এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুনর্মূল্যায়ন কি জরুরী - দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২৪৮ বার পঠিত
  • প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব
    বর্তমান সময়ে একই রাজনৈতিক দল যদি কেন্দ্রে এবং রাজ্যে ক্ষমতায় না থাকে তাহলে নাগরিকদের প্রাণান্তকর অবস্থা। সরকারী সাহায্য বা অনুদান কিছুই পৌঁছয় না জনগণের কাছে। সেই যাকে বলে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। আমরা দেশের মূল কাঠামোটাকেই ভুলে গেছি। আমাদের রাষ্ট্রের কাঠামোটা যুক্তরাষ্ট্রীয়। কেন্দ্রে মূল সরকার, তার হাতে অর্থ, বিদেশনীতি, আভ্যন্তরীণনীতি, স্বরাষ্ট্রনীতি। রাজ্যের হাতে নাগরিক সুবিধার কিছু জিনিস যেমন শৃঙ্খলারক্ষা, স্বাস্থ্য, কিছুটা করব্যবস্থা ইত্যাদি। এরপরে  শিক্ষা, পরিবহন, অপরাধমূলক আইন ইত্যাদি কিছু আছে যুগ্ম তালিকায়। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাজের পরিধি দেখলেই বোঝা যায়, দেশ কিভাবে চলবে তার দিশা ও নীতি নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় সরকার, মূল অর্থ যোগাবে কেন্দ্রীয় সরকার। মূল বাজেট এবং কর ব্যবস্থার দিশা দেখাবে কেন্দ্র। রাজ্যগুলো নাগরিক পরিষেবা দেবে, যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে জনগণের সরাসরি সম্পর্ক রাখার মত কোনো দপ্তরের অস্তিত্ব নেই। অবশ্য পরিষেবা বলতে এখনকার সংজ্ঞা আগে ছিল না (রেল, ডাক ও তার আগে যোগাযোগের মাধ্যম বলেই বিবেচিত হত, পরিষেবা নয়, যদিও বর্তমানে পরিষেবা বলেই বিবেচিত হয়)। স্বাস্থ্য, শিক্ষার মত কিছু পরিষেবা কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য দেয় তার কর্মচারীদের জন্য। কিন্তু সেই পরিষেবা কেন্দ্রগুলোতে সাধারণ জনগণের স্থান নেই। আর কিছু জায়গায় কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে কাজ করবে। এই যৌথ তালিকার কাজ খুব স্পষ্ট নয়, কিছুটা ধোঁয়াশা আছে। তবু মূল সরকার যেহেতু কেন্দ্র, ফলে রাজ্য তাকে টপকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বা কাজ করতে পারে না - এটাই মোদ্দা কথা।

    ব্রিটিশ ভারতে আমলাতন্ত্রের প্রচলন হয়েছিল, যারা প্রশাসনিক কাজ করতো। আইনসভা তৈরী হয়েছিল, যেখানে প্রয়োজনীয় আইন তৈরী হতো (যদিও সেই আমলে ব্রিটিশ ক্রাউনের মোহর না পরলে আইন তৈরী হতো না)। আর বিচার ব্যবস্থা তৈরী হয়েছিল, যার কাজ ছিল দেশে আইন ব্যবস্থার প্রচলন এবং আইনভঙ্গকারীদের বিচার করা। আমলাতন্ত্র এবং বিচার ব্যবস্থায় সাদা চামড়ার লোকেদের রাখা হতো। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের সিভিল সার্ভিসের মত ব্রিটিশ-ভারতের জন্য সিভিল সার্ভিস তৈরী করা হয়, যার নাম ছিল আই,সি,এস। কিন্তু বাদামী চামড়ার আই,সি,এস-দেরকেও শীর্ষপদে যেতে দেওয়া হতো না। ব্রিটিশ-ভারতে কিন্তু প্রথমের দিকে, যখন অল্পবিস্তর প্রশাসনিক ব্যবস্থা তারা চালু করেছে, তখন একটাই শাসন ব্যবস্থা ছিল, বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকারের মতো।  অনেক পরে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা চালু করেছিল তারা।

    ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে ভারতবর্ষেও একইরকম আমলাতন্ত্র, আইনসভা এবং বিচারব্যবস্থা চালু থাকে। কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল অবশ্যই, তবে সেটা বহিরঙ্গে।  যেমন ভারতবর্ষে সংবিধান চালু হওয়ার পরে ২৮ শে জানুয়ারি, ১৯৫০ সালে সুপ্রিম কোর্ট চালু হয় এবং বিচার ব্যবস্থায় প্রিভি কাউন্সিলের এক্তিয়ার শেষ হয়। তার আগে অব্দি ব্রিটিশ ভারত এবং খণ্ডিত ভারতের সর্বোচ্চ অ্যাপিল আদালত ছিল ব্রিটেনের প্রিভি কাউন্সিল। সুপ্রিম কোর্ট ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ আদালত বলে স্বীকৃত হয়। গভর্নর জেনারেল পদ বিলুপ্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি পদের সৃষ্টি হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু মোটের ওপর আমলাতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা ও আইনসভার মূল কাঠামো ঠিকই থাকে। প্রথমদিকে সমস্যা না হলেও কেন্দ্র রাজ্য বিরোধের সময় থেকেই সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে আমলাতন্ত্র এবং যৌথ তালিকায়। ভারতবর্ষ মূল দেশ এবং প্রতিটি রাজ্য তার অঙ্গ। কিন্তু বর্তমানে মনে হয় প্রতিটি রাজ্য আলাদা আলাদা রাষ্ট্র। যে যার মতো কাজ করছে, রাজ্যের জন্য বোধহয় আলাদা আইন আর কেন্দ্রের জন্য আলাদা আইন। আর যৌথ তালিকা নিয়ে স্পষ্ট করে কেন্দ্র-রাজ্যের এক্তিয়ার বলে দেওয়া নেই বলে সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং বিরোধী দলের সরকার যেসমস্ত রাজ্যে আছে তারা ইচ্ছে করেই সেই ধোঁয়াশার জায়গাটাকে কাজে লাগায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য।

    আমলাতান্ত্রিক পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সিভিল সার্ভিস আছে আবার কেন্দ্রের নিজস্ব সিভিল সার্ভিস আছে। ব্রিটিশ ভারতে এইরকম আলাদা সিভিল সার্ভিস ছিল না। কেন্দ্রের সিভিল সার্ভিসের ক্ষেত্রে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরী করে আবার রাজ্যের প্রশাসনেও চাকুরী করে। এরমধ্যে কেন্দ্র বা রাজ্য অধিকৃত সংস্থাও আছে (PSU)। আর রাজ্য সিভিল সার্ভিসের ক্ষেত্রে তারা শুধু সেই রাজ্যের প্রশাসনে এবং PSU-তে চাকুরী করে। কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসের আমলারা কেন্দ্রীয় সার্ভিস রুলের আওতায় পড়ে, এমনকি তারা রাজ্য প্রশাসনে কাজ করলেও। আর রাজ্য সিভিল সার্ভিসের আমলারা রাজ্য সার্ভিস রুলের আওতায় পড়ে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসের আমলারা যখন রাজ্যে কাজ করে তখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্য সরকার। যদিও কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসের আমলাদের মূল নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলো Department of Personnel and Training (DOPT)। তবুও তাদের বদলি বা মূল্যায়ন বা পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্য সরকার। পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্য রাজ্য সরকার মূল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং UPSC-র সিদ্ধান্ত ছাড়া একাকী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

    এখানে গুরুজনদের কাছ থেকে শোনা একটা কথা না বললেই নয়। কথাটি হল, "আইনসভা যত কমজোরি হবে, বিচার ব্যবস্থা এবং আমলাতন্ত্র তত সক্রিয় হবে"। এখানে কমজোরি বলতে সরকারী দলের আইনসভায় সদস্য সংখ্যার জোরের কথা বলা হয়। দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য থাকলে এক ধরনের জোর আর জোট সরকারের ক্ষেত্রে অন্য ধরনের। এছাড়া বর্তমান কালে আর একটা কথার উদ্ভব হচ্ছে, "আমলাতন্ত্রের আত্মসমর্পণ"। কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসের যে আমলারা রাজ্য সরকারে চাকুরী করেন সেই সংখ্যাটাই বেশী। কারণ কেন্দ্রীয় দপ্তর এবং তাতে আমলার সংখ্যা খুব বেশী নয়। রাজ্য সরকারে কর্মরত কেন্দ্রীয় আমলারা রাজনৈতিক দলের কাছে আত্মসমর্পনে বাধ্য হচ্ছেন। কিছু সংখ্যক আমলা হয়তো নিজের ইচ্ছেয় রাজ্য সরকারে আসীন রাজনৈতিক দলের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা বাধ্য হচ্ছেন। যে সব রাজ্যে কেন্দ্র-সরকার যে দল চালাচ্ছে সেই দলই ক্ষমতায় আছে সেখানে একধরনের সমীকরণ। আর যে সব রাজ্যে বিরোধী দল রাজ্য সরকার চালাচ্ছে সেখানে অন্য ধরনের সমীকরণ। প্রথমক্ষেত্রে রাজ্যের মন্ত্রীদের চোখে যে সব আমলারা কাজের এবং কাছের, তারা কেন্দ্র-সরকারের কাছেও কাজের এবং কাছের। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে রাজ্যের মন্ত্রীদের চোখে যে সব আমলারা কাজের এবং কাছের, তারা কেন্দ্র সরকারের কাছে দূরের। রাজ্যের মন্ত্রীদের কাছের আমলাদের জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে যা সার্ভিস রুল, সংবিধান সায় দেয় না আবার অন্যান্য আমলাদের কাছে সেগুলো উৎসাহব্যঞ্জক নয়। আবার যে সব আমলাদের কেন্দ্রীয় সরকার নিতে চাইছে, বা যারা নিজেরা ইচ্ছে করে রাজ্য সরকার থেকে কেন্দ্রীয় সরকারে ডেপুটেশনে যেতে চাইছে তাদের রাজ্য সরকার ইচ্ছে করে রিলিজ করছে না। আবার যে সব আমলারা সরকারে আসীন রাজনৈতিক দলের সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুবিধা করে দিচ্ছেন তাদের বিভিন্ন নিয়মকানুন জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারী তরফ থেকে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। মোদ্দা কথা হল, আমলাদের কাছে বিভিন্ন উদাহরণ তৈরী করা হচ্ছে যাতে তারা বাধ্য হয় রাজনৈতিক দলের অনুগামী হতে। 

    এত কথা বললেও বা এত উদাহরণ দিলেও এসবের পিছনে সবটাই রাজনৈতিক কারণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিজেদের বাঁচানোর রাস্তা তৈরী করা। আমলারা তাদের চাকুরীর কারণে সেই সব কাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে বা জড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি তাদেরকেও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এমনকি চাকুরীর উপান্তে এসে পেনশন বা অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা আটকে যাওয়ার উদাহরণও আছে। সাধারণ নাগরিকও কিন্তু এইসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেমন কয়লা কেলেঙ্কারি জনসমক্ষে আসার পরে আমলাতান্ত্রিক অচলাবস্থা তৈরী হয়েছিল। আমলারা কাজ করতে পারছিল না স্বাভাবিকভাবে বা ভয় পাচ্ছিল। এতে ক্ষতি তো হয়েছে জনসাধারণের। আদালতের পর্যবেক্ষণও এইরকমই ছিল সেইসময়ে।

    দেশের উন্নতি চাইতে গেলে, দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাইতে গেলে, সরকারী সুযোগ সুবিধা নাগরিক-স্তর অব্দি পৌঁছতে গেলে সবচেয়ে আগে যেটা দরকার, সেটা হল, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে মুক্ত হতে হবে। এক আমলার বাড়ীতে গোয়েন্দা দপ্তর উপস্থিত হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দিচ্ছে - এটা আর যাইহোক গণতন্ত্রের এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উন্নতির উদাহরণ হতে পারে না। একজন আমলাকে কোনো উঁচু পদে বসাতে গেলে যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় (DOPT, UPSC), সেইসব পদক্ষেপের কোনো জায়গায় সেই প্রক্রিয়া রুদ্ধ হয়ে যাবে (সেই আমলারই সার্ভিস রেকর্ডের কারণে) বলে তাকে ওই উচ্চপদে সাময়িকভাবে বসিয়ে দেওয়া (ইংরেজিতে যাকে বলে temporary arrangement বা look after the work) আর যাই হোক গণতন্ত্রের এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উন্নতির উদাহরণ হতে পারে না। পাশাপাশি এইসব উদাহরণ জনগণের কাছে এবং চাকুরীজীবী ও ব্যবসায়ী মহলে দুর্নীতির বার্তাই ছড়িয়ে দেয়।

    দেশে যে ভাবে আঞ্চলিক দলের সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই এবং দেশের বৃহৎ দলগুলোরও বর্তমান পরিস্থিতিতে যা অবস্থা তাতে আশা করা যায় না যে, বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশ বা ষাটের দশকের মত কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দল ক্ষমতায় থাকবে। কংগ্রেস দলের ক্ষেত্রে সুবিধে ছিল সেইসময়টা ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে এবং তখনও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তেমনভাবে আগমন বা উত্থান হয়নি। কিন্তু বর্তমানে সেই অবস্থা নেই, ফলে বিজেপির পক্ষে সেই অবস্থা ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন কাজ। আমরা আশা করলেও বাস্তবে সেই পরিস্থিতি আসতে হয়তো এখনও অনেকটা সময় লেগে যাবে। বর্তমানে কেন্দ্রে বিজেপি দলের অবস্থা অর্থাৎ আসনের সংখ্যা যথেষ্ট ভালো এবং সেই কারণেই আমাদের আশা, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে পুনর্মূল্যায়ন করার আশু প্রয়োজন আছে এবং তারা সেটা করবে। রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকারের উল্টোপথে হেঁটে ঋণের পাহাড় তৈরী করবে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে টাকা নেবে অথচ খরচের হিসেব দেবে না। ভুগবে কে? জনগন। রাজ্যগুলো রাজনৈতিক বিরোধীতা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় শর্তাবলীকেই লঙ্ঘন করছে প্রতি পদে। বিরোধী দলগুলো যখন ক্ষমতা পায় তখন তারা বোধহয় ভেবে নেয় যে, তারা রাজ্যের নয় গোটা দেশের ক্ষমতায় চলে এসেছে। গোটা দেশ যদি একসূত্রে গাঁথা থাকে তাহলে অনেক অর্থের অপচয় বন্ধ হতে পারে। শেষ অব্দি সুবিধা তো সেই নাগরিকেরাই পাবে। আমলাদের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিভাবে কেন্দ্রীয় সরকারেরই করা উচিত। বদলী, পদোন্নতিসহ সবকিছুই। বরং তারা যে রাজ্যে কাজ করবে সেটাই ডেপুটেশনের হওয়া উচিত। বিচার ব্যবস্থা যেমন স্বাধীন তেমনি স্বাধীন হওয়া উচিত আমলাতন্ত্রেরও। আমলাতন্ত্রের পরিচালনা করার জন্য তো DOPT, UPSC আছেই, রাজনৈতিক নেতাদের হাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখলে আখেরে জনগণের ক্ষতি।

    তেমনি কেন্দ্র ও রাজ্যের যে যৌথ তালিকা আছে সংবিধানে, সেখানেও অনেক ধোঁয়াশা আছে। সেগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন। অথবা যৌথ তালিকা তুলে দিয়ে সরাসরি কেন্দ্র ও রাজ্যের আলাদা আলাদা ক্ষমতার তালিকা করা উচিত। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ এবং জমির অধিগ্রহণ নিয়ে বিগত দশকগুলোতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং হচ্ছে তার আশু সমাধান হওয়া উচিত। এতে দেশের সামনে যেমন বিপদ বাড়ছে তেমনি অন্যদিকে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে জমি অধিগ্রহণের সমস্যার কারণে কত প্রকল্প (কেন্দ্রীয় ও বেসরকারী) যে দিনের আলোর মুখ দেখতে পারলো না বা এখনও সম্পূর্ণ হলো না তা বলে শেষ করা যাবে না। সেই কারণে যে সরকারের কত অর্থ অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয়ে গেল তার হিসেব কে রাখে? এক ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজই বিগত কুড়ি বছর ধরে শেষ করা গেল না। এরফলে অতিরিক্ত অর্থ, পরিবহনের সমস্যা, যাতায়াতের সমস্যার খেসারত কে দিচ্ছে? সেই তো জনগন। 

    শেষ অব্দি সেই জনগণের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে প্রতিপদে। তাহলে কিসের জনগণের জন্য আইন, বিচারব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র এবং সর্বোপরি সরকার? আমলাতন্ত্র এবং যৌথ তালিকার আশু সংশোধন প্রয়োজন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন