গো গোয়া : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ জুন ২০১১ | ১২২৩ বার পঠিত
"গো গোয়া'। গোয়া পর্যটনের বিজ্ঞাপন। প্রায় প্রতিটি রাজ্য, বিশেষ করে যারা পর্যটনকে ভালোরকম অর্থকরী শিল্প হিসেবে দেখছে, এই ক্যাচ ফ্রেসগুলি নিয়ে আসে। "ঈশ্বরের দেশ', "ভারতবর্ষের হৃদয়'...।
আমাদের "গো গোয়া' স্থির হল অক্টোবরের শেষে। এই সময় কেরালায় দ্বিতীয় বর্ষাকাল। অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর। বিকেল থেকে মেঘ করে আসে, সারা রাত্তির বৃষ্টি। সকাল বেলায় নীলকান্তমণি আলোয় চারিদিক ঝকমক করে। পাঞ্জিম-এও দেখলাম মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের থাকার আস্তানা,শহরের ল্যাটিন পুরোনো হেরিটেজ অঞ্চল ফন্টেইনাস -এ। "পাঞ্জিম ইন'। বেশী পুরোনো নয়, উনিশ শতকে বানানো। রাস্তার দিকে রট আয়রনের "বালকাও'। ঝুল বারান্দা। ভেতরের ঘর,সিঁড়ি , দালানের পাষে মস্ত খাবার জায়গা কলোনিয়াল আসবাব, ছবি,আয়নায় সাজানো। সেরামিকের নীল-সবুজ টালি বসানো ফোর-পোস্টার বেড। ফন্টেইনাসে এই রকমই সব বাড়ী। সদর দরজার দেওয়ালে লাগানো নীল-সাদা হাতে আঁকা আজুলেজো (Azulejo) টালি তে গৃহকর্তার নাম, বাড়ীর নম্বর। রাস্তায় একটু এগিয়ে আঠেরো শতকের সেন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ।
ভিতেবস্ক-এর ভবঘুরে : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১০ | ১১৬৯ বার পঠিত
প্যারিস তাঁর কাছে হয়ে যায় দ্বিতীয় ভিতেবস্ক, আইফেল টাওয়ারের মোটিফ আসে ছবির মধ্যে। ইয়োরোপের সামনে এসে দাঁড়ায় যুদ্ধ, আর রাশিয়ায় আসে বিপ্লব। পুরোনো ধাঁচ ভেঙ্গে যে নতুন দেশটির দরজা আস্তে আস্তে ইয়োরোপের সামনে খুলে যায়, সেখানে শিল্প ,চারুকলার কি ভূমিকা হবে? শাগাল এই অদ্ভুত,পালাবদলের দিনে হঠাৎ দেশের নবীন বলশেভিক সরকারের আমলা হয়ে ওঠেন, শিল্পকলা বিভাগের কোন একটা দায়িত্বে। কমরেড শাগাল নতুন বিপ্লবী সরকারের দেওয়া পদে সরকারী কর্মী হলেন। কিন্তু আর্টের নামে সোভিয়েত সরকারের প্রচেষ্টা শাগালের মনে হয় নিতান্ত অর্থহীন, শহরের পরে শহরে সিমেন্টে বানানো লেনিন আর মার্ক্সের মূর্তি বসে, প্রোলেতারিয়ান আর্টের ঢেউ অন্য আর্টের ভাবনায় নিষেধ জারি করে। মস্কোয় বসে হাঁপিয়ে ওঠেন শাগাল। কবিদের কর্মশালায় ভীষণ জোরে জোরে চেঁচান মায়াকোভস্কি,থুতু ফেলেন সভার মাঝখানেই। শাগাল ভাবেন কবি বিপ্লবী হলে কি এত চেঁচাতে হয়, থুতু ছেটাতে হয় একঘর মানুষের মধ্যে? সোভিয়েত সরকারি প্রোলেতারিয় শিল্পের খাঁচায় বন্দী হতে চান না শাগাল। খোঁজেন নিজস্ব শিল্পীর জীবন, যেখানে নিজের ভাবনার আকাশে তিনি উড়ন্ত গরুও আঁকতে পারবেন, কারুর কাছে কৈফিয়ৎ দিতে হবে না, "এটা কি , কমরেড শাগাল?' আবার রাশিয়া ছাড়তে চলেন মার্ক শাগাল।
একা দাঁড়ানো মেয়ের বই : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বই | ১৭ জুন ২০০৭ | ৮৬০ বার পঠিত
২০০১ এর জানুয়ারীতে এক আমেরিকান সাংবাদিক হিসেবে এলাহাবাদের মহাকুম্ভে আসেন আসরা। দলাই লামা কে দ্যাখেন সে-খানেই , অযুত তীর্থযাত্রীর সঙ্গে এক মন্ত্রোচ্চারণে অংশ নিতে। বৌদ্ধ ধর্মগুরুর হিন্দু মন্ত্রোচ্চারণের তীব্র স্পিরিচ্যুয়াল অভিঘাতে, ভারতে জন্ম হওয়া ( জন্ম : ১৯৬৫ ) এই মুসলিম মেয়েটির ভিতর-আত্মা ছাপিয়ে ওঠে একটি প্রবল স্রোত--- তাকেও হাঁটতে হবে একটি তীর্থযাত্রায়, অমন-ই অযুত মানুষের প্রার্থনার মাঝখানে...
সে ঠিক করে ফেলে, সে হজ-যাত্রিণী হবে।
ওলন্দাজ জাদুকর আর সেই মেয়েটি : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বই | ২৯ জুলাই ২০০৭ | ১০৩০ বার পঠিত
গ্রিয়েট নামের মেয়েটি আনাজপাতি কেটে গুছিয়ে রাখছিলো। পেঁয়াজ, লাল-বাঁধাকপি, লীক, গাজর, শালগম। সব্জির টুকরো রঙ মিলিয়ে চক্রাকারে সাজিয়ে রাখে সে। শালগম আর পেঁয়াজের মৃদু সাদার পাশে , লাল-বাঁধাকপির সান্দ্র বেগুনি। চক্রের মাঝখানে চাপা আগুন রঙের গাজরের চাকতি।
বৃত্তবাসীদের ক্ষতচিহ্ন, স্বপ্নভাষ্য : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বই | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ | ১১১৩ বার পঠিত
এই বৃত্তটির নাম মাহে। ক্ষুদ্রাকৃতি বৃত্ত। তার ব্যাস মাত্র নয় কিলোমিটার। বৃত্তটি একটি জনপদ। ভিন্নতর জনপদ। কারণ, বৃত্তের বাইরে যে দেশটি, তার শাসক ইংরেজ। বৃত্তবাসীদের শাসক ফরাসি। পশ্চিমে আরবসাগরের তীরভূমি, পূর্বে ছোটো ছোটো পাহাড়ের ভাঙ্গা আবছা রেখা, আর একটি নদী। নদীটি বৃত্তটির পরিধির গায়ে গা লাগিয়ে। যার জলদর্পণে নারকেলকুঞ্জের জমাট ছায়া ... নদীর নাম মাইয়াঢ়ি। নদীটির নামে মিশে গিয়ে বৃত্তটির নামও মাইয়াঢ়ি। ফরাসিরা যাকে বলে মাহে।
ওয়ারহলিয়ানার পনের মিনিট : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বই | ২৫ নভেম্বর ২০০৭ | ১২২২ বার পঠিত
"In future, everybody would be famous for fifteen minutes."
--- Andy Warhol, 1968.
উর্দ্ধলিখিত ভবিষ্যবাণীটির প্রবক্তা, পৃথিবীর প্রথম পপ-চিত্রকর অ্যাণ্ডি ওয়ারহলের খ্যাতি পনের মিনিটের অনেক বেশী সময় স্থায়ী হয়েছে।
ওয়ারহলিয়ানা বা ওয়ারহল-তত্ত্বের ব্যবহার/ আলোচনা/ গবেষণার চলোর্মি তাঁর জীবিতকালে তো বটেই, ১৯৮৭-এ মৃত্যুর কুড়ি বছর পরেও প্রবহমান। বই, সিনেমা, শহুরে জনতার জামাকাপড়, পত্রপত্রিকার নিবন্ধে প্রায়ই দেখা যায় ওয়ারহলকে। যাঁর ছবির আইকনগুলি এতদিন এইভাবে দেখার পর বেশ চেনা আমাদের।
লা লোবা : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : নাটক | ০৫ অক্টোবর ২০০৮ | ১১৫৯ বার পঠিত
মেহিকো দেশে যে কল্পগাথাটি প্রচলিত আছে :
তখন কেহই ছিলো না ........
সন্ধ্যামুখীন সীসারঙের আকাশ আর বুনো ঘাসঝোপ ঘিরে না জোনাকিপোকা, না ঝিঁঝিপোকা। রোগা নদীটির নাবাল জমিতে নেই বুনো কুকুর-পরিবার ও তাদের তন্ময় হলুদ চোখ, ক্যাকটাস-ঝোপের গর্তে নেই সাবলীল সাপ। নিস্পন্দ অন্ধকারের দিকে পাশ ফিরে তাকানো বৃক্ষশাখায় নেই একটিও ঘুমন্ত কাক। এমনই প্রাণীশূন্য সন্ধ্যাবাতাস স্পর্শ করে সামনে এসে দাঁড়ায় এক জরতী স্ত্রী-মূর্তি। কোঁচড় হাতড়ে সে বার করে কয়েকটি অস্থি-অবশেষ। সেগুলো সে মাটিতে সাজায়,মন্ত্র পড়ে, চিত্ত অভিনিবেশ করে সৃজন প্রক্রিয়ায়।
রাজা-রাণী'র গল্প : প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৬ | ১১০০ বার পঠিত
রূপকথায় রাজা-রাণী'র গল্প থাকে। অবধারিত না হলেও, মাঝে মাঝে। রাখাল ছেলে,গরীব ব্রাক্ষ্মণ,রাজবাড়ীর দাসী,মানুষের ভাষায় কথা-বলা পাখি,তিন প্রান্তরের কাছ-ঘেঁষা মাঠ---এরাও রূপকথার নানা চরিত্র হয়। তবে রাজা-রাণী থাকবেই।