#সকালের_লড়াই_আর_চায়ের_কাপ
_________________
আমার প্রতিটা সকালই প্রানোজ্জল থাকে। সকালে উঠে চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে মেয়ের মুখটা দেখার পর মনে হয় পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর জিনিসটা দেখালাম বোধহয়।আর যদি আমার থাকাকালীন মেয়ে ঘুম থেকে উঠে যায় তো কথাই নেই।যতক্ষন থাকি আমার কোলে ঘুম জড়ানো চোখে মাথাটা গুঁজে থাকে। এই পাওয়াটা অনেক বড় আমার কাছে। ঠিক অমরত্ব পাওয়ার মতই।
যাক এবার আসল কথায় আসি।আজকেও যথারীতি সকালে উঠে চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে মেয়ের ঘরে গিয়ে ওর মুখটা দেখে এসে চেয়ারে বসে চায়ে চুমুক দিলাম।দেখলাম “মন” একবার নক করল হাসিমুখে ।সকালের এই ঘুম থেকে ওঠা আর অফিসের জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর মধ্যেকার সময়টা বড় অদ্ভুদ আমার কাছে। প্রতিদিন মন বলে আজ অফিস যাসনা? আচ্ছা মাথার মধ্যে যে শব্দ গুলো কিলবিল করছে তাদের ল্যাপটপের ওয়ার্ডে ফেলে একটা গল্প তৈরির চেষ্টা করনা আজ!কেবলই আজকের দিনটা।কাল থেকে আবার তো সেই একই ঢোল- কাঁসি বাজাতে হবে অফিসে গিয়ে। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে মগজ আওয়াজ দেয়। “এই শুনছিস?”চোখের মনিদুটো মাথার দিকে হালকা করে তুলে অবসন্ন মুখে বলি
“ শুনছি।“
তিনি বলেন “ তোর একটা পরিবার আছে।তুই বিবাহিত।তোর একটা মেয়ে আছে। অফিসে না গেলে, কাজ না করলে খাবি কি?মনের কথা শুনিস না। ও বড় বেয়াদপ, বেহিসেবি,ওর মধ্যে কোন ম্যাচুরিটি নেই। অফিস চলে যা। শুধু লিখলে নিজের খাওয়া জোগাড় হবেনা।ওঁদের দেখবি কি করে। লোকে কুঁড়ে বলবে। বলবে ঘরে বসে বসে খায় ছেলেটা।“
সেই শুনে আবার প্রতিদিনকার মত চা’টা এক ঢোকে শেষ করে ছুটোছুটি শুরু করি। আমার এই সকালের মন-মগজের লড়াইতে প্রতিদিন মগজ জিতে যায়। মন মনমরা হয়ে শুধু আমার দিকে দেখে। আমি তাকে কোন উত্তর দিতে পারিনা। কারণ “আমি সন্তান, আমি স্বামী, আমি বাবা।আমার ইচ্ছে থাকতে নেই। আর বেহিসেবি মনের কথা শুনতে নেই। কারণ আমি পুরুষ।“
আর সব থেকে অসহায় হল আমার “মন”।প্রতিদিন আমার থেকে তার কথা না মানার দুঃখ পেয়েও আমাকে প্রতিদিন একবার করে সে বলে
“ কিরে লিখবি না?”
আমি আবার তাকে “না” করি সে আবার বলে, বারবার বলে।
মনের জন্যেই তো লেখা। বাকি টা উপরি পাওনা।