
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোনবিহার নির্বাচনের একদম শেষ পর্বে এসে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, বস্তুত তৃণমূলের সঙ্গে বাম জোটের খোলাখুলি প্রস্তাব দিয়ে ফেললেন।
বামরা বিহারে অসাধারণ ফলাফল করে ফেলেছে এমন নয়, তবে নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের চেয়ে ভালো। সবচেয়ে এগিয়ে আছে সিপিআইএমএল লিবারেশন। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সাইটের খবর অনুযায়ী তারা ৯ টি আসনে জিতেছে এবং আরও ৩ টিতে এগিয়ে আছে। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে দীপঙ্কর স্পষ্ট করেই বলে দিলেন, যে, সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে এবার পশ্চিমবঙ্গের বামদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাদের অগ্রাধিকার কী? তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়ে বিজেপির সুবিধে করা? নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়ে তৃণমূলের হাত ধরা? শত্রুর বিচারে কংগ্রেস এবং তৃণমূল, দীপঙ্করের বিচারে বিজেপির কাছাকাছিও আসেনা, এই হল দীপঙ্করের মোদ্দা বক্তব্য। এবং সে কারণেই এদের সঙ্গে বামদের জোট করা উচিত।
পশ্চিমবঙ্গে বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামদের বিপর্যয় হয়েছে। বাম ঘরানার ভোটের একটি বৃহদংশ বিজেপিতে চলে গেছে, ভোটের হিসেবে। সে নিয়ে প্রচুর সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু বাম নেতৃত্ব এবং কর্মীবৃন্দ সজোরে এর জবাবে বলে এসেছেন, যে, ওভাবে বাম-ভোট বলে কিছু হয়না। ভোট কারো সম্পত্তি নয়। উল্টোদিকে, যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁদের বক্তব্য হল, ভোটের রাজনীতিতে "বিশ্বস্ত ভোট" বা "ভোট ব্যাঙ্ক" বলে একটি বস্তু অবশ্যই হয়। বামদের সেই বিশ্বস্ত ভোটই গেছে বিজেপির দিকে। তার কারণ, বাম পার্টির নেতারা প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যতটা সরব, তার সামান্য ভগ্নাংশও বিজেপির বিরুদ্ধে নন। তাঁদের মূল আক্রমণ সর্বদা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। এই লাইন মূলত আত্মঘাতী। এই লাইন কর্মী এবং সমর্থকদের "শত্রুর শত্রু আমার মিত্র" লাইনে ভাবতে উৎসাহ জুগিয়েছে। একদা সমর্থকরা বিজেপিকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অধিক কার্যকর ভেবে ভোট দিয়েছেন। এবং তার ফলেই এই বিপর্যয়।
এর জবাবে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা, অন্তত আধা প্রকাশ্যে যেটা বলছেন, সেটাও এখানে প্রণিধানযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গের ভোটের হিসেব বেশ জটিল। সিপিআইএম এর যে সাধারণ ভিত্তি, তার মূল সুরই হল তৃণমূল বিরোধিতা। তৃণমূলের প্রতি নরম এরকম কোনো সিপিআইএম সমর্থক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঠিক এই পরিস্থিতিতে যদি সমর্থকদের চিন্তার উল্টোদিকে গিয়ে পার্টির নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলান, তাহলে গণভিত্তি যেটুকু আছে, সেটুকুও পার্টিকে ছেড়ে চলে যাবে। গণভিত্তি খুঁজে নেবে তৃণমূলের বিরোধী শক্তিকে, ভোট দেবে তাকেই। অর্থাৎ শক্তিশালী হবে বিজেপিই। বিজেপির পাল থেকে হাওয়া কাড়তেই তাই বামদের তৃণমূল বিরোধিতা চালিয়ে যেতে হবে।
সমস্যা হল, এতদিন এই যুক্তিতে চলেও কিন্তু সিপিআইএম তার গণভিত্তি অটুট তো রাখতে পারেইনি। বরং তাতে বিপুল ধ্বস নেমেছে। তবুও এই লাইনটিই অনুসরণ করে যাওয়া হচ্ছে, এবং এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে তার খুব বেশি বিরোধিতা আসেনি। সিপিআইম এর যেটুকু গণভিত্তি এখনও আছে, তারা বিজেপির সর্বাত্মক বিরোধিতা করলে বাম ছেড়ে ডান দিকে চলে যাঅবে, এ আশঙ্কার আদৌ কি কোনো ভিত্তি আছে? নাকি আশু বিপদকে মাথায় রেখে সর্বাত্মক বিজেপি বিরোধিতা করলেই বামদের যেটুকু ভিত্তি আছে তা আরও শক্তপোক্ত হবে? এ নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক হওয়া দরকার। বিহার নির্বাচনের পর বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনলেন দীপঙ্কর। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জানা যাবে বিহারের অন্তিম ফলাফল। তারপর সমস্ত তাসই এসে যাবে টেবিলে। সেসব টেবিলের নিচে লুকিয়ে না ফেলে সমস্ত সম্ভাবনা, সমস্ত বিচার এবং সামগ্রিক বিতর্ক অবশ্যই প্রয়োজন।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১০:১৫100110অমিত বাঃ এই যে সারসত্যটা বুঝতে পেরেছেন এতেই আপনি ১০০-য় ১১০ পেলেন! আমি আগেই বলেছি গ্রাম বাংলা অন্যভাবে ভাবছে, অন্য কিছু ভাবছে। আর ভোটের ফলটা তারাই নির্ধারণ করে।
Amit | 203.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১০:৩৮100111এলেবেলে দার প্রেডিকশন গুলো কিন্তু ডেঞ্জারাস হয়। ২০১৯ এ দেখা গেছে।
dc | 103.195.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১০:৫৫100113আমার য্দ্দুর মনে হয় বিজেপি পবতে ২০২১ এ সরকার বানাবে। দেখা যাক।
kc | 188.7.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১১:০৮100114বিজেপি নাকি 'উন্নততর' মুলো?
আরেকবার জিজ্ঞাসা করছি।
আমার আরেকটা প্রশ্ন আছে। এটা রাজনৈতিক। বা একাধিক।
১) ভারতে প্রধান দ্বন্দ্ব কী?
২) ভারতের গারিব-গুর্বো খেটে খাওয়া মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু কোন রাজনৈতিক দল?
৩) ভারত আর পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিত উপরের দুটি প্রশ্নের ক্ষেত্রে আলাদা কিনা।
এ বিষয়ে সিপিএমের মত জানতে চাই। অফিশিয়াল মত।
অফিসিয়াল | 2405:8100:8000:5ca1::2e:***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৫৯100123দীপঙ্করদের ‘পয়লা শত্রু’ তত্ত্ব খারিজ বিমানদের
পুরনো বিতর্কই আবার নতুন মোড়কে! বিহারে মহাজোটের ফল বাংলায় বাম শিবিরে যেমন উৎসাহ বাড়িয়েছে, তেমনই টেনে এনেছে একাধিক বিতর্কও। কংগ্রেসের সঙ্গে কোন অঙ্কে আসন ভাগ হবে, সেই প্রশ্ন যেমন মাথা চাড়া দিয়েছে। তেমনই বাংলায় বৃহত্তর প্রতিপক্ষ বিজেপি না তৃণমূল, সেই বিতর্কও ইন্ধন পেয়েছে। বিহারে বামেদের মধ্যে সব চেয়ে সফল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন তৃণমূলের প্রতি তুলনায় ‘নরম’ হয়ে বিজেপিকেই মূল নিশানা করার পক্ষপাতী। কিন্তু সিপিএম এই তত্ত্বের সঙ্গে একমত নয়। তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসও বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ফারাক খুঁজতে চায় না।
অতীতে সর্বভারতীয় স্তরেই বাম শিবিরে বিতর্ক ছিল বিজেপি না কংগ্রেস, কে মূল প্রতিপক্ষ, সেই প্রশ্নে। কয়েক দশক আগে কেরল-সহ অন্য রাজ্যের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা টেনে প্রয়াত এক সিপিএম নেতার মন্তব্য ছিল, ‘‘বাংলার কমরেডরা সাম্প্রদায়িকতার বিপদ বুঝতে পারছেন না!’’ সময় এবং পরিস্থিতির পরিবর্তনে এখন কংগ্রেস বামেদের রাজনৈতিক সঙ্গী। এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলকে একসঙ্গে নিশানা করেই বাম ও কংগ্রেস আন্দোলনে আছে, ভোটের কৌশলও সাজাচ্ছে। কিন্তু বিহারে ১২টি বিধানসভা আসন পাওয়ার পরে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মন্তব্যে সেই কৌশল নিয়ে বাম মহলে ফের চর্চা হচ্ছে।
দীপঙ্করবাবুর মতে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের গণতন্ত্র-বিরোধী আচরণ বা দুর্নীতির বিষয়গুলি আছে। তবুও আমি বলব, বাংলাতেও বিজেপিকে পয়লা নম্বর প্রতিপক্ষ হিসেবে বামপন্থীদের নিতে হবে। ত্রিপুরা বিজেপি পেয়েছে, অসমে বিজেপি আছে, বিহারে বিজেপি ফিরে এল। পশ্চিমবঙ্গেও লোকসভা ভোটের পর থেকে কী ভাবে বিজেপির দাপট বেড়ে চলেছে, তা বাংলার মানুষ দেখছেন।’’ দীপঙ্করবাবুরা মনে করেন, বিষয় ভিত্তিতে তৃণমূলের বিরোধিতা অবশ্যই হবে। কিন্তু মূল নিশানা করতে হবে বিজেপিকেই। যারা গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন কিছুই মানে না! ঘটনা হল, বাংলায় বামফ্রন্ট ও সহযোগী মিলিয়ে ১৬ দলের মধ্যে লিবারেশন এবং পিডিএস এই তত্ত্ব আগেই পেশ করেছিল। এখন বিহারে তাদের সাফল্যের পরে লিবারেশন সেটা আরও জোরালো ভাবে বলছে।
সিপিএম অবশ্য মনে করে, বাংলায় তৃণমূল সম্পর্কে ‘নরম’ নীতি নিতে গেলে দলটাই উঠে যাবে! এই প্রশ্নে সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট থেকে শুরু করে সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু বা মহম্মদ সেলিম— কারওরই দ্বিমত নেই। তাঁদের যুক্তি, বিজেপি যে বড় বিপদ, তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই।
কিন্তু এ রাজ্যে সরকারে আছে তৃণমূল। তাদের ‘ছাড়’ দিয়ে বিজেপিকে আলাদা করে নিশানা করার অবকাশ নেই। নীতির প্রশ্নে দু’দলের বিরুদ্ধেই একসঙ্গে সরব হওয়া বরং বাস্তবসম্মত। মালদহ ও রায়গঞ্জে গিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘বাংলা ও বিহারের পরিস্থিতি আলাদা। এখানে তৃণমূল ও বিজেপি, দুই শক্তিই রাজ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। বিজেপি সাম্প্রদায়িক। তৃণমূলের অনেক কার্যকলাপও তা-ই। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি নরম বা সমঝোতার কোনও প্রশ্নই নেই!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বামেরা বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলের বিরুদ্ধেই লড়াই করবে।’’
PT | 203.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ১৪:১৫100125বিজেপির শক্তি বিহারে কেন বাড়ল সে ব্যাপারে দীপংকরের ব্যাখ্যা জানতে চাই।
কেউ জানেন?
@T ইয়েচুরির বক্তব্য পড়লাম। তৃণমূলের সাথে জোট করার প্রশ্নই নেই, তৃণমূল বিজেপির একই সঙ্গে বিরোধিতা করতে হবে - এই অব্দি বুঝলাম। কিন্তু যেটা একেবারেই বুঝলাম না বা একমত হলাম না (আগেও বলেছি, যে বক্তব্য নিয়েই মূলত আপত্তি) সেটা হল 'তৃণমূলকে না হারিয়ে বিজেপিকে হারানো যাবে না' - গ্রাউন্ডে এটার মানে দাঁড়ায় তৃণমূল আগে বিজেপি পরে, তৃণমূল কজ বিজেপি এফেক্ট। এই বক্তব্যটার সাথে খুব পরিষ্কার মতপার্থক্য রয়েছে। এবং সেটা এখানে তর্ক করে মেটার নয়। কিন্তু আমি সত্যিই খুব ওপেন মাইন্ড নিয়ে দেখতে আগ্রহী এর এফেক্ট কী দাঁড়ায়। নির্বাচনের পরেই যা বোঝা যাবে।
মানে এই কথাটাই যদি এভাবে আসত যে বিজেপিকে হারাতে গেলে তৃণমূলকেও হারানোর চেষ্টা করতে হবে তাহলেও এর মানে একরকম হত। কিন্তু বক্তব্যটা হেঁটমুন্ড ঊর্দ্ধপদ হয়ে আসছে।
PT | 203.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ২০:১৮100133RJD+Cong+left সত্বেও "বিজেপির শক্তি বিহারে কেন বাড়ল"-এর উত্তর খোঁজা প্রয়োজন। অনেক প্রশ্নের উত্তর সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
T | 103.2.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ২২:০৩100139পিনাকীদা, পশ্চিমবঙ্গে তো আর বিজেপি ক্ষমতায় নেই যে সেই অর্থে বিজেপিকে কুর্সীচ্যুত করতে হবে। তাহলে নেক্সট ইলেকশনে বিজেপিকে পরাজিত করা বা 'ডিফিট বিজেপি' কথার অর্থ দাঁড়ায় বিজেপির থেকে বেশী সংখ্যক আসন জেতা বা ভোট পার্সেন্টেজ বাড়ানো বা দুটোই। ধরেই নিচ্ছি যে বামের পক্ষে তৃণমূলকে হারানো সম্ভব নয়। তো, বেশী আসন বা বেশী পার্সেন্টেজ ইত্যাদি বাড়ানোর অর্থ হচ্ছে যে তৃণমূল বিরোধী ভোট আরো বেশী করে নিজেদের ঝুলিতে ঢোকানো। তাহলে সেটা করতে গেলে শ্লোগানটা কী হওয়া উচিত? ঃ))) এই সহজ হিসেব কিকরে পাত্রাধার তৈল না তৈলাধার পাত্রর চক্করে পড়ে তা আমার মাথায় ঢুকছে না। অ্যাত বাংলা সাইত্য করার ব্যাপারও এটা নয়।
এই চক্করটা তখনই আসে যখন আসল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে এই হাওয়াটা তুলে যদি কিছু বাম ভোট তৃণমূলে ঢোকে। এ ঠারেঠোরে বলতে না চাইলেও এমনিই বোঝা যাচ্ছে।
যাক সে কথা, আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে লিবারেশন বাম জোট ছেড়ে বেরিয়ে ওপাড়ায় মানে তৃণমূলের সঙ্গে যাচ্ছে তো? হাজার হোক, ডিফিট বিজেপি কীনা ঃ)))
dc | 103.195.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ২২:১৯100142টি এর এই কথাটা আমার পছন্দ হলো। তিনো বিরোধী ভোট বামেদের দিকে যাক, এটাই স্ট্র্যাটেজি হওয়া উচিত। তবে আমার মনে হয় এটার জন্য বাম নেতৃত্বের দিক থেকে আরও পরিষ্কার মেসেজিং দেওয়া দরকার। এটা ক্লিয়ার যে "বাম ভোট" বেশ ভালোমতো বিজেপির দিকে গেছে। কাজেই নীচু লেভেলে মেসেজ পাঠানো উচিত যে বাম ভোট সংহত করতে হবে। এই যে মেসেজগুলো, আগে বিজেপিকে হারাবো নাকি আগে তিনোকে হারাবো, এসবে আরও কনফিউশান তৈরি হয়। এসবে না গিয়ে সিম্পুল মেসেজ হওয়া উচিত যে বাম প্রার্থীরা যেন বাম ভোট পায়। (অবশ্যই ধরে নিচ্ছি যে বাম নেতৃত্ব সত্যি সত্যি ভোট শেয়ার বাড়াতে চায়, শত্রুর শত্রু টাইপের আজগুবি স্ট্র্যাটেজি নিতে চায় না)।
T | 103.2.***.*** | ১৩ নভেম্বর ২০২০ ২৩:৩৬100144ডিসি, এই কনফিউশনটার কারণ হচ্ছে কিছু লোক ভাবছে যে এখনো বোধহয় সো কলড 'বাম ভোটের' অস্তিত্ব আছে। য্যানো সেই নাইন্টিজের ডেডিকেটেড প্রচুর সংখ্যক মোনোলিথিক বাম ভোট। আদতে এই বাম ভোট অধিকাংশই ছিল সংগঠন নির্ভর। সংগঠন উবে যেতেই বাম ভোটও উবে গ্যাছে। সংগঠনের কিছু কর্মী গেছে তৃণমূলে, কিছু বিজেপিতে। যারা তৃণমূলে গেছে তারা রাণীমার নামে ভোট চায়, পুরোনো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মন দিয়ে করে খাচ্ছে। আর যারা বিজেপিতে গেছে তারা মোদীর নামে ভোট চায়, অবসরে হোয়া মেসেজ ফরোয়ার্ড করে। এখন মার্কেটে এই যে থিয়োরীটা চলছে যে, অল পাওয়ারফুল সিপিয়েম কর্মীরা জনগণকে প্রভাবিত করে নিজেদের বদলে বিজেপিকে ভোট পাইয়ে দিয়ে পাশা উল্টোতে চাইছে, যা নাকি উপরতলার অনুমোদন প্রাপ্ত, যা আবার কিনা কানাঘুষো মারফত ভেরিফায়েড, এই থিয়োরীর সমস্যা হচ্ছে যে অ্যাত প্রভাবই যদি বা থাগবে তবে আর নিজেদের ছেড়ে অন্যকে ভোট দিতেই বা বলবে ক্যানো। :)) কেউ বিশ্বাসই কত্তে পারে না যে পশ্চিমবঙ্গে এখন ওরকম আর নিজেদের ভোট বেস বলে কিছু হয় না। সবই লোকাল, টেম্পোরাল ও চড়াম চড়াম নির্ভর। নইলে দার্জ্জিলিং ও উত্তরবঙ্গে অত কিছু করার পরও মমতা সিটগুলোয় হারত না, বা মতুয়া ভোট তৃণমূলের বিরুদ্ধে যায় না। বা পোস্ট লোকসভা, এনারসির পর ইম্মিডিয়েট উপনির্বাচনে বিজেপি হেরে যেত না।
এই থিয়োরী সারজল পেয়েছে কারণ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের কাজকর্ম অতীতের সমস্ত খুনজখম বূথ দখলের ইতিহাসকে ছাপিয়ে যাওয়ায়। প্রায় রোজই খবরের কাগজে বেরিয়েছে যে কংগ্রেস, সিপিয়েম, বিজেপি পঞ্চায়েত প্রার্থীরা প্রায় একসঙ্গে দল বেঁধে নমিনেশন জমা দিতে যাচ্ছে। ন্যাচারেলি এইটাই 'বিশেষজ্ঞ'দের কাছে এনাফ যে ঐ দ্যাখো সিপিয়েম বিজেপিকে হেল্প করছে। অতএব ক্যালাও। ঃ))
ইয়ং ভোটারদের একটা বড়ো অংশই আর ওরকম পহলে আইডিওলজি উসকে বাদ ঘাস বিচালি এইসবে নেই। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে পয়সা ঢুকেছে ইনসেন লেভেলে, সোশ্যাল মিডিয়ার বিষ তো ঢুকেইছে, পুরোটাই ক্ল্যান মেম্বারশিপ জাতীয়। যেসব মুদ্দা আদতে নির্বাচনের ইস্যু হওয়া দরকার সেসব ছেড়ে রামমন্দির, আর তিনশো সত্তর ইত্যাদি হাবিজাবি। বিজেপিকে হারাতে হলে ওদের ব্যাটলগ্রাউন্ডে তো খেললে চলবে না। সেটার মানে বেকারত্ব, চাকরী, শিল্প এসব নিয়ে কথা বলা। আর এর মানেই তো রাজ্যে তৃণমূলের নীতির বিরুদ্ধে বলা, এবং কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে বলা।অতিবামরা নিজেরাই সদ্য সমাপ্ত বিহার ইলেকশনে দেখেছেন যে এইসব ইস্যুতে যদি ভোট হয় তো ফলাফল আর বিজেপির দিকে একপেশে হয় না।
এসবের পরেও এই তৃণমূলের প্রতি নরম হয়ে বক্তব্য রাখুন বলে দাবী করাটার জাস্ট কোনো মানেই হয় না। বা মানে হয়, খুব ইঙ্গিতপূর্ণ মানেই হয় যা আমি আর বললাম না। ঃ)
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০০:২০100145বিহারে ইস্যু ছিল পড়াই, কামাই , সেচ, স্বাস্থ্য। চারতি, শিল্প, বেকারিত্ব নয়। বিহার কপি করতে হবে এমন নয়, কিন্তু লক্ষ্যণীয় যেটা,
১। বিহারে সমাজের বৃহত্তর অংশকে এতে লক্ষ্য করা হয়েছে। সেচ, বিহারের সমস্যা, কিন্তু লক্ষ্য হলেন কৃষকরা। কামাই অর্থাৎ রোজগার মানে কেবল চাকরি নয়, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্গতিকে লক্ষ্য করা হয়েছে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য তো সবার জন্য। বঙ্গে বামদের ট্যাকটিকাল সমস্যা হল, শ্রমিক কৃষক বাদ, কেবল মধ্যবিত্ত, তাও উচ্চশিক্ষিত মধ্যবিত্ত হল একমাত্র লক্ষ্য। চাকরি, শিল্প, বেকারত্ব। আন্দোলনগুলো লক্ষ্য করুন, সিঙ্গুর থেকে পদযাত্রা, টেট, ইত্যাদি। সিঙ্গুর ঠিক ছিল না ভুল, সে তর্কে ঢুকছিনা, কিন্তু " সিঙ্গুরের পথই আমদের পথ " বৃহত্তর জনসমষ্টির এটা কোনো রেলিভ্যান্ট স্লোগানই না। ওই স্লোগান বা অভিমুখ মধ্যবিত্তের একটা ছোট্টো অংশ ছাড়া কাউকে টানেনি বিগত দেড় দশকে।
২। বিহারে একই সাথে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে লক্ষ্য করা হয়েছে। আবারও, বিহার কপি করা সম্ভব নয়, কারণ, বিহারে এবং কেন্দ্রে দুই জায়গাতেই বিজেপি সরকার ছিল, ফলে ব্যাপারটা সহজ। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার। এবং কংক্রিট পরিস্থিতি হল, কেন্দ্রীয় ভাবে বিজেপির নীতিগুলো ভয়াবহরকম ক্ষতিকর। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও। শিক্ষাই ধরুন, টেটে দুর্নীতি এসব খুবই প্রাসঙ্গিক বিষয়, কিন্তু নিট, বা সমস্ত শিক্ষায় বা পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় / হিন্দি আধিপত্য নামিয়ে আনা হচ্ছে, বাজেট বস্তুত সঙ্কুচিত হচ্ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে এই ভয়াবহতাকে অস্বীকার করা যায়না। কৃষিতে আছে কৃষি বিল। শিল্পে শ্রমিকবিরোধী বিল। এবং যা বিহারে নেই, বঙ্গে আছে, তা হল এনআরসি। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কী অবদান বলার অপেক্ষা রাখেনা।
এমতাবস্থায়, যেকোনো যুক্তিশীল প্রতিপক্ষের, এইটাই বক্তব্য হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়, যে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষতিকারক নীতি গুলি নিয়ে এসেছে, তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই দরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকেই বস্তুত এরা ভেঙে ফেলবে, যদি পারে। ডবল দাঁড়ি। তাহলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই কেন? একটাই কারণে, যে, এরা এই নীতিগুলির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই করছেনা, বরং বহু জায়গায় আত্মসমর্পন করছে। যারা লড়াই করছে, তাদেরকেই বরং ঠ্যাঙাচ্ছে। এর সঙ্গে আছে দুর্নীতি ইত্যাদি। সিপিএম বলে নয়, যেকোনো অতৃণমূল শক্তিরই এইটাই লাইন হওয়া উচিত।
দ্বিতীয় পয়েন্ট হল তথাকথিত বাম ভোট। এখন আর নিঃসন্দেহে ৩৫% বা ৪০% বাম ভোট নেই। কিন্তু কথা হল এক সময় ছিল। এবার কিছু বাম ভোট তৃণমূলে গেছে, কিছু বিজেপিতে গেছে, কিছু কোথায় যায়নি, কোনো ভোটার মারা গেছেন, নতুন কিছু ভোটার হয়েছেন, সবই সত্যি। কিন্তু পরিসংখ্যানগতভাবে ভোটের নড়াচড়া মাপার তো একটা পদ্ধতি আছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিগত নির্বাচনে বামরা যত শতাংশ ভোট হারিয়েছেন, বিজেপি মোটামুটি তত শতাংশ ভোটই বাড়িয়েছে। পরিসংখ্যানগতভাবে এটাকেই বলা হয় ভোটের নড়াচড়া বা সুইয়িং। ছোটো স্তরে এ সব জায়গায় খাপে খাপ মেলেনা, কিন্তু মোটের উপর নড়াচড়াটার গতি ওইরকমই। এইটাকে অস্বীকার করে বামদের কী উপকারটা হচ্ছে কে জানে।
হাইপোথিসিস | 144.48.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০০:৪৬100147কিন্তু পরিসংখ্যানগতভাবে ভোটের নড়াচড়া মাপার তো একটা পদ্ধতি আছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিগত নির্বাচনে বামরা যত শতাংশ ভোট হারিয়েছেন, বিজেপি মোটামুটি তত শতাংশ ভোটই বাড়িয়েছে।
এটা ত পর্যবেক্ষন। এটা থেকে বামের ভোট রামে যাওয়ার হাইপোথিসিস প্রমান হয়না। বিক্লপ হাইপোথিসিস ধরুন বামের ভোট তিনোয়, তিনোর ভোট রামে। তাতেও নেট ফলাফল বামেদের ভোট কমে বিজেপির বৃদ্ধি।
তাহলে বাম-রাম তত্ত্ব ঠিক আর বাম-তিনো-রাম তত্ত্ব ভুল তার প্রমান কি ?
PT | 203.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০০:৫৬100148কিন্তু মোদ্দা কথাট হচ্ছে যে বিহারের মানুষ মোটেই মনে করেনি যে বিজেপির নীতি তাদের পক্ষে বিশেষ ক্ষতিকারক। তাই তারা যেখানেই সুযোগ পেয়েছে বিজেপিকে জিতিয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও একই চিত্র।
বলির পাঁঠা হয়েছে নীতিশ। দীপংকররা নীতিশের ভোট টেনেছেন কিন্তু বিজেপির থেকে মানুষকে সরাতে পেরেছেন এমনটা নয়। তাই সন্দেহ হয় যে পব সম্পর্কে দীপংকরের অবস্থান আদৌ সঠিক কিনা!!
হাইপোথিসিস | 144.48.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০১:০৭100149আরেকটু লিখে দিই। বাম-রাম তত্ত্বের এজাম্পসান হচ্ছে বাম ভোটাররা হেবি আদর্শবাদী এবং তিনোমুলের ওপর প্রতিশোধ নিতে চায়। ফলে রামে ভোট দিতেও আটকায়নি।
এরকম আজগুবি ভোটারের পরিবর্তে এবার সুবিধেবাদী ভোটার ধরুন। বামেদের সংগঠন উবে যেতেই বুঝেছে ভাইসব ঘি-মাখন এখন তিনোমুলে। ফলে চুপচাপ ফুলে ছাপ। তিনো ভোটারের একটা অংশ বুঝেছে ভাইসব ফুলেই যখন ছাপ মারছি, আসো বড় সাইজের ফুলে ছাপ মারি। কোনটার সম্ভাবনা বেশি ?
মানুষকে সরাতে পেরেছেন | 174.198.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০১:১১100150আমার কেমন মনে হচ্ছে এইটে PT সাহেব ঠিকই বলেছেন
কোনটার সম্ভাবনা বেশি | 174.198.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০১:১৩100151এবং এটাও ঠিক
S | 2a0b:f4c2::***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০২:৩৬100152যদিও আগের বিহার ইলেকশানে অন্যরকম জোট ছিল, কিন্তু তবুও এই ইলেকশানে মোটামুটি সবাই পাশ করে গেছে, এক নীতিশ ছাড়া। বিজেপির সীট বেড়েছে হয়ত পরিবর্তিত জোটের কারণে, কিন্তু একটা বিশাল অংশ মানুষের সমর্থন যে রয়েছে সেটা অনস্বীকার্য। বিজেপির সাথে গিয়ে নীতিশের ক্ষতিই হল, আর বিজেপি ফায়দা তুলে নিল।
S | 54.38.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০২:৪৬100153"তাতে দেখা যাচ্ছে, বিগত নির্বাচনে বামরা যত শতাংশ ভোট হারিয়েছেন, বিজেপি মোটামুটি তত শতাংশ ভোটই বাড়িয়েছে।"
সেটা তো অন্কের নিয়মেই হবে। মোট যখন ১০০%। এক বা একাধিক দল ভোট হারালে তবেই অন্য দলের ভোট বাড়াবে। ঃ)) ফলে শুধুমাত্র বামেদের ভোটই বিজেপিতে যাচ্ছে এইটা খুব ভুল অ্যানালিসিস হচ্ছে। এবং এই সরলীকরণের ফল কিন্তু পোহাতে হতে পারে ২০২১এ।
২০১৬তে ভোট সংখ্যাঃ
তিনো - ২ কোটি ৪৬ লাখ।
বাম - ১ কোটি ৮ লাখ।
কঙ্গ - ৬৭ লাখ।
বিজেপি - ৫৬ লাখ।
২০১৯এ ভোট সংখ্যাঃ
তিনো - ২ কোটি ৪৭ লাখ।
বাম - ৩৬ লাখ।
কঙ্গ - ৩২ লাখ।
বিজেপি - ২ কোটি ৩০ লাখ।
lcm | 99.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০১100154এই তো, বড়েস এই ডেটা থেকে বোঝা যাচ্ছে। তৃণমূলের মোট ভোট মোটামুটি একই আছে। বাম আর কংগ্রেসের ভোট কমেছে, বিজেপি বেড়েছে। দেখে মনে হচ্ছে অলরেডি তো ভোট চলে গেছে বিজেপিতে। লড়াই এখন তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে। অন্তত ২০১৯ এই ডেটা দেখে তো তাই মনে হচ্ছে।
S | 2405:8100:8000:5ca1::27:***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৯100155একটা উদাহরণ দিই। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র। এর ভিতরে বিধানসভা কেন্দ্র হল বাদুরিয়া, হারোয়া, মিনাখান, সন্দেশখালি, বসিরহাট উত্তর ও দক্ষীন, হিঙ্গালগন্জ।
২০১৬তে ভোট সংখ্যা ছিলঃ
তিনো - ৬ লাখ ৬৮ হাজার।
কঙ্গ - ১ লাখ ৫৫ হাজার।
বাম - সাড়ে তিন লাখ।
বিজেপি - ১ লাখ ৫৭ হাজার।
২০১৬তে ভোট সংখ্যা হয়েছেঃ
তিনো - ৭ লাখ ৮২ হাজার।
কঙ্গ - ১ লাখ ৪ হাজার।
বাম - ৬৮ হাজার।
বিজেপি - ৪ লাখ ৩২ হাজার।
এবারে দুটো জিনিস নোট করতে হবে। ২০১৬তে কঙ্গ আর বামেরা এখানে সীট ভাগ করে একসাথে লড়েছিল। আর বসিরহাট মাইনরিটি প্রধান এলাকা। সেক্ষেত্রে ২০১৬তে বামেদের কিছু মাইনরিটি ভোট নিশ্চই ছিল। সেটা পুরোপুরি তিনোতে চলে গেছে। ইনফ্যাক্ট কঙ্গ হয়ত নিজেদের ভোটটা অটুট রাখতে পেরেছে। অন্যদিকে হিন্দু ভোট সব বিজেপিতে গিয়ে মিশেছে। স্পষ্টতই ধর্মের লাইনে পোলারাইজেশান হয়েছে এখানে। সেটাকে আরো উগ্র মাত্রায় নিয়ে যেতে পারলেই ২০২১এ দুটো তিনটে বিধানসভা কেন্দ্র বেড় করে নেবে বিজেপি। এর জন্য নিশ্চই বামেরা দায়ী নয়।
S | 2405:8100:8000:5ca1::480:***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১৪100156লসাগুদা, আমার অ্যানালিসিস অন্যরকম।
১) নতুন ভোটের একটা বিশাল অংশ বিজেপি পাচ্ছে।
২) মাইনরিটি ভোট সব পার্টি থেকেই তিনোদের কাছে চলে গেছে।
৩) বয়স্ক বাম আর কঙ্গ ভোটাররা বসে গেছে।
৪) কঙ্গ, তিনো, আর বাম থেকে হিন্দু ভোট বিজেপিতে যাচ্ছে। কঙ্গ আর বাম থেকে অলরেডী চলে গেছে। তিনো থেকেও গেছে। কিন্তু মাইনরিটি ভোটটা পেয়েছে বলে সেটা হিসাবে দেখা যাচ্ছেনা।
২০২১এর আসল হিসাব হল মূলত তিনো থেকে আর কতটা হিন্দু ভোট বিজেপি কাটতে পারে।
Pinaki | 136.228.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:২৪100157@ হাইপোথিসিস, প্রতিশোধ নিতে চাওয়ার সাথে আদর্শবাদিতার কী সম্পর্ক? আর ঠিক প্রতিশোধও সবসময় নয়। অনেক জায়গাতেই সেটা অস্তিত্বের সংকট, ঘরছাড়া হওয়া থেকে প্রোটেকশন পাওয়ার জন্য, আবার কিছু জায়গায় পাওয়ার ধরে রাখা, নিজেদের রোয়াব অক্ষুণ্ণ রাখার স্পৃহা- এইসব। এসবের সাথে আদর্শের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা ঠিকই যে কিছু মুসলিম ভোট সিপিএম থেকে তৃণমূলে গেছে, কিছু হিন্দু ভোট তৃণমূল থেকে বিজেপিতে। কিন্তু তার সাথে সরাসরি সিপিএম থেকে বিজেপিতে যাওয়া ভোটও কিছু কম নয়। এটা শুধুমাত্র হিয়ারসে বা অ্যানেকডোট নয়। বহু জায়গায় সেটা ব্যাপক পরিমাণে হয়েছে। vote4left ক্যাম্পেন ফেসবুকে যথেষ্ট পপুলার হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও এই ঘটনা ঘটেছে। ওটা লোকসভা ভোট ছিল। ফলে তার নিজস্ব নিয়মেই ক্যাম্পেনে বিজেপির অপকম্মের প্রতি ফোকাস বেশি ছিল। কিন্তু তাতেও এই সরণ আটকানো যায়নি। এবার বিধানসভা ভোট এবং এই আশংকার যথেষ্ট কারণ আছে যে ফেসবুকের বাইরের সিপিএমের পুরো ক্যাম্পেনটাই একমাত্র তৃণমূলের বিরুদ্ধেই হবে। এবং বিজেপিকে জেতাতে ব্যয়িত হবে (সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে)। যদি না কেন্দ্রীয় মেসেজটায় পরিবর্তন আনা যায়। তৃণমূল গাধার ইয়েতে যাক, ক্ষতি নেই। কিন্তু বঙ্গে বিজেপি আসা বিপজ্জনক। আমাদের সবার অস্তিত্বের স্বার্থেই। এই বোঝাপড়াটা শুধু ফেসবুকে নয় ফেসবুকের বাইরের দুনিয়া অব্দি পৌঁছোলে হয়।
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪১100158" ২০২১এর আসল হিসাব হল মূলত তিনো থেকে আর কতটা হিন্দু ভোট বিজেপি কাটতে পারে। "
এইটাই তো সমস্যা। আসল হিসেবে তিনো আছে, বিজেপি আছে। বাম-কংগ্রেস নেই।
এস এর প্রতিটা ব্যাখ্যা যদি মেনেও নিই, তারপরেও, দিনের শেষে গল্পটা এই, যে, তৃণমূল ভোট শতাংশ ধরে রেখেছে, সম্ভবত একটু বাড়িয়েওছে। বিজেপি বিপুল পরিমানে বাড়িয়েছে। বামরা বিপুল পরিমানে হারিয়েছে। নেট শিফটের হিসেবটা একই থেকে গেল। মাঝে যাই ঘটুক।
এবার বিজেপির উত্থানের সব দায় নিশ্চয়ই বামেদের নয়। তৃণমূল একটা সময় ভোট ভাগাভাগির খেলা খেলতে গিয়ে কিছু জায়গায় বিজেপিকে কিছু পরিমানে বাড়তে দিয়েছে। এখন রামনবমী ইত্যাদি করে বিজেপির পালের হাওয়া কাড়ার চেষ্টা করছে। এগুলো আর যাইহোক, বিজেপি বিরোধিতার সঠিক পন্থা নয়। বামেদেরও নানা সমস্যা আছে, সে অন্য কথা, কিন্তু বিজেপির উত্থানের দায় একা বামেদের, একেবারেই না। কিন্তু নিজেদের ট্র্যাডিশনাল ভোট হারানোর দায় তো অবশ্যই বামেদের। এমনকি সম্পূর্ণ নতুন ভোটার হলেও একই জিনিস খাটে। নতুন ভোটার তো আকাশ থেকে পড়েনা। পুরোনো বাম বাড়ির কিংবা কং বাড়ির নতুন কোনো বাচ্চাই ভোটার হয়। তারা দলবদ্ধ ভাবে বিজেপিকে যদি ভোট দিতে যায়, সেটাও ভোটার হারানোই। এইটা অস্বীকার করার একটাই মানে, বালিতে মুখ গুঁজে থাকা।
ভোট রাজনীতিতে একটা দল থাকে, উঠেও যায়। নতুন দল আসে। এসব ইতিপূর্বেও হয়েছে, ভবিষ্যতেও নিশ্চয়ই হবে। বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গ থেকে উঠে যাবে, বলার সময় এখনও আসেনি। কিন্তু মুখ গুঁজে থাকলে যেতেও পারে। কে বলতে পারে।
S | 2405:8100:8000:5ca1::ad:***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২২100159"আসল হিসেবে তিনো আছে, বিজেপি আছে। বাম-কংগ্রেস নেই।"
কারণ বাম আর কঙ্গের মোট ভোট এখন এতটাই তলানিতে এসে ঠেকেছে যে সেখান থেকে ভোট কেটে বিজেপির খুব বিশাল কিছু লাভ হবেনা। এই দুই দল থেকে মাইনরিটি ভোট তিনোতে গেছে স্বাভাবিক কারণেই। আর হিন্দু ভোট গেছে বিজেপিতে, সেটা তিনোবিরোধী ভোট হতে পারে, বিজেপির প্রচারের কারণে হতে পারে, মোদির ক্যারিশ্মার কারণে হতে পারে, কমিউনাল কারণেও হতে পারে। আর আমরা যারা বহুদিন বাইরে রয়েছি, তাদের কাছে এখনও আমাদের সাধের বাংলা রয়ে গেছে সত্য সেকুলার। বাস্তব বোধয় সেরকম নয়।
নতুন যারা বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে, তাদের মধ্যে তিনো-বাম-্কঙ্গ সবার বাড়ির ভোটাররাই রয়েছে। তারা তিনোদের অপশাসনটাই দেখেছে। বামেদের ভালো সময়টা দেখেনি। তাই তাদের কাছে বামেরা বোধয় অনেকটাই নন এন্টিটি। অন্যদিকে বিজেপির আইটিসেল তাদের হাতের তালুতে সর্বদা ধাক্কা মারছে। ফলে তাদের ভোট কোনদিকে যাবে সেটা বোঝাই যায়। ঐসব সেকুলারিজমের নীতিকথা শোনার মতন পরিবেশ বা মানসিকতা আদৌ আছে কিনা জানিনা। আমার কলেজ কালেও যে সেটা চারদিকে খুব দেখেছি, তাও তো হলফ করে বলতে পারিনা।
তেজস্বী যাদবপুর | 2a03:e600:100::***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০২100160পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কিছু সিটে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বামফ্রন্ট প্রার্থীরা জিতে যাচ্ছেন - এই সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিবাবু একবার ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন - তাহলে কি আমাদের প্রার্থী ওখানে বিরোধী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেব?
কথাটার মধ্যে একটা নির্মম সত্যি লুকিয়ে আছে। বিরোধিতার যে স্পেস সেখানে খেটেখুটে জায়গা করে নিতে হয়, কেউ জায়্গা দেয় না।
সিঙ্গুর/নন্দীগ্রামের ঘটনার পর হঠাৎ আকাশ থেকে দুম করে তৃণমূল নামক একটি দল নামল আর এই সুযোগে ২০০৯ এর লোকসভা ইলেক্শনে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জিতে গেল তা নয় - তার আগে বহুদিন ধরে তারা পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী স্পেসটা নিয়ে ছিলেন। ভোটের সিটের হিসেবে সেই স্পেস যখন সংকুচিত হয়ে ২৩৫-৩৫ হয়ে যায়, তখনও তারা হাল ছাড়ে নি, বিরোধী স্পেসটি ধরে রেখেছেন। কেন্দ্রে কখনও বিজেপি, কখনও কংগ্রেস - যখন যেমন সুবিধে হয়েছে কোয়ালিশনে গেছেন, কিন্তু রাজ্যে বামবিরোধিতার স্পেসটি তারা কখনও ছেড়ে দেন নি। এখানে বিজেপি বিরোধি হিসেবে ঢুকতে পারে নি। তার সম্পুর্ণ ক্রেডিট ছিল তৃণমূলের - কারণ তারা পশ্চিমবঙ্গে বামবিরোধিতার জমি কাউকে এক ইঞ্চিও ছাড়ে নি।
তাই, বিরোধিতার স্পেস কি করে আঁকড়ে ধরে থাকতে হয়, সেই স্পেস সংকুচিত হয়ে ক্ষুদ্রতর হয়ে গেলেও লেগে থাকতে হয়, এক ইঞ্চি জমিও কাউকে ছেড়ে দেওয়া যায় না - সেটা তৃণমূল দেখিয়েছে।
এই এক জায়্গায় আজকের পশ্চিমবঙ্গের বামদল দিশাহারা, একটি রাজ্যে তিন দশকের বেশি সময় ক্ষমতাসীন দল চালিয়ে, তারা আজ বিরোধী দল হিসেবে জমি ধরে রাখতে পারছে না। অথচ, ৫০/৬০/৭০ এর দশকে এরাই দেখিয়েছেন কীভাবে ছোট সংগঠন নিয়ে শুরু করেও বিরোধী আসনে স্বকীয়তা বজায় রেখে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
sm | 2402:3a80:ab8:a3c:0:55:84ab:***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৮:০০100169Statistical analysis – details of which are not being presented here to save space – shows that, across the 42 parliamentary constituencies, every percentage point loss of the LF was associated with a 0.89 percentage point gain by the BJP even after accounting for the change in AITC’s vote share. খুব ভালো বিশ্লেষণ।
https://thewire.in/politics/election-results-2019-bjp-west-bengal
বামেরা চিরাচরিত মিথ্যাচার করেই যাবে।যেমন এখানে বসিরহাট এর উদাহরণ দেওয়া হচ্ছে। বিশুদ্ধ চেরি পিক!
আমি পাঁচটা জেলার উদাহরণ দিচ্ছি। আলিপুর দুয়ার,জলপাইগুড়ি,পশ্চিম বর্ধ মান,বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া।এই জেলা গুলিতে মুসলিম পপুলেশন শতকরা হিসাবে কম।সুতরাং মুসলিম নাম ভোট তিনো তে গেছে আর তিনোমুলের হিন্দু ভোট এর এক অংশ বিজেপিতে গেছে বললে ঘোড়ায় হাসবে।
এই পাঁচটি জেলায় বিজেপির ভোট বিপুল বেড়েছে।বামেদের ভোট বিপুল কমেছে।এটাই বাস্তব।অর্থাৎ তলায় তলায় জোট।চুপ চাপ বড় ফুলে ছাপ! এটাই ছিল বামেদের উপর তলার নির্দেশ। শাক দিয়ে কি তিমি ঢাকা যায়??
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৮:৫৭100177দীর্ঘদিন বাদে এসেম সাহেব গুরুতে ফিরে আসার জন্য গেরুয়া/সবুজ/রক্তিম অভিনন্দন। তেরে বিনা জিয়া যায় না।