এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পরিষেবা বেসরকারি হলেই তার মান বেড়ে যায় 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৭ মার্চ ২০২৩ | ১২৭৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • পরিষেবা বেসরকারি হলেই, কেমন তার মান হু-হু করে বেড়ে যায়, এয়ার-ইন্ডিয়া তার অব্যর্থ প্রমাণ। কলকাতা থেকে শিকাগো যাচ্ছিলাম এয়ার-ইন্ডিয়ায়, সেই অব্যর্থ প্রমাণ পেয়ে গেলাম। যাচ্ছিলাম, কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে শিকাগো। এমনিতেই কলকাতা শহর থেকে নেতাজি-সুভাষ বিমানবন্দরে এলেই কেমন একটা বিদেশে চলে এসেছি অনুভূতি হয়। নিরাপত্তারক্ষী থেকে বিমান-সংস্থার কর্মী, প্রায় সবাই ফুর্তিতে, হিন্দি বলতে শুরু করে দেন, এবং উত্তরও হিন্দিতেই চান, যেন এটা লক্ষ্নৌ বিমানবন্দর। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানেও ঘোষণা থেকে বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত সবই হিন্দি এবং ইংরিজিতে। 'কলকাত্তা হাওয়াই আড্ডে মে আপকা স্বাগত হ্যায়' শুনলেই বলতে ইচ্ছে করে, ই কি হিন্দুস্তানি শহরে চলে এলাম নাকি, যার নাম কলকাত্তা হাওয়াই আড্ডে? ব্রিটিশ আমলে হেবি কেতের জায়গায় নাকি এরকম হত। সবাই খটখট করে ইংরিজি বলছে। সায়েবী রাইটার্স বিল্ডিংএ সেইজন্যই বিনয়-বাদল-দিনেশকে সায়েবী কেতার পোশাক পরে ঢুকতে হত। 

    যাহোক, আমরা ব্রিটিশ আমলেও কাটিয়েছে, এই হিন্দুস্তানি আমলও সয়ে গেছে। এখন রবীন্দ্রনাথও নেই, সুভাষ বোসও নেই, দিলীপ ঘোষ সর্বত্র বিদ্যমান। তা, বিমান চড়ে দিল্লি আসা গেল। এসে জানা গেল, নতুন দিল্লি সাম্রাজ্যে সেই বৃটিশ নিয়মানুবর্তিতা তেমন নাই। আট ঘন্টা অপেক্ষার কথা ছিল। অভিবাসন-টাসনও কলকাতা থেকে দিল্লিতে। সেখানেও সক্কলে হিন্দি বলে থাকেন, আমাকে অবশ্য কোনো প্রশ্ন করেননি। তা, সেই চক্কর কাটানোর আগেই মোবাইল-বার্তায় জানা গেল, শিকাগোগামী বিমান আজ রাতে আর ছাড়বেনা। পরের দিন সকাল দশটা নাগাদ ছাড়বে। মানে দিল্লিতে দীর্ঘ রাত্রিবাস। 

    লম্বা যাত্রায় কখনও সখনও এরকম হয়ে থাকে। তখন বিমান-সংস্থাই হোটেল-টোটেলের ব্যবস্থা করে। মোবাইল বার্তায় সেসব কিছু বলা ছিলনা। তাহলে কী করণীয়? এয়ার-ইন্ডিয়ার কাউন্টারে খোঁজ করা গেল। সেখানে অমুক দেবী বললেন, ওমুক জানলায় যান, সেই জানলায় যেতে বললেন, তমুক ডেস্কে যান, দক্ষতার হদ্দমুদ্দ যাকে বলে। যা হোক, শেষমেশ সেই এলাকায় পৌঁছে দেখা গেল, বেশ কিছু লোকজন ভিড় করে আছেন। কারণ? শুধু আমার বিমানই না, লন্ডন, টোরান্টো, ভ্যাঙ্কুভার, সবাই এরকমই দেরিতে চলছে। একজন জানকারি-ওয়ালা বললেন, যে, গতকালও এইরকমই হয়েছিল। এটা রোজকার ব্যাপার। রোজই হচ্ছে। ষোল ঘন্টা দেরি নিয়ে এত উত্তেজিত হবার কিছু নেই, শিকাগো থেকে দিল্লির বিমান নাকি চব্বিশ ঘন্টা লেট। বেসরকারি সময়ানুবর্তিতার চূড়ান্ত। ভাবসাব দেখে মনে হল, দিল্লি থেকে নানা জায়গায় বোধহয় ঘোড়ার গাড়ি চলে। পৌঁছে ঘোড়া ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। যখন ওঠে, দানাপানি খেয়ে, মর্জি হলে আবার ফেরত আসে। এটা অবশ্য আন্দাজে বললাম, খুবই সম্ভব, যে, শের-শাহের ঘোড়ার ডাক আসলে খুবই সময়ে চলত।

    যা হোক, কর্পোরেট পেশাদারিত্বের পরিচয় তখনও পুরোটা পাইনি। সংশ্লিষ্ট যে কর্তাব্যক্তি বসে ছিলেন, তিনি বললেন, কী করা হবে বলতে পারছেননা, রাত সাড়ে-দশটায় এলে বিশদ জানা যাবে। আমি আর কী করি, বিমানবন্দরে বসে একটা ফেবু পোস্ট লিখে ফেললাম। তারপর সাড়ে-দশটা বাজিয়ে ফিরে এসে দেখি, কাউন্টার ভোঁভাঁ। কেস কী? না ওই সময়ে শিফট বদল হয়। যিনি ছিলেন, এইসময় ঝামেলা ঘাড়ে না নিয়ে, পরের জনের ঘাড়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। মরলে ও ব্যাটা মরুক। কেউ যদি না জেনে থাকেন, তো বলে রাখা যাক, একে ইংরিজিতে বলে কর্পোরেট সার্ভাইভ্যাল স্ট্র‌্যাটেজি, আর হিন্দিমে বোলতা হ্যায় 'জিনা ইঁহা মরনা ইঁহা'। 

    তা, পরের জন তো হেলতে-দুলতে এলেন আধ ঘন্টা পরে। এসে, বিশ্বাস করবেন না, লোকজন দেখে জিগালেন, কী হয়েছে? ফ্লাইট ডিলেইড, বলায় খুব অবাক হয়ে জিগালেন, কেন, কী হয়েছে? যেন, আমাদের চড়ার কথা, খোঁজ খবর তো আমাদেরই রাখার কথা। যাই হোক, যা জানা ছিল, জানানোর পর, তিনি বললেন, খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছেন। আরও আধঘন্টাটেক তাঁর দেখা পাওয়া গেলনা। তারপর তিনি ফিরে এসে গম্ভীরভাবে বললেন, থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। কারণ? কারণ, দিল্লির সব হোটেল নাকি ভর্তি হয়ে গেছে। ভাবুন, গোটা দিল্লির সব হোটেল ভর্তি। লোকজন তো শুনে খুব চেঁচামেচি করতে শুরু করল। কিন্তু আমি পরে ভেবে দেখলাম, কথাটা পুরোটা মিথ্যে নাও হতে পারে অবশ্য। এয়ার ইন্ডিয়ার ১০ টা দেরি-হওয়া ফ্লাইটের লোক যদি প্রতিদিন নিজের খরচায় রাত্রিবাস করে, তাহলেই হাজার-পাঁচেক খদ্দের বেড়ে যায় দিল্লিতে। তাতে করে হোটেলের চাহিদা বাড়ে, ইত্যাদি। 

    এইটা ভাবার পরেই কর্পোরেট কালচার নিয়ে আমার দিব্যচক্ষু খুলে গেল। বেসরকারিকরণের কত উপকার। এক, বিমান-সংস্থার উপকার বেসরকারি না হলে সম্ভব ছিলনা। সরকারি হলে পলিসি-টলিসির কারবার থাকত। লোককে ঝামেলায় ফেললে বেশি টাকা দিয়ে ভালো হোটেল বুক করতে হত। এখন সেসবের কারবার নেই। প্লেন যেমন খুশি চলে চলুক, হোটেল ভাড়া করা যাবেনা। এত করে ধুঁকতে থাকা সংস্থার খরচ-সাশ্রয় হল। দুই, একই ঢিলে দিল্লির ভ্রমণ-ব্যবসারও উন্নতি হল। প্রতিদিন পাঁচ-হাজার করে খদ্দের। বুম না হয়ে যাবে কোথায়।

    তো, এই দিব্যজ্ঞানের পর, রাত্তির সাড়ে এগারোটায় আমি অবশ্য কোনো হোটেল খোঁজার আর চেষ্টা করিনি। বিমানবন্দরেই একটা বিচ্ছিরি বেঞ্চে এলিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। একপাত্তর কফি গিলে। বললে বিশ্বাস করবেননা, দিল্লি বিমানবন্দরে মশার উপদ্রবও আছে। অল্প যদিও। পুরো বিমানবন্দরটাই কর্পোরেট হলে নির্ঘাত অনেক বেশি থাকত। আর ওখানেই মশারি এবং মশার ক্রিম দশগুণ দামে বিক্রি হত। এখনও ততটা হয়নি। আশা করা যায়, জীবদ্দশায়ই দেখে ফেলব। তখন এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে দিল্লি বিমানবন্দরেরও জয়ধ্বনি দেব।

    পুঃ পরদিন বিমান সকালে ছেড়েছিল। মাত্র ঘন্টাখানেক দেরিতে। দশটার জায়গায় এগারোটা। তাতে টিভি চলছিলনা। আমি সার্ভে করে দেখেছি, আমার চলছিলনা বলে কারোর চলছিলনা, এমন না। প্রায় ৫০% টিভিই চলছিল গোটা বিমানে। বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষা না, ফলে ভুল হতে পারে। এছাড়াও অনেকেই বলেছেন, এরপরে কমপেনসেশন দাবী করা উচিত। কিন্তু, কর্পোরেটের কাছ থেকে টাকা আদায়? ওরে বাবা, থাক। ওরা ব্যবসা করে খাক। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • চিন্তা ভাবনার একটু পরিবর্তনের দরকার আছে | 2601:205:c280:2890:c4b1:258d:fc55:***:*** | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১০:১৫517517
  • উফফ! বেসরকারিকরনের আগে কোনো ডিসপ্লেই চলতো না।
    তাও তো ৫০% চলছে।
     
    একি সুইচ অন অফ নাকি! 
     
    প্লিস গ্রো আপ! অনেক হয়েছে! 
  • উফফ | 24.***.*** | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১০:২৬517518
  • ২০০৪ এ ব্রিটিশ এয়ারওয়জে ৮ ঘন্টা দেরী হয়েছিল। না কোনো হোটেল - না কোনো খাবার। তো কি হলো? 
     
    ওরকম হয়ে থাকে।
    একটু পজিটিভ লেখা হলে ভাল হয়। সারাক্ষণ কমপ্লেন করাটা একটু কমান দাদা! 
     
     
  • Surajit Dasgupta | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১১:১২517519
  • সরকারী পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন করার আগে ভেবে দেখুন সেই পরিষেবার জন্য আপনাকে কত খরচ করতে হয়। শুধু বিমান যাত্রার কথা বলে সামগ্রিকভাবে সরকারী পরিষেবার অবস্থা বিবেচনা করা যায়না। আমাদের যদি সরকারী পরিষেবার জন্য বেসরকারি পরিষেবার দরে অর্থ প্রদান করতে হতো তাহলে মাস মাহিনায় কুলাত না। সরকারী পরিষেবা আছে বলে বেঁচে আছেন।
  • বুঝলাম না | 2601:205:c280:2890:79e3:fcd7:1e17:***:*** | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১১:১৯517520
  • ইয়ে মানে - এয়ার ইন্ডিয়া তো এখন বেসরকারি হয়ে গেছে। তাই নিয়ে এতো অভিযোগ! কেঁদে ভাসিয়ে দিলেন লেখক।
  • lcm | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৪517524
  • এয়ার ইন্ডিয়া চড়ি ২০১০-এ, তখন আধা-সরকারি পরিষেবা। দিল্লী-নিউইয়র্ক নন-স্টপ। পোনেরো ঘন্টা। সকালে জেএফকে পৌঁছতে একটু দেরী হয়। ইমিগ্রেশন, লাগেজ, কাস্টমস শেষ করে এয়ার ট্রেন নিয়ে অন্য টার্মিনালে যেতে যেতে নিউইয়র্ক-স্যানফ্র্যানসিসকোর কানেক্টিং ফ্লাইট মিস করলাম। ইউনাইটেড এয়ারলাইনস বলল - পরের ফ্লাইট দু ঘন্টা পরে, সিট খালি থাকলে উঠিয়ে দেবে। দু ঘন্টা বসে রইলাম। কিন্তু পরের ফ্লাইটে মোটে একটা সিট খালি। এদিকে আমরা চারজন, একজন সিনিয়র সিটিজেন। আবার কাউন্টারে গেলাম। বলল পরের ফ্লাইট আবার আড়াই ঘন্টা পরে, ট্রাই করো, কিপ ট্রাইং। নইলে পরের দিন কনফার্মড টিকিট আছে, তবে এক্সট্রা ডলার গুনতে হবে।

    কি করব ভাবছি। হঠাৎ মনে হল এয়ার ইন্ডিয়াকে গিয়ে বলি। তল্পিতল্পা নিয়ে গেলাম এয়ার ইন্ডিয়ার টার্মিনালে। সমস্যার কথা জানালাম। এয়ার ইন্ডিয়ার এজেন্ট সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকান এয়ারলাইন্স-এর চারটে তাজা টিকিট পরের ফ্লাইটে দিয়ে দিল। হোটেলর থাকার অপশনও দিয়েছিল, সেক্ষেত্রে পরের দিন ইউনাটেডের টিকিটে আমাদের ফিরত হত। 
    এয়ার ইন্ডিয়ার অসাধারণ পরিষেবার তারিফ করে ওদের কেটে দেওয়া টিকিটের প্লেনে চড়ে ঐদিনই চলে এলাম।
  • Kuntala | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১৯:১৮517532
  • আপনি যে অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন তা অল্প বিস্তর সব বিমান ব্যবস্থাতেই হয়ে থাকে। এত দুঃখ করার কিচ্ছু নেই। হয়তো দিল্লি বিমান বন্দরের  পরিচালক কোম্পানিরও কিছু দায় আছে, ওই মশার ব্যাপারটা যেমন।
    তবে হ্যাঁ, উনিশশো সাতাশি সালে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে নিউ ইয়র্ক গেছিলাম। ভারি চমৎকার ছিল সেই অভিজ্ঞতা। 
  • সুদীপ্ত | ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩০517606
  • বেসরকারী হলে পরিষেবা ভালো হবে - এই মতে বিশ্বাসী নই, কিন্তু সরকারী পরিষেবা বিশাল কিছু ছিল বা হবে, সেটা বলার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। অন্ততঃ ব্যক্তিগত কারণে ইদানীং যত সরকারী ব্যাঙ্ক, পৌরসভা, পোস্ট অফিস, বিদ্যুৎ পরিষেবা ইত্যাদি অফিসে গেছি, 'আজ অমুক আসেননি কাজ হবেনা', 'অমুক ছুটিতে আছেন দু-সপ্তা পরে আসুন', 'লিঙ্ক নেই' (ব্যাঙ্কের অতিপরিচিত সাফাই), 'অমুক ডকুমেন্ট আনেননি কেন' (মানে পাসপোর্ট,  প্যান, আধার থাকলে বলে ভোটার কার্ড কই, মানে যেটা নেই ঠিক সেটার কথাই বলে, যতটা হ্যারাস করা যায় আর কি, এমনকি সাইটে সেসব ডকুমেন্টের কথা লেখা না থাকলেও) - সব মিলিয়ে পরিষেবার একেবারে হদ্দমুদ্দ, এ জিনিস নিজের অভিজ্ঞতা না হলে বলে বোঝানো যাবে না। নিজের কাজকর্ম, অফিস ছেড়ে সামান্য ব্যাপারে পরিষেবা পেতে নাকের জল, চোখের জলের একেবারে দিব্য সঙ্গম হয়! গা চিড়িবিড় করলেও কিছু বলার নেই, শুনতে হয় 'আপনি সরকারী কাজে বাধা দিচ্ছেন বা বিরক্ত করছেন' ইত্যাদি! বেসরকারী ক্ষেত্রে এ-জিনিস অনেক কম, তবে হয় না বললে ভুল হবে, তার প্রমাণ তো উপরের লেখাই। তবে এয়ার ইন্ডিয়া চিরকালই খারাপ ছিল, আমার নিজের আগের অভিজ্ঞতাও খুবই খারাপ, খাবার-দাবার, পরিচ্ছন্নতা, ফ্লাইটের বাইরে-ভিতরে crew দের ব্যবহারও তথৈবচ! অন্য বেসরকারী বিমান পরিষেবায় এ জিনিস এখনো দেখিনি (এমনকি আন্তর্জাতিক বিমান অত্যধিক দেরী করলে হোটেলের ব্যবস্থাও পেয়েছি ঠিকমত), হয়ত হয়, তবে কম নিশ্চয়ই। 
     
    সরকারী পরিষেবা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজন,  সেটা আর্থসামাজিক কারণে বহুজনহিতায় আর সে-তর্ক আলাদা;  তবে পরিষেবা ভালো না খারাপ সে ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে বলা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে খারাপ (এবার সেটাকে কোনো ব্যবসায়িক অভিসন্ধিতে ইচ্ছে করে খারাপ করা হচ্ছে কিনা সেও এক ব্যাপার, তবে কর্মসংস্কৃতি তো খুব খারাপ সেটা সত্যি, হাতে গোনা ব্যতিক্রম কিছু লোকজন বাদ দিলে) । ভালো কিভাবে করা যাবে সে নিয়ে কথা চলতে পারে, তবে খারাপটাকে খারাপ স্বীকার করা জরুরী, নয়ত সেটার সংশোধন কোনোদিন-ই হবে না।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ১৯ মার্চ ২০২৩ ২১:১৯517610
  • ২০১০-এ এয়ার ইন্ডিয়া আর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের এক যৌথ পরিষেবা চালু ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের সেবা নিয়েছিলাম। কলকাতা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার কারণে বিমান কিছুটা দেরিতে দিল্লী পৌঁছলো। দিল্লী থেকে আমেরিকান এয়ার। তখনও বোর্ডিং চলছে। আমাদের আসার গেট থেকে যাওয়ার গেটে গিয়ে লাইন দিয়ে কাউন্টারে হাজির হতে হতে বোর্ডিং বন্ধ। আমরা এবং আরও জনতা সারা রাত দিল্লী এয়ারপোর্ট। এয়ার ইন্ডিয়া এবং আমেরিকান দুই কাউন্টারেই ছিলেন ভারতীয় লোক। কেউ কোন কথাই শুনতে চায়নি, দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গ বাদই দিলাম। তিনজনের পরিবার কিভাবে সে রাত ঐ এয়ারপোর্টে কাটিয়েছি সে বিস্তারিত বিবরণে আর নাই গেলাম। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ভারতীয় কর্মচারীদের পরিষেবা। 
     
    আরেক সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার গল্প বলি। সিঙ্গাপুর থেকে আমেরিকা ফিরছি। তিনজনের সীট, আমি মাঝখানে, আমার বাঁয়ে আইল-সীটে বসলেন, দেখে মনে হয়, এক ভারতীয় মানুষ (পরিজনের সাথে বার্তা বিনিময় হিন্দিতে)। সারাটা পথ দুই হাত দু'পাশের হাতলে এমন আয়াসে ফেলে রাখলেন যে আমায় পুরো পথ সংকুচিত হয়ে কাটিয়ে দিতে হল। আমেরিকা ঢোকার পর যাত্রার বাকি দুই অংশে অনুরূপ সীটে যাঁরা বসেছিলেন, কেউ ভারতীয় ছিলেননা, আমাদের দু'জনের মাঝের হাতলে কখনও হাত রাখার চেষ্টাই করেননি, আমিও করিনি। নাঃ, কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাইনা। মনে রাখব, এই আরকি।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:89e1:68e:6aef:***:*** | ২০ মার্চ ২০২৩ ০৩:৩৮517638
  • আমেরিকা আর ইউরোপীয় এয়ারলাইনগুলো আমি যত পারি এড়িয়ে চলি। সবকটাই প্রাইভেট, আর জঘন্য সার্ভিস। মাঝে মাঝেই যাত্রীদের হ্যারাস করার ভিডিও ভাইরাল হয়, আর খবরে দেখা যায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন