হ্যাঁ। ডেটা সায়েন্সের সিংহভাগই ছিল স্ট্যাটিসটিক্স, নানানরকমের ভাষা (মানব এবং কম্পিউটারের), আরও কীকী যেন। মাল্টিলিঙ্গুয়াল টেক্সচুয়াল অ্যানালিসিস বলে একটা ব্যাপার ছিল শুনেছিলাম। মানবভাষার মধ্যে মূকবধিরদের জন্য সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়েও কাজ করতে হতো, বা অন্ধদের জন্য যে ভাষাপদ্ধতি (ব্রেইল বা শব্দের সাহায্যে পথে রাস্তায় রেলস্টেশনে রান্নাঘরের অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে), পরমুখাপেক্ষী যাতে হতে না হয় তাদের।তারপরে ঐ এমে ক্লাসেই ও বিএ ক্লাসের বাচ্চাদের টিউটোরিয়ালের ক্লাস নিতে শুরু করেছিল স্ট্যাটিসটিক্সে। R বলে একটা ভাষা ও শেখাতো তাদের।
পরবর্তীতে ইন্ডাস্ট্রিতে যখন ঢোকে, তখন বুঝল ইন্ডাস্ট্রিতে R তেমন চলে না, ঘুরে ফিরে সব পাইথন। তবে প্রোগ্রামিং করবার লোকের অভাব নেই। আসল নাকি কনসেপ্ট তৈরি করা।
এবার একটা মজার ঘটনা বলি।
গেল মাসে কাজাখস্তানের সফর শেষে ফেরার টাইমে আলমাতিতে যেখানে থাকছিলাম সেখানে যিনি আমাদের দেখাশুনো এবং সাফাই এর কাজ করতেন, নাম জুলদিজ, তিনি এসে আমার কাছে সাজেশন চাইলেন তাঁ ছোটকন্যার কেরিয়ার প্ল্যানিং এর ব্যাপারে। বড় তিন সন্তানের দুজন ইউনিভার্সিটি তে পড়েছে, তৃতীয়জন অন্য কোনও উচ্চশিক্ষা করেছে, ছোটকন্যা ক্লাস নাইন শেষ করে কলেজে যাবে বলছে, তিনি চান মেয়ে আরেকটু পড়ে ইউনিভার্সিটি যাক। মেয়ে নাকি রেলের কীসব পড়তে চায়।
যাইহোক মেয়েকে ডেকে আনা হলো। ষোলো বছরের লাজুক লাজুক চেহারা। সে বলল, কই নাতো! রেলে নয়, কম্পিউটার নিয়ে পড়ব, মা বুঝতে পারে নি। আমি কলেজ শেষ করে চাকরি করতে চাই।
কম্পিউটার কতটা কী শিখেছে ইস্কুলে জানতে চেয়ে ধাক্কা খেলাম। সে বলল, ক্লাস নাইনে পাইথন শিখেছি এবং...
আর শুনে কাজ নেই, দুনিয়া কী গতিতে এগিয়ে চলেছে! মাকে বললাম চিন্তা করবেন না, মেয়ে ঠিক এগিয়ে যাবে।
জুলদিজ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলেন।
তবে ইংরেজি ভাষা মেয়ে শেখে নি। ঐটে দরকার। প্রাইভেটে শিখতে গেলে অনেক খরচ। সাফাইকর্মী মা এবং ড্রাইভার বাবা সে খরচ জোগাতে পারবেন না আঁচ করে আমিই শেখানোর দায়িত্ব নিলাম। ডিসট্যান্ট লার্নিং।
আজ প্রায় দেড়মাস হলো অক্ষর পরিচিতি শব্দ পদ অল্প ব্যাকরণ শিখেছে সে। সঙ্গে একটা গল্পের বই পড়ানো হচ্ছে, দ্য লিটল প্রিন্স। বইটা ওর খুব ভালো লাগছে পড়তে। সেপ্টেম্বরে কলেজ শুরু হবে মেয়ের। ইংরিজিটা জানা থাকলে ওর সুবিধে হবে বলে মনে হচ্ছে।