বাংলা থেকেও বুরুডির : নরেশ জানা
বুলবুলভাজা | ভ্রমণ : ঘুমক্কড় | ১৭ মে ২০২৪ | ১০১৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
শেষ হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে বু্রুডির ভেতর গড়ে যখন পৌঁছলাম তখন মেলা তুঙ্গে উঠেছে। ভীড় উপচে পড়ে গড়িয়ে পড়বে নীল হ্রদের ভেতরে। ঝুটা মতির গয়নার দোকান সার দিয়ে বসে। ওদিকেই ভীড়টা বেশী বটে কিন্তু পাথরের গয়না, ডোকরাও রয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও মধুবনি আর ওড়লি ঘরানার ছাপা শাড়ি। এক সদ্য গোঁফ ওঠা তরুনের হাত ধরে বউ টানছে ওদিকে। বসেছে অসাধারণ বাঁশ আর বেতের ঝুড়ি, ঠাকা, কুলা, মান তো আছেই আর আছে পাথরের বাসন কোসন। কোনও এক পাশ থেকে সাঁওতালি যাত্রার ঘোষনা করা হচ্ছে। মেলা থেকে একটু দুরে হাঁড়িয়া বিক্রি করতে বসেছেন মধ্য বয়সী মহিলার দল। হাঁড়ির মুখে গামছা বেঁধে বাসি ভাত ঘষেই চলেছে তাঁরা। সন্ধ্যা গড়ালেই বাড়বে বিক্রি বাটা। জুয়ার চরকি ঘুরছে বনবন। হাব্বাডাব্বার কৌটায় নড়ছে ঝান্ডি, মুন্ডি, চিড়িয়া আর কাফান।
জাগছে সেঙ্গল! অরণ্য আর আদিবাসী উৎপাটনের হুংকার : নরেশ জানা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : পরিবেশ | ১৫ জুন ২০২৪ | ১০১৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
২০১৮-র ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে সরকার জানায় যে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে মোট ২০,৩১৪.১২ হেক্টর বনভূমি কর্পোরেট সংস্থার হাতে খনিজ পদার্থ উত্তোলনের জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও আদিবাসীদের আন্দোলন, গ্রামসভা গুলির আপত্তি ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে কর্পোরেট সংস্থাগুলোর পক্ষে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছিল, বিশেষ ছত্তিশগড়ের গভীর অরণ্য বেষ্টিত আদিবাসী জনজাতি নির্ভর এলাকাগুলিতে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে বিজেপি। এখানেও কায়দা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বিজেপির আদিবাসী নেতা বিষ্ণু দেও সাই কে। ২০২৪ ডিসেম্বর মাসে শপথ নেন তিনি আর জানুয়ারি থেকেই গৌতম আদানির কোম্পানি শুরু করেছে নির্বিচার অরণ্য নিধন।
জাগছে সেঙ্গল! বিনাশের মুখে ভারতের জীব বৈচিত্র্য : নরেশ জানা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : পরিবেশ | ২৫ জুন ২০২৪ | ১১৯৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
হাসদেও অরন্য বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতির (HABSS) আহ্বায়ক, যিনি সবুজ রক্ষার লড়াইয়ে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছেন সেই ‘গোল্ডম্যান’ বা ‘গ্রীণ নোবেল’ পুরস্কার প্রাপক অলোক শুক্লা বলেছেন, “হাসদেও-আরন্দ বনাঞ্চলের হাতিদের জন্য একটি মুক্ত কারাগার উপহার দিতে চলেছে সরকার ও আদানি গ্রুপ।” কেন এটা বলছেন তিনি? তাঁর যুক্তি, রাজস্থান বিদ্যুৎ উৎপাদন নিগম যা কিনা আদানি গ্রুপ পরিচালনা করে তারা ‘পারসা ইস্ট ও কাঁটা বাসন’ কোল ব্লকের জন্য বরাত পেয়েছে। এরজন্য ৪ লক্ষ গাছ কেটে ফেলা হবে। ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার গাছ কাটা হয়ে গেছে। অনতি বিলম্বে কাটা পড়বে আড়াই লক্ষ। হাতিরা যাবে কোথায়? শুক্লা বলেছেন, “হাসদেও অরণ্যের পূর্ব দিকে আগে থেকেই একটি কয়লা খনি আছে। দক্ষিণ পূর্বে শিল্প শহর কোরবা। দক্ষিণ পশ্চিমে হাসদেও নদ। বাকি রইল পশ্চিম এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত যেখানে আদানি গ্রুপ কয়লা খনির জন্য গাছ কাটতে শুরু করেছে।”
ভারতীয়তার আড়ালে ফিরছে পরাধীন আমলের কালা কানুন : নরেশ জানা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০১ জুলাই ২০২৪ | ১৪৪৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
এবার আমরা দেখে নেই কিভাবে চালু হতে যাওয়া নতুন আইন বিধিতে পুলিশ রাজ কায়েম করা হয়েছে। একটা উদাহরণ নেওয়া যাক, ভারতীয় সংবিধানের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে বাক স্বাধীনতা, সভা, সমিতির অধিকার দেওয়া হয়েছে। সরকারের সমালোচনা করার অধিকার রয়েছে। এই দিকে নজর রেখে সুপ্রিম কোর্ট বারবার ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ আইন বাতিল করতে বলেছে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলেছেন, সরকারের বিরোধিতা মানে রাষ্ট্রের বিরোধিতা নয়। পুরানো আইন অর্থাৎ আইপিসি ১২৪(এ) ধারায় স্থগিতাদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন কাউকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত করা যাবেনা। কিন্তু নতুন আইন অর্থাৎ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৫০ ও ১৫২ ধারায় কৌশলে রাষ্ট্রদ্রোহ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এই নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যদি কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃতভাবে বা জেনেশুনে বক্তব্যে অথবা লিখিত, বা সাংকেতিক চিহ্ন দ্বারা, বা দৃশ্যমান উপস্থাপনা দ্বারা, বা বৈদ্যুতিন যোগাযোগ দ্বারা, অথবা আর্থিক উপায় ব্যবহার করে বা অন্যভাবে উত্তেজিত বা উত্তেজিত করার চেষ্টা করে যাতে বিচ্ছিন্নতা বা সশস্ত্র বিদ্রোহ বা নাশকতামূলক কার্যকলাপ, বা কেউ যদি বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে উৎসাহিত করে যার দ্বারা ভারতের সার্বভৌমত্ব বা একতা বা অখণ্ডতাকে বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় তবে তা উক্ত ধারায় শাস্তি যোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে শাস্তির যেখানে আগে নূন্যতম ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন ছিল তা নতুন আইনে নূন্যতম ৭ বছর থেকে যাবজ্জীবন করা হয়েছে।