এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পাড়ার ছোট্ট পার্ক গানটি নিয়ে কিছু কথা

    Brown Blues লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৬ মার্চ ২০২১ | ২৩০৮ বার পঠিত
  • আজ সুমনের জন্মদিন। তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত আলাপ নেই, স্রেফ শ্রোতা ও শিল্পীর সম্পর্ক। কর্মী সুমন, শিল্পী সুমনের আমি একনিষ্ঠ ভক্ত। সেই জায়গা থেকে একটি গান নিয়ে কিছু কথা এখানে লিখতে ইচ্ছা করলো।

    আশির দশকের মাঝামাঝি বা শুরুর দিকে থেকে নব্বই অবধি বাংলা বাজারের শিল্প-সাহিত্য সর্ব ক্ষেত্রেই একটা ভ্যাকুয়াম ছিলো। হচ্ছিলো অনেক কিছুই, কিন্তু তা শুধুমাত্র হওয়ার জন্যই। হতে হয় তাই হচ্ছে, না হলেও খুব একটা কিছু ক্ষতি হবে না।

    এই অবস্থায় বিরানব্বই সালে 'তোমাকে চাই' বেরোলো, এবং যাকে বলে একটা সাংস্কৃতিক বিস্ফোরণ ঘটলো। 'সুমনের গান' নামক একটা আপাত জঁর, তৈরী হলো এই ভাষায়। সুমনের গান হলো আমাদের আবেগের উচ্চারণ। এই সেই সুমনের গান যা দাবি মেটায় সময়ের অস্থিরতার। এই সুমনের গান দাবি করে ডিসোনেন্সের, সেখানে রিলিজের কোন জায়গা নেই। সকল প্রকার সামাজিক এবং মার্কেটিং নর্মসের পরিপন্থী, সুমনের গান সুখী সময় সুখী মানুষদের নিয়ে ভাবিত নয়।

    কিন্তু, সুমনের গান নিয়ে যা আলোচনা হয়েছে, বা বলা ভালো আমার গোচরে যা এসছে তা মোটামুটিভাবে হলো আবেগের বহিঃপ্রকাশ এবং লিরিকটি কী ভালো বা সুরটি কি একটু একঘেয়ে ইত্যাদি নিয়ে। মুষ্টিমেয় কিছু আলোচনা ছাড়া।

    আমি চলচ্চিত্র-প্রেমী এবং সেই সুবাদে সিনেমা নিয়ে কিঞ্চিৎ নাড়াচাড়া করি। এমতাবস্থায় আমি একটি গান নিয়ে কিছু কথা বলার চেষ্টা করছি।সুমনের অনেক গানের মতো এই গানটিতেও এক ধরনের চলচ্চিত্র-ধর্মীতা আছে। একটি গানের চলচ্চিত্রধর্মীতা কিভাবে থাকতে পারে তা ভেবে আমিও অবাক হয়ে গেছিলাম। গানটির নাম পাড়ার ছোট্ট পার্ক। গানটি আপাত ভাবে যে খুব একটা শ্রুতিমধুর সেরম নয়, এবং হয়তো সেই কারণে জনমানসে খুব একটা জনপ্রিয়ও নয়।গানটির কথার মধ্যে এক ধরনের ইমেজ-ধর্মীতা আছে, অর্থাৎ ক্রমাগত কিছু ছবি ভেসে উঠবে যদি আমরা গানটির কথা গুলো আপনমনে পড়ি। আমরা দেখবো একের পর এক ছবি, স্থির বা চলমান একটা প্রবাহমান নদী বা মোশনের মতো বয়ে চলেছে।

    ধরা যাক, গানটির প্রথম লাইন -

    'রেলিঙে শুকোয় শাড়ি, পাঁচিলে শুকোয় ঘুঁটে, ঘাসগুলো সব শুকিয়ে শেষমেষ গেছে উঠে....'

    পরিপূর্ণ একটা ইমেজের বর্ণনা। আমরা দেখতে পাচ্ছি ইমেজটা কিরকম, সেই ইমেজে কে বা কারা আছে, তাঁরা কি করছে।
    এরপরেই, এই ল্যান্ডস্কেপ থেকে একটু জুম করে সুমন চলে যাচ্ছেন - 'বেঞ্চি গুলোর কাঠ, রোদে পুড়ে জলে ভিজে'

    অর্থাৎ আগের যেই ইমেজ, সেইখান থেকে আরেকটু ভিতরে ঢুকে আমরা চলে যাচ্ছি আরেকটু কাছাকাছি। পরপর দুটো ইমেজ তৈরি হলো। কিন্তু আশ্চর্যভাবে, ঠিক এর পরের লাইনেই কিন্তু আমরা আবার আর ইমেজের দিকে যাচ্ছি না, বরং সেখানে আমাদের দিব্য দৃশ্যের থেকে বেশি জরুরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের বোধ।

    'সমকাল এসে বসেছে এখানে আহত প্রেমিক সেজে' - এই শব্দ-গুচ্ছ কিন্তু কোন পার্টিকুলার ইমেজকে আর তৈরি করছে না, বদলে ইতিমধ্যে তৈরি করা ইমেজগুলোকে কাজে লাগিয়ে একটা বোধ বা একটা অনুরণন তৈরি করছে। সমকাল কে আমরা দেখতে পাচ্ছি না, 'আহত প্রেমিক' ব্যাপার তা ঠিক কী, সেটাও আমরা বুঝতে পারছি না। বুঝতে পারছি বেঞ্চগুলোও ফাঁকা কিন্তু, 'সমকাল এসেছে বসেছে এখানে আহত প্রেমিক সেজে' এই ব্যাপারটা আকাশ থেকে পড়ছে না, বরং আগের চারটে পংক্তি জুড়ে তারই প্রস্তুতি চলেছে। অর্থাৎ, ক্রমানুসারে- বৃহৎ ইমেজ, ইমেজ এবং সেই দুই দিব্য দৃশ্যের ফলে সৃষ্ট একটি স্বতন্ত্র দৃশ্যের ছাপ, দৃশ্য নয়।

    এরপরই আবার সুমন ফিরে যাচ্ছেন - ' বেঞ্চি গুলোর কাঠ, রোদে পুড়ে জলে ভিজে' এই পংক্তিটির পুনরাবৃত্তিতে। পুনরায় একটা ইমেজ, আগের ইমেজই। শব্দগুচ্ছ এক, ইমেজও এক কিন্তু এইবার মানেটা একটু পাল্টেছে এবং অদ্ভুতভাবে এই পংক্তির পরে কিন্তু সেই আগের পংক্তিটি আবার প্রত্যাশিত ভাবে পুনরাবৃত্ত হলো না, সামান্য পাল্টে হলো - 'সমকাল এসে বসেছে সেখানে একা চ্যাপলিন সেজে'।

    সামগ্রিক ভাবে এইবার যদি আমরা গানটা পড়ি এতো অবধি, দেখবো যে একটা বড়ো ছবি দিয়ে শুরু হলো লেখাটি। তার পরের পংক্তিতে একটু ক্লোজ-আপে গিয়ে আরো একটু ডিটেইলএ দেখা। এবং তারপর আক্ষরিক ছবির বদলে একটা ছবির ছাপ। এবং আবার পুনরায় সেই পুরনো ইমেজ অর্থাৎ পার্কের বেঞ্চির বর্ণনাএবং আবার একটি আক্ষরিক ছবির বদলে আগের মতোই সেই ছবির ছাপ। প্রকারন্তরে আগের ছবিটির ছাপের একটি পরিবর্তিত রূপ। পুরো গানটা ধরেই এই প্যাটার্নটা মোটামুটি ভাবে চলতে থাকবে, কিছু সূক্ষ্ম রূপান্তরের সাথে।

    সুমনের গানের চলচ্চিত্রধর্মীতার একটি অনন্য উদাহরণ হলো এইটি। সুমন, গানের কথার মধ্যে দিয়ে একের পর এক ইমেজ বা ছবি তৈরি করেন এবং সেই ছবি কোন বিক্ষিপ্ত ছবি নয়। বরং প্রবাহমানতার সাক্ষর থাকে তাতে। বর্ণ দিয়ে বোনা ছবিসমূহ দস্তুর মতো সুক্ষ সম্পাদনার মধ্যে দিয়ে গিয়ে স্রষ্টার মেধার কারুকার্য ঘোষণা করে।

    মজার ব্যাপার হলো, গানে এই ছবি বোনার পাশাপাশি সুমন শব্দও বুনে গেছেন বর্ণ দিয়ে। কীরকম ?

    ধরা যাক, এই গানেরই একটি অংশ -

    "লোহার গেটের পাশে উনুন ধরায় কারা
    রেলিং ঘেঁষেই সংসার করে ক'জন বাস্তুহারা।
    একটু দূরেই আছে, ক্যাচকেচে টিপকল
    পড়ন্তবেলা বালতিকে বলে, 'চলরে জলকে চল...'"

    প্রথম দুই লাইনে একটি ইমেজ। একটি পরিপূর্ণ ছবি বোনা হয়েছে বর্ণমালার ব্যবহারে। আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠছে একটা ছবি। এরপরেই তিন নম্বর লাইনে আরেকটি ইমেজ এবং সেই ইমেজকে জলজ্যান্ত করে তুলছে একটি শব্দ, শব্দটি হলো - 'ক্যাচকেচে'। আগের কোন ছবিতে ( লাইনে) কিন্তু এইরকম শব্দের উপস্থিতি নেই, শুধুমাত্র এই ছবিটি(লাইনটি) ছাড়া। গানটি পুরোটা পড়লে দেখা যাবে পরের কোন জায়গাতেও নেই, শব্দের উপস্থিতি আছে শুধুমাত্র এই জায়গায়।

    গানের শেষ লাইন, এই আগের তিনটি লাইনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিষ্ঠা করছে একটি অধিবাস্তব ছবির।

    "পড়ন্তবেলা বালতিকে বলে, 'চলরে জলকে চল'.."।

    এই ছবিতেও একটি শব্দের উপাদান আছে, কিন্তু তা শব্দের ছাপ, পুরোপরি বাস্তবের কোন শ্রবণযোগ্য উপাদান নয়। কিন্তু দুটি উপাদান যথা - 'ক্যাচকেচে' এবং 'চলরে জলকে চল' এই দুটি মিলে আবার তৈরি করছে একটি শ্রবণ পরিসরের। যদিও এই পরিসর মোটামুটিভাবে গানের এই অংশটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সুমনের গানের লিরিকের এই আক্ষরিক চলচ্চিত্রধর্মীতা এক অসামান্য ব্যাপার। এবং তার থেকেও অসামান্য ব্যাপার হলো তাঁর গানের ছন্দের বুনোট, সেই ছন্দের বুনোটের সমান্তরাল এই চলচ্চিত্রধর্মীতা। পুরো গানটি তাঁর এই সাক্ষর বহন করে। এবং এই গানটি তো বটেই, অন্যান্য বহু গানেও সুমনের এই অদ্ভুত এক শিল্প গুণের উচ্চারণ আছে।

    তবে, এতক্ষণ যা আলোচনা করার চেষ্টা করলাম তা মোটামুটি ভাবে এই গানের কথা এবং এই গানের কথার চলচ্চিত্রধর্মীতা নিয়ে। এইবার একটু আলোচনা করা যাক সুরটি নিয়ে, এবং কিভাবে তা যোগ্য সঙ্গত করে গানের কথাকে এবং তাঁর চলচ্চিত্রধর্মীতাকে। গানটি যদি মনোযোগ দিয়ে শুনি, দেখবো যে গিটারের যে স্ট্রামিং প্যাটার্নটি সুমন গানটির মধ্যে বাজিয়েছেন তা অনেকটা 'স্ট্যাগেটো'ধর্মী। অর্থাৎ বিলম্বিত নয়, একটি স্ট্রামিং মুভমেন্টের ফলে যে আওয়াজটি আসছে তা তাৎক্ষনিক এবং পরের আওয়াজটি আসছে পরের স্ট্রামিং মুভমেন্টের জন্য, আগের মুভমেন্টের কোন বিলম্বিত আওয়াজ তাতে নেই। অর্থাৎ অত্যন্ত 'কাটা-কাটা' এবং অযথা সম্প্রসারণের কোন চেষ্টা নেই। মুভমেন্ট বলতে আমি সুরের মুভমেন্টকে বোঝাচ্ছি না, স্ট্রামিং মুভমেন্ট অর্থাৎ কিভাবে তিনি গিটারটি বাজাচ্ছেন তার কথা বলছি।

    গানটি গাওয়ার সময়, বা আরো নির্দিষ্ট করে বললে শব্দ সহযোগে গানটি গাওয়ার সময় যোগ্য সঙ্গত করেছে এই প্যাটার্নটি। ইন্টারেস্টিং হলো, সুমনের এই গানের সুর তাঁর অন্য অনেক গানের সুরের মতোই অত্যন্ত মুচমুচে এবং গদ্য-সুলভ। সুরের এই মুভমেন্ট কে খুব বহুমাত্রিক বলা যাবে না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা একমাত্রিক এবং যে কারণে আমাদের শ্রবণ অভিজ্ঞতায় তা অনেকাংশেই 'একঘেয়ে'। অযথা কোন কাব্য নেই সুরের মধ্যে কারণ গানের কথা সুরের সেরকম কোন রকম কাব্যময়তাই দাবি করে না।

    যেই গানের কথার মধ্যে আছে 'ধুলো উঠে যাওয়া ধূসর পার্কে শিশুর সাম্যবাদ' সেই গানে সুরের বিলম্বিত কাব্যময়তা গানটির সামগ্রীকতাকে নষ্ট করে। এবং এইখানেই সুমন সুমন, তাঁর দশ মাইলের মধ্যে কেউ আসে না,সুমনের গানের কথা এবং গানের সুর একে অপরের পরিপূরক। তিনি মনে করেন, গানের কথা আর গানের সুর সম্পূৰ্ণ আলাদা কোন জিনিস নয়, তাদের সামঞ্জস্য থাকা জরুরি কারণ গান একধরনের রাজনৈতিক উচ্চারণ। যেখানে বাস্তুহারার সংসার, যেখানে ঘাস উঠে গেছে, ল্যাম্পপোস্টের আলো ভেঙে গেছে সেখানে কাব্যময়তা নেই। সেই সময় সুখী নয়, সেই ইমেজ সুখী নয়, সেই শব্দ সমূহ সুখী নয়, কাজেই মোলায়েম শ্রুতিমধুরতা সেখানে অপরাধ। সেখানে জরুরি নৈর্ব্যক্তিকতা। বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারেও সেই উচ্চারণ স্পষ্ট। তবে হ্যাঁ, তাতে আনন্দ থাকবে, আশা থাকবে এবং সেগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আছে তাঁর হার্মোনিকা। তাঁর সেই ফুঁ-যন্ত্র প্রতিনিধিত্ব করছে আশা-ভরসা-আনন্দের। কিন্তু নিস্তরঙ্গতার কোন জায়গা নেই এখানে।

    সুমনের জন্মদিনে তাঁরই একটি গানকে নিয়ে একটু অন্যরকম ভাবে পড়াশোনা করার চেষ্টা করলাম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখাই শেষ কথা নয়, হয়তো আমার বিশ্লেষণ পুরোপুরি ভুল বা হয়তো কিছু ক্ষেত্রে ঠিক। উৎসাহী সুমন ভক্তরা আলোচনায় আসুন, আমরা চর্চা করি।

    এই সময়ে সুমনের গান নিয়ে চর্চা করা জরুরি। সুমনের গান জরুরি অবস্থার কথা বলে, অস্থিরতার কথা বলে। এই সময়টাও মোটামুটি সেরকম, কালকের কফি হাউসের ঘটনাও তাই বলে, একের পর এক হাস্যকর রাজনৈতিক লম্প-ঝম্পও সেই কথা বলে। তবে চিন্তা নেই, যতদিন সুমনের গান আছে, সন্দীপনের গদ্য আছে, ঋত্বিকের ছবি আছে ততদিন মুক্ত-চিন্তার পরিসরও থাকবে। আমাদের মুক্ত চিন্তার পরিসরে যে বা যারা বিদঘুটে টিশার্ট বলে লাফালাফি করে ধ্বংস করতে আসবে বলে চেষ্টা করছে, তাদের জেনে রাখা জরুরি যে তাদের জন্য হারবার্ট সরকারের নেতৃত্বে ফ্যাতারুরা মাথার ওপর অপেক্ষা করছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • r2h | 49.206.***.*** | ১৬ মার্চ ২০২১ ২০:১৬103794
  • পড়ছি এই লেখাটা।

  • anandaB | 50.125.***.*** | ১৬ মার্চ ২০২১ ২২:৩৯103801
  • লেখাটি ভালো লাগল 


    তবে গানের মাধ্যমে চালচিত্র বোনার এপিটোম হলো সুমনের বিভূতিভূষণ  গান টি ,  এর চেয়ে ভালো সুর ও কথা র সমন্বয়ে আক্ষরিক অর্থে একটা ছবি আঁকার উদাহরণ আমি অন্তত আর পাই নি।..  কাছাকাছি কিছু আছে কিনা তাও হয়তো ভেবে বার করতে হবে 


    কিন্তু এহেন গানেও শেষের দিকে কাব্যময়তার বিঘ্ন ঘটেছে এবং আমার ধারণা তা কতকটা ইচ্ছাকৃত 


    অবশ্যই ব্যক্তিগত মতামত 

  • Brown Blues | ১৬ মার্চ ২০২১ ২৩:২৯103803
  • @anandaB একদমই। বিভূতিভূষণ গানটি আরেকটি জলজ্যান্ত উদাহরণ :D 

  • Tapas Das | ১৬ মার্চ ২০২১ ২৩:৩০103804
  • থ্যাংকিউ। সময়টাকে মনে রেখে এরকম একটা ভাবনা উপস্থাপন করার জন্য। 


    সময়টাকে কামড়ে ধরো বাঘ যেভাবে শিকার ধরে

  • সম্বিৎ | ১৭ মার্চ ২০২১ ০১:১৬103810
  • মনে পড়ে গেল, সুমনের গানে সিনেম্যাটিক টেকনিকের ব্যবহার নিয়ে অনেকদিন আগে লিখেছিলাম (বড় একটা লেখার অংশ) -

    সুমন তাঁর গানে মধ্যবিত্ত বাঙালির শহুরে চিত্তপট ও চিত্রপট ধরলেন এক সিনেম্যাটিক টেকনিক ব্যবহার করে | সিনেমায় মন্তাজের ব্যবহার বহুদিন ধরে হয়ে এসেছেন | খন্ড কিছু চিত্র - কখনও বিক্ষিপ্তও - মুন্সিয়ানার সঙ্গে পরপর সাজিয়ে এক পূর্ণ ছবি বা আইডিয়া তৈরি করা মন্তাজের কাজ | সুমন সেই টেকনিক ব্যবহার করলেন এই গানে | পরে আরও অনেক গানেই সুমন এই টেকনিকের ব্যবহার করবে, বিশেষতঃ কলকাতা বিষয়ক গানগুলোতে -
     
    ১ |
     
    কবেকার কলকাতা শহরের পথে
    পুরোন-নতুন মুখ ঘরে ইমারতে |
    অগুন্তি মানুষের ক্লান্ত মিছিলে
    অচেনা ছুটির ছোঁয়া তুমি এনে দিলে ||
     
    ২ |
     
    বেদম ট্র্যাফিক জ্যাম
    ঠান্ডা সালামি-হ্যাম
    চকলেট ক্যাডবেরি
    মাদার ডেয়ারি -
     
    ৩ |
     
    তোমাকে দেখছি কফি হাউজের ভিড়ে
    তোমাকে দেখছি খুঁজছ পুরোন বই
    পুরোন কিংবা নতুন মলাটে আমি
    আসলে কিন্তু তোমাকেই খুঁজবই |
  • b | 14.139.***.*** | ১৭ মার্চ ২০২১ ১৩:১০103826
  • সেই বড় লেখাটা কোথাও পাওয়া যাবে? 

  • বাইরে দূরে | ১৭ মার্চ ২০২১ ১৩:২০103829
  • অসাধারণ বিশ্লেষণ করেছেন ভাই। অনন্য লেখা । সলিল চৌধুরীর পরে শ্রেষ্ঠ কবি/ গীতিকার সুমন। বাংলা ও বাঙ্গালী ধন্য । 

  • Brown Blues | ১৭ মার্চ ২০২১ ১৫:৩৯103830
  • ধন্যবাদ সবাইকে :D 


    @সম্বিৎ আপনার বড়ো লেখাটি পড়ার কোন উপায় আছে ? :p 

  • b | 14.139.***.*** | ১৮ মার্চ ২০২১ ০৭:৫৯103848
  • আহ। মনে পড়েছে। তে হি নো দিবসা ইত্যাদি। 

  • রমা | 113.2.***.*** | ২৩ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০৫105034
  • চমৎকার

  • Mayukh Datta | ২৪ এপ্রিল ২০২১ ১০:৪১105097
  • বাহ!! খুব ভাল লাগল..

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন