এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • দেখো, আমি পড়ছি মাম্মি!

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৮১ বার পঠিত
  • দেখো, আমি পড়ছি মাম্মি…..!

    অনেক দিন পর মিতুলকে নাগালের মধ্যে পেয়ে মনটা বেশ খুশিতে ভরে উঠল। আজকাল বরিষ্ঠ মানুষের ধারেকাছে কেউ সেভাবে ঘেঁষতে চায়না পাছে বাড়তি কিছু জ্ঞান হজম করতে হয়, তার ওপর যদি জানতে পারে যে, মানুষটি কোনো এক সুদূর অতীতে ইস্কুলে মাস্টারি করেছে , ছাত্র ঠেঙিয়ে সোজা করেছে তাহলে তো সোনায় সোহাগা ! একটু আসছি বলে সেই যে ত্রিসীমানার বাইরে যাবে, ফিরবে না আর সেখানে। এটা অবশ্য আমার টক ঝাল অভিজ্ঞতা, ফিরে এসে যদি কিছু জানতে চায় তাহলে জানবেন আপনি মহা ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী। সে যাই হোক,মিতুলকে তার স্কুলের কথা, পড়াশোনা, ব‌ইপত্রের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে যা উত্তর দিল তাতে খানিকটা দমে গেলাম। কেন ? একটু খুলে বলার চেষ্টা করি।

    চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে মিতুলকে বললাম, যা তো নাতনি, তোর্ …..ল ব‌ইটা একটু নিয়ে আয়‌ ।দেখি তোদের কী পড়ায়?ব‌ই আনতে বলায় মিতুলের চোখে মুখে বেশ অস্বস্তি ফুটে ওঠে। তা দেখে প্রশ্ন করি , কী হলো? মিতুল এবার তারস্বরে হাঁক পাড়তে থাকে – মা , মা। আমাদের…. ল ব‌ইটা একটু এনে দাওতো। মনে মনে ভাবি, কি এমন দুর্লভ বস্তু চেয়েছি? যাইহোক মেয়ের উদাত্ত আহবান শুনে হেঁসেল থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসে মিতুলের মা পুতুল। খানিকটা বিরক্ত হয়েই রাগত কন্ঠে মেয়েকে বলে - একটা জিনিস যদি গুছিয়ে রাখতে পারিস্? আমার হয়েছে যত জ্বালা! – গজগজ করতে করতে ইদিক ওদিক খানিক হাতাহাতি করে ,ব‌ইটা না পেয়েই পুতুল রাণী রান্নাঘরে ফেরত যায়। পরিস্থিতি খানিকটা বাগে আসতেই মিতুলকে জিজ্ঞাসা করি – তোরা কি টেক্সট বই পড়িস্ না? তাহলে পড়ার কাজ চলে কী করে? মিতুলের মুখে এবার নিরাপদ হাসি ফুটে ওঠে। সে বেশ আপ্লুত হয়ে উত্তর দেয় – শুধু আমি নই, আমাদের কেউই এখন আর অত পরিশ্রম করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ব‌ই ঘাটেনা। আমরা সবাই এখন ইউ টিউব দেখে পড়ি। ক্লাসে ম্যাডাম‌ও কখনো কখনো ভালো ভালো রেলেভেন্ট ভিডিও আপলোড করতে বলেন। ব‌ইয়ের চেয়ে সেগুলো অনেক বেশি attractive, precise and picturesque. We enjoy them very much.” এই বলেই সে তার হাতে থাকা স্মার্টফোনটিকে চালু করে একটা ভিডিও আমার সামনে মেলে ধরে। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাহাতে নয়ন মেলিয়া ধরি।

    মহামারীর কাল আমরা হয়তো খাতায় কলমে পার হয়ে এসেছি, কিন্তু এখনও তার দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিফলগুলো আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রকে সমানে প্রভাবিত করে চলেছে। করোনা অতিমারী কালে আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাযাপন সম্পূর্ণভাবে এলোমেলো হয়ে যায় , বিশেষ করে দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে থাকা প্রাথমিক ও উচ্চতর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় কেন্দ্রিক পঠনপাঠনের সুযোগ সে ভাবে পাইনি। এই অবকাশে গোটা ব্যবস্থাপনাই কব্জা করে ফেলে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার নির্ভর ভার্চুয়াল শিখন শিক্ষণ ব্যবস্থা। মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে আমাদের কিশোর কিশোরী পড়ুয়ারা যেন নতুন এক জীবনের আস্বাদ পেল। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের বেড়া ভেঙে তাদের মন ছুটলো এক পরম রোমাঞ্চকর জগতে। আমরাই তাদের শেখালাম এই নতুন টেক্ নির্ভর শিখন ব্যবস্থার সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে, কীভাবে নতুন নতুন বিদ্যায় ভরে নিতে হবে নিজেদের ঝুলি। সরকার দাঁড়িয়ে গেল পাশে। পড়ুয়াদের কাছে ট্যাব পৌঁছে দেবার মতো প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু হলো জোরকদমে। অতিমারীর কালো ছায়া খানিকটা ফিকে হলেও ছেলেপিলেদের মন আর ক্লাসরুমের ঘেরা চৌহদ্দিতে ফিরতে চাইলো না।

    একথা মানতে হবে ক্লাসরুমের চিরাচরিত চক আর টক নির্ভর পাঠদান পদ্ধতি সময়ের সাথে সাথেই তার গরিমা হারিয়েছে অনেককাল আগেই। ব্ল্যাকবোর্ডে আঁক কেটে বিষয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় ঘটিয়ে দেবার ক্ষেত্রেও অনেকের অনীহা রয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই যে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে অনেকেই পঠনপাঠনকে কী করে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হয়, সেই বিষয়ে গভীরভাবে কখনোই ভাবিনি। ফলে আমাদের শিক্ষায় প্রাণসঞ্চারের কাজটা অসম্পূর্ণ‌ই রয়ে গেছে। এই ধারার ব্যতিক্রম কি নেই? অবশ্যই আছে, তবে ব্যতিক্রমকে তো নিয়ম বলে মেনে নেওয়া যায় না। প্রাথমিক সমস্যাগুলোকে কাটিয়ে ট্যাব কেন্দ্রিক পঠনপাঠনে আমাদের শিক্ষার্থীরা আজ অনেকেই হয়তো অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, কিন্তু টেবিলের ওপর ব‌ই খুলে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ব‌ই পড়ার রীতি আজ আর তাদের মধ্যে ফিরে আসেনি। প্রযুক্তি এখন আমাদের শ্রমকে অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। জেরক্স মেশিনের কল্যাণে এখন যে কোন লেখা নিমেষেই কপি করে নেওয়া যায়। সান্ধ্য পাঠশালার থেকে পাওয়া স্টার চিহ্নিত মহার্ঘ্য মূল্যবান নোটস্ এভাবেই হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ে। ইন্টারনেটের কল্যাণে এখন সব কিছু হাতের মুঠোয়। তাহলে ব‌ইয়ের দরকার র‌ইলো কোথায়? এভাবেই বিদ্যা তরঙ্গ বিদ্যুতের মতো ছড়িয়ে যায়। পশ্চিমের দেশগুলোতে এমন ব্যবস্থা বহাল রয়েছে অনেক আগে থেকেই। করোনার হাতে হাত রেখে এখন আমাদের দেশেও এর চল বাড়ছে। নেট দুনিয়া ছেয়ে গেছে অসংখ্য এডু লার্নিং ভিডিওতে। তাই কদর কমছে ব‌ই এবং গুরুমশাইদের। মিতুলের ব‌ই খুঁজে না পাওয়াটা কাকতালীয় ঘটনা নয়, বলা যায় এটাই এই সময়ের জনপ্রিয় ধারা। চিরাচরিত নিয়ম মেনে ব‌ই, বিদ্যালয় ও বিচক্ষণ শিক্ষকদের ওপর এই সময়ের মিতুলদের নির্ভরতা ক্রমশই বুঝি কমছে। সেই শূন্যতা পূরণ করতে আসরে নেমে পড়েছে ই সম্প্রচারিত শিক্ষা ব্যবস্থাপনা।

    কথায় কথায় মিতুলকে প্রশ্ন করেছিলাম - স্কুলে তোর্ সবথেকে প্রিয় মিস্ কে? কার ক্লাস করতে খুব ভালো লাগে? আমার এই সহজসরল প্রশ্ন শুনে একালের পাকা মাথার ডিপ্লোম্যাটদের মতো মিতুল বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে। আমি মনে মনে ভাবলাম আবার বোধহয় কিছু বেয়ারা বেফাঁস কথা বলে ফেলেছি। প্রশ্নটাকে একটু অন্য ভাবে বলি – তোর favourite teacher কে ? এবার মিতুল মুখ খোলে। বলে - তোমার হয়তো শুনে খুব খারাপ লাগবে, but still I am sorry to say that we don't listen to our teachers. একজন,দুজন বাদে ওনাদের কেউই যা পড়াচ্ছেন তাকে আমাদের মনে গেঁথে দিতে পারছেন না। আমরা এখন abstract teaching পছন্দ করি না। আমরা সবাই চাই বিষয়টাকে আমাদের সামনে ভিস্যুয়ালাইজ করা হোক, কিন্তু কোথায় কী? সবাই stereotyped । তাই ক্লাসের পড়ায় আমাদের মন বসেনা। কাঠের পুতুলের মতো আমরা চুপচাপ বসে থাকি।হৈ চৈ তো আর করতে পারিনা। মিতুলের কথা শুনে মনটা আবার নতুন করে নাড়া খায়। ভাবতে বসি নিজে নিজেই।

    শুধু একালের নয় শিক্ষার্থীদের কাছে গোটা বিষয়টাকে দৃশ্যমান করে তোলার তাগিদ কিন্তু চিরন্তন। বেশ মনে পড়ে, আমাদের বাংলা পড়াতে এসে মাষ্টারমশাই প্রমথ চৌধুরীর লেখা বিখ্যাত মন্ত্রশক্তি গল্পটা এমনভাবে পড়েছিলেন যে আমরা সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে স্যারের সেই পাঠ শুনেছিলাম গোটা ক্লাসের সময় ধরে। তাঁর বাচনভঙ্গির মাদকতায় আমরা সবাই মোহিত। ঈশ্বর পাটনী, হেদাৎউল্লা ,মনিরুদ্দি নায়েব মশাই আর অন্যান্য লেঠেলরা সবাইকে এক ঠাঁয়ে এনে সেদিন হাজির করেছিলেন কেবলমাত্র স্বরক্ষেপণের জাদুকরীতে। সে কাল গিয়েছে চলে পাঁচ পাঁচ দশকের পার। সেকালে তো আর হাতে হাতে মুঠোফোন ছিলনা, ছিলনা ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ কম্পিউটার। সাহিত্যের মাস্টারমশাইদের অন্যতম অস্ত্র ছিল কন্ঠস্বর ও বাগ্মীতা। ঐ অস্ত্রেই আমরা ঘায়েল হতাম। একালে তো আয়োজনের ছড়াছড়ি।এ বলে আমাকে দেখ্ তো ও বলে আমায়।

    কীভাবে পাঠ্যবিষয়কে ক্লাস ঘরেই দৃশ্যায়িত করা সম্ভব তাই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। এক্ষেত্রে তথাকথিত বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের বাড়তি সুবিধা আছে। স্কুলের বীক্ষণাগার থাকলে তাকেই কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু এমন অনেক ছোট খাট বিষয় আছে যার জন্য ল্যাবরেটরির তেমন প্রয়োজন হয়তো নেই। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় নিখরচায় অনেক অনেক শিক্ষা উপকরণ নিজেরাই তৈরি করে নেওয়া যায়। প্রজেক্টের কাজ হিসেবে এগুলো ছেলেমেয়েরা তৈরি করে নিতে পারে। ওদের এভাবে কাজে লাগাতে পারলে অনেক অনেক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে খুব সহজে। শিক্ষার্থীরা যখন দেখবে তাদের ভাবনা, চিন্তা, মতামত, উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে স্কুল স্বীকৃতি দিচ্ছে তখন ওরাও আগ্রহী হবে।

    মিতুলকে এসব কথা বলতেই সে খুব খুশি হয়। নিজেই বলে ওঠে – আমরা তো সবাই চাই আমাদের ক্লাসগুলো আরও entertaining হয়ে উঠুক। আমরা যেন নতুন নজরে সবকিছুকে দেখতে, বুঝতে ও ভাবতে পারি। মিতুলকে সেই পুরনো চীনা প্রবাদের কথাটা বলি –

    I listen and I forget .

    I see and I remember.

    I do and I understand.

    মিতুল উচ্ছসিত হয়ে উঠে বলে – কি সহজ অথচ কি সুন্দর কথা! একটু দাঁড়াও আমি লিখে নিই। Please, repeat once for me । ওর কথা শুনে আমারও উৎসাহ বেড়ে যায়। একবারের জায়গায় আমি তিনবার পাঠ করি বাক্যগুলো। মিতুল ও গলা মেলায় আমার সঙ্গে। আমি হয়তো এই মুহূর্তের অপেক্ষাতেই ছিলাম এতক্ষণ।

    মিতুল এবার তার মা পুতুলকে ডাকে – মা দাদুর জন্য এক কাপ কফি বানাও। আমার‌ও একটু চাইইইইই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রাজীব দাশ | 202.142.***.*** | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৯540124
  • দাদা, দারুন লেখা। সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক আমার মেয়ে ও কোভিড এর সময় প্লে গ্রুপ এবং ল্যাপটপ এবং ক্লাস করতো। সুনেচি কিচু বিদেশী স্কুল ই ভিজ্যুয়ালিটেশন স্টাডি তে ফোকাস কোরা হয়।
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:107f:e0c7:8000::***:*** | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:১১540125
  •  বড় একটা সমস্যা তুলে ধরেছেন।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পড়ানোর ধরনে পরিবর্তন আনা জরুরি এটাও মানি।কিন্তু শেখার অন্তর্লীন আনন্দকে ছাপিয়ে প্রকরণে সর্বদা ' এন্টারটেইন ' করতে হলে সমস্যা। লার্নিংপিছনে চলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
  • পৌলমী | 2405:201:8000:b11b:6178:23fc:4c2c:***:*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৩540145
  • আবারও এক নতুন ভাবনার খোরাক জোগালেন লেখক। প্রযুক্তি নিশ্চয়ই প্রয়োজন, কিন্তু তা বলে ক্লাসের পঠনপাঠন অর্থহীন হয়ে যাবে? এনলাইটমেন্টের কাজটাতে যদি শিক্ষার্থীরা এন্টারটেইন্ড হয় তাতে খুব সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে হয় না। 
  • #:+ | 2405:201:8000:b11b:6178:23fc:4c2c:***:*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৪৬540147
  • মিতুলের কথা পড়ে খুব মজা যেমন পেলাম তেমনি ভাবনাও হচ্ছে এই সময়ের পঠনপাঠন নিয়ে। ইউটিউব থেকে পড়ছে!!! ভাবলেই শরীর কেমন ঝিমঝিম করছে। হয়তো সেকেলে মানুষ বলেই এমন অনুভূতি।
  • অভ্রদীপ | 2409:40e0:105c:9458:ca4:cfff:fed0:***:*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৫৬540148
  • খুব সময়োপযোগী লেখা দাদা। সময়ের সঙ্গে শিক্ষার মাধ্যমগুলোতে আকাশপাতাল পরিবর্তন এসেছে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই। শেষ লক্ষ্য তো শিক্ষালাভ, তা সে যেভাবেই হোক না কেন। অনলাইন শিক্ষা আর স্কুলের শিক্ষা উভয়েরই উপযোগিতা আছে। অনলাইন ক্লাসে যেভাবে দৃশ্যায়ন করে, ভেবেচিন্তে গুছিয়ে ক্লাসের ভিডিও তৈরি করা সম্ভব সেটা ইস্কুলের ক্লাসঘরে করা খুব কঠিন। আবার ইস্কুলের ক্লাসে যেভাবে সরাসরি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সন্দেহ নিরসন করা যায় সেটা অনলাইনে মুশকিল, একটা ব্যবধান থেকেই যায়। শিক্ষার যথার্থ মূল্যায়নের জন্যও ইস্কুলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অনলাইনে বিকল্প ক্লাসের সংখ্যা অসংখ্য, একজনের কাছে না বুঝলে অন্যের কাছে যাও। কতো আর বই কেনা যায়? কিন্তু আবার বই পড়ায় একাগ্রতা বজায় রাখা অনেক সহজ, অনলাইনে মন বিক্ষিপ্ত হওয়ার হাতছানি চারিদিকে। চিত্রায়নের মাধ্যমে পড়ানো হলে শেখা সহজ ও দ্রুত হয়। আবার বই পড়ে নিজের প্রচেষ্টায় কল্পনায় সেই চিত্রাঙ্কন করতে পারলে সেই শেখার আনন্দ অনির্বচনীয়, সেই শেখা ভুলে যাওয়াও কঠিন। ধীরে ধীরে সকল ইস্কুলের ক্লাসে প্রজেক্টরের মাধ্যমে অনলাইনের মেটিরিয়াল আর বাগ্মিতার যথাযথ মেলবন্ধন ঘটবে সেটা আশা করাই যায় এই ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার যুগে।
  • সুবীর ভট্টাচার্য | 2401:4900:1c84:eb0d:6c92:8697:6107:***:*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৫540149
  • নতুন ধরনের শিক্ষা উপকরণের জন্য শিক্ষকের কাজ কিন্তু কমে যায় না। হয়তো অনেকে মনে করেন যে ইউটিউব থেকে কোন বিশেষ পাঠ অংশ ছবির মাধ্যমে দেখানোয় শিক্ষকের কাজ কমে যাওয়া। তা নয়, আমি অন্তত মনে করি না। শিক্ষকের বড় ভূমিকা বিষয়এর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংযুক্ত করা। সেটা যে উপায়েই হোক না কেন। বাচনভঙ্গি বা স্বরক্ষেপণের দক্ষতা সকলের হয়তো থাকে না। শিক্ষক হিসেবে তারা হয়তো ছাত্রছাত্রীদের মনেও সেভাবে জায়গা করে নিতে পারেন না। তবুও বিষয় সম্পর্কে তাদের প্রজ্ঞা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে সেটা পৌঁছে দেওয়ার আপ্রাণ প্রচেষ্টাকেও শ্রদ্ধা জানাতেই হয়। কিন্তু যদি আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি এবং টেকনোলজির সাহায্য নিয়ে বিষয়টিকে প্রাঞ্জল করে তোলা যায় তাতে অসুবিধা কোথায়। এখনকার সময়ে যারা এটা করছেন না বা করতে পারছেন না তারা তো ছাত্রদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন এটা মিতুলের কথাতেই স্পষ্ট।
  • sarmistha lahiri | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৩540181
  • পাঠ্যপুস্তকের কড়া বিষয় গুলি যখন মাথাটাকে গুলিয়ে দেয়
     তখন এই যন্ত্র মাধ্যমে তাকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় ,  বইকি, কিন্তু আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সেটা কতটা সম্ভব সেই  প্রশ্নটা থেকে ই যায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন