১লা সেপ্টেম্বর আর জি করের ঘটনায় জাস্টিসের দাবিতে 'নাগরিক উদ্যোগে' একটি মহামিছিল ছিল কলেজস্ট্রিট থেকে ধর্মতলা। ধর্মতলায় যখন মিছিল ঢুকছে, তখন দেখা গেল ধর্মতলায় বিজেপির ধর্ণামঞ্চ, বিজেপি মাইকে তারস্বরে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস', 'একটাই দাবি - পদত্যাগ' ইত্যাদি বলে চ্যাঁচাচ্ছে।
এমতাবস্থায় মিছিলের কী করণীয়? নিশ্চয়ই বিজেপিবিরোধী স্লোগান দেওয়া? মাইক হাতে উদ্যোক্তারা ঠিক করলেন, একদমই নয়। মিছিলের একাংশ বিজেপির স্লোগানেই গলা মেলালো, পরে শুনলাম আরেক অংশ বিজেপিবিরোধী স্লোগান দিতে গিয়ে উদ্যোক্তাদের থেকে ধাতানি খেয়েছে।
উদ্যোক্তারা জানতেন না, বিজেপি ধর্মতলায় মাচা বেঁধেছে, এ বিশ্বাসযোগ্য নয়। সেখানে এত জায়গা থাকতে কেন ধর্মতলা বাছা হল, বা আগে বাছা হয়ে থাকলেও তারপর কেন মিছিলের রাস্তা বদলানো হল না, এ প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর নেই। খুব সম্ভবত এটা ইচ্ছাকৃত।
বিজেপি এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংগঠিত শক্তি, শাসকদলের ঠিক পরেই। এই শক্তি যাতে পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলন থেকে ফায়দা না তুলতে পারে, তার ন্যূনতম পূর্বশর্ত আন্দোলনের ঘোষিতভাবে বিজেপিবিরোধী হওয়া। বাংলাদেশ থেকে এটুকু শিক্ষা নিন, বি এন পি - জামাতিদের নিয়ে নীরব থেকে ওই ছাত্র আন্দোলন ঠিক কাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছে দেখুন।
এর ওপরে গোদের ওপর বিষফোড়ার মত আছেন কিছু ফেসবুকীয় বাণীবাজ, যাঁদের বিবেচনার অভাব থাকলেও আবেগের বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই। তাঁরা ডুবতে ডুবতেও সমুদ্র নিয়ে কবিতা লিখবেন। মানুষের ঢল দেখে তাঁদের চোখ ছলছল করবে, সেই মানুষের ঢলে যতই "ধর্ষকদের গলা কাট" স্লোগান উঠুক না কেন। অন্য কেউ আশু বিপদ নিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করলে তাঁরা ককিয়ে উঠবেন, এত অবিশ্বাস কেন মানুষের ওপর? এই বিষাক্ত প্রজাতিটিকেও স্পষ্ট করে চেনার আছে। এরা হুজুগ আর ফুটেজ ছাড়া কারও বন্ধু নয়। এদের থেকে দূরে থাকুন, বিজেপিকে বাংলা থেকে দূরে রাখুন, আন্দোলনে থাকুন।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।