আমি ভাটে বেশী আসি না কারণ এখানে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয় তার অধিকাংশই আমার বোধ, বুদ্ধির অতীত এবং আগ্ৰহের আঙিনাতেও নয়। সীমানার অতীত বলে থই পাই না। সম্প্রতি কদিন এখানে ঢুঁ মারছিলাম গুরুতে পুরোনো লেখা উদ্ধার নিয়ে কিছু আলোচনা দেখে। আমি সফ্টওয়্যারের লোক নই তবু আলোচনা দেখে এটার জটিলতা কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছি। মনে মনে কুর্নিশ করেছি তাদের যারা এটা করতে চাইছে।
আজ ভাটে আপনার মন্তব্য দেখে মনে হোলো ১.১.০৯ থেকে এখানে করা এযাবৎ ৫,১৪,৬৩৫ টি মন্তব্যের ভীড়ে এমন প্রয়োজনীয় কথা পরে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই চাইলে গুরু “লেখকদের প্রতি” (নির্দেশ) জাতীয় একটি পাতাও রাখতে পারে যেখানে কীসের ভিত্তিতে হপারা বিভাগ, উপবিভাগ সিলেক্ট করবে তার কিছু নির্দেশাবলী থাকতে পারে। সেখানে ওসব ছাড়া অন্য আলোচনা হবে না।
গুরুতে কিছু বিভাগ/উপবিভাগ সোজাসাপ্টা - কিছু একটু ধন্দময়। যেমন ভ্রমণ বিভাগে আছে - ঘুমক্কর, দেখেছি পথে যেতে, পথ ও রেখা, জাদু দুনিয়া, যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ইত্যাদি উপবিভাগ। পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতায় বুঝি - too many sub categorisation of data is confusing unless the contributors and handlers of such data are precise, focused, methodical and very competent.
“একা বেড়ানোর আনন্দে” সিরিজে এযাবৎ পোষ্টিত ১০ টি পর্বে আমি মাত্র দুটি উপবিভাগ ব্যবহার করেছি - “ঘুমক্কর” (যখন কোথায় বেড়াতে গেছি সেটাই মূল প্রতিপাদ্য বিষয়) এবং “দেখেছি পথে যেতে” (যখন স্থানের বিবরণ নয়, সেখানে দেখা কিছু আকর্ষণীয় চরিত্র বা ঘটনার কথা বলতে চেয়েছি - যেমন মারকুটে মাস্টার অলক, হাতকাটা কেরাণী বিহারী লাল বা ফুহারীজী মন্দিরে সেই সদানন্দ সহকারী করণ বা বোবা ছেলেটি)।
দেশের মধ্যে আমি বহু জায়গায় ঘুরেছি তবে তার সবকিছু বা যা নিয়ে বহুবার বহু জায়গায় লেখা হয়ে গেছে তা নিয়ে নেটঘাঁটা চর্বিতচর্বণ করতে ইচ্ছা হয় না। তাই হয়তো আর গোটা পঁচিশেক পর্ব আসতে পারে যার সবকটি এই দুটো উপবিভাগেই ধরা সম্ভব।
গুরুতে লেখা পোষ্টানোর সময় বিভাগ/উপবিভাগ নিয়ে আমিও ধন্দে ছিলাম। যেমন ধরুন “এই প্রেম চিরন্তন - লুসেরো” - এটা আমি আলোচনা/গান হিসেবে পোষ্টেছিলাম - গুরুর এ্যাডমিন করে দিলেন অন্যান্য/মোচ্ছব। আবার দেখলাম অন্যান্য এবং বাকিসব এই দুটি বিভাগেই একই উপবিভাগ রয়েছে (মোচ্ছব, নেট-ঠেক-কড়চা, শোনা কথা)। তাহলে দুটি প্রায় সমার্থক বিভাগ (Misc) রাখার কী অর্থ?
ভাটে আপনি লিখলেন, “আবার 'টুকরো খাবার' সেকশনে সমরেশ মুখার্জীর কিছু লেখা যেগুলো খাবার সংক্রান্ত নয়। এই নিয়ে একটু কনফিউশন হচ্ছে। সম্ভবত লেখকরা কোনোভাবে ভুল করে বা বিভাগ খেয়াল না করে লেখা জমা করেছেন।”
আমি কিছু লেখা (যাতে খাওয়া সংক্রান্ত কোনো প্রসঙ্গই নেই) “টুকরো খাবার” বিভাগে পোষ্টেছি কী বিভাগ সিলেক্ট করতে হবে না বুঝতে পেরে নয়। সজ্ঞানে করেছি কারণ “খ্যাঁটন” বিভাগে ৫ টা উপবিভাগ রয়েছে, তাই ভেবেছি “টুকরো খাবার” যদি খাওয়া সংক্রান্তই হয় তাহলে তো তা “খ্যাঁটন” বিভাগেই আর একটা উপবিভাগ হিসেবে থাকতে পারতো - ওটাকে একটা আলাদা বিভাগ করা হয়েছে যখন তাহলে হয়তো ওটা গোদা অর্থে খাওয়া সংক্রান্ত নয় - প্রতীকী অর্থে - টুকুন মনের খোরাক।
গুরুতে নানা লেখায় প্রভূত প্রতীক, ইংগিতের রমরমায় প্রভাবিত হয়ে আমি হয়তো বিভাগ সিলেক্ট করতে গিয়ে হড়কেছি। তাহলে গুরুতে আসা এক নতুন বুড়োকে একটু গাইড করতে অনুরোধ রইলো। টুকরো খাবারে পোষ্টিত আমার কয়েকটি লেখা দেখে যদি বলে দেন ওগুলো কোন বিভাগ/উপবিভাগে যাওয়া উচিত ছিল, তাহলে হয়তো কিছু আন্দাজ করতে পারি।
আপনার তিন পর্বের “ব্ল্যাক আউট ডাইনিং” - লেখার সেন্ট্রাল থিম খাওয়া - যদিও কোর্সের পর কোর্স আসছে এবং খাওয়া হচ্ছে নিকষ অন্ধকারে কিন্তু লেখা হচ্ছে আলোয়। ওটা বুবুভা সেকশনে বেরোলো। অর্থাৎ তার বিভাগ/উপবিভাগ নির্বাচন করেছে এ্যাডমিন। একই লেখার প্রথম পর্ব বেরোলো “বাকি সব” বিভাগে বাকি দুটি পর্ব “লঘুগুরু” বিভাগে। তাহলে কী - খাওয়ার বর্ণনা লঘু এবং তার ছলে গুঢ় মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ - গুরুতর বিষয় - বিভাগ/উপবিভাগ নির্বাচনের এ্যালগরিদম - এ জাতীয় কিছু ছিল - এমনটাই ভাববো?
আবার দেখি “ব্লগ” বলেও একটি বিভাগ রয়েছে। হপা-ই তো ব্লগ! ঘরের মধ্যে ঘর হচ্ছে মশারী - হপার মধ্যে ব্লগ? সেটা কী? খোলা ময়দান? ওখানে কী আমার এযাবৎ টুকরো খাবার জাতীয় উদ্দেশ্য, বিধেয়, সারবস্তুহীন লঘু রচনাগুলি পোষ্টানো যায়? গুরুর পাতায় দৌড়ে বেড়াক আমার গরু তেপান্তরের মাঠ অবধি, উঠুক গাছে মগডালের পাতা খেতে। লঘুগুরু-তে যে আমার লেখা পোষ্টানো অনুচিত তা আপনার ঐ বিভাগে “ব্ল্যাক আউট ডাইনিং” দেখে ধরে নিলাম। একটু গাইড করবেন প্লিজ।