এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • মুর্শিদাবাদের কিসসা

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১২১১ বার পঠিত
  • মুর্শিদাবাদ। সে সময় পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ, ধনী শহর। ক্লাইভ লিখেছিলেন, লন্ডনের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের একটাই তফাত। সেটা হল, লন্ডনের ব্যাঙ্কারদের চেয়ে অনেক অনেক ধনী শেঠরা মুর্শিদাবাদে বসবাস করেন। ব্যাপারটা আদৌ অস্বাভাবিক না। জগৎ শেঠদের থেকে টাকা ধার নিতেন মুঘল সম্রাটরা। জগতের শেঠ, উপাধিটাই মুঘল সম্রাটের দেওয়া। মারাঠারা কোটি খানেক টাকা, সে আমলের কোটিখানেক, লুঠ করার পরেও, শেঠরা বিজনেস-অ্যাজ-ইউজুয়াল চালিয়ে গিয়েছিলেন অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধ্বে। চালাবেন নাই বা কেন। বাংলা তখন পূর্ব গোলার্ধের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র। বণিকরা আসছে সারা পৃথিবী থেকে। মসলিন ছড়িয়ে যাচ্ছে সারা পৃথিবীতে। নগদ দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছে ডাচ, মুর, ইংরেজরা। "এখানে সোনারূপো আসে, বেরোয়না"। বলেছিলেন এক বণিক। 

    সে মুর্শিদাবাদ থাকেনি। সেটা বড় কথা নয়, বৃটিশ বাংলার সবই লুটেছে। শিল্পবিপ্লবের খরচার অনেকটাই চুকিয়েছে বাংলা। এখানে এক তৃতীয়াংশ লোক স্রেফ মরে গেছে মন্বন্তরে। বড় কথা হল, আমরা ওই অতীত ভুলে গেছি। বৃটিশ আমলে এবং স্বাধীন খণ্ডিত ভারতবর্ষে দিল্লি ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। লালকেল্লার জমকালো লাইট-অ্যান্ড-সাউন্ড তো তারই প্রতীক। মুর্শিদাবাদ, তার রাজকীয় অতীত নিয়ে ক্রমশ তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। ভুলে যাওয়া এবং ভুলিয়ে দেওয়া, সেও তো এক ধরণের রাষ্ট্রনীতিই।

    কিন্তু ওভাবে তো স্মৃতি মরেনা। টিকে থাকে জনচেতনায়। পুরোনো বইয়ে। হারানো কিস্যায়। সেখানে কোথা থেকে কী ফুঁড়ে উঠবে বলা কঠিন। যেভাবে ফুঁড়ে উঠেছে 'কিসসা মুর্শিদাবাদি'। গল্পে গল্পে মুর্শিদাবাদ।এই প্রথম একটি দাস্তানগোঈ বৈঠক উঠে আসছে বই এর মধ্যে। থাকছে সিপাহি বিদ্রোহের প্রত্যক্ষদর্শী জাহির দেহলভির দাস্তান এ গদর থেকে তথ্য নিয়ে লেখা আখ্যান। আরও নানা টুকরো-টাকরা। নানা চক্করে, ক্রমশ বেশি-বেশি করে যখন বাংলার গৌরবময় অতীতকে ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে, তখন, এটা ছাপা আমাদের কর্তব্য বলেই মনে করেছি।

    আমাদের বইপত্তর সবই সমবায় পদ্ধতিতে। যদি কেউ বইয়ের খরচের আংশিক বা সম্পূর্ণ ভার গ্রহণ করে আংশিক বা সম্পূর্ণ দত্তক নিতে চান, তো এই পোস্টের নিচে জানান। বা, সবচেয়ে ভালো হয় guruchandali@gmail.com  এ একটা মেল ঠুকে দিলে। 

    লেখকঃ সুপর্ণা দেব। 
    প্রচ্ছদঃ তৌষিক বসু।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • history | 167.16.***.*** | ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৯:২৫521768
  • সেসময় মুর্শিদাবাদ বা বাংলা বা ভারত খুব ধনসম্পদে ভরা ছিল আর তারপর ব্রিটিশরা সব লুটে নিল, একথার মধ্যে একটা ফ্যালাসি আছে। অষ্টাদশ শতকে সম্পদ মূলত জনসংখ্যার সঙ্গে সমানুপাতিক ছিল। ফলে যে দেশ বেশি বাসযোগ্য যেখানে জনসংখ্যা বেশি, সেখানেই সম্পদের প্রাচুর্য। কিন্তু সম্পদের বন্টন দেখলে দেখা যাবে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ কম। তাছাড়া সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারণ লোকের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ইউরোপে শিল্পবিপ্লবের ফলে সম্পদ ও জনসংখ্যার সরল সম্পর্কটি চিরতরে ভেঙে যায়। উন্নত যন্ত্রই হয়ে দাঁড়ায় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। তখন থেকেই ভারতকে গরিব দেশ মনে হতে থাকে। এর পিছনে ব্রিটিশদের লুটের অবদান গালগল্প মাত্র। ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার লুটের একটা হিসেব (সোর্স - উৎসা পট্টনায়েক) বাজারে ঘোরে। সেটাও ভুলভাল। অর্থনীতির অআকখ জানলে কেউ ওরকম হিসেব দেয়না। বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ কলোনিয়ালিজমের কি ফল সেটার মূল্যায়ন হওয়া দরকার (অমর্ত্য সেন যা করেছেন)। কিন্তু এইসব নিম্নমানের স্কলারশিপ আমাদের আরও হাস্যস্পদ করে।
  • সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৯:৪০521769
  • ১৭৭০-৭১ এ একটা মন্বন্তর হয় বাংলায়। যেটাকে ৭৬  এর মন্বন্তর বলা হয়। তাতে বাংলার এক তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যায়। তার আগে, বর্গী উপদ্রব ছাড়া অনাহারের কোনো খবর পাওয়া যায়না। দুর্ভিক্ষ তো হয়ইনি। 
     
    অঙ্ক কষলে দেখবেন, বৃটিশ শাসনের ১৩ বছরের মাথায় অন্তত ১/৩ শতাংশ লেকের মাথাপিছু সম্পদের পরিমান ১০০% কমে গিয়েছিল। সেটা কি ম্যাজিক? মানে জাস্ট গরীব মনে হতে শুরু করা? 
     
    তা যদি না হয়, তাহলে বাংলার অন্তত ১/৩ সম্পদ কোথায় গেল তার একটা ব্যাখ্যা চাই। মজুদদারের হাতে? জমিদারের হাতে? ফড়ে-দালালের হাতে? নাকি ব্রিটিশের হাতে? 
    চুরিচামারি হত বিস্তর। তারপরেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যালেন্স শিট দেখলেই বুঝবেন সম্পদটা যেত কোথায়। সহজ অঙ্ক।
     
    আর হ্যঁ, এটাকেই উপনিবেশ বলে। তখন ওইরকম কায়দাই  ছিল। এখন বদলেছে।
  • Eman Bhasha | ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৯:৫৩521770
  • ধন্যবাদ সৈকত 
  • upal mukhopadhyay | ২৬ জুলাই ২০২৩ ১১:৪৬521781
  • অকাট্য যুক্তি ,অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের পক্ষে  
  • কৌশিক সাহা | ১১ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০৭539397
  • সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়
    মহাভারতেই মন্বন্তরের উপাখ্যান আছে| অশ্বমেধ যজ্ঞের সময় স্বর্ণনকুল এর কাহিনীর কথা স্মরণ করুন| সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি দুর্ভক্ষ নিয়ন্ত্রন করার জন্যে সমগ্র সাম্রাজ্যে শস্যের দাম বেঁধে দেওয়ার হুকুম জারি করেন |
  • :|: | 2607:fb90:bd9e:6cd9:7d39:d563:21e7:***:*** | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ০৪:৫৯539408
  • ২৩টা ০৭-এর মন্তব্য যদি ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৯:৪০-এর প্রেক্ষিতে করে থাকেন তবে উদাহরণ দুটি ঠিক হলোনা। কারণ লেখক শুধু বাংলার কথা বলেছেন। মহাভারতে বাংলা পান্ডব বর্জিত দেশ। কাজেই কৌরব পাণ্ডবদের গল্পে বাংলার দুর্ভিক্ষের কথা আসা কঠিন। 
    আর, আলাউদ্দিন খিলজি কি কোনও দিনও বাংলার শাসক ছিলেন নাকি? আমি আবার ইতিহাসে পাতিহাঁস।
  • দীপ | 2402:3a80:1968:3d76:578:5634:1232:***:*** | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২১539412
  • নবাবী আমল অর্থনৈতিক ভাবে যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিল, একথা অবশ্য‌ই সত্য। কিন্তু এই অর্থসম্পদ মূলত সমাজের ৩-৪ শতাংশ অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সাধারণ মানুষ এর দ্বারা বিশেষ লাভবান হয়নি।
    আজকেও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভারত অত্যন্ত শক্তিশালী দেশ, কিন্তু এই অর্থসম্পদ মূলত ৫ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আম্বানি-আদানির অর্থনৈতিক লাভ দেখিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের বাস্তব অবস্থাকে খুব ভালো বলা যায়না!
     
     
  • দীপ | 2402:3a80:198b:faf2:678:5634:1232:***:*** | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৭539414
  • ইংরেজ আমাদের দেশকে ছিবড়ে করেছে, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে তার আগের সময় "সোনার বাংলা" ছিলোনা! গৃহযুদ্ধ, মাৎস্যন্যায়; সবকিছুই ছিলো! 
    প্রোপাগান্ডা আর তথ্যনিষ্ঠ আলোচনার মধ্যে পার্থক্য আছে!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন