৭১ এর সেই সব দিন-সেই সব সময়ের স্বাক্ষী আমরা হারিয়ে গেলে আর কেও থাকবেনা সঠিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করবে| এখনকার প্রজন্মকে বলার কেও থাকবেনা | দিনের পর দিন কি খেয়েছি, কী হবে , কেমন অনিশ্চয়তা। পাশের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেলো। আমাদের দেশ গ্রাম নাই। কোথায় যাবো।
শিউরে উঠি ভাবলে।
এক ঐতিহাসিক দলিল-
আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০| পুরো মাসটাই বিজয়োৎসব এর মাস | এক নদী রক্ত পেরিয়ে স্বাধীনতার মাস এটা | বাঙালীদের জন্য বা বাংলাদেশি জনগনের জন্য এই মাস খুব আবেগজনিত মাস | খুশি আনন্দ ,সেই সাথে স্বজন হারানোর বেদনায় মিশ্রিত মাস | ৭১ এর দিনলিপি নিয়ে লেখা আমার বই " ফানুস " এর কিছু অংশ তুলে দিলাম |
-----------------------------------------------
আমার হাতে ৭১ ভয়াবহ রাতের সেই ঘটনার পরে একটা ডাইরি আসে। ক’লাইন পড়েই বুঝলাম
সবই ১৯৭১ প্রথমদিকের ।
সেই ভয়াবহ দিন নিয়ে বড় ভাই লিখেছে।
এই ঘটনাটি আমার জীবনের সাথে জড়িত। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের সেই কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের অনুচররা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে,- আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি। আজ সেই ভয়ংকর দিনগুলির কথা খুব করে মনে পড়ছে, তখন আমি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা যখন আসন্নপ্রায় তখনই পূর্ব পাকিস্তানে গোলযোগ চূড়ান্তভাবে দানা বেধেছে। আমরা যখন পরীক্ষার প্রস্ত্ততি নিচ্ছি ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত হল। ঐ দিনটি ছিল আমার জীবনে দুঃস্বপ্নের মত, যেটা পরবর্তীতে আমার ধর্ম ও রাজনৈতিক চেতনার আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
২৫ শে মার্চের সন্ধ্যায় আমি শেরে বাংলা হলে ছিলাম। কিছুদিন আগে যখন জেনারেল ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কথা বললেন, তখন থেকেই এখানকার অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। ছাত্ররা ধর্মঘট করেছিল। পরীক্ষা আসন্ন হওয়ায় আমি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যাই হোক,
পরে রাজনৈতিক গোলযোগের কারনে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হল এবং যার ফলে বেশির ভাগ ছাত্র তাদের বাড়িতে ফিরে গেল। যেহেতু আমি প্রত্যক্ষভাবে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম, তাই হলে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম যাতে প্রয়োজন মাত্রই সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে পারি।
২৫ শে মার্চের কয়েকদিন আগে থেকেই একটা গুজব রটে আসছিল যে, শেখ মুজিব ও জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না এবং, ফলত, যে কোন সময় আর্মি নামানো হতে পারে। মিডিয়া কিন্তু চতুরতার সাথে ফলাও করে প্রচার করছিল যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সুফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিছু পত্রিকা এটাও লিখেছিল - জেনারেল ইয়াহিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে পূর্ব বাংলার দায়ভার বেসামরিক সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার, যেখানে মুজিব এবং ভুট্টোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। এই ধরণের ভুয়া খবরের প্রেক্ষিতে অনেক বাঙ্গালি ভেবেছিল অবশেষে ১৫ বছর পরে তারা স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি। ২৫ শে মার্চের সেই কালো রাতে পাকিস্তানী ইসলামিক আর্মি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে তারা তাদের ব্যারাক থেকে বের হয়ে আসে, -বাঙ্গালিদের তারা এমন শাস্তি দেবে যেন তা আজীবন মনে থাকে;- সত্যিই তাই হয়েছে।
এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
সে দিন একটু সকাল সকাল ঘুমাতে গিয়েছিলাম, খুব সম্ভবত তখন রাত ন’টা বাজে। সারাদিন বেশ ব্যস্ত কাটায় খুব ঘুম পাচ্ছিল। হঠাৎ করেই, রাত ১১টার দিকে, একটানা গুলির শব্দে আমার গভীর ঘুম ভেঙ্গে গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম, এটা হয়ত বাঙ্গালীদের বিজয় উৎসব, তবে খুব শীঘ্রই আমি আমার ভুল বুঝতে পারলাম। জানালা খুললাম-বাইরে গভীর অন্ধকারে ছেয়ে ছিল। রাস্তার হালকা বাতিগুলো বন্ধ ছিল। খুব কষ্ট করে দেখলাম, রাস্তায় অসংখ্য মিলিটারিদের গাড়ি এবং রাইফেলধারী মিলেটারিরা ছুটোছুটি করছে। মাঝে মধ্যে ওদের সার্চ লাইটে ওদের অবস্থা স্পষ্ট দৃশ্যগত হচ্ছিল। অসংখ্য সৈনিক দৌড়াচ্ছিল আর এদিক-ঐদিক এলোপাথাড়ি গুলি করছিল। দেখতে পাচ্ছিলাম, মিলিটারিদের বড় একটা অংশ আমাদের ক্যাম্পাসের সবটা ঘীরে ফেলেছে, এমনকি আমার হলের সিঁড়িতে মিলিটারিদের উর্দু ভাষায় কথা বলা শুনতে পাচ্ছিলাম। বুঝতে আর বাকি রইল না কি ঘটছে। ভাগ্যিস সঙ্গে সঙ্গে লাইট অফ করে ফেলেছিলাম। আমি বিছানার ওপর উঠে পড়েছিলাম। বন্দুক এবং মেশিনগানের অনর্গল গুলির শব্দে আমার কানে তালা লাগার উপক্রম।
আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। রুমে একাই ছিলাম, আস্বস্ত করবার মত কেউ ছিল না সেখানে। দুর্ভোগ যেন বেড়েই চলেছে, আমি ভয়ে কেঁপে উঠে বিছানায় পড়ে গেলাম। সহসা, একগুচ্ছ গুলি কানের কাছ দিয়ে নিকটবর্তী জানালা দিয়ে বের হয়ে গেল। ধরেই নিয়েছিলাম, আমি মরে যাচ্ছি। বেশি কিছু না ভেবেই গুলির ঝাঁক থেকে নিজেকে বাঁচাতে বিছানার তলে ঢুকে পড়লাম। বুকে ভর দিয়ে শুয়ে পড়লাম আর মেঝে শক্ত করে ধরে রইলাম, যেন সেটাই আমার জীবন। লাগামহীনভাবে সারারাত্রি গুলিবৃষ্টি চলতে থাকল।
তারপর, এক সময়, হঠাৎ করেই রাজ্যের নীরবতা নেমে আসলো। আর কোন বন্দুক বা মেশিনগানের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। মনে হল সব থেমে গেছে। আমি খুব সতর্কতার সাথে বিছানার তল থেকে বের হয়ে বিছানার ওপর বসলাম। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, তখন রাত ৩টা কিম্বা কাছাকাছি একটা সময় ছিল। হঠাৎ করেই তীব্র চিৎকারের সাথে সাথে তীব্র আলোয় ঝলসে ঊঠল চারপাশ। বাইরের দিকে না তাকিয়ে পারলাম না, ভাঙ্গা জানালার ভেতর দিয়ে দেখলাম, অনেকগুলো টাঙ্ক বস্তি তাক করে আগুন ছুড়ে মারছে।
বস্তিটা ছিল আমাদের ঠিক হলের পেছনেই পরিত্যক্ত রেল লাইনের ধার জুড়ে। লক্ষ্য করলাম মানুষ-জন সব ছুটছে। অনেকগুলো মাথা বস্তি ছেড়ে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে। যারা আগুন থেকে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে বুলেটের আগুনে ঝলসে দেওয়া হচ্ছে তাদের বুক। চারিদিকে শ্রাবণের বৃষ্টিপাতের মত গুলি বর্ষণ করা হচ্ছিল, আমি একট্রাক সৈন্য দেখতে পেলেও প্রকৃতপক্ষে ওরা ছিল পিপড়ের ঝাঁকের মত।
এটা আমাকে টিভিতে দেখা ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বানানো সিনেমাগুলোর কথা মনে করিয়ে দিল। শুনতে পাচ্ছিলাম মানুষের বাঁচার আকুতি ও চিৎকার। জানালা বন্ধ করে দিলাম এই ভয়ে যে ওদের একটা গুলিই আমার জন্য যথেষ্ট। মেঝেতে বসে পড়লাম, এবং তৎক্ষনাৎ উপলব্ধি করলাম আমার পালাবার পথ চতুর্দিক থেকে বন্ধ।
খুব ধীর গতিতে এই নীরব ঘাতক রাতের অবসান ঘটিয়ে সূর্যের আগমন ঘটল। তখনো বাইরে মিলিটারীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। আসলে কী ঘটছে জানার জন্য আমি আমার রেডিওটা, যথাসম্ভব আস্তে, চালু করলাম। ঢাকা রেডিও সম্প্রচার কেদ্রটি বন্ধ ছিল, ফলত, কলকাতার রেডিও চ্যানেল ধরালাম। ওরা পূর্ব পাকিস্তানের চলতি ঘটনা নিয়ে কোন খবর পেশ করল না, শুধু জানালো, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের সাথে আলাপ সেরে পাকিস্তানে ফিরে গেছেন। সুতরাং করাচির চ্যানেল ধরলাম, এখন আমি যা শুনতে ব্যকুল ছিলাম তা শুনতে পেলাম। ঘোষণা দেওয়া হল, জেনারেল ইয়াহিয়া জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিতে যাচ্ছেন।
আমি তার কথাগুলো শুনলাম। মনে হচ্ছিল আমি গভীর মাতাল কারও কথা শুনছি। তার সব কথা এই মুহূর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না, তবে কিছু কথা আমার এখনো মনে আছে। সে বলেছিল, ‘মুজিব একজন দেশদ্রোহী, সে অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে।’ ভাষণ এই বলে শেষ করলো- ‘মুজিবকে ধরা ও শাস্তির জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল যে শেখ মুজিব ও ড. কামাল হুসাইনকে বিচারের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানে ধরা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি ভুট্টোকে বলতে শুনলাম, ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ, পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।’
তখনো ওদের গুলি করা থামেনি, বাতাসে একধরণের বিশ্রী দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, পরে বুঝতে পারলাম ওটা ছিল লাশ পোড়ার গন্ধ। কোন দমকল বাহিনীর গাড়ির হর্ন শুনতে পেলাম না, যদিও দমকল বাহিনীর অফিসটা ছিল হলের ঠিক পাশেই। সকাল ৮টার দিকে আস্তে আস্তে গুলির শব্দ থেমে আসলো। আমি জানালা দিয়ে দেখলাম ট্যাঙ্কগুলো আমার দৃশ্য থেকে সরে যাচ্ছে। আমি পূনরায় বিছানায় ঝুঁকে পড়ে রেডিওটি চালু করলাম। দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। জমে গেলাম ভয়ে। অনুভব করলাম, আমার শরীরের রক্ত চলাচল কিছুক্ষণের জন্য যেন থেমে গেছে। সবকিছু ধুসর দেখতে শুরু করলাম। নড়াচড়া করতে পারলাম না, বিছানায় সমস্ত শরীর যেন গেঁথে গেছে। কিছুক্ষণ পর আবারও শব্দ হল-খুব চাপা শব্দ। এখন আমি উপলব্ধি করলাম, আর্মি হলে এতক্ষণ দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করত। আমার মনে হল এটা অন্য কেউ, সুতরাং দরজার কাছের জানালাটির কাছে গিয়ে উঁকি মারলাম। দেখলাম মঞ্জু আমার পাশের রুমের বাসিন্দা হামাগুড়ি দিয়ে অপেক্ষা করছে। দরজারটা একটু ফাঁক করে জানতে চাইলাম কি ব্যাপার।
সে ফিসফিস করে বলল তার রুমমেট আশরাফের কি যেন হয়েছে সুতরাং তার সাথে আমাকে যেতে বলল। আমি তার মত করে হামাগুড়ি দিয়ে তার পিছন পিছন চললাম,
রুমে গিয়ে দেখি আশরাফ মেঝেতে পড়ে আছে, চোখ খোলা কিন্তু মুখ আটকা। চারিদিকে পানি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আমি কারণ জানতে চাইলে মঞ্জু বলল, এটা পানি না আশরাফের প্রস্রাব। আমাকে সে বলল, আশরাফ বেশ কয়েকবার প্রস্রাব করে ফেলেছে এবং এখন আর সে কোন কথায় বলছে না। আমি আশরাফকে ডাকলাম, সে শুধু আমার দিকে তাকাল কিন্তু কোন কথা বলল না। বুঝতে পারলাম সে ভয়ে আড়ষ্ঠ হয়ে গেছে। মঞ্জুকে বললাম, আমাদের উচিৎ ওর কানে কানে বলা যে মিলিটারিরা চলে গেছে, এবং প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট বলার পর সে বিড় বিড় করে কি যেন বলল। কিছুক্ষণ পর সে বলল, ‘প্লিজ, প্লিজ, আমাকে একা রেখে যেও না।’
আমি আশরাফকে বললাম, যাই ঘটুক না কেন আমরা তিনজন একত্রেই থাকব। যদি মরি তো একসাথেই মরব। আমার কথায় আস্তে আস্তে আশরাফ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসল। আমরা খুব খুধার্ত ও পিপাসার্ত ছিলাম। আমরা ছাতা পড়া পাউরুটি ও পানি খেলাম। তারপর আমরা ভাগাভাগি করলাম কে কিভাবে ভয়ঙ্কও রাতটি অতিবাহিত করেছি।
দুপুরের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম, মিলিটারিরা আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। আর কোন গোলাগুলির শব্দ নেই, নেই কোন যানবাহনের শব্দও। ক্যাম্পাসের চারিদিকে শুধু শ্মশানের নীরবতা। ভেবে দেখলাম, পালানোর এই উপযুক্ত সময়। রেডিও চালু করে জানতে পারলাম ঢাকায় অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। আমরা অত কিছু না ভেবে পালানোর সিদ্ধান্ত নিলাম,
- যা হয় হবে, যদি কারফিউ ভাঙ্গার অপরাধে রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয় তবুও। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আজিমপুরে মনজুদের সরকারী বাসভবনে আশ্রয় নেয়ার। আশরাফ আর মঞ্জু আজিমপুরের কোয়াটারে থাকত। আমি হামাগুড়ি দিয়ে আমার রুমে গেলাম এবং নিজের জুতা আর রেডিওটা হাতে নিলাম। তারপর আমরা যতটা সম্ভব নিজেদেরকে আড়াল করে সিড়ি বেয়ে নামলাম। নিচে নেমে দেখলাম ফটকে তালা লাগান। দারোয়ান দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। পরে বুঝতে পারলাম সে আসলে আমাদের বাঁচানোর জন্যই এটা করেছে।
হতাশ হয়ে দোতলায় আমাদের রুমে ফিরে আসলাম, সিদ্ধান্ত নিলাম, একতলার বেলকনি থেকে ঝাঁপ দেয়ার। প্রথমে ভেবেছিলাম, রেডিওটা রেখে যাব, পরে ভেবে দেখলাম আশে পাশে কি হচ্ছে সেটা জানার এটাই এখন একমাত্র উপায়। আমরা তিনজন প্লান অনুযায়ী বাগানে ঝাঁপ দিলাম। ভাগ্য সুপ্রসন্ন আমাদের কারও কোন চোট লাগল না।
এরপর আমরা তিনজন তিন দিকে চলে গেলাম। আমি হাঁটতে হাঁটতে শহীদ মিনারে গেলাম। ওখানে শতশত লাশ পড়ে আছে। সে এক বীভৎস দৃশ্য।
এরপরে আমার মা, বাবা, ভাই বোনদের কে খুঁজে বের করার উদ্যেশে হাঁটা শুরু করলাম।
অবশেষে হাঁটতে হাটতে ফার্মগেইট পেরিয়ে এক জাগায় আমাদের আশ্চর্যজনক ভাবে মিলন হলো,যা ছিল এক অভূতপুর্ণ দৃশ্য। কল্পনা করিনি মা, বাবা, ভাই বোনদের কে এমন করে ফিরে পাবো।
পরবর্তিকালে বড় ভাইয়ের ডাইরির প্রতিটা লেখা আমার চোখে যেন স্বর্ণের মতন জ্বলজ্বল করে।
(ফানুস)
(আফরোজা আলম)