কোসাম্বীর ডেকন কুইনে ডেইলি পুনে- বোম্বে যাতায়াত নিয়ে একটু বেশী বাড়াবাড়ি করা হয়। টি ই এফ আরে পড়ানোর জন্যে উনি বোম্বে থাকতে রাজী হননি, ওয়েদরের জন্যে। পুনেতে নিজের বাড়িতে থাকতেন। তখন ডেকন কুইন দেশের অন্যতম হাই প্রফাইল ট্রেন। ওতে শুধু ফার্স্ট ক্লাসই থাকত। রমিলা থাপার একবার ওঁর সঙ্গে দেখা করার জন্যে অ্যাপয়েন্টেমেন্ট করেন। ব্যস্ত কোসাম্বী ওঁকে ডেকন কুইনে ওঁর সঙ্গে ট্র্যাভেল করতে বলেন। ওই যাত্রাতেই দরকারী কথা হয়।
ফার্স্ট ক্লাসে, প্লেনে এট-সেট-রা চড়া টড়া নিয়ে কিপটে , পরশ্রীকাতর ভারতবাসী সব সময়েই সমস্যায় ভোগে।
আপনাকেও অনেকদিন পরে দেখলাম। @এলেবেলে
না, বিশেষ ভালো নেই। ভুগছি।
সরি, আজকাল বড্ড টাইপো হচ্ছে। হ্যাঁ, দামোদর ধর্মানন্দ কোসাম্বী।
মূর্তি কেন ভাঙতে হবে? যদি বিদ্যাসাগরকে আমরা প্রকৃত শ্রদ্ধা করতাম তাহলে তো আমাদের সো-কল্ড 'স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতরানো' বিদ্যাসাগরের মতো বিরুদ্ধ মত ধৈর্য সহকারে শোনার কথা। বিদ্যাসাগর আসলে আমাদের ছাতা শিখিয়েছেন! তাই যাহাই রামকৃষ্ণ, তাহাই বিদ্যাসাগর আমাদের কাছে।
আর রবীন্দ্রনাথ? অত্যন্ত শীলিত ও শোভনভাবে বিদ্যাসাগরকে ছিন্নভিন্ন করে ছেড়ে দিয়েছেন অত্যন্ত শিক্ষার বিষয়ে। দু;খ এটাই, ওঁর বিদ্যাসাগরচরিত-টাই সুপারহিট হল কারণ ওতেই বাঙালি তার কমফোর্ট জোন খুঁজে নিল!
ইন্টারেস্টিংলি কোসাম্বীরা কোঙ্কণী, গোয়ার সারস্বত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ভুক্ত। গোয়া পর্তুগীজ কলোনি। সিনিয়র কোসাম্বী (ধর্মানন্দ) প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যাচর্চা করেননি। প্রায় এক যুগ পরিব্রাজক হয়ে পালি, অর্ধমগধী প্রাকৃত শিখে ভগবান বুদ্ধের প্রামাণ্য জীবনী লেখেন। দেশে কিছুকাল পড়িয়ে মার্কিনী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান ও বেশ কিছু বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের সংকলন, সম্পাদনা ও অনুবাদ করেন। দেশে ফিরে গান্ধীর ডাকে সত্যাগ্রহী হন ।
পিতার অধ্যাপনার জন্যে পুত্রের পড়াশোনা মার্কিন দেশে। সেখানে থাকতেই মার্ক্স নিয়ে পড়াশোনা ও পরে পুরোপুরি মার্ক্সিস্ট হয়ে ওঠা।
দু প্রজন্মের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ফাঁদে না পড়ার এমন ঐতিহ্য আর বোধহয় নেই। :-)
্ডি ডি কোসাম্বীও ওই শ্রেণীথেকেই এসেছিলেন। রেলের ফার্স্ট ক্লাসে চলাফেরা করতেন। তবু তিনি দামোদর ধর্মানন্দ কোসাম্বী --এক রেনেসাঁ প্রতিভা এবং ভারতের হিস্টরিগ্রাফিতে আধুনিকতার জনক , ওঁর নিজের কাজের জোরেই।
অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে একটি শ্রেণীর জন্যে যা সত্যি তা সেই শ্রেণীর একজন ব্যক্তিবিশেষের জন্যে সত্যি নাও হতে পারে।
তাই রামমোহন, বিদ্যাসাগর, গান্ধি বা রবীন্দ্রনাথ।
সাবিত্রীবাঈ ফুলে বা বেগম রোকেয়াকে নিশ্চয়ই ইতিহাসে তাঁদের নায্য স্থানে এবং মর্যাদায় বসাতে হবে। সেটা ওপরের চারজনের মূর্তি না ভেঙেও করা যেতে পারে।
পাই,
নাটকটি সম্ভবতঃ "আমি সাবিত্রীবাঈ ফুলে" মুম্বাইয়ের জনৈক দেশপান্ডে হিন্দি ও মারাঠিতে একক অভিনয় করেন। ছত্তিসগড়ের রায়পুরে আজিম প্রেমজী ইউনির সহযোগিতায় বেশ কয়েকটি শো হয়েছিল।
রঞ্জনবাবু, পোস্ট সরানো যে হয়নি এবং সেটা যে কপি-পেস্ট করে অন্যত্র ডাম্প করা হয়েছি সেটা না দেখে হুটোপুটি করিনি। ও ব্যাপারে আর কচকচানি ভালো লাগছিল না বলে থেলে গিয়েছিলাম। আমার যেটা অত্যন্ত খারাপ লেগেছিল সেটা হচ্ছে আমাকে বলা হয়েছিল এবারে "ওখানে গিয়ে লিখুন" নির্দেশটা।
হু, বিদ্যাসাগর বেথুনের গাড়িতে যে মহানির্বাণতন্ত্রের শ্লোক খোদাই করে দিয়েছিলেন তার অর্থ ছেলেদের মতো মেয়েদেরও শিক্ষা দিতে হবে। আদৌ তা দিয়েছিলেন? দিলে দু-বেলা প্রণাম করতাম। নেটিভ ফিমেল স্কুলের সিলেবাস পুরো বেথুনের মতো ছিল, কেবল সূচীশিক্ষা ছিল না।
১৮৬২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি সরকারের কাছে বেথুন স্কুলের যে রিপোর্ট পাঠান তার প্রথম নিয়মটিই ছিল: The School is established for the instruction of the female children of Hindus of respectable family. সরকারের টাকায় 'সেকুলার' শিক্ষার নাম করে এটা করা যায়। মহসীন করেছিলেন?
সিলেবাস সম্পর্কে বলা হয় Reading, writing, arithmetic, biography, geography, and history of Bengal, with gallery, lessons on objects form the course of study. Needle-work and sewing are likewise taught. ছেলেদের মডেল স্কুলের সিলেবাস (ওঁরই বানানো) জানেন কি? এই পার্থক্য কেন প্রথম থেকেই। চন্দ্রমুখী এবং কাদম্বিনী না আসলে বেথুন স্কুল এ জীবনে কলেজ হত না। নিছক প্রাথমিক স্কুলই থাকত ৯৩ জন ছাত্রী ও বিপুল সরকারি ব্যয় নিয়ে। কাজেই আমাদের কর্তাব্যক্তিরা নারীশিক্ষাকে আসলে কিসের মধ্যে বন্দি রাখতে চেয়েছিলেন, সেটা পরিষ্কার। যেমন স্পষ্ট সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাও।
অর্জুন, বহু দিন বাদে আপনাকে ভাটে দেখলাম। ভালো আছেন?
ভেরি গুড! মতামত বিতর্ক বিমর্শ বিতন্ডা বিবাদ চলুক।
সব মিলেই গুরুচন্ডালি।
দামোদর ধর্মানন্দ কোসাম্বী
এসেম, অ্যাডাম নদীয়াতে সমীক্ষা করেননি। ওঁর করা পাঁচটি জেলায় সংস্কৃত টোল ছিল ৩৫৩ টি - সর্বোচ্চ বর্ধমানে ১৯০, সর্বনিম্ন মুর্শিদাবাদে ২৪। তবে ১৮৩০ সালে হোরেস উইলসন জানিয়েছেন নবদ্বীপে টোল ছিল ২৫, ছাত্র ছিল ৭৪৭। এবং এটা কমছিল সারা বাংলাতেই।
বর্ধমানে পাঠশালায় ছাত্র ছিল ১৩ হাজারের ওপরে। উনিশটি জেলাতে তাহলে কত হতে পারে সেটা গুণ-ভাগ করে দেখতে হবে। এর বাইরেও ছিল গৃহশিক্ষার ব্যবস্থা। সেখানেও ছাত্রসংখ্যা নেহাত কম ছিল না। তবে শিক্ষা সংকোচন হচ্ছিল পুরোমাত্রায়। মাদ্রাজে তার ছবি টমাস মুনরোর রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট।
সিএস, 'শিক্ষিত' বাঙালি মানেই বাংলাতে দেওয়ান-বেনিয়ানদের বংশধরেরা। তারা চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী মুসলমানদের ঢুকতেও দেয়নি; 'ছোটলোক'দেরও না। আমি হান্টারের বই থেকে একটা ছবি দিচ্ছি।
মুসলমানভীতি আসলে মুসলমান বিদ্বেষ। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরেই এই শ্রেণিটা পুরো নেই হয়ে যায়। শিক্ষা এবং চাকরির জগত থেকে। শিক্ষিত বাঙালি দেশজ শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত হয়নি। কলকাতায় মিশনারিদের স্কুলে দ্বারকানাথ এবং তাঁদের স্বজাতিরা মানে দেওয়ান-বেনিয়ানরা পড়েছিলেন। শিবনাথ শাস্ত্রীতেই আছে।
//ইংরেজের ভারতে কলোনী তৈরীর ইতিহাসের কোন সাধারণ সূত্র তৈরী করা যাবে না// নে
টিভদের প্রসঙ্গ না আসলে আরও যাবে না। তারা সমর্থক শ্রেণি গ্রামে তৈরি করেছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে, শহরে এলিটদের মাধ্যমে। বিনয় ঘোষের বাংলার নবজাগৃতি দেখুন। সুতরাং এরা তিনজন এক সূত্রে গাঁথা ছিল। তাই জন্যই এত এত কৃষক বিদ্রোহে এই এলিট শ্রেণির কোনও হেলদোল দেখা যায় নি। মহাবিদ্রোহের সময়ে সবচেয়ে নিরুত্তাপ ও উদাসীন ছিল বাংলার বুদ্ধিজীবীরাই।
অ্যাডাম তার জেলাপিছু শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার জন্য খরচ ধরেছিলেন বছরে দশ হাজার টাকার চেয়েও কম। কাজেই খরচ নয়, মানসিকতাটাই আসল ছিল। টোমাসনকে কাজে লাগাননি হ্যালিডে-বিদ্যাসাগর জুটি। কিন্তু সরকার তা লাগাতে বাধ্য হয় ১৮৭১-৭২ সালে। মেয়ো ডাউনওয়ার্ড ফিলট্রেশনের ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন।
সাবিত্রী ফুলের স্কুল এতটাই সফল হয়েছিল যে পুনে অবজার্ভার পত্রিকায় এক সরকারি স্কুলের ছাত্র লখতে বাধ্য হয় --- The number of girl students in Jyotirao’s school is ten times more than the number of boys studying in the government schools. This is because the system for teaching girls is far superior to what is available for boys in government schools. If this situation continues, then the girls from Jotirao’s school will prove superior to the boys from the government schools and they feel that in the coming examinations, they can really achieve a big victory. If the Government Education Board does not do something about this soon, seeing these women outshine the men will make us hang our heads in shame.
আর আমি নেহাতই চুনোপুঁটি। ভাটিয়ালিতে কথা বলছি মাত্র। এই ভদ্রলোক শ্রেণিকে অনেক আগে দামোদর ধর্মদাস কোসাম্বি 'দালাল' বলেছিলেন --- The new class that rose in the second half of the 19th century — after the last upsurge of feudalism in the 1857 Mutiny had been suppressed — developed out of the go-between dalal, who were ultimately based on machine production, but production mostly in England, supplied by India with raw materials and a market.
"আমার কাছে এই শিক্ষাসংক্রান্ত তর্কটা অনেকটাই ইতিহাসের বিচার কীভাবে করা হচ্ছে সেই পদ্ধতিটি বোঝার সমস্যা।"
--আমারও এটাই সমস্যা।
বলতে চাচ্ছি -- প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বা ইডিওলজি'র বিরুদ্ধে বলতে/ খন্ডন করতে শুধু রেফারেন্স যথেষ্ট নয় , প্রেক্ষিতটি স্পষ্ট করা দরকার। সেই সময়কে আজকের সময় ও মূল্যবোধ দিয়ে মূল্যায়ন করতে গেলে অধিক সতর্কতা কাম্য। যেমন নোয়াখালিতে গান্ধীজির নাতনীসমা বাচ্চা মেয়েদের সঙ্গে নিন্দনীয় এক্সপএরিমেন্ট দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মূল্যবোধের পরিবর্তনে তাঁর ভূমিকাকে এককথায় নাকচ করা যায়না।
হু'র সঙ্গে খানিকটা একমত হয়ে বলি -- গ্লাসে আদ্দেক জল থাকলে সেটা আদ্দেক খালি বলব কি আদ্দেক ভরা তা নির্ভর করবে আগে পুরো খালি ছিল নাকি পুরো ভরা তার উপরে ।
এলেবেলে,
বোধির সাজেশনের সঙ্গে পুরোপুরি একমত। আপনি খোঁচা খেয়ে মূল বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে খামোকাএন আর আই ইত্যাদি নিয়ে কটু মন্তব্য করলেন --সবাই আমোদ পেল। কোন দরকার ছিল না।
আর পোস্ট সরানো হয়েছে বোলে খামোকা চেঁচামেচি করলেন। কানে হাত না দিয়ে চিলের পেছনে দৌড়বেন না।
সিরিয়াস আলোচনায় ফিরে আসুন।
দারাশুকো ও ঔরঙ্গজেবের তুলনা অধিকাংশ সময় চলে আসে কিন্তু দারাশুকোর সাম্প্রতিক কালের বায়োগ্রাফার সুপ্রিয়া গান্ধীর মতে ' Difficult to call Dara Shukoh liberal or secular' । মুঘল শাসকদের মধ্যে একমাত্র গভীর ভাবে দর্শন ও অধ্যাত্ম চর্চা উনিই করেছিলেন এবং মনে করা হয় ওঁর প্রশ্নের অনেক উত্তরের খোঁজ পেয়েছিলেন উপনিষদ থেকে। কিন্তু জীবনীকার বলছেন 'It would be difficult to call him liberal or even secular because his project was about crafting a model of sovereignty for himself. This, though, inspired later ideas of Indian secularism.'
সুপ্রিয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন
The time is ripe for critical biographies. Any book on history and public conversation on history is a healthy trend.
যেখানে নারীশিক্ষা বলে কিছুই ছিল না, সেখানে যে যতটুকু শুরু করেছেন সেটাই সাধুবাদযোগ্য। এডামের রিপোর্টে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন দেখলাম যে মেয়েদের লেখাপড়া শেখার চল অলমোস্ট নেই। সব জায়গাতেই সেসময় মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর প্রয়োজনীয়তা সেল করার জন্য তারা লেখাপড়া শিখলে কিভাবে ভালো মা, ভালো গৃহিণী হয়ে উঠবে সেদিকে জোর দেয়া হচ্ছে। সাবিত্রীবাই ফুলের কাজ সম্পর্কে জ্যোতিরাও বলছেন - "It did occur to me that the improvement that comes about in a child due to the mother is very important and good. So those who are concerned with the happiness and welfare of this country should definitely pay attention to the condition of women and make every effort to impart knowledge to them if they want the country to progress. With this thought, I started the school for girls first." (উইকি থেকেই নিলাম, NCERTতে সাবিত্রীবাই ফুলে মেমোরিয়াল লেকচার (২০০৮)।)
কাজেই আলাদা করে বেথুন এবং বিদ্যাসাগরের কাজকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললে পোস্টকর্তার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
১৮৩৫ সাল নাগাদ সমগ্র অবিভক্ত বাংলায়, টোলের সংখ্যা ছিল ১৮০০ মতন আর স্টুডেন্ট সংখ্যা ছিল ১২০০০ এর কিছু বেশি।এক কথায় স্কুল লেভেলে শিক্ষা পেতো এতো কম জনতা যে হিসাবের মধ্যে আসে না। নারী শিক্ষা মূলত বাড়িতে হতো।
টোলগুলো চলতো জমিদার দের অনুগ্রহে বা স্থানীয় উদ্যোগে।নদিয়ার জমিদার বা রাজা ওই জেলার সমস্ত টোলের জন্য (শ খানেক) বরাদ্দ করেছিলেন,১২০০ টাকা।সেই যুগে যেটা অনেক।এলেবেলে কনফার্ম করতে পারবেন।
*১৮৭১ সালে