এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • আরজি কর - ময়নাতদন্তের ময়নাতদন্ত

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৩ অক্টোবর ২০২৪ | ১২৭৮ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৩ জন)
  • আপডেটে আসবে। কিন্তু অনেকেই জানতে চেয়েছেন, কেসটা কী। তাই আলাদা করেই লেখা যাক । তিলোত্তমার ময়নাতদন্ত হয় আরজি করে। আদৌ সেটা ঠিকঠাক হয়েছে কিনা এই নিয়ে খবরের কাগজ, নিউজ চ্যানেল ইত্যাদিতে অনেক 'খবর' বেরিয়েছে। দু-একদিন আগে এই 'খবর'ও বেরিয়েছে, যে, ময়নাতদন্তের সময় ম্যাজেস্ট্রেটকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগগুলো ভয়াবহ। বিচারব্যবস্থাও ঢুকে পড়ছে এর মধ্যে। তো, এর পরিপ্রেক্ষিতে জুনিয়ার ডাক্তারদের সই করা একাধিক 'নথি' ফাঁস হয়েছিল, যেগুলো সত্যি হলে, দেখা যাবে, গল্পটা সম্পূর্ণ আলাদা। সেই নথি অনুযায়ী, ময়নাতদন্ত নিয়ে জুনিয়ার ডাক্তাররাই কিছু দাবী করেছিলেন। সেগুলো মেনে, সেই মতোই ময়নাতদন্ত হয়। এবং তারপর তাঁরা তাতে "সন্তুষ্ট" বলে সইও করেছিলেন। এই ডাক্তাররা অনেকেই আবার আন্দোলনের মুখও, সেই নিয়েও আরও নথি বেরোয়। সেগুলো সত্যি হলে, দুটো ব্যাপার হতে পারে। এক, ময়নাতদন্ত নিয়ম মাফিকই হয়েছে ( পদ্ধতিগতভাবে। রিপোর্ট টিপোর্ট ঠিক আছে কিনা সে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বুঝে নেবেন)। কিন্তু সেটা জানা সত্ত্বেও জু-ডারা চেপে গেছেন। সব বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, এইটা নিয়ে নয়, এত প্রবল গুজব ভেদ করার কোনো চেষ্টাই করেননি। যা রহস্যজনক। অথবা অন্য একটা ব্যাপার হতে পারে, আসলে ময়নাতদন্ত নিয়মমাফিক হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট আসেননি, কাটাছেঁড়া হয়নি। অথচ সবাই বলেছেন, সব ঠিক ছিল, জুডারাও। সেক্ষেত্রে, এ এক বিরাট চক্রান্ত।
    তো, এই নিয়ে তিনদিন পরে, জুনিয়ার ডাক্তাররা গতকাল জানিয়েছেন, নথি জাল নয়। সই তাঁরাই করেছিলেন। পুরোটাই টিভি ক্যামেরার সামনে বলেছেন। ভুল বোঝাবুঝি এড়ানোর জন্য পুরোটাই তুলে দেওয়া যাক।
    "বিগত কয়েকদিন ​​​​​​​যাবৎ ​​​​​​​সোশাল ​​​​​​​মিডিয়াতে ​​​​​​​আরজি ​​​​​​​কর ​​​​​​​কলেজে ​​​​​​​ঘটে ​​​​​​​যাওয়া নারকীয় ​​​​​​​ধর্ষণ ​​​​​​​এবং ​​​​​​​খুনের পরিপ্রেক্ষিতে অভয়ার ​​​​​​​পোস্টমর্টেম ​​​​​​​রিপোর্ট ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​যে ​​​​​​​বিভ্রান্তিমূলক ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​ছড়ানো হচ্ছে, ​​​​​​​সেই ​​​​​​​ব্যাপারে ​​​​​​​আমরা ​​​​​​​দু-চার ​​​​​​​কথা ​​​​​​​সকলের সামনে ​​​​​​​রাখতে ​​​​​​​চাই। ​​​​​​​৯ ​​​​​​​আগস্ট ​​​​​​​আমরা ​​​​​​​প্রথমে খবর পাই, যে, ​​​​​​​চেস্ট ​​​​​​​ডিপার্টমেন্টের ​​​​​​​কর্মক্ষেত্রেই ​​​​​​​একজন ​​​​​​​সেকেন্ড ​​​​​​​ইয়ার ​​​​​​​পিজিটি ​​​​​​​সুইসাইড ​​​​​​​করেছেন। ​​​​​​​কিন্তু ​​​​​​​বেলা ​​​​​​​গড়ানোর ​​​​​​​সঙ্গে ​​​​​​​সঙ্গে ​​​​​​​আমরা ​​​​​​​জানতে ​​​​​​​পারি ​​​​​​​কেসটা ​​​​​​​সুইসাইড ​​​​​​​নয়। ​​​​​​​এটি ​​​​​​​একটি ​​​​​​​ধর্ষণ ​​​​​​​এবং ​​​​​​​খুনের ​​​​​​​ঘটনা। ​​​​​​​সেই ​​​​​​​সূত্র ​​​​​​​ধরেই ​​​​​​​আমাদের ​​​​​​​মনে ​​​​​​​সন্দেহ ​​​​​​​জন্মায়। ​​​​​​​সেই ​​​​​​​অবিশ্বাস ​​​​​​​এবং ​​​​​​​সন্দেহ ​​​​​​​থেকেই ​​​​​​​আমরা ​​​​​​​সমস্ত ​​​​​​​স্টুডেন্টরা ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​মর্টেম ​​​​​​​প্রক্রিয়া ​​​​​​​যাতে ​​​​​​​সুষ্ঠুভাবে ​​​​​​​হয় ​​​​​​​তার ​​​​​​​জন্য ​​​​​​​ম্যাজিস্ট্রেট ​​​​​​​ইনকোয়েস্টের দাবী ​​​​​​​রাখি। ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​মর্টেম ​​​​​​​প্রক্রিয়া ​​​​​​​হয় ​​​​​​​বিভিন্ন ​​​​​​​সিনিয়ার ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​মর্টেম ​​​​​​​বিশেষজ্ঞ ​​​​​​​ম্যাজিস্ট্রেট ​​​​​​​এবং ​​​​​​​বিভিন্ন ​​​​​​​সিনিয়ার ​​​​​​​পুলিশের ​​​​​​​তত্ত্বাবধানে। ​​​​​​​সেই ​​​​​​​প্রক্রিয়া ​​​​​​​ভালোভাবে ​​​​​​​সম্পন্ন ​​​​​​​করার ​​​​​​​সম্পূর্ণ ​​​​​​​দায়িত্ব ​​​​​​​বর্তায় ​​​​​​​ওনাদের ​​​​​​​উপরেই। ​​​​​​​বিভ্রান্তিমূলক ​​​​​​​যে ​​​​​​​পোস্টটি ​​​​​​​ছড়ানো ​​​​​​​হচ্ছে, ​​​​​​​তাতে (বলা হচ্ছে) ​​​​​​​পোস্ট মর্টেমে উপস্থিত ​​​​​​​জুনিয়ার ​​​​​​​ডাক্তারদের ​​​​​​​স্বাক্ষর ​​​​​​​রয়েছে। এ কথা সত্য। কিন্তু কোনোভাবেই পোস্টমর্টেমের স্বচ্ছতার দায়, জুনিয়ার ডাক্তারদের উপর বর্তায়না। কারণ, আমরা, আমাদের সীমিত জ্ঞান নিয়ে, ওই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের পক্ষ থেকে, সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম, যাতে এই নারকীয় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাকে আত্মহত্যার মুখোশ না পরানো হয়। বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা যেভাবে ঘটনাটাকে চাপা দিতে চাইছিলেন, তার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই, এবং পোস্ট মর্টেম প্রক্রিয়া যাতে সঠিক নিয়ম মেনে হয়, সেই দাবীতে অনড় থাকি। সেই স্বচ্ছতার দাবী থেকেই আমরা পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে দেখতে চাইবার দাবী বারংবার রেখেছিলাম, যা আমাদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে পরবর্তীকালে দেখানোও হয়নি। এমনকি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টও পোস্ট মর্টেম প্রক্রিয়ার ভুলভ্রান্তি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সোশাল মিডিয়াতে এই যে নানান বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে, তার (বিরুদ্ধে) তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এছাড়া জুনিয়ার ডাক্তারদের উপর, জুনিয়ার ডাক্তারদের অভয়ার ন্যায়বিচারের আন্দোলনকে, যেভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিভিন্ন মানুষজন, বিভিন্ন ভাবে কলুষিত করার প্রয়াস করছেন, সেই প্রয়াসকে জুনিয়ার ডাক্তাররা WBJDF তীব্র, তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে।"
    এখানে একটা ব্যাপারে অবশ্যই একমত হওয়া যায়, যে, ​​​​​​​ময়নাতদন্তটা ​​​​​​​ওঁরা করেননি, ​​​​​​​অতএব ​​​​​​​ময়নাতদন্তের ​​​​​​​দায়িত্ব, ​​​​​​​কাটা-ছেঁড়া ​​​​​​​ইত্যাদি ​​​​​​​যাঁরা ​​​​​​​করেছেন, ​​​​​​​প্রাথমিকভাবে ​​​​​​​তাঁদেরই। ​​​​​​​কিন্তু ​​​​​​​সমস্যা হল, এই দায়টা ওঁদের ঘাড়ে কেউ চাপায়নি। প্রশ্নটা আদৌ এই ছিলনা, যে, ময়নাতদন্তের দায়িত্ব কার। প্রশ্নটা ছিল, আপনাদের দাবী পুরো মেনেই ময়নাতদন্ত হয়েছিল কিনা, আর প্রক্রিয়াটা আপনাদের যথাযথ মনে হয়েছিল কিনা। এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ​​​​​​​মৃতার ময়নাতদন্ত হবার পর থেকেই ​​​​​​​অজস্র 'খবর ছড়িয়ে ​​​​​​​পড়ে ​​​​​​​চারদিকে। ​​​​​​​ময়নাতদন্ত না করেই দেহ পাচার করে দেওয়া হচ্ছিল, রাতের অন্ধকারে চুপিচুপি ময়নাতদন্ত হয়েছে, এইসব থেকে শুরু করে, ম্যাজিস্ট্রেটকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, পর্যন্ত। সেখানে আপনাদের একটা বিবৃতিই ধোঁয়াশা কাটাতে পারত, যে, "হ্যাঁ, আমাদের প্রতিটি দাবী যথাযথভাবে মেনে ময়নাতদন্ত হয়েছে, আমরা শেষ পর্যন্ত দেখেছি। আমরা ময়নাতদন্ত ​​​​​​​বিশেষজ্ঞ ​​​​​​​নই, ​​​​​​​ফলে ​​​​​​​রিপোর্ট ​​​​​​​ঠিক ​​​​​​​আছে ​​​​​​​কিনা ​​​​​​​বলা ​​​​​​​সম্ভব ​​​​​​​না। ​​​​​​​কিন্তু ​​​​​​​ম্যাজিস্ট্রেটের ​​​​​​​উপস্থিতিতে ​​​​​​​আমাদের ​​​​​​​সাক্ষী ​​​​​​​রেখে ​​​​​​​ময়নাতদন্ত ​​​​​​​হয়েছে।" এইটুকুই। ​​​​​​​এই ​​​​​​​বিবৃতিটা ​​​​​​​আপনাদের ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​পাওয়া ​​​​​​​যায়নি, ​​​​​​​যতক্ষণ ​​​​​​​পর্যন্ত ​​​​​​​না ​​​​​​​নথিগুলো ​​​​​​​ফাঁস ​​​​​​​হয়। একমাত্র ​​​​​​​নথি ফাঁস হবার পরই, সেটাকে স্বীকার করলেন। কিন্তু তার পরেও স্রেফ অপপ্রচার নিয়ে কিছু কথা বললেন, কিন্তু এখনও ​​​​​​​স্পষ্ট ​​​​​​​করে ​​​​​​​বললেন না, যে, বিষয়টায় আপনারা সন্তুষ্ট ছিলেন কেন, এই চাপটা আসার আগে সেটা বলেনই নি বা কেন। এটা ​​​​​​​কি ​​​​​​​তৃতীয়পক্ষের ​​​​​​​কাছে ​​​​​​​যথেষ্ট ​​​​​​​সন্দেহজনক ​​​​​​​না? ​​​​​​​আপনারা শুনলে ​​​​​​​কী ​​​​​​​করতেন? ( প্রসঙ্গত ​​​​​​​সুপ্রিম ​​​​​​​কোর্ট ​​​​​​​ময়নাতদন্তের ​​​​​​​প্রক্রিয়া ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​সন্দেহপ্রকাশ ​​​​​​​করেননি, এখনও ​​​​​​​পর্যন্ত। ​​​​​​​একটা ​​​​​​​চালান ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​একজন ​​​​​​​আইনজীবী ​​​​​​​কিছু ​​​​​​​প্রশ্ন ​​​​​​​তোলেন। সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টা জানতে চান। ​​​​​​​পরবর্তীতে ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​আর ​​​​​​​উত্থাপিত ​​​​​​​হয়নি, ​​​​​​​আপাতত ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​সন্দেহ ​​​​​​​আছে ​​​​​​​বলে ​​​​​​​দেখিনি।)
    আরও অদ্ভুত ব্যাপার, যেটা জুডারা এখনও এড়িয়ে গেলেন, সেটা হল 'ক্রাইম সিন'এর পাশে ওই টয়লেট ভাঙা ইত্যাদি। সেটা নিয়েও একাধিক নথি ফাঁস হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই রিনোভেশনটা ডাক্তারদেরই দাবী ছিল এবং সেই অনুযায়ী ১২ তারিখে তাঁরা ইনস্পেকশন করেও এসেছেন। না, ভাঙার অর্ডারের দায়, আবারও, ডাক্তারদের নয়। কিন্তু যে জায়গাটা ইনস্পেকশন করে এসেছিলেন, সেখানে কি রক্ত দেখেছিলেন? মনে হয়েছিল, ওটা 'ক্রাইম সিন' এর অংশ? যদি না মনে হয়, এই নিয়েও তো ভয়াল ভয়ঙ্কর 'খবর'এর অন্ত ছিলনা এবং নেই, তো সেটা নিয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি কেন, বা এখনও দিচ্ছেন না কেন?
    এই প্রশ্নগুলোর যদি সহজ উত্তর থাকে তো দিয়ে দিন না। বিভ্রান্তি কেউই চায়না। আমি তো না ই। কিন্তু এই অদ্ভুত চেপে যাওয়া দেখে সন্দেহ তো জাগতেই পারে, পুরো জিনিসটায় কিছু লুকোনো হচ্ছে। এবং তার পিছনে একটা সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে। হয়তো পুরোটাই ভুল বোঝা। সেটা বুঝিয়ে বললেই মিটে যায়। পুলিশ দাবী করেছে, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছে তদন্তের। আমরা তাদের ছেড়ে দিইনি। প্রশ্ন করেছি। সিবিআইকে লুকোচুরির জন্য প্রশ্ন করেছি। আপনাদেরও করব। সমস্যাটা কী। শেষ পর্যন্ত আমরা তো বিচারটা চাই। স্বচ্ছতা চাই সব পক্ষের। সরকার, পুলিশ, সিবিআই এবং হ্যাঁ জুনিয়ার-ডাক্তারদেরও।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Amitava Sen | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৫১538216
  • সম্পুর্ন ফ্যাক্ট based লেখা, bias ছাড়া।
  • :|: | 174.25.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৩১538217
  • সাড়ে দশটা -- প্রতিদিনের লিং কি পোস্টানো সম্ভব? 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:c8a7:7488:31dc:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১২:২২538220
  • প্রথম দিকে প্রচুর গুজব ছড়ানো হয়েছিল, যাতে করে একটা ন্যারেটিভ বানানো যায়, সেটা এখন বেশ বোঝা যাচ্ছে। আরেসেস পুরনো কায়দায় খেলার চেষ্টা করেছিল, আইএসি আন্দোলন স্টাইলে। কিন্তু রেজিম চেঞ্জের দিকে এখনো অবধি সেভাবে এগোতে পারেনি। দেখা যাক কি হয়। 
     
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:c8a7:7488:31dc:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১২:২৪538221
  • আর সিবিআই মুখে কুলুপ লাগিয়ে বসে আছে, কিন্তু নিয়ম করে এখান সেখান থেকে সোর্স দিয়ে লিক করাচ্ছে laugh
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৫৫538222
  • আর বিচার, দেখেন কী হয়।

    ডাক্তাররা নাকি সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য নিয়ে (শেষ শুনানির দিন) খুশী নয়, আর তারা নাকি সিবিআইকে বলেছে যে তার জানাক একজন না একাধিক জন ঘটনাটার সাথে যুক্ত। উচিত তো ছিল মনে হয়, সিবিআইয়ের দপ্তরের সামনে গিয়ে বসে পড়া, ঐ স্বাস্থ্যভবনের কাছেই তো ছিল, তাহলে হয়ত, আন্দামান না গিয়ে সেই অফিসার ফরেন্সিক রিপোর্ট আগে জমা দিতেন। কাল তো তারা বলেছে দরকার হলে দিল্লী যাবে, কিন্তু কলকাতার অফিস তো অনেক কাছে, সেখানে কেন যাচ্ছে না, বোঝা যায় না।

    ১০-১১ আগস্টের আবাপ পড়লেই দেখা যাবে, পোস্টমর্টেমের সময় মৃতার এক পরিচিতা, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে যুক্ত, পরিবারের অনুমতি নিয়ে তিনিও ছিলেন পোস্টমর্টেমের সময়ে, শরীরে একাধিক আঘাত তিনি দেখেছেন সেও খবরে বেরিয়েছিল, কপু বলেছিল প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ১১টি আঘাতের চিহ্ন আছে, হাইকোর্টে বিকাশবাবু বলেছিলেন রিপোর্ট অনুযায়ী এই ঘটনা একজনের কাজ নয় (তিনি অবশ্য সিমেনের পরিমাণও হয়ত প্রমাণ হিসেবে ধরেছিলেন), তো প্রায় দু'মাস পরে তদন্ত সেই একই জায়গায়, এক্জন না একাধিক জন ?

    ঘটনাটা নিয়ে সব পক্ষই বিবিধ প্যাঁচ দেওয়ার চেষ্টা করেছে, খবর ছড়িয়েছে এবং চেপেওছে। এর ফল, সঠিক তদন্তের ওপর গিয়ে পড়ে শেষে কী দাঁড়ায় সেটাই দেখার। ডাক্তারপক্ষর নানা রকমের স্বার্থ আছে আবার তাদের ক্ষোভও আছে, ফলে তারা সিস্টেমের বদল ঘটানোর জন্য নেমেছেন, শুভ উদ্দেশ্য, গভঃ সমঝে গেছে, দল সমঝে গেছে, লোকে জেগেছে, কিন্তু বেসিক, বেসিকতম ব্যাপার হল, একটি ব্যাক্তিহত্যা ঘটেছে, নির্মমভাবে, তো সেই ঘটনাটির সঠিক বিচারের দাবীর জন্যই সবথেকে বেশী চাপ দেওয়া উচিত ছিল, সেটি হলেই সিস্টেমের দোষও বেরিয়ে আসত। ডাক্তারপক্ষের উকিল সুপ্রীম কোর্টে এ ব্যাপারে কিছু বলে কিনা জানিনা, শেষ দিনের শুনানি পড়া হয়নি।

    আর, আর, ভাইটি সেল থেকে পাওয়া খবর পড়ে 'সাধারণ' লোকের সবজান্তাপনার তো শেষ নেই। প্রথমে রটেছিল আরজিকরেই পোস্টমর্টেম হওয়াই নাকি বেআইনি, অন্য হাসপাতালে হওআ উচিত ছিল, অথচ সেই প্রধান 'ভুল' নিয়ে কোর্ট তো এখনো কিছু বলেনি। ব্যাপার হল, সকালে উঠেই আপনি হোয়াতে কী পাবেন আর কীভাবে react করবেন, আইটি সেল ভালমতই জানেন, ম্যানিপুলেশনের শেষ রাখবে না তারা।
     
     
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩০538223
  • 'সাধারণ' লোকে আর শ্যালদা কোর্টের আইনজীবীরা পুরোই জানে যে ঘটনাটির সাথে কারা যুক্ত, কেন যুক্ত। কিন্তু তারা এটা 'জানে না' যে তদন্তের ক্ষতি না করে সিবিআই কীভাবে তাদের তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে জনগণকে জানাতে পারে ! তো তাদের সেই অজ্ঞানতা দূর করার জন্য, সিবিআই নিঃস্বার্থভাবে, দিন অনুযায়ী, শুনানি অনুযায়ী, জনমত অনুযায়ী, পুজোপক্ষ অনুযায়ী, 'সূত্র' ফিট করে খবর বার করে।
  • PRABIRJIT SARKAR | ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৩৯538228
  • জেডি রা সন্তুষ্ট হতেই পারে। এমনকি মেয়েটির বাবা মা পাড়া প্রতিবেশী ও হতে পারে। তাতে সত্যি ময়নাতদন্ত ঠিক হয়েছে সেটা প্রমাণ হয় না। তাড়াহুড়ো করে রিপোর্ট দিয়ে দাহ করতে নিয়ে গেছিল। বডি রেখে দেওয়া হয়নি। পরে আরো ভাল করে তদন্ত করার জন্য। দিল্লির ডাক্তাররা বডি কী দেখেছিল? যেসব ছবি ভিডিও তোলা হয়েছে সব অস্পষ্ট। টালা থানার ওসি কে ধরা হল কেন? শিয়ালদহ কোর্টে সিবিয়াই কী বলেছে?
  • dc | 2a04:4e41:52:c::1350:***:*** | ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৪৫538230
  • এই রে, সিবিআই এবার লাড্ডু তদন্তের ভার পেয়েছে। সেই আন্দামান বিশেষজ্ঞ এখনও ফেরত এলেন কিনা কে জানে laugh
  • :|: | 174.25.***.*** | ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৪৯538231
  • "যেসব ছবি ভিডিও তোলা হয়েছে সব অস্পষ্ট।" আপনি নিজে দেখেটেখে এই স্টেটমেন্ট দিলেন? নাকি দিল্লীর ডাক্তারদের বডি দেখার মতো দেখে বললেন? 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:289a:6f71:17ef:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৪৯538297
  • অবশেষে সিবিআই চার্জশীট লিক করেছে। খবরে বলছে আদালতে চার্জশীট জমা দেওয়া হবে আর তাতে লেখা থাকবে যে সঞ্জয় রাইই ধর্ষন এবং খুন করেছে। 
     
    https://www.ndtv.com/india-news/accused-sanjoy-roy-raped-murdered-doctor-cbi-charge-sheet-in-rg-kar-case-6734823#pfrom=home-ndtv_topscroll
     
    কিন্তু কথা হলো, সে তো কপু কবেই বলে দিয়েছিলো। তাইলে আর সিবিআই আন্দামান ফেরত বিশেষজ্ঞ দিয়ে আলাদা কি করলো? আর হাইকোর্টই বা সিবিআই তলব করে কটা মোজা পোড়ালো? 
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:২২538299
  • শুধু আন্দামান ফেরত বিশেষজ্ঞ নয়, হাথরাস ঘটনার তদন্ত করেছিলেন যে মহিলা অফিসার তার ওপরও লোকজনের ভরসা ছিল খুব, তিনিও যে কী করলেন, আছেন না গেছেন, সে তাঁরাই জানেন।

    extreme case of manipulation and propaganda, সুশান্ত সিং কেস (কতবার যে লিখব এটা), যা ঘটেছে তাকে ব্যবহার করে, তার ওপর খবর তৈরী করে, বিভিন্ন পক্ষের অ্যাজেণ্ডায় হাওয়া দিয়ে, শহুরে মানুষের ক্ষোভকে কজে লাগিয়ে, গভঃ -এর দুর্বলতাকে টার্গেট করে গভঃ কে প্যাঁচে ফেলা। এমন পরিস্থিতি তৈরী করা যে কোর্ট - এরও নড়ে যাওয়া, হাইকোর্ট তো সিবিআই দাবীর মামলাতে বলেছিল যে অন্য সময়ে হলে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাইত, কিন্তু পরিস্থিতি গুরুতর, তাই সিবিআইকে ডাকা।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:289a:6f71:17ef:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫০538300
  • "যা ঘটেছে তাকে ব্যবহার করে, তার ওপর খবর তৈরী করে, বিভিন্ন পক্ষের অ্যাজেণ্ডায় হাওয়া দিয়ে, শহুরে মানুষের ক্ষোভকে কজে লাগিয়ে, গভঃ -এর দুর্বলতাকে টার্গেট করে গভঃ কে প্যাঁচে ফেলা"
     
    একদম, ঠিক এইটাই লিখবো বলে এসেছিলাম। আরেসেস এই ব্যাপারটায় বেশ হাত পাকিয়েছে দেখা যাচ্ছে। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:289a:6f71:17ef:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫২538301
  • আর যিনি ১৫০ গ্রাম (নাকি লিটার) এর গুজবটা ছড়ালেন তাঁকে কি প্রধনসেবক কোন সান্ত্বনা পুরষ্কার দেবে? 
  • PRABIRJIT SARKAR | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৩538302
  • বেচারা সঞ্জয়। মরা মেরে খুনের দায়ে পড়ল। গীতার বাণী এই রাজ্যে খাটছে। তুমি তো নিমিত্ত মাত্র। আমি (আমার চেলা চামুন্ডা দিয়ে) সব মেরে রেখেছি। তুমি যাও ফাঁসি
    আমি বাজাই বাঁশি
  • সিএস  | 103.99.***.*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:২০538303
  • তবে সিবিআই কিন্তু খুবই কনসিডারেট। পুজোর আগে রিপোর্ট জমা দিয়ে দিল, যারা গুলতানি করার করবে, যারা আরো রটাবার রটাবে, যারা মেনে নেওয়ার মেনে নেবে, সবাই ছুটির দিনগুলো ব্যবহার করবে। 
     
    তদুপরি কনসিসটেন্ট, রিপোর্টেরও "লীক" দিয়ে গেছে, মিডিয়ার সাথে যা ডীল সে তো মানতেই হবে।

    ওঁয়ারা এবার সবাই মিলে আন্দামানে ছুটি কাটাতে যাবেন।

    ইংরেজী কাগজের রিপোর্ট, সোর্স এখানেও আছে।

    https://indianexpress.com/article/cities/kolkata/r-g-kar-case-rape-murder-sanjay-roy-cbi-chargesheet-9608209/?ref=hometop_hp

    “Sanjay Roy has been charged with rape and murder. There is no mention of a gangrape (in the chargesheet). Sanjay Roy is the only accused who committed the crime. However, the probe is still going on. He was in an inebriated condition when the crime was committed. This is mentioned in the charge sheet,” said a source in CBI.

    According to sources, the blood and tissue found from the victim’s nails also matched with Roy’s DNA.
     
     
  • দীপ | 2402:3a80:1989:9fa2:578:5634:1232:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৭538306
  • কেন্দ্র রাজ্যসরকারকে কোনো প্যাঁচে ফেলছে না, বরং সেটিং করছে। সারদা-নারদা থেকে শুরু করে আর জি কর; সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে! 
    একমাত্র সুদীপ্ত সেন ছাড়া সবাই ছাড়া পেয়ে গেছে, বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে! মদনা তো কাতারে বিশ্বকাপ দেখে এলো! 
    আর জি করে ঘটনাস্থলে সর্বক্ষণ ডাক্তাররা আসেন, বিশ্রাম নেন, খাওয়াদাওয়া করেন। সেখানে বাইরে থেকে এসে একজন অস্থায়ী কর্মচারী আধঘন্টার মধ্যে খুন করে, প্রমাণ লোপাট করে চলে গেলো; কেউ কিছুই বুঝতে পারলো না! 
     
    রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হলে অনেকের‌ই খুব সমস্যা হচ্ছে! 
    অবশ্য বিরোধী দল আরো চমৎকার! একের পর এক লোপ্পা বলের মতো ইস্যু আসে, কিন্তু কিছুই করতে পারেনা!
  • দীপ | 2401:4900:705f:a6b8:fd7:daec:9415:***:*** | ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:০৩538307
  • ভারতে কোনোদিন কিছু হয়নি। শিখদাঙ্গা হয়নি, বোফর্স হয়নি, বাবরি হয়নি, গুজরাট দাঙ্গা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে মরিচঝাঁপি হয়নি, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম হয়নি। অম্বিকেশ-শিলাদিত্য হয়নি, কামদুনি হয়নি! সব বিরোধীদের চক্রান্ত, আর সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত! 
     
     
    হরি হে তুমিই সত্য!
  • PRABIRJIT SARKAR | ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:২৬538310
  • আজকাল প্রমাণ লোপ করলে ফাঁসি হতে পারে। যে কোন সামান্য বুদ্ধির লোকে বুঝবে এক সিভিক পুলিশকে 'বাঁচাতে' কেন পুরো প্রশাসন তৎপর। সেই পালের গোদা রা এমন ভাবে খেলেছে যে এবার তারা কেউ মূল অপরাধী নয় দেখা যাচ্ছে। তবে প্রমাণ লোপ কেসে ফাঁসি যাবে হয়তো। আর সঞ্জয় যাবজ্জীবন। মত্ত অবস্থায় এক বিকৃত রুচির গরিব মানুষের অপরাধ ফাঁসির লেভেলে নিশ্চিত নয়।
  • Sutro | 2405:8100:8000:5ca1::f0:***:*** | ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ০১:১৬538333
  • মামূ এবার গুছিয়ে লিখে ফেলুন 
  • দীপ | 2402:3a80:196f:d914:878:5634:1232:***:*** | ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০০:০১539237
  • সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে প্রধান বিচারপতিকে তাই দ্রুত চলে যেতে হয়। যে দেশে ভুরি ভুরি মামলা জমে রয়েছে, যে দেশে সামান্য একটা চুরির বিচার পেতেও দিন মাস বছর পেরিয়ে যায় সে দেশে আরজি কর থোড়িই কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলা? বরং সন্ধ্যার অনুষ্ঠানটি অনেক বেশি জরুরী। কবি সেই কবেই বলে গেছেন "বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে" তা কী আর সাধে, তিনি যে ত্রিকালদর্শী।
     
    চলছিল মামলা হাইকোর্টে কাল হলো তার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে। এ অনেকটা অতি লোভে তাঁতি নষ্টের মতো কেস। সকলেই ভাবলো সুপ্রিম কোর্ট যখন সুয়োমুটো কেস করেছে নিশ্চিত এর একটা বিহীত হবে। আসলে রাষ্ট্রের অধীনে যে আইন ব্যবস্থা তাকে তো রাষ্ট্রের নির্দেশেই চলতে হবে, তাতে কী এসে গেলো জরুরী অনুষ্ঠানে যেতে গিয়ে যদি শুনানিই না হয়, কী এসে গেলো গত দু'দিনে তিন বার শুনানির সময় দিন পেছিয়ে যায় তো? অনুষ্ঠান জরুরী বিচার নয়। কারণ যত মহামান্য বিচারপতির দিন ঘনিয়ে আসছে রিটায়ার্মেন্টের তত তার ব্যক্তিগত কাজ বাড়ছে। অতএব আগামীকাল শুনানি হবে, কারণ তিন মাস বিচার পড়ে থাকা আবার কোনও বড় বিষয় নাকি, মামলা একটু না পচলে তার গুরুত্ব বাড়ে না।
     
    এখনও পর্যন্ত এই মামলার এক এবং এক মাত্র স্ট্যাটাস আসামী একজন এবং আগামীকাল থেকে প্রতিটি কাজের দিন শিয়ালদহ কোর্টে এই মামলার শুনানি চলবে। এই যে এত মুখবন্ধ খাম সুপ্রিমো কোর্টে জমা পড়ল, বিচারপতিত্রয় সেই খামের রিপোর্ট পড়ে উদ্বিগ্ন হলেন, সন্দীপ ঘোষের মোবাইল থেকে ডেটা উদ্ধার হল, প্রমাণ লোপাটের তত্ত্ব বোঝা গেল জলের মতো পরিষ্কার, তার কী হল? তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠলো, কীসের জন্য সন্দীপ বাহিনী এত সব করলো, উত্তর নেই, কীসের কারণে টালা থানার ওসি সন্দীপকে সাহায্য করলেন? উত্তর নেই, আসামী কিন্তু সেই একজন। জুতোর শুকতলা খয়ে যায় ভারতীয় আইনে বিচার পেতে, মাসের পর মাস বছরের পর বছর শুধু তারিখ। সেই যে সানি দেওল দামিনী সিনেমায় বলেছিলেন, "তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ তারিখ পে তারিখ, রহে যাতি হ্যায় সির্ফ তারিখ'। হল জুড়ে সিটি পড়েছিল, সানি দামিনীর বিচার ছিনিয়ে এনেছিলেন, আমাদের রক্ত গরম হয়েছিল, হল ভরেছিল, সিনেমা ব্যবসা করেছিল, কিন্তু নিট ফল? আ বিগ জিরো। 
     
    আন্দোলনের শুরুতেই বলেছিলাম মিনিমাম চার বছরের আগে এই মামলার শুনানি হবে না। খুব মির‍্যাকল কিছু ঘটলে তবে বছর দুই লাগতে পারে। কারণ? জননেতা নেই, তিনি তার পকেট গরম করতে ব্যস্ত, গত ১৫ বছরে ভারতীয় রাজনীতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কারণ গত ১৫ বছরে ধীরে ধীরে বিরোধী শূন্য করে ফেলা হয়েছে ভারতীয় রাজনীতিতে, এখন বিরোধী মানেই সে গোপনে আসলে সহযোগী। যতই আমরা সেটিংস হতে দেব না বলে রাস্তা কাঁপিয়ে মিছিল করি সেটিংস তো হবেই। হবেই মানে হবেই। কারণ আমরা এখনও অন্তঃসার শূন্য। এখনও আমরা আন্দোলন বলতে বুঝি মোমবাতি আর শান্তিপূর্ণ ধর্না, তাতে না তো বিচার ব্যবস্থার কিছু এসে যায়, না তো সরকারের আর না তো রাষ্ট্রের। আমাদের যত রাগ যত ক্ষোভ আসলে কালীপুজোর ড্যাম পরে যাওয়া পটকা বাজির মতো, দীর্ঘদিন ফেলে রাখার ফলে জ্বলে ওঠার সময় দমাস করে আওয়াজের বদলে ফুসস আওয়াজ করে খানিকটা ধুঁয়ো ছাড়ে। এখনও গোটা আন্দোলনে আমরা একবারও প্রতিবাদ বলতে পদত্যাগের দাবি জানাতে পারি না, কারণ নানান পলিটিক্যাল সমস্যা। আসলে ঘর বাঁচিয়ে চাকরি বাঁচিয়ে স্বার্থ বাঁচিয়ে তবে আন্দোলন। আসলে পলিটিক্যাল কারেক্ট থাকতে হবে আমাদের। আমি ভাই অতশত বুঝি না, পুঁথিগত বিদ্যে সামান্যই। রাজনীতি বুঝি না, তাই সরে আসতে বাধ্য হয়েছি, কারণ অন্ধ সমর্থন আমার দ্বারা হয় না। 
     
    তাহলে? তাহলে আর কিছুই না, আমরা আসলে ওই ড্যাম পড়ে যাওয়া ফুলঝুরি অথবা বুড়িমার চকোলেট বোমা, ধোঁয়া আছে, আওয়াজ নেই, আগুন আছে কিন্তু সামান্যই। আমরা বছর ভর নানা কর্মসূচি নেব, ওমুক আলো জ্বালো, তমুক আলো জ্বালো, বাড়িতে অরন্ধন, এখানে ওখানে প্রদীপ বা মোমবাতি গোঁজা, প্রতীকী অনশন, কিন্তু তার লাভ কী? শুনেছি লাভের গুড় পিঁপড়েতে খায়। এও তাই, আমরা জেগেছি নিঃসন্দেহে, কিন্তু বড় প্রশ্ন কতটা জেগেছি? আচ্ছা গত ৮ আগস্ট থেকে ছেড়ে দিলাম, গত এক মাসে কতগুলো ধর্ষণ খুন এই রাজ্যে হয়েছে কোনও হিসেব আছে তার? এত বড় আন্দোলন যখন এখনও অপরাধীর মনে, অপরাধীদের মনে সরকারের মনে ভয় জাগাতে পারেনি, কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে পারেনি তখন এই আন্দোলনের এতদিনের কর্মসূচির পরিণাম কী? পরিণাম হল- রেফারেল ব্যবস্থা চালু হল, তাও বেড পেল না বা ভর্তি হল না রোগী, ৫৯ জনকে সাসপেন্ড করা হল তদন্ত করে, কিন্তু রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রধান বললেন আরে না না আমাকে জানানো হয়নি, অতএব এই সাসপেনশন অবৈধ এবং কোর্টও সেই রাজ্য প্রধানের সমর্থনে মাথা দোলালেন, দোষীরা ছাড়া পেলেন নতুন সংগঠন তৈরি করলেন। তিনুরা এলো, আন্দোলন নিয়ে লিখলেই আপনার চোদ্দগুষ্ঠী তুলে খিস্তি করলেন। 
     
    আজ এই তিন মাস পরে একটা কথা জানতে বড় ইচ্ছে হয়, এই যে স্বাস্থ্য পরিষেবার এই হাল, রোজই কিছু না কিছু শোনা যায় তারপরও আমার আপনার ঘর সেফ ভেবে নিচ্ছি কী করে? রোগীর কিছু হলে ডাক্তার কেলিয়ে সমাধান পাচ্ছি কি? অচলাবস্থা কাটাতে সমস্ত কিছু আজও আমরা অচল করে দিতে পারি না। আমাদের দম নেই, এদিকে নেতাজির জন্মদিন এলে আমরা হেদিয়ে মরি, আমাগো একখান নেতাজি আসে, আমাগো একখান ক্ষুদিরাম আসে, আমাগো একখান কানাইলাল আসে, আমাগো একখান ওমুক আসে। আরে শালা ওরা ছিল ওরা ওগো কাজ কইরা গেসে, তোরা কী ডা করলি? সরকারি না পেয়ে লোন নিয়ে বাড়ির লোককে প্রাইভেটে ভর্তি করালি, সরকারি স্কুলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো নয় অতএব খেয়ে না খেয়ে মোটা টাকা দিয়ে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করালি, চাকরি নাই, ঘুষ দিয়ে ব্যাকডোর দিয়েই সই চাকরি পেলি, অর্থাৎ আমার প্রবলেম সলভ, ভার মে যায়ে দুনিয়া। সমস্ত কিছু অচল করে দিতে আমাদের আসলে ফাটে। 
     
    মনে পড়ে দিল্লিতে যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি, ইউপি, পাঞ্জাব, হরিয়াণার সহপাঠীরা আমার মত কয়েকজন বাঙালি পড়ুয়াকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করত। আমরা ডরপোক আছি, আমরা খালি রাজনীতি করি, আমাদের বাংলা মানেই জ্যোতি বসু আর মমতা দিদি। কথায় কথায় শুনতে হত আরে বাঙ্গালি শালে তেরি বস কা কুছ নেহি, খালি পলিটিক্সিই কার সাকতে হো, যাও বাঙ্গাল লৌট যাও, মমতা বনো, জ্যোতি বসু বানো, ইয়ে সব তুমহারা বস কা নেহি। বেশিরভাগ হিন্দিভাষী মানুষের কাছে আজও বাঙালি মানেই বাংলাদেশী এবং ডরপোক বাঙালি। ফলে চলুন আমরা যাই, মোমবাতি জ্বালি, নানা কর্মসূচির তদারকি করি আর বাসে ট্রামে ট্রেনে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে, ফেসবুকে বলি এই রাজ্যের কিছু হবে না। আমাদের কিছু না হলে রাজ্যেরও কিছু হওয়ার নাই জেনে রাখো বাঙালি। 
     
    রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না, অফিস পলিটিক্সই ঠিক মতো বুঝি না তায় রাজ্য দেশের রাজনীতি। আমি যা বুঝি তা হলে আমার ঘরে কেউ ঢুকলে আমার পরিবারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে আমার ঘরে একটা ভয়ঙ্কর শ্বাপদ ঢুকে গেলে যতক্ষণ না আমি সেটাকে মেরে তাড়াব ততক্ষণ থামব না। 
     
    বিচার তুমি দেবে না/ নিস্তার পাবে না" শুধু স্লোগানে নয় কাজেও হোক। নইলে আওয়াজই হবে সেই আওয়াজে কারও ঘুম ভাঙবে না। ওই যে ভগত সিং বলেছিলেন, "যো লোগ উঁচা শুনতে হ্যায়, উনহে ধামাকে কি জরুরত হ্যায়"। শেষমেশ আমরা না ওই ডরপোক আর ন্যাকা বাঙালিই না হয়ে থেকে যাই।
     
    -ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন