এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  কাব্য

  • চারটি উত্তরাধুনিক কবিতা -- জয়িতা ভট্টাচার্য

    Jayeeta Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    কাব্য | ১৫ অক্টোবর ২০২৩ | ৪১৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • চারটি উত্তরাধুনিক কবিতা
    আয়তক্ষেত্রে প্রশ্বাস : জয়িতা ভট্টাচার্য



    অশ্রুভরা মেঘগুলো রাত্রির বাতাসে ভেসে আছে
    আর একবার শুধু।
    হালকা আঘাতে ঝরে যাবে সমস্ত উচ্চতা থেকে উপত্যকার উপর।
    এভাবে লিখে রাখি হৃদয়ের যত আত্মগ্লানি,ধূসর মাঠের ওপর সবুজের আত্মহুতি,বিবর্তনের খবর লিখে রাখি প্রতিবার প্রত্যাহত হয়ে।
    হয়ত বুঝবে এবার।
    হয়ত ফিরে আসবে শিশুর চোখের মতো বিস্ময়।
    একটি প্রজাপতি বারবার একটি ফুলের কাছে উড়ে উড়ে আসে।
    একটি মাছরাঙা বিশেষ ডালটির ওপর বসে।
    কী দ্যাখে এভাবে আকাশের দিকে চেয়ে!
    বিশ্বের কত জটিল ধাঁধা অর্থহীন কত শব্দের অপচয় দেখে।
    আমিও অপেক্ষা করি।
    এভাবে সৌরজগত থেকে নেমে আসবে একদিন বিশেষ একটি নক্ষত্র।
    একফোঁটা জল ঠোঁট ছুঁয়ে গড়িয়ে যাবে ক্লান্ত এই হৃদয়ে।
    এইসব এবং আরো কিছু হতাশার কথামালা লিখে রাখি সূর্যের তির্যক আলো বরাবর।কর্কট ক্রান্তি রেখার গায়ে এসে পড়ে সভ্যতার আলো।
    খুব বেশি ভালোবেসে নিদারুণ কষ্ট পেতে হয়।তবু একবার।মাত্র একবার দংশন করে শেষ হয়ে যায় সব বিষ।
    তারপর আবার অনেক বছরের শেষে ফিরে আসে পুনরায় ধূসর দিন আর বিষন্ন রাত্রির অনুতাপ।



    তুমি কি যাবে সেই সব পাহাড়ে?
    পাহাড় চূড়ায়! বরফের মতো জমে আছে বিষণ্ণতম শৃঙ্গ যেখানে।
    তুমি কি যাবে নদীটির পাশে ফুলওয়ালি মেয়েটির মতো?
    সীমারেখা বরাবর হেঁটে গেলে দেখা যায় ঝিল।
    ওখানে বকেরা উড়ে আসে জলে। ইসদুষ্ণ জল রোদের তাপে।ভেসে ওঠে দু একটা মরা মাছ জীবনের সঙ্গে।
    ছিপ ফেলে বসে থাকা ঠা ঠা রোদ্দুরে।
    কথা শুধু কথা নয়।
    বাঁচা আর মরা।
    এইসব জটিল অঙ্ক ক্ষেত্র বিশেষে অমিল উত্তর বা নিরুত্তর থাকে।
    ক্লান্তির মাদুর বিছিয়ে শুয়ে আছে দেখা যায় অপূর্ব ইমারত।
    তেমন কিছু অলীক ঘটে না।
    তেমন অলৌকিক বিচরণ নেই।
    ফুল নিয়ম মাফিক ফুটে ঝরে যায়।
    শীত বর্ষা আসে যায়।
    চার প্রজন্মের ভিটে ভেঙে দেখা যায় সংশয় বাসা করে আছে।
    কিছু হয় না নতুন।
    ঘটনা হীন বাঁচার পর স্বাভাবিক এক মুহুর্তে মরা।
    তেমন কোনো ইতিহাস সৃষ্টি হয় না ভাত আর সঙ্গমের মাঝে।
    রক্ত আর ঘাম।
    শীৎকার আর গোঙানির শব্দে জেগে ওঠে রাত।
    জীবনের সব পাল্প ফিকশন লিখে রাখে বিভূতি আকাশ।
    মালঞ্চতলায় ওই এশিয়ার বাগানের ঘাসে পড়ে আছে হিম।তোমার পায়ের নিচে শুধু অন্ধকার।
    কোনে বসে আছে বিশ্বাস গিলে নেওয়া প্রাচীন বেড়াল।
    তোমার জন্য এই বনানী আজও লাল হয়ে ওঠে সলাজ ব্যকরণে।



    এইবার জ্বলে উঠবে শিখা আর নবান্নের সুঘ্রাণ।
    জানাবে নক্ষত্রের জন্ম সংবাদ।
    এই ভেবে নারীগণ ঘুমিয়ে পড়ে রাতে।হেমন্তের মাঠে।
    পাল্প ফিকশন সম রাতে।
    কুয়াশায়, জেগে উঠবে তস্কর।
    পুনরায়।
    শেয়ালের দল...অভুক্ত পাগল ছেঁড়া প্যান্ট খড়ি ওঠা গায়ে।
    সারারাত খুঁজে যাবে একটুকরো আহার।অন্ধ আর স্কন্ধকাটা দেশে দেশে।
    পাশবিক সৌন্দর্যের রাতে।
    আহা! সেই সব প্রজনন কালের সারমেয় সব।
    চিৎকার আর শীৎকারের রাত।
    সমবৎসর উপোসের পরে আশার সঞ্চার।
    জৈবিক।খুব বেশি জৈবিক এই শহর আর গ্রাম।
    এই বিশ্বের দোলাচলে।
    বৃত্তাকারে একই অক্ষের ভেতর।
    জ্বেলে রাখে সুপ্রাচীন কামনার ডালি।
    প্রদীপ জ্বলে।
    তুমিও জানো।
    চাঁদের চেয়ে ঘনিষ্ঠ বেশি বিজলির আলো।
    কার্যকরী।
    ঘনিষ্ঠ!
    কে-না জানে।
    জীবন।ততো কাল্পনিক নয় যতটা ভেবেছিলো বটে শৈশব।
    ততটাও নয় রোমান্টিক হাভাতের প্রণয়, যতটা অপুর-সংসার।
    একবার পুরোনো হলে।সাপ।
    খোলোস ফেলে নতুনতর মাৎসর্যের নেশায় ফের চাগাড় দিয়ে ওঠে।
    এই বিশ্বের ফিকশনে।
    চমৎকার!
    তুমি জানো।আর আমরাও বসে থাকি দুই প্রান্তরে বহু খিদে সঞ্চয় করে।
    একা।
    অথবা দুজনে।
    আর তারপর,
    আমরা অমর্ত্য হয়ে যাই।



    ফুলডুংড়ি পাহাড়।
    ওদিকে ফুলেশ্বরী নদী।
    দেখেছি আমি।
    কতো যে তফাত।
    স্থান,কাল অথবা পাত্রে!
    মাঝ বরাবর অনেকটা সময়
    আয়তক্ষেত্র,সবুজ আর সবুজ।
    মাঝে মধ্যে দু একটি আকাশ
    ভেঙে পড়ে আছে মাঠেতে।
    যেন,সুরক্ষিত প্রেমের প্রশ্বাস সারাদিন, তবুও সুধাকাণ্ড থেকে ঝরে পড়ে ফল।
    মিষ্টি ফল।
    বিষ।
    ভেতরে কীটের বাস।টানা পথ জুড়ে আছে অসংখ্য অনন্ত পায়ের ছাপ মানুষের।
    মানুষের সমাজের।
    গৃহহীন পাখির ছানার মতো মাটির ওপর পড়ে ছটফট
    চাঁদের আলো হাটে-বাজারে।
    জনশূন্য লোকালয় থেকে দুর
    দেখা যায় শুধু আদান-প্রদান।
    কেউ কি আসিবে এবার!
    কেউ কি সঞ্চার করে দেবে
    জমে থাকা সমস্ত আলোর বিন্যাস?
    এসব ভাবছে ফুল।
    ফুল,সামান্য ফুল তবু সে।
    রেনু থেকে সৃষ্টি করে চলে আজীবন কতো বিস্ময়।
    পৃথিবীর কাছে দৃষ্টান্তমূলক
    সভ্যতার কথা স্মরণীয় করে প্রতিবার ফুটে উঠে বিশ্বে।
    সমস্ত বিষণ্ণতা পাড় হয়ে চাঁদ আসে।
    দেখা যায় প্রজাপতি আর মাছরাঙা যে যার বাসায় ঘুমায়।
    সেই পুরাতন কক্ষপথে ঘুর্ণন থেকে ছিটকে আসে প্রণয়ের ফিকশন।
    সঙ্গম শেষে অবসন্ন সব জীব আর জীবনের ইতিহাস
    রচনা করে এই পৃথিবীর ঈগলেরা।
    তবু তুমি জানো ভালোবাসা মাধুকরি করে।
    মানুষের বুকের ভেতর
    ফুলের পরাগ।
    সৌরভহীন সভ্যতা।
    দ্যাখো,ফুলেরা কাঁদছে।
    এশিয়ার মাঠে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • কাব্য | ১৫ অক্টোবর ২০২৩ | ৪১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন