
এক নিবিড় রাতে আকাশের বুক থেকে চুরি হয়ে গেল অহংকারী চাঁদ। মুহূর্তেই অন্ধকারে ঢেকে গেল সমগ্র পৃথিবী। মৌ মৌ করে রটিয়ে গেল খবরটা। টিভির পর্দা থেকে ফেসবুকের পাতা হৈহৈ পড়ে গেল। যথারীতি সরকারি দল দোষ চাপিয়ে দিল বিরোধী দলের উপর। বিরোধী দল ফুঁসে উঠে বলল, সরকারের পদত্যাগ চাই। রাজপথে নামলো একদল মানুষ। উচ্ছৃঙ্খল হল শহর, উত্তাল রাষ্ট্র, বিশৃঙ্খল দেশ। কেউ কেউ আর্তনাদে হায় হায় করে উঠলো। কেউ কেউ বিদ্রুপ করে বলল, ঠিক হয়েছে, রোজ রাতে বেড়োয় কেন? এক পৌঢ়া নারী ব্যঙ্গ করে বলল, রূপের কি দেমাগ। যুবক আক্ষেপ করে বলল, ইশ, আমি যদি চুরি করতে পারতাম ঐ জৌলুস চাঁদটা। খেতে বসে মি: মুখার্জি গিন্নিকে বললেন, কে করলো বলতো কাজটা? গিন্নি ঝাঝিয়ে উঠলেন, আমি কি দেখেছি নাকি? মি: মুখার্জি আফসোস করলেন, আহা- অত সুন্দর চাঁদটা। গিন্নি মুখ ঝামটা দিয়ে বললেন, খাও তো। কোন আকাশের কোন চাঁদ, তার জন্য কত দরদ। কি বেহায়ারে বাবা, সারা রাত বাহিরে থাকে। অন্ধকারে কাদা ছোড়াছুড়ি হল খুব। সমস্ত দায় বর্তালো কবি সাহিত্যিকদের উপর। কবি সাহিত্যিকদের চাঁদের রূপের ওমন রগরগে বর্ণনা পড়েই হয়তো কোন দুর্বৃত্ত প্রলুব্ধ হয়েছে। জেরা করা হল সব প্রেমিকদের। কার্ফু জারি হল। তল্লাশি করা হল প্রত্যেকটি বুক। কিন্তু কোথায় চাঁদ, কোথায় সে চোর? জানেনা কেউ।
তুমুল হট্রগোলের মধ্যে গ্রহণ থেকে বেরিয়ে এলো মায়াবীনি চাঁদ। বুকে জ্বলজ্বলে ক্ষতের দাগ। নিস্তব্দ হয়ে গেল প্রতিটি ঠোঁট। ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিলো অনেকেই। লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিলো সবাই। কলঙ্কিনী চাঁদের রূপের তেজ কিন্তু কমেনি, একটুও।
এখনো কবি সাহিত্যিকরা রগরগে বর্ণনা লেখে। প্রেমিকের দল প্রেয়সীর মুখ আঁকে। যুবকের মনে এখনো খায়েস, বাগে পেলেই চুরি করে নিয়ে যাবে।
নির্লজ্জ বেহায়া চাঁদটা এখনো রূপের জেল্লা ঢেলে দেয় পৃথিবীর গায়ে। শিহরীত হয় পৃথিবীর শরীর।
ফজিলাত | ২২ এপ্রিল ২০২১ ০৪:১৭105005খুব সুন্দর হয়েছে।
ভাষা ভাষা | ২২ এপ্রিল ২০২১ ১৯:২৩105018ভাবনাটা খুব সুন্দর ছিল। শুরু ও হয়েছিল বেশ । ভাবনাটা আরেকটু বিস্তার পেলে আরও ভাল খুলত মনে হয় । আরও লিখুন।
ধন্যবাদ ভাষা ভাষা এবং ফজিলা, আপনাদের সুন্দর মন্তব্যের জন্য।