ভোট দেব কোনখানে : তাপস দাশ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৯ মে ২০১৪ | ৯২৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
একাধিক ভোটের কাউন্টিং এজেন্ট হওয়ার সুবাদে দেখেছি, ব্যালটের পেছনে ভোটার নিজের বাতিল ভোটের সম্পক্ষে যুক্তি লিখে এসেছেন, কিম্বা সিম্পল খিস্তি l বাতিল ভোট তখন একটা বেশ ভালো পার্সেন্টেজ পেত l ইভিয়েম সে সুযোগ থেকে নাগরিককে বঞ্চিত করেছিল l একসঙ্গে দুটো বোতাম টেপা যেত না l টিপলেও ফ্র্যাকশন অফ সেকেন্ডের ফারাক বুঝতে পারত মেশিন আর প্রথম ভোটকে কাউন্ট করত l ২০১৪র ভোট এদিক থেকে জরুরি হয়ে উঠেছে l এই প্রথম ভারত দেশ না-ভোটের অধিকার দিয়েছে l একটা স্টেপ যাকে অস্বীকার করে আর থাকা যায়নি l কিন্তু রাইট টু রিকল নেই, এখনো l আর এখনো বুঝে উঠতে পারিনি যে কী করে আমার সব সামাজিক ইস্যুর প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেন একজন ব্যক্তি – পাঁচ পাঁচ বছরের জন্যে l আমার প্রতিটি রিয়াকশন কী ভাবে পৌঁছয় একজন প্রতিনিধির কাছে ! আর যাঁরা মনে করেন, যে ন্যূনতম হলেও পৌঁছয় – একজন প্রতিনিধি অন্তত থকা জরুরি – তাঁদের কাছেও আমার জিজ্ঞাসা – এই প্রতিনিধিরা সর্বোচ্চ স্তরে যাওয়ার আগে কিম্বা পরে এমন লেভেলের ব্যক্তিগত আক্রমণে যান, যে তাঁদের দেউলিয়া মনে হতে থাকে l এঁদের ঠেকাতে তখন আবার পুলিশ লাগে কিম্বা কমিশন – যারা আবার সকাল সাড়ে ৯ টায় সেন্ট পার্সেন্ট পোলিং হয়ে গেলেও বলতে থাকেন – ভোট হয়েছে যথাযথ l আর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়ে একজন আরেকজনের বক্তব্যই শোনেন না l শুধু তাই নয় – খিস্তি করেন, মারামারি করেন, এবং তাঁদের মারামারি ঠেকাতে বারের মত বাউন্সার লাগে, যাদের নাম হয় মার্শাল l এঁরা এ-ও জানেন যে এঁদের সমস্ত কীর্তি কলাপ টিভিতে দেখা যাচ্ছে – লাইভ l কিন্তু এঁরা একই সঙ্গে এ-ও জানেন যে ভোটারদের সঙ্গে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে গেছে l যে ভোটারদের নিয়ে প্রতিনিধি মিছিল করেন বা করতে চান l ক্রমশ মানুষ ও মিছিল আলাদা হয়ে যায়।
ট্রিবিউট টু হলধরস্ : তাপস দাশ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৮৪৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
আপনি নাটক করলে লোক না হলে, টিকেট না বিক্রি হলে দর্শক তৈরি নয় বলে গাল না দিয়ে আয়নার সামনে প্র্যাকটিস করে দেখুন, আপনার না মাইরি ওটা হচ্ছে না l মানে নাটকটা l ফিরে যান, টু দ্য বেসিক, ফিরের থেকে শুরু করুন, লেগে থাকুন, হাল চাষুন, হলধরদের মত, দলকে পাপড়ি হিসেবে দেখুন, দলবাজির ক্ষেত্র নয়, দেখবেন, আপনার সীমিত ক্ষমতা নিয়েও আপনি কিছুদূর যেতে পারবেন l কিছু্দূর, কেননা যদি আপনি বয়স্ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি সেই সোনার সময়টা ফেলে এসেছেন, যখন দিনে ১৫০০ স্কিপিং করে নাট্যতত্ত্ব পড়ে মহলায় যাওয়া আর সম্ভব নয়, শরীর দেবে না, আপনিও তো জানেন যে দেহপট সনে নট সকলি হারায় l মন খারাপ করবেন না, মন ভালো করুন, ভালো নাটক করার চেষ্টা করুন, দেখবেন আপনার নাটকেও একটু একটু করে লোক হবে l টিকেট কেটেই লোকে নাটক দেখবে l খিস্তি করতে হবে না l
কুড়ি কুড়ি বছরের পর : তাপস দাশ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২১ আগস্ট ২০১২ | ২৯৩২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫০
২০ বছরে কিছু পাল্টালো কি? সেদিন একটা বড় কাগজ জনমত নির্ধারণের চেষ্টা করত, আজ করে অনেকগুলো গণমাধ্যম। জনতা কি পুরোটাই এর পিছনে দৌড়ে বেড়ায়? না। একটুও কি প্রভাবিত হয় না? হয় নিশ্চয়। তবু, বয়স আমার, তোমার এবং সবার মুখের রেখায় ত্রিকোণমিতি শেখায়, এস, আমরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ত্রিকোণগুলোর কৌণিক পরিমাপগুলো করার চেষ্টা করি, পুরোটা সম্ভব হবে না জেনেও।
চিনি আর বোঝার চেষ্টা করি মম চিত্তে শিলাদিত্যের স্রষ্টাকে.. হ্যাঁ, ওটাই আমার এখনকার রিং টোন। আজ বিশে আগস্ট, দুহাজার বারো। আঠারো বছর আগে, সুমনের জন্যে কোমরে রিভলভার তুলেছিলাম, ব্যস্ত মফস্বলের দিন দুপুরে, ওরা সুমনকে মারবে বলেছিলো, আমাদের অর্গানাইজ করা সুমনের প্রোগ্রামে। ছ ঘরা। দেশি। খুব রিস্কি। সুমন জানতেন না। আজও জানেন না।
তখনো আমাদের স্বপ্ন দেখার কাল শেষ হয়নি, যদিও জেনে যাচ্ছি যে এ রাজনীতির গোলকধাঁধা থেকে বিপ্লব বেরবে না। কিন্তু তবু স্বপ্ন দেখছি, কেন না জেনে গেছি, ‘অন্ধকারের তবু আছে সীমানা’।
আইনের শাসন কতটা বাস্তবসম্মত? : তাপস দাশ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৮ অক্টোবর ২০২০ | ৩৬২২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
মৃত্যুদণ্ড বা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড, এসব অপরাধ কমাতে কতটা কার্যকর, সে পৃথক তর্কে না গিয়েও এই যে তাৎক্ষণিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা, তা কোনও আইন বা সংহিতা (কোড)গ্রাহ্য হতে পারে না। আইনের রাস্তায় কোনও অপরাধ প্রমাণে সময় লাগে, তা সে যত ন্যূনতমই হোক না কেন। এখন একটা সওয়াল প্রায়শই ওঠে, যে এই তাৎক্ষণিক শাস্তিদানের আকাঙ্ক্ষা আসলে বিলম্বিত বিচারের অতিপ্রতিক্রিয়া।
বাংলা সংবাদ সম্পাদনার ক্রমাবনতি ও ক্রমবিকার : তাপস দাশ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ৪৬২৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
মধ্যমানের ও তুলনামূলক কম অভিজ্ঞ কর্মী নেওয়ার একটা বিশেষ সুবিধাও রয়েছে। তা কম খরচসাপেক্ষ। একটু কম দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী নিয়োগ করা এবং নির্ভুল হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা না-রাখা, অনেকটা খরচ বাঁচায়। এর ফলে অত্যুচ্চপদস্থ উপরওয়ালা, কম লগ্নির মাধ্যমে আরও একটি আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবসা সম্প্রসারণ ঘটিয়ে দিয়ে তস্য উপরওয়ালার সুনজরে থাকতে পারেন এবং নিজস্ব উচ্চ বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধার রক্ষাকবচ বজায় রাখতে পারেন। আরও একটি দৈনন্দিন সুবিধাও এর ফলে ঘটে। কম দক্ষতাসম্পন্নরা অনেক বেশি ইয়েস ম্যান গোত্রের হয়ে থাকেন। তাঁদের তর্ক করার প্রবণতা কম থাকে, যে তর্ক একদা নিউজরুমকে জাগরূক রাখত।