
বহুদিন আগে, আনন্দবাজার পত্রিকার উত্তর সম্পাদকীয় বিভাগে কবীর সুমন একটি সিনেমায় পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে গানটির শুরুতে একটি হু লা লা ব্যবহার নিয়ে লিখেছিলেন, একজন সঙ্গীত পরিচালকের উদ্দেশে - হাওয়া টা পাগল, আপনি বা আমি পাগল নই। এবং আরো অনেক কিছু।
আমি নিশ্চই একা নই। অনেকেই ভাবছেন, কেনো এরম ভাবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন অঞ্জনবাবু। উনি তো অঞ্জন চৌধুরী নন। OTT র সুবিধা হলো যে সবাই দেখবে। আজ না হয় কাল দেখবে। পছন্দ না হলেও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে দেখবে। লোকের সাথে কথা বলতে গিয়ে মুখেন মারিতং জগৎ করতে গেলেও দেখবে। চানাচুরের মত। সকাল বিকেল এক গরস করে না হলে চলে না।
তাই যদি হয়, তাহলে পয়সা তো আপনি পাবেন। হয় একবারে নাহয় বারেবারে। তাহলে দুটো এমন সিনেমা বানাতে কি হয় আপনাদের, যে সিনেমা দেখে গর্ব করে বলা যায়, আমি এনাদের সামনে থেকে দেখেছি। বাঙালি এমনি এমনি সত্যজিৎ রায় বা ঋত্বিক ঘটক বা মৃণাল সেন বা ঋতুপর্ণ ঘোষ কে নিয়ে মাতামাতি করে না। এমনটাও শুধু নয় যে এনাদের সিনেমা লোকে দেখা শুরু করেছে এনারা চলে যাওয়ার পর। যদিও সেই গ্যারেন্টি টুকু ও নেই আপনাদের ক্ষেত্রে।
একটা গোটা ভাষিক অঞ্চলের একটি প্রকাশমাধ্যমের একটা কাল আপনারা বসে বসে চিবিয়ে চিবিয়ে ছিবড়ে বানিয়ে ফেলেছেন, ফেলছেন।
কেনো বারবার ভালো সিনেমার জন্য বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে? পারবেন, একটা কমলা রকেট বানাতে? বা কেরালার দিকে? একটা কর্নান? বা মুম্বাইয়ের দিকে? পারবেন, বনফুলের একটি গল্পের ব্যবহারে আ ডেথ ইন দা গঞ্জ বানাতে? কেনো বারবার বিদেশের সিনেমার কাছে পৌঁছতে হবে, টরেন্ট নদী এবং সাবটাইটেল সমুদ্র পার করে? একটু আত্মার শান্তি পাবো না, যদি না তা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মাধ্যমে হয়? সিনেমাটা বানান কাদের জন্য? শুধুই পৃষ্টপোষক? তারপর আপনাদের লজ্জা করে না, মধ্যমেধা নিয়ে কথা বলতে? চেষ্টা করেছেন, একটি রাসমন তৈরি করার? লেগে থেকেছেন, না খেয়ে, ঘাম ফেলে ক্যামেরার সামনে বসে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন একটা ফ্রেম, একটা আলো, একটা এক্সপ্রেশনের জন্য? বাজেট তো কম নয় আপনাদের? প্রোডিউসার ও পেয়ে যান চট করে। বিখ্যাত নাম থাকলে টাকা আসে। প্লট যদি মশলাদার না হয় পয়সা আসে না।
লজ্জা করে না আপনাদের? লোকে রাস্তায় না খেতে পেয়ে মরছে, এখনও। ওনাদের তো সিনেমা দেখে পেট চলবে না, বলুন। তাহলে আপনাদের এত দাবি কিসের? সর্বজনীন তো হতে পারবেন না।
মেইনস্ট্রিম কে ধরতেই না পেরে আপনারা ধেয়ে যান যার দিকে, সে কি শুধুই মেনস্ট্রিম, শুধুই নদীর মধ্যস্রোতের মারণ টান? নদীর পাড় নেই? ঘাট নেই? এলিয়ে পড়া বটের ডাল নেই? নেহাত নদী নিয়ে সিনেমা করতে পারতেন তো! একটি সম্পূর্ণ নান্দনিকতার অন্বেষণ কবে করবেন? আর কবে করবেন?
এর থেকে আপনার ইন্টারভিউ ভালো।
আপনার সব কথা মেনে নিয়েও বলছি, বাংলা সিনেমার বাজেট মোটেই বেশি নয়, এখন আবার 20 - 25 দিনের মধ্যে সিনেমা নামাতে হয়। আর ক্রু নিয়েও অনেক বিধি নিষেধ আছে।
অজুহাত বাদ দিয়েও বেশির ভাগই যে মধ্য মেধার সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মালিয়ালম সিনেমা সত্যি ই অনেক ভালো হয়।
আপনার বক্তব্য একদমই বুঝতে পারলাম না। আপনার আলোচিত প্রসঙ্গগুলি এই ভাবে বদলেছে
কবির সুমন --> ott ( সেটা কি? ) --> ভালো সিনেমা হচ্ছে না --> লোকে না খেতে পেয়ে মরছে --> "মেন্সট্রিমের সন্ধান"
এদের যোগসূত্রের বিন্দুবিসর্গও বুঝতে পারলাম না।
Shomita Banerjee | ১৬ আগস্ট ২০২১ ০৮:০১496815কবির সুমন এর বক্তব্য আর OTT এই দুই এর মানে ঠিক বোধগম্য হল না৷ তবে বাংলা সিনেমা যতটুকু বুঝি মনে হয় পরিচালকের ওপর নির্ভর করে৷ পরিচালক দর্শকের কথা ভেবে সিনেমা বানান৷ এবার যে পরিচালক যে দর্শকের কথা ভাবেন তিনি সেই ধরনের সিনেমা বানান৷ কিছু ক্ষেত্রে আমরা যাকে নিন্মমানে সিনেমা বলে থাকি গ্রামান্চলে মানুষ কিন্তু তার মধ্যে নিজেকে খুঁজতে চেষ্টা করে, স্বপ্ন দেখে৷ তাই বলা যায় সিনেমার সবটা ই নির্ভর করে পরিচালকের টার্গেট গ্রুপের ওপর৷