বহু দিন আগে বলেছিলাম ভারতবর্ষে টিবি আর অনাহারে বছরে যে পরিমাণ মানুষ মারা যান, করোনা তার তুলনায় নস্যি। কিন্তু ওগুলো 'ছোটলোকদের' রোগ আর এটি 'বড়লোকদের'। তাই এত লিঙ্ক, আলোচনা, গ্রাফ-চার্ট, মিডিয়ার বাজনা বাজিয়ে খবর দেওয়া। সে কথা বলায় এখানে অনেকেরই গোঁসা। শেষে সেই ইমিউনিটিই ভরসা!
একদিক থেকে ভালো হল। সভ্য মানুষের একলা বাঁচার বিপুল আকাঙ্ক্ষার মুখোশটা অন্তত খুলে গেল এই দমকা হাওয়ায়।
এলসিএম লকডাউনের ফলে অত লোক যে বাঁচল, এবার তাদের কী হবে? দু-মাস আগে যা হতে পারত তা-ই। দশটা শহরের রোগে মারা পড়ল গোটা দেশের অর্থনীতি। এবারে সবই খুলিবে। অগ্রাধিকার কাদের? না হোটেল-রেস্তোরাঁ, শপিং মল আর ধর্মস্থল। অহো কী দুঃসহ বুদ্ধি!
এখন চোর পালিয়ে যাওয়ার পরে সে বুদ্ধিতে আরও শান দেওয়া হইবে। এমনি করেই যায় যদি দিন যাক না...
আমি তো একটা বাস্তব সম্মত সাজেশন দিলাম।শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন গুলোতে লোকজন তোলার আগে এন্টিজেন টেস্ট করে নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর তোলা হোক।
এতে করেই অনেক সংক্রমণ কমে যাবে। কনফিউশন ও কমবে।
কিন্তু lcm,পরিকল্পনা ঠিক থাকলে,রেজাল্ট আরো ভালো হতো মানেন তো? ট্রাম্প চিরকাল সমালোচিত হবে;অনেক আগে ফ্লাইট রেস্ট্রিকশন ইমপ্লিমেন্ট না করার জন্য।
ভিয়েতনাম নিয়ে লিঙ্ক টা পড়লে দেখবেন,ওখানে বলেছে ওরা চীন থেকে ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে হু এর প্যান্ডেমিক ঘোষণার আগেই । স্ক্রিনিং,টেস্ট ও কনট্যাক্ট ট্রেসিং কে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
অনিশ্চয়তা ছিলই।আছে ও থাকবেও।কিন্তু পরিকল্পনা তো বাস্তব সম্মত ও বিজ্ঞান ভিত্তিক হতে হবে না কি ?
কোন বিরোধীদল কি পীযুষ গোয়ালের পদত্যাগ দাবী করেছে এখনো?
কবে থেকে বলছিলাম এ কথা। এবার মিলল কি না?
সিধে কথা, হাত ধুয়ে হাজা করো মুখোশ পরে অরণ্যদেব সাজো, কিন্তু ইমিউনিটি থাকলে আছো, নইলে গনগনাগন। আসল মানে: বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভাগ্যে বিশ্বাস করো। ভগবান রাখলে, থাকবে। বেচারাদের অবস্থা দেখে হাসি পায়। ধর্মটর্ম সব নাকি ধুলোর নুটি, কুসংস্কারের ডাম্প, আর বিজ্ঞান হইল গিয়া ব্রেন-তকতক স্মার্ট পরিত্রাতা। সে ডাক্তারদের পোশাক পরাচ্ছে নভশ্চর মার্কা, রোবট গড়গড়াচ্ছে পেশেন্টের বেডের কাছে, ক’দিন পরে রোগীকে ড্রোন দিয়ে খুঁজবে ক্রেন দিয়ে তুলবে, কিন্তু বাপু হে, নিরাময়? ‘তব নিজ দেহে পালিছ স্নেহে।’ ভাল কথা, সেই অরণ্যেই যদি নির্বাসিত রোদন ও রিস্কের পসরা লয়ে, টিবি টাইফয়েড গেল তল করোনায় কিসের ভয় বল, আমাকে আমার মতো দাপিয়ে বাঁচতে দাও, ঠেসে বনগাঁ লোকালে বাদামভাজা খেতে খেতে যাই, ড্রপলেটের চেয়ে ট্রেন লেট আমাদের অধিক মাথাব্যথা। বলতে পারো, ‘ই কী, মিউটিনি!’ সে তো ‘কী ইমিউনিটি!’-রই অ্যানাগ্রাম।