আহা, যে মূহুর্তে ব্রতীন সন্দেশের 'খাদক'এর বদলে 'গ্রাহক' হলো তখুনি সন্দেশ ও ব্রতীনের মধ্যে একটা টেলিপ্যাথেটিক বন্ড তৈরী হয়ে গেলো। বড় হয়ে ব্রতীন কার্ড দেখতে দেখতে ভাবলো -- "আহা, এই আমার সন্দেশ, এই তার ছবি তুলে গুরুর সবাইকে দেখাতে পারলাম।" আর তখনই ঐ বন্ডের কর্ডের অন্য প্রান্তে টংটং করে বেজে উঠলো। সন্দেশ তখন ভাবলো "এখন ব্রতীন কী করছেন? নিশ্চই কার্ড দেখছেন আর আমার কথা ভাবছেন।" এমনি আর কী।
চাঁদমামা,শুকতারা পড়ে বড় হয়ে আনন্দমেলা সন্দেশ লাইব্রেরি থেকে পড়ে বলতে পারি আমেলা যে বিত্তের স্মার্টনেসের অ্যাাসপিরেশনের কনজিউমারিসমের সেলফ সেন্টার্ডনেসের নারচার ও কেয়ারফুল ইনজেকশন পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছিল, গেটআপ টেকনোলজি বিজ্ঞাপনকে হাতিয়ার করে বাংলাভাষার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তুলিকে কলমকে অর্থনৈতিক অধীনতায় নির্ধারিত বিষয়ভিত্তিক লেখানোর আঁকানোর মাধ্যমে শিশু ও কিশোর মনন প্রভাবিত করার বাণিজ্যিক এজেন্ডায় পূর্ণোদ্যোমে ঝাঁপিয়েছিল, তা নজিরবিহীন। এর আগে ও পরে পত্রিকা করার ন্যূনতম যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, প্রকৃত প্রস্তাবে শিশু ও কিশোর সাহিত্যের যে মূলগত লক্ষ্য - শিশুমনকে উদার মহৎ সহানুভূতিশীল বিশ্লেষনী ও গভীর করা তোলা, তার সম্পূর্ণ বিপ্রতীপে গিয়ে বিক্রিকেন্দ্রীক কনটেন্ট তৈরি করায় আমেলা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছিল। বাকিরা স্রেফ ম্রিয়মান হয়ে পড়ে দিনে দিনে আমেলা র পাশে। বড় সার্কুলেশনের কাগজ, প্রেস্টিজিয়াস সাহিত্যপত্রিকা এসবের পূর্ণ সুবিধে সে পেয়েছিল। এইরকম হাউজ তাই আর দ্বিতীয়টি হয়ে উঠল না।
বোধহয় বলতে চেয়েছে যে বড় হয়ে যখন ছেলেটির বা মেয়েটির সন্দেশের কথা মনে পড়লে বাড়ির পরবর্তী জেনারেশানকে সন্দেশের গ্রাহক করতে গিয়ে বলবে এই যে আমিও গ্রাহক ছিলাম -- আর অমনি সন্দেশের মানে পরিচালকদেরও মনে পড়ে যাবে।
কয়েকটা স্টেপ জাম্প করা আছে। গোবিন্দবাবু হলে নম্বর দিতেন না।
ধুর রাজনীতির জন্য অত গল্পের বই পড়ার কী দরকার। খবরের কাগজ ভালো করে পড়লেই তো রাজনীতি সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরী হয়।
আচ্ছা, বড়ো হয়ে কার্ডের দিকে তাকিয়ে বোতিন্দার সন্দেশের কথা মনে পড়বে সে ঠিক আছে, কিন্তু সন্দেশেরও বোতিন্দার কথা মনে পড়বে কীভাবে?
প্রোপাগাণ্ডা বলতে অসুবিধে আছে।
কাউন্টার পয়েন্ট, হ্যাঁ মানতে পারি।
কিন্তু দুই প্রজন্মের কথা ইচ্ছে করেই লিখেছিলাম। ঐ পত্রিকাটির মধ্যে দিয়েই যেন, এক প্রজন্মের এক পর্যায় অবধি উন্নতি আর পরের প্রজন্মের অ্যাসপিরেশন বা তাদের সামনে অনেক বেশী সুযোগ উপস্থিত হওয়া , এই দুটো দিকই দেখা যায়।
আর ১৯৮০ র দশক তো রাজনীতিহীনতার দশক তো বটেই। পঃবঃ এর মানুষ অনেক রাজনীতি করে সেখানে পৌছল, ৭০-র সময় পেরিয়ে, স্থিতি। সেই সময়ের উপযুক্ত পত্রিকা হয়ত আমেলা, কিছু পরিবারের জন্য হয়ত।
যাক এই বইটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে
পর সেক অফ ক্লারিটি আমি বলে রাখছি আমি অবশ্যই আনন্দমেলা শুধু না সব বাংলা পত্রিকা র আর্কাইভিং এর পক্ষে।
হ্যাঁ আনন্দ মেলা ওয়াজ অলওয়েজ পার্ট অফ রাইট উইং প্রোপাগান্ডা, সেটা মানতে তো অসুবিধা নাই, সর্ট অফ আ্যজ আ কাউন্টার পয়েন্ট অফ সুকান্ত :-))))
কিন্তু আমেলার জনপ্রিয়তা তো ঠিক সেই সময়ের যখন বঙ্গে বাম সাম্রাজ্যর পত্তন ও প্রসার। ৭৮-৭৯ থেকে ৯২-৯৪। ৯১ তে নতুন অর্থনীতির পত্তন হলে যারা সেই অর্থনীতির সুবিধে পাবে, সেই প্রজন্মের জন্যই যেন আমেলা আবার সেই প্রজন্মের বাবা-মা রা অনেকেই বাম আন্দোলনের সুফলভোগী, সদর্থেই।
এ মানে প্রভূত প্যাঁচ, ঘোরতর সোশাল সাইন্স করার বিষয়।
***দ্য (ধর্ম না) স্টেটেড পারপাজ
ধর কলকাতার শুধু না, সারা পৃথিবীতে ই কসমোপোলিটান আরবান এক্সপেরিয়েন্স জিনিসটাকে এলিট আরবান এক্সপেরিয়েন্স হিসেবে দেখাটাই রীতি। ইভেন হোয়েন হার্ট ব্রেকিং পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স ইজ রিটেন , কিন্তু এটা নাগরিক ইতিহাসের ক্লাস ও কাস্ট জেন্ডার বায়াসের জন্যই কলকাতায় যেটা হয়েছে , ফার্স্ট ভিকটিম অফ ফরগেটিং অর কালচারাল আমনেসিয়া ওয়াজ নিও আডাল্ট লিটেরেচার , কারণ আডাল্ট সাহিত্যে আর যাইহোক মেমরিয়মেকিং ইজ নট ধর্ম স্টেটেড পারপাজ । এবার এটাকে ধাক্কা দেওয়ার একটা দুটো প্রচেষ্টা হয়েছে। সেসব আনন্দ মেলার মলাটে আসাৎপ্রায় অসম্ভব।
পেয়েছি, অনেক ধন্যবাদ :-)
আর বলার ছিল এই যে, কালকে আমি আর মা কলকাতা যাচ্ছি। কদিন ফুচকা, চিকেন রোল, আর কচুরি খেয়ে মহা আনন্দে দিন কাটবে :-)
দিলুম পাঠিয়ে।
এইযে একটা 'আমি বাবা রাজনীতি বুঝি না আমাই রাজনীতিতে আগ্রহী নই ' বলা একটা গাছ গাম্বাট প্রজন্ম তৈরী হয়েছে তার অনেকটা দায় আনন্দমেলার বটে, কিন্তু বাবা মায়েদেরও দায় আছে এ আমি জোর দিয়েই বলব। আমেলার সাথে আরো চাট্টি বইয়ের যোগাড় রাখলেই এটা হয় না। সত্তর আশি নব্বইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরী থাকত। সেসব লাইব্রেরীতে দিব্বি বলেকয়ে নানারকম বই টই কেনানোও যেত। আর পাবলিক লাইব্রেরীগুলোতে গিয়ে বসে বসে পড়াও যেত। তো, অভিভাবকরা একটু উদ্যোগী হলেই হত আর কি।
আমি আমেলা পড়েছি নিয়মিত, তাতে আমার পাঠরুচি তো আনন্দ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় নি। আমার মত আরো অনেকেই আছে।
প্লিজ এখানে মেল করে দিনঃ sanjoy.chanda অ্যাট জিমেল। আগাম ধন্যবাদ :-)
ব্রতীন তুই সত্যিই আমার ছোটো ভাইয়ের মত, তোর ভালো লাগায় কষ্ট দিতে চাইনা। ক্ষমা করিস ভাই। কিন্তু ইতিহাস বা তত্বালোচনা করতে গেলে তো শুধু নিজের মেমরি কে ডিফেন্ড করতে পারিনা। কলকাতার কৈশোর মানে সেটা ভীষণ হোমোজিনিয়াস একটা দারুণ পারুম আহ্লাদি বিষয় শুধু না সেটাই গোটা বাংলার বাচ্চা দের অনুকলণযোগ্য ছোটোবেলা, সেখানে সকল ই মধুর এটা সাহিত্য স রে মালোচনা তে আগ্রহ রাখি বলেই মানতে পারব না রে। তাই হোক আমিয নতুন কিছু বলছি না , এই নিয়ে প্রচুর কথা হয়েছে, এমনকি তত্ত্বায়ন ও হয়েছে। তোকে পরে পেপার লিস্ট দিয়ে দেব। তার মধ্যে ঘরণীর টি আমিই ছবিটা করায় সাহায্য করেছি। ধর দমুর আত্মজীবনী মূলক লেখায় যেএকটা ছোটবেলা, কিশোরী বয়স পাচ্ছি তার বয়স ও তো ঐ ৬৬-৮০, তো সেটা এত অন্যরকম কেন, ইউ মে লাইক ইট অর ডিস লাইক দ্যাট, বাট হোয়াই ইজ দ্যাট রিয়েলিটি অর এনিথিং দেয়ারাবাউটস ইজ আ্যবসেন্ট। আমি একেবারেই আত্মজীবনী পসন্দ করিনা আমার ভিক্টিমহুড আর গ্লোরিফিকেশন র দোলাচল পোষায় না, কিন্তু ক্যান উই ডিনাই ইট ইজ আ স্টানিং পিস অফ রাইটিং আবাউট চাইল্ডহুড আন্ড লসয অফ ইনোসেন্স।
তোর শুধু না, জেনেরালি কিশোর সাহিত্য কে ক্রিটিকাল থিয়োরি র পার্সপেক্টিভ থেকে দেখা টাতেই আপত্তি ওঠে। শিক্ষা বিষয়েও সেটিই মোর রিসিভড উইসডম।
এনি ওয়ে আমার নিজের প্রচুর কনফ্লিক্ট আছে, কখনো ফুটবল কে শুধু টুর্ণামেন্ট হিসেবে দেখি কখনো কালচারাল ফেনোমেনন হিসেবে দেখি। এগুলিয়হিউম্যান কন্ডিশনের পার্ট ,কি করবি
নেটে একটু খুঁজুন, পেয়ে যাবেন, না পেলে মেল করে দেব।
kc এটা কোথায় পাওয়া যাচ্ছে?
আপনারা এখনও ওই 'রবীন্দ্রনাথ এখানে ....' নিয়ে মেতে আছেন কেন? উফ,
বরং পড়ুন "দুধ চা খেয়ে তোকে গুলি করে দেব", টানা একদিন খোঁয়ারি থাকবে। গ্র্যান্টি।
ঐ আতুপুতু টোনটা লিলুপিসির .
কিন্তু এতদ্সত্ত্বেও আমি সন্দেশে পড়েছি দেশভাগ নিয়ে ধারাবাহিক উপন্যাস (বাবলা ফুলের গন্ধে /রেবন্ত গোস্বামী ), মহেঞ্জোদড়োর ধ্বংস নিয়ে লেখা ধারাবাহিক উপন্যাস ( মহাকাল / লেখকের নাম মনে নেই ), যেগুলো আনন্দমেলায় বেরোনোর কথা কল্পনা করতে পারি না ।
হ্যাঁ, ছোটবেলায় আনন্দমেলা পড়তে আরও ভালো লাগতো এই কারনে যে দুজন সমবয়সীর মধ্যে ডায়লগ হচ্ছে মনে হতো। অন্যদের মতো ছোট্ট খোকা মার্কা টোন ছিল না।
"সন্দেশেরও তোমার কথা মনে হবে" - এর মানে কী ?
আমেলার এই রকম আতুপুতু মার্কা টোনটা ছিল না, বা অনেক কম ছিল। বাকি পত্রিকাগুলো ধরেই নিয়েছিল, ছেলেপুলেরা 'সরলমতি' ও তাদের নরম নরম কথা বলতে হবে।
:বোধি দা .)))))
আচ্ছা এই শারদীয়া আনন্দমেলা স্ক্যান করা কিন্তু একটা সিরিয়াসলি ভালো প্রস্তাব। একদম প্রথম বছর থেকে মোটামুটি ২০০০ অবধি স্ক্যান করে এক জায়গায় রাখা গেলে অসাধারন হবে। কতো যে ভালো ভালো সব গল্প আর উপন্যাস, সব এক জায়গায় হলে আর সব কাজ ফেলে আবার সেগুলো পড়তে শুরু করবো।
Apu | 2401:4900:110a:8eaa:b856:b4eb:df7e:8636 | ২০ জুলাই ২০২১ ১৯:১৭
শিয়া পর্যন্ত বলিনি, তবে কেন্দ্রীয় চক্রান্ত তো বটে :-)))))))
বাংলা সাহিত্যে সাউথ ক্যালকাটা ফুসু ফুসু ক্যাটিগোরি কে অ্যাসপিরেশনাল ক্যাটিগোরি হিসেবে বেচে দেওয়াটাও তাদের মহৎ কন্ট্রিবিউশনের মধ্যে পড়ে। শহুরে হিন্দু উচ্চবর্ণ মধ্যবিত্তের থাকার জায়গা হিসেবে দক্ষিন কলকাতা এমার্জ করার পরে এটা হয়েছে, এটা হয়তো এমনি ও হতো, কিন্তু দিজ বাগার্স নেভার হ্যাড এনি সিরিয়াস কোশ্চেন অবাউট হোয়াট ইজ গো ইং অন ইন দ্য সিটি। এসব অত্যাচার সত্ত্বেও, জীবনানন্দ আর বুদ্ধদেব বসু মারা যাবার পরেও যে দক্ষিন কলকাতা থেকে যে এক দুটো অনন্য রায়, নবারুন ভট্টাচার্য্য , সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, কল্লোল দাশগুপ্ত বেরিয়েছে, আমাদের বাপের ভাগ্য। এবং সেলিম পুরের আর গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের মুসলমান রা যখন তাঁদের মেমোয়ার লিখবেন, ডিসপ্লেস্ড হয়ে দখনে হবার বা পার্ক সার্কাসে উঠে যাবার গল্প লিখবেন , টিন এজ প্রেম নিয়ে বোকা বোকা কবিতা আর গান লিখবেন, যদি কৌম থেকে সে স্পেস আদায় করতে পারেন, তাইলে গিয়ে আনন্দমেলার করা শহরের টিন এজ হরণের শাপ শেষ পর্যন্ত স্খালন হবে। মধ্য কলকাতায় এটা হওয়া শুরু হয়েছে। কারণ সেখানে জেন্ট্রিফিকেশন টা হালে হচ্ছে, কিন্তু তার আবার মুশকিল হল একেবারে দু একটি ছাড়া বাঙালি ন্যারেটিভ নাই। আর উত্তর কলকাতা তো ন্যারেটিভ হলেও হিন্দু কনজারভেটিজম এর পক্ষে হবার চান্স বেশি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের হাতে যাবার চান্স ই বেশি, তাই খুব ই চাপ।
এগুলো তো নীরেন চক্রবর্তী মতি নন্দি দের ব্যক্তিগত কোন অপরাধ না, তবে বাংলা সাহিত্যের নিরীক্ষামূলক অংশ , মুক্তি যুদ্ধের পর থেকে, ৭১ এর পর থেকে প্রকোষ্ঠিকৃত হয়েছে, জাতীয়তাবাদী অংশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। কারণটা অবশ্যই ইন্দিরা র ফরেন পলিসির সঙ্গে একাত্মবোধ করতে গিয়ে, আভ্যন্তরীন ক্রিটিসিজম এর সম্পর্কে অসহিষ্ঞু হওয়া এবং সেই সুযোগে সামাজিক শক্তি গুলির স্থিতাবস্থার সমর্থন। আনন্দমেলা সেই প্রচেষ্টার একটি হ্যাপি গো লাকি জন্মদাগ মাত্র।
আমাদের প্রজন্ম শাস্তি দেয় নি তা না, কিন্তু নিজেদের দগ্ধ করেছে বেশি। আমরা হ্যাপি গো লাকি হতে গিয়ে দেশে থেকেও অখাইদ্য ইংরেজি মেডিয়ামে ছেলে মেয়েদের পাঠিয়ে তারা কেন বিভূতিভূষণ পড়ে না বলে হা হুতাশ আর করতে পারছি না, তারা আনন্দমেলাও পড়ে নি বলতে বাধ্য হচ্ছি। এসব পাপের জন্যই হয়তো শেষ বয়সে গায়ে গু মেখে মরব।
বোধি দা তোমার আনন্দ মেলা না পড়া র পিছনে "শিয়া " এর এইরূপ গভীর ষড়যন্ত্র আছে জেনে যারপরানাই ব্যথিত হলাম :))))