এখানে @সুকি র গ্রাম নিয়ে লেখা পড়া হয়নি। আমার মনে হয় বাংলার গ্রাম, মফস্বল, জেলা নিয়ে লেখালেখি, স্মৃতিকথা খুব দরকার। আমি নিজে নার্সারি থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত একটা মফস্বলে ছিলাম এবং দুবেলা লোকাল ট্রেনে করে বালিগঞ্জে স্কুল করতে আসতাম। আমার দাদু একটা অদ্ভুত কাণ্ড করেছিলেন। লোকে যখন গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে সেই সময় ষাটের শুরুতে কলকাতায় ভাল অঞ্চলে বাড়ি বেচে উনি মফস্বলে চলে যান, নিজের ছোটবেলার পূর্ব বাংলা ফিরে পাওয়ার জন্যে।
মফস্বলে একটা মধ্যবিত্ত শ্রেণী আছে যারা শহুরে শিক্ষায় শিক্ষিত। কিন্তু অনেক সময় পরিস্থিতির চাপে বা নিজের ইচ্ছেয় মফস্বলে থাকেন। তাদের সঙ্গে শহরের যোগাযোগ বেশী, মফস্বলের যোগ কম। তারা মফস্বলেরও হন না, আবার শহরেরও না। এদের মধ্যে একটা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি থাকে। এরা একটা মিশ্র সংস্কৃতির হয়ে যান। আবার এরা দুটো দিকের সঙ্গে কমবেশী পরিচিত ।
সেই জন্যে বাংলাকে জানতে হলে এই বিভিন্ন ডাইন্যামিক্সের লোকজনের কথা জানাটা খুব জরুরী।
কাল মফস্বলের কবি লেখকদের কথা হচ্ছিল। সেখানে কৃষ্ণনগর, বর্ধমান নিয়ে কথা উঠল। সেসব জায়গা তো বাংলা ভাষার পীঠস্থান। তাই সেখানে বাংলা ভাষাচর্চার এলিটিজম অস্বীকার করে লাভ নেই।
বসিরহাটে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল সুন্দরবনবাসী এক ইংরেজি শিক্ষকের। উনি সুন্দরবন অঞ্চলের কবি, লেখকদের নিয়ে একটি পত্রিকা বের করেন নাম 'আবাদ সাহিত্য পত্রিকা'। ওখানকার লোকজন কলকাতার ভাষায় লেখেন না তাই বাংলার কোনো পত্রিকা ওদের লেখা ছাপতে রাজি হয়না। সেই জন্যে ভদ্রলোক নিজের উদ্যোগে পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। সুন্দরবন অঞ্চলের লেখকরা তাদের নিজের ভাষায় লেখা প্রকাশ করার সুযোগ পায়। ভদ্রলোক লিটল ম্যাগাজিন মেলায় এসে ডিসট্রিক্ট লেভেলের সুপিরিওরিটির কথা আমার বলেছেন। উনি এসব মেলায় আসতে ভরসা পান না।
এইটে পড়ে ফেলুন। সকালে চার ছিপি, রাতে চার ছিপি। তাহলেই করোনাসুর ঠান্ডা। খাবার সময় চিয়ার্স বলবেন না। অইটে আমাদের সংস্কৃতি নয়। ঃ-)))
@হখগ,
আপনার কথা জেনারেলি মাইন্ড করিনা। আসলে কারো কথাই নয়। নইলে রবি-গান নিয়ে এত কথার মধ্যে আপনার এক লাইন quote তুলে দিয়ে বলতাম না 'এটা সবচেয়ে সেরা রেস্পন্স।' :)) এখানে বাকবিতণ্ডা উপভোগ না করলে আর আসি কেন!
কিন্তু ব্যাপার হল, পরস্পরের কথা অপছন্দ হলে সেটাকে নানারকম 'নাম' দিয়ে টিয়ে দিলে সেখানে কথা বলতে অস্বস্তি লাগে।
তবে শান্তিনিকেতনর প্রাক্তনী হয়েও শান্তিনিকেতন নিয়ে আপনার অধিকাংশ কথাগুলো এক প্রকার 'আমাকে এসব ঐতিহ্য টৈতিহ্যের ধার না ধেরে কিছু একটা বলতে হবে। নইলে বোলপুরী বোলবলা হয়ে যাবে।' সবটাই আমাকে ক্রিটিকের চোখে দেখতে হবে। এখানে ভাল লাগাও টাও মন খুলে বলতে পারব না, এই ট্রেন্ডটাও অদ্ভুত!
আমার মনে হয় এখানে এ নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা চলে। 'নিক' থেকে এটা, ওটা বলাতে আমি অভ্যস্থ হয়ে গেছি।
@এলেবেলে, আমার মনে হয়না নীলগিরির চা শ্রমিক আর ডুয়ার্সের চা শ্রমিকের মধ্যে বিশেষ তফাৎ আছে! বরং দার্জিলিং টি'র কিম্বদন্তীর দৌলতে ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের কথা তুলনায় অনেক বেশী আলোচিত। শ্রমিকের দুঃখ, গ্লানি সব জাগাতেই সমান।
খ, ছোটাইদির বিশ্লেষণটা যাকে বলে ফাটিয়ে দিয়েছেন পুরো।
@হখগ হুঁ, বক্তব্য নতুন নয়। অনেকেই বলেছেন অনেকদিন ধরে। আম্রিগায় খুঁজলে সবরকম বক্তব্যই পাওয়া যাবে। স্টেট শক্তপোক্ত হওয়ার দরুন সেন্সরশিপ কম। কিন্তু মেনস্ট্রিম কাউকে পাত্তা দেয় না। এইটেই মুশকিল। উদাঃ চমস্কিবুড়ো। ঃ-)))
আর i-এর রাজস্থান নিয়ে লেখা খুব ভাল লেগেছে। :-) নিজে কমপ্লিট আবাল টাইপের লোক হওয়া সত্ত্বেও, জীবনে যথেষ্ট কাফকা ও জীবনানন্দ মারিয়েও কোন এক্সিস্টেন্সিয়ালিস্ট ক্রাইসিস ফিল না করা সত্ত্বেও এবং মাঝে মাঝে নিজের প্রতি 'ওরে ইনসেন্সিটিভ ভোঁদড়, বয়েস দুদ্দাড় করে বাড়ছে, অথচ তোর মরার ভয় হচ্ছে না' বলে বিলাপ করা সত্ত্বেও ভালমানুষ সবসময়ই ভাল লাগে। ইন জেনারেল, সব মানুষই বেসিক্যালি ভাল। এইটেই আজকের বাণী। ঃ-)))