জাগ্রত শাহিন বাগ : ফরিদা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : NRC/CAA | ০৫ জানুয়ারি ২০২০ | ২৫৬০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
ফিরোজ - দেখ, তোমায় তো বললাম জামিয়া আর 'জেএনইউ' এর ছাত্রছাত্রীরা শুরু করেছিল অবরোধের তা ক্রমে মানুষের প্রতিরোধে পৌঁছেছে। এর বেশিরভাগটাই সামলাচ্ছেন মহিলারা। আট থেকে আশি, এমনকি অন্তসত্ত্বা মহিলারাও রয়েছেন এই দলে। পালা করে তারা আসছেন। বাড়ির কাজ সামলে। পুরুষেরাও আছেন, তবে তাদের ভিড় বেশি সন্ধ্যার পর। আর এই জমায়েতে যে শুধু মুসলমানরাই রয়েছেন তা কিন্তু নয়। এতে অনেক হিন্দু শিখ এরাও রয়েছেন একসঙ্গে জোট বেঁধে।
জনাকয়েক অর্ধচেনা : ফরিদা
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ২৭ অক্টোবর ২০২০ | ৩১৫৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
কয়েক বছর পরের পুজোয় সাইকেলে এক ভোরবেলাতেই বেরিয়ে গেছি। অর্ধচেনা আবাসন এক। সেখানকার ওই একটি মানুষ চিনি তখন। সে যদিও জানত না তা, সেই সুবাদে অর্ধচেনা। আবাসনের ছোট পুজো, ইতস্তত শূন্য চেয়ার চক্রাকারে শিশির মেখে আড্ডা মারে। এক কোণে এক টেবিল ফ্যানের সামনে রাখা ঢাকের পাশেই কাঁথায় মোড়া ঢাকি কাঁসি ঘুমিয়ে কাদা। আলো ফুটেছে, গান ছিল কি? হবে হয়ত। মূর্তি ছিল একচালাতেই। আশে পাশে কিছু জানলার একটা বোধ সেই মানুষের। কিছুক্ষণই অনন্তময় শিরশিরানি শরীর জুড়ে। কোনও একটা জানলা ধারে একমনে এক শিউলি গাছটি বিমুর্ত এক আলপনা দেয় ঘাসের ওপর। কেউ না যেন দেখে আমায়, যদি বা কেউ শুধোয় কিছু? গলা শুকনো, বলব না হয় তেষ্টা পেয়েছে। মিথ্যে হবে? শিরশিরানি।
আরও কয়েক বছর পরে একটা ঘরে ডুমের আলো, হলদে আলো। সেই প্রথমই একলা শোনা গানের কথায় শিরশিরানি। গানের সুরে গায়কীর এক মায়ার টানে শিরশিরানি। কিছু পরে প্যান্ডেলে এক জনপ্রিয় হিন্দি গানের কথার সঙ্গে অনুরণণ - বেদম ঝটকা। সংজ্ঞা হারায় - শিরশিরানি।
এই এখনও আবহাওয়া যেমন করে হালকা হ'ল হঠাৎ করে, ভোরের দিকে পাতলা গোছের চাদর লাগে। অনেক দূরের থেকে আসা ভেসে আসা গানের লাইন, ঢাকের শব্দ, ভিড়ের গন্ধ সেন্ট জিলিপি সঙ্গে মিশেল এগরোল চাউ শিরশিরানি নৌকা করে আসতে থাকে সুদূর থেকে। একে একে পা রাখছেন এক এক বয়স, এক এক মানুষ। কী আনন্দ।
কুমু দি… : ফরিদা
বুলবুলভাজা | পড়াবই : মনে রবে | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২২৩৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
মনে হয়, আন্তরিকতা একটা চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য। এ ঠিক অভ্যাসসাধ্য নয়, বরং জন্মসূত্রে অর্জিত। সেই আন্তরিকতার সোনার কাঠির যাদু-স্পর্শ যেখানে যেখানে ছোঁয়, তারা সব জ্যান্ত হয়ে ওঠে। ভালো লেখা থেকে মহৎ সাহিত্যে উত্তরণের হয়ত একটা ধাপ এটা। আন্তরিকতাটুকু তার কমণ্ডলু থেকে মন্ত্রপূত জল ঢেলে দিল তার লেখার খসড়া খাতায় – আর তাতেই সে লেখার ভিতরের স্কুল ঘরের ভিত খোঁড়া হ’ল, গাঁথনি হ’ল সিমেন্টের, ছাত ঢালাই, দেওয়ালের ইট, প্লাস্টার, দরজা-জানলা স্থাপন, চুনকাম, জানলার বাইরের মাঠ, তাতে মাঝখানের নিমগাছ – স-ও-ব। অন্য দিকে, সেই স্কুলে পড়া সব ক্লাসের সব সব ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, স্কুলের অন্যান্য কর্মচারী, মায় হজমি-ওয়ালা। স্কুলে পৌঁছনোর রাস্তা, স্কুল যাওয়ার বাস, বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টর – সব সব কিছু জ্যান্ত হওয়ার পর, তবে সেই স্কুলের অনুষ্ঠানে একটি রিহার্সালের দিন আসবে। আমরা গোগ্রাসে পড়তে পড়তে যাতে হারিয়ে যেতে পারি, এত স্পষ্ট যে ছুঁয়ে দেখতে পারি সেই স্কুলের দেওয়াল। আর সেই একটা ঘর থেকে ভেসে আসা আলাদা আলাদা অনুষ্ঠানের রিহার্সালের শব্দ। আর এমনই এক রিহার্সালে হঠাৎ চলে আসেন ভুলো-দিদিমণি চিত্রলেখাদি - আমরা প্রতিটি পাঠক নিজ নিজ ভাবে অনায়াসে প্রবেশ করি “একটি ত্রেতাযুগের ইশকুলের গল্প” তে। অবাধ। অনায়াস।
অ্যাক্রস্টিক দড়াবাজি : একক, ফরিদা, টিম, হুতো
বুলবুলভাজা | কাব্য | ২২ অক্টোবর ২০২১ | ২৯৯৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
অ্যাক্রস্টিকের সঙ্গে অ্যাক্রোব্যাটের শব্দগত মিল দেখে অভিধান খোলা গেল। তাতে অ্যাক্রোব্যাটের মানে লেখা আছে মল্ল, মত পরিবর্তনকারী, দড়াবাজিকর, ব্যায়ামবিদ, ঘনঘন দলপরিবর্তনকারী, রজ্জুনর্তক, ব্যায়ামকুশলী। শব্দের মিলটা কিছু না, তবে অ্যাক্রস্টিক লেখার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ, দড়াবাজি, রজ্জুনর্তন, ব্যায়াম - এইসবের অল্প মিল আছে।
সমবেতভাবে মনে হল, পুজোর ফুর্তি, হাঁটাহাঁটি, জুতোয় ফোস্কা, বাঁকা এয়ারগানে বেলুন - এসব তো সুদূর, শব্দ, ছন্দ নিয়ে একটু রজ্জুনর্তনই না হয় হোক। ভাবের ঘরে চুরি হলে কী, আমাদের ভঙ্গীও কম নয়। পাঠক যদি আমোদ পান তাহলেই ধন্য।
লেখা-সাক্ষাৎ : ফরিদা
বুলবুলভাজা | কাব্য | ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ৬১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আরও কথা বল বরং, আরও দৃশ্য তৈরি হোক, মুহূর্তের গর্ভে সারি সারি বিন্দু বিন্দু মুহূর্তের অণু-পরমাণুগুলি। বিশ্বাস করো, এখনও জমাই আমি পাগলের মতো তোমার সঙ্গে কাটানো সময়গুলি। প্রতিটি বাক্য, তার মধ্যের আলাদা আলাদা শব্দরা, তার উচ্চারণ, তখন কী বৃষ্টি হচ্ছিল না কি ফুরফুরে হাওয়া, কেমন ছিল এই কালভার্টের পাশে অল্প ঘাসগুলি, ইটভাটি থেকে ধোঁয়া উড়ছিল নাকি তখন, ফড়িং উড়ছিল কি না। জানো মস্ত এক রাজ্য বানিয়েছি অন্দরে। এইসব মুহূর্ত নিয়ে। তুমি শহরে ফিরলে আমিও টুপ করে ওখানে বেড়াতে চলে যাই। এক একটা দেখা হওয়ার দিনের এক একটা গুমটি দোকানঘরের মতো সেই চুরানব্বই সালের এগারোই নভেম্বর থেকে পর পর সাজানো। ঈশ, যদি তোমাকে দেখানো যেত!