়টাই ফারসিতে হয়ে গেলো বুৎপরস্তি। ভিমরতিপ্রাপ্ত তপন রায়চৌধুরী তাঁর আত্মকথনে যে লিখেছেন পূর্ববঙ্গের খেটে খাওয়া সাধারণ অসাম্প্রদায়িক মুসলিমদের মধ্যে যাঁরা তাঁদের পৈতৃক ভিটেতে কর্মচারী ছিলেন, তাঁরা হঠাৎ অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ হয়ে উঠলেন এবং তপনবাবুদের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্যনির্দেশ করতে গিয়ে বললেন, "তোমরা বুৎপপরস্তি করো," সে বুৎপরস্তি আদতে ছিলো একহাজার খ্রীস্টাব্দের আশেপাশের সময়ে বুদ্ধউপাসনা, যার অর্থ ক্রমে যেকোনো মূর্তিপুজোর সাথে একাকার হয়ে যায় ইসলামী রাজনৈতিক/সাংস্কৃতিক শক্তির চোখে।