অন্য " কুয়োতলা" : ঈশানী রায়চৌধুরী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ১১৮৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৯
এমনকি এই যে আমাকে আর ভাইকে নিয়ে ছড়া লিখেছে কত , কিন্তু মনেই পড়ে না , বাবার কাছে বসে ছড়া শুনছি ঘরে বসে | আর এমনিতে যদি কবিতা পাঠের কথা বল ,সে তো অজস্র | কবিতার আসর , সাহিত্যবাসর লেগেই থাকত | অনেক কবিতা পড়ত সেখানে | শুনে শুনে আমার যে কত কবিতাই মুখস্থ !
-- ছড়া ? বা: ! আচ্ছা, কবিতায় ছন্দ নিয়ে কিছু বিশেষ মতামত ছিল ?
--অবশ্যই ! বাবা প্রায়ই লিখেছে , ‘ ছন্দে লেখো আগে | পরে ছন্দ ভাঙার খেলা’ | এই যে সবাই কবিতা লেখে ; ছন্দের ছাঁকনি খুব দরকার | ওই ছাঁকনি ব্যবহার করলেই অ-কবি রয়ে যাবে ছাঁকনিতে আর কবিরা স্বতন্ত্র হয়ে বিরাজ করবেন | তখন সেই সব কবিদের মধ্যে আবার মূল্য নির্ণয়ন করা যাবে…কে কত উজ্জ্বল | এই তো, শান্তিনিকেতনে হয়েছিল ..কবিতা লেখার ক্লাস | সে কী উত্তেজনা | ছেলেপুলেরা লিখছে , বাবাকে দেখাচ্ছে, পড়ে শোনাচ্ছে | বাবা মাত্রা মেপে ঠিকঠাক করে শিখিয়ে দিচ্ছে | বাবা বলত , ' ছন্দ গড়তে শেখার পর…. বুঝতে পারবে | ওই যে সেই খুব চেনা কথা ক'টি ….বাবাই লিখেছিল , ' ভাঙা ….গড়ার চেয়েও মূল্যবান কখনো সখনো ' .. |
কোভিড-১৯ ও লকডাউনঃ প্রতিবন্ধকতার একটি ভাষ্য : ঈশান চক্রবর্তী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ মে ২০২০ | ২৭৩৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
এই লকডাউন ভারতবর্ষ তথা সারা পৃথিবীর অর্থনীতিকে কি সাংঘাতিকভাবে আহত করেছে এবং করে চলেছে, সে সম্পর্কে খবর প্রায়ই পাচ্ছি। কিন্তু যে দেশে প্রতিবন্ধকতা দারিদ্র্যের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলে, যে দেশে প্রতিবন্ধী মানুষদের একটা বড় অংশ অ-সংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন, সে দেশের আর্থিক বিপর্যয়ের বিশ্লেষণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবন্ধী মানুষদের কথা সেভাবে উঠে আসছে কই? ভাতা ও রেশনের চালের কিছু ব্যবস্থা করা হলেও ব্যক্তিগত যোগাযোগের সূত্রে জানতে পারছি যে আমাদের চারপাশের বহু প্রতিবন্ধী মানুষই হয় তার আওতায় পড়েন না, অথবা সেসব ন্যায্য পাওনা এখনও তাঁদের হাত অব্দি এসে পৌঁছয় নি। তবে এইসব বড় কথা থাক। আমার মত সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্যের আন্তঃসম্পর্ক বিষয়ে কথা বলা বা ভারতবর্ষের প্রতিবন্ধী মানুষদের গোটা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা চূড়ান্ত ধৃষ্টতা বই কি!
১৫ পার্ক অ্যাভিনিউ : ঈশান
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সিনেমা | ০১ মার্চ ২০০৭ | ৪৬৩ বার পঠিত
ফিল্মটি অতি সিম্পল। কোনো বিপজ্জনক খাঁজ টাজ নেই, যা দেখে টলে যেতে পারে মানবশরীর। এবং সরলতাই ইহার বিউটি। একগুচ্ছ পুরুষ ও মহিলা চরিত্র নিয়ে গড়ে উঠছে আখ্যান, যাদের কারোরই কোনো গন্তব্য জানা নেই। আছেন প্রেসিডেন্সি কলেজের এক বিদগ্ধা অধ্যাপিকা, যিনি সারাদিন ইংরিজিতে কথা বলেন। এছাড়াও তিনি ডিভোর্সি এবং বয়ফ্রেন্ড বিদ্যমান, কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে তিনি আমেরিকা যাবেননা বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অতএব প্রেম আছে ও পরিণতি নেই। আছেন এক ডাক্তারবাবু যিনি প্রচন্ড ব্যস্ত হলেও রোগির দিদির সঙ্গে ডিনারে প্রচুর সময় কাটান, হুট করে ব্রেক নিয়ে চলে আসেন শৈলশহরে, রণ ও বন থেকে রোগিনীর দিদিকে উদ্ধার করবেন বলে। পরিষ্কার বোঝা যায় ছিপ ফেললেও মাছ তিনি ধরবেননা, কারণ বাড়িতে আছে না ছুঁই পানি বৌ। এখানেও প্রেম আছে কিন্তু হাফসোল নাই। আর আছে এক লালুভুলু প্রেমিক, মানসিক রোগগ্রস্তা প্রেমিকাকে দশ (নাকি বিশ?) বছর পরে দেখে তিনি বৌ-বাচ্চা ফেলে তার সঙ্গে সময় কাটান। এবার যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা প্রেম নয়, অতএব তারও কোনো গন্তব্য নেই।
তসলিমা নাসরিন, এবং আরো কিছু কথা : ঈশান শর্মন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০১ জানুয়ারি ২০০৫ | ৮২৩ বার পঠিত
তসলিমা নাসরিনের নাম প্রথম শুনি নির্বাচিত কলাম বইটির সুবাদে। কানে আসে বইটি চূড়ান্ত র্যাডিক্যাল এবং সারা বাংলাদেশে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কি এমন নতুন কথা লিখেছেন ঐ মহিলা, জানার আগ্রহে প্রায় দ্রুতপঠনের তৎপরতায় শেষ করে ফেলি নির্বাচিত কলাম, এবং, বলতে দ্বিধা নেই, বেশ হতাশই হই। গোটা বইটিতে এমন একটিও নতুন ধারণা খুঁজে পাইনি, যা ইতিপূর্বে বিভিন্ন নারীবাদী আখ্যানে বহুচর্চিত নয়। অবশ্য এরকমই হবার কথা, কারণ লেখাগুলি সংবাদপত্রে কলাম হিসাবে প্রকাশিত।
উৎসবের না দেখা দিক : ঈশান চক্রবর্তী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ | ৩৬৭৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ততক্ষণই মাথা ঘামাব, যতক্ষণ তা সেলেবল, এবং যতক্ষণ তা টোকেনিজমের গন্ডীর ভেতরে থাকে- উৎসবের প্রাঙ্গনে এর চেয়ে বড় বৈষম্য আর কী হতে পারে? যাক্, যেকথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, "অন্যরকম পুজো" বা চলতি কথায় নিউ নর্মালের পুজো, অনেক নেই-এর পুজো -এ আমাদের, প্রতিবন্ধী মানুষদের বাৎসরিক অভিজ্ঞতা।
ভাষাদিবসের বিশেষ: "অনেকেরই বলার সময় - খেয়াল থাকে না" : ঈশান চক্রবর্তী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৩৮৫৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
বিশেষভাবে সক্ষম, ভিন্নভাবে সক্ষম বা "দিব্যাঙ্গ" —এর মধ্যে তো প্রকাশ পায় প্রতিবন্ধী মানুষদের এক উঁচু পেডেস্টালে তুলে দেওয়ার মনোভাব। প্রতিবন্ধীমাত্রই তার কিছু বিশেষ ক্ষমতা, ভিন্ন ক্ষমতা, দৈব ক্ষমতা ইত্যাদি থাকতে হবে। কারো যদি তেমন ক্ষমতা থাকে থাকুক, আপত্তি নেই, আমার তো নেই। হলফ করে বলতে পারি, অধিকাংশ প্রতিবন্ধী মানুষদেরই তেমন কোনো দৈব ক্ষমতা নেই। তবে কেন এই চাপিয়ে দেওয়া বিশেষণ?