ছয়তলায় দুটো ফ্ল্যাট, পাশে ছাদ। দুই রুমের ফ্ল্যাট দুটোয় তিনজন করে ওরা ছয়জন। ক্যাম্পাসের সিনিয়র-জুনিয়র৷ ছাদের মুখোমুখি ফ্ল্যাটের দরজা সবসময় খোলা থাকে, অনেক বাতাস। ওটায় থাকে হামিদ, শাওন আর শহীদুল। অন্যটায় ফারুক, সৈকত ও পলাশ। সকলেই চাকরি-প্রত্যাশী। ছাদ বরাবর ডাইনিং টেবিলে বসে হামিদ সকালের ভাত খাচ্ছে আর শহীদুল কফি, হাতে সিগারেট। করোনাকালীন বাজার অর্থনীতিতে সারাদেশ বিপর্যস্ত।
শহীদুলঃ সৈকত ভাইও এ মাসে চলে যাবে। পলাশ ভাই তো আগেই কনফার্ম করছে।
হামিদঃ সৈকত ভাই চলে যাচ্ছেন? কে বলল?
শহীদুলঃ ফারুক বলল, গতকাল, রুমমেট দেখে দিতে বলল।
হামিদঃ কই যাবে? বাড়িতেই থাকবে নাকি?
শহীদুলঃ হুম। পরীক্ষার আগের দিন এখানে থাকল। খরচ বেঁচে গেল!
হামিদঃ দেশের অবস্থা খুব ভয়াবহ! তুমিতো বুঝতেছো না। আমারে দিয়াই বুঝতেছি। আগে যেমন চলতাম তেমনটা ভাবতেও ভয় হয়! তোমার তো পনের-বিশ আসে?
শহীদুলঃ হাসি!!!
হামিদঃ টিউশন তো অনেকগুলাই করাও দেখি-
শহীদুল আপন মনে বলে চলে, হিসাব করলে আঠারো। কিন্তু সবাই যে একসাথে সব টাকা দেয় না।
হামিদঃ চুপ যে!
শহীদুলঃ ঠিকই আছে। রেমিট্যান্স আর গার্মেন্টসের টাকায় পাব্লিকের গায়ে চর্বি জমছে ভালো। এবার বুঝো ঠ্যালা! ধান প্রধান দেশে চালের দাম এত হয় নাকি? আলু, পটল, পেঁয়াজ তো পরের কথা।
প্রতিটি মানুষ নিজনিজ জায়গা থেকে নিজের অবস্থানকে ভালনারেবল বলে তুলে ধরছে। সরকারি চাকরি পেয়ে যুবক ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে; আর এ দেখে তার চারপাশের চাকরিহীন মানুষগুলোর হতাশা উস্কে উঠছে।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল নির্ধারণ কৌশল আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সকল চলমান আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিল। ছাত্র অধিকার পরিষদের ভাঙনে শাসকগোষ্ঠী সফল। আর শান্তিময় জীবনের উদ্দেশ্যে মাঠে নামা তরুণ দিনশেষে হতাশার বোঝা কাঁধে নিয়ে বালিশে মাথা রাখে। আহা! অচেতনেই কি শান্তি!
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল নির্ধারণ কৌশল টা কী ঘটনা ?