এই ঘুম শারীরবৃত্তীয় : দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৬০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
এগারোটার সময় মৌলিকের অফিসের শেষ ডিনার পাওয়া যায়। তারপর শুধু এককোণে কফি, কেক, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির কাউন্টারে একজন বসে বাকি রাত ঝিমোয় আর খুচরো প্যাকেটের চানাচুর, মধু মেশানো ওট বার উগরে দেওয়া ভেন্ডিং যন্ত্রগুলোতে সারারাত কাঁচের ভেতর নীল আলো জ্বলে থাকে। কিউ আর স্ক্যান করে টাকা দিলেই প্যাঁচানো স্প্রিং ধাক্কা মেরে কাঙ্খিত প্যাকেটকে নীচে ফেলে দেয়।
রাতে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয় অথচ রাতে একজন থাকলে ভালো হয়, সমুদ্রের ওপার থেকে বারো ঘণ্টা এগিয়ে থাকা দেশ থেকে ভেসে আসা এমনই অনুরোধ। এই শিফটে কেউ রাজি হলে প্রতি রাতে অতিরিক্ত টাকা, বিনামূল্যে খাবার এবং যাওয়া আসার গাড়ি পাওয়া যায়। রাত দশটা থেকে ভোর ছটা এই শিফটটাকে দিনের বেলা অফিসের বাকি সবাই বলে গোরস্থানের সময়।
নিজস্ব আলোছায়ার সংকলন : দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | পড়াবই : প্রথম পাঠ | ২৫ আগস্ট ২০২৪ | ১৩১০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
জোহানেস ভার্মিয়েরের আঁকা, হ্যান্স এন্ডারসনের ছোট জলকন্যার গল্প, নরওয়ের দেবতা জেন্ডার ফ্লুইড লোকি, একানড়ে সব মিলেমিশে যায় এই দুনিয়ায়। সেখানে আলোর অন্যরকম রং। কথা বলা খরগোশ, ভেড়ার ছানা, জ্ঞানের পেঁচা লেখককে সেই দুনিয়ার দরজার সন্ধান দেয়। সেখানে লেখক 'রাইড দ্য ওয়াইল্ড হর্স' ধ্যানের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন যেখানে প্রতিটি অনুভূতি একেকটা উদ্দাম বুনো ঘোড়ার মত। অভিযোগ একটিই, বইটি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়।
গদ্যের আয়নাজীবন ও রবিশংকর বল : দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | পড়াবই : মনে রবে | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১০৮৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
বাংলা গদ্যে যে ধারায় জীবনানন্দ, উদয়ন ঘোষ, সন্দীপন, অরূপরতন বসুরা লিখে গেছেন, রবিশংকর বলও সেই ধারাতেই। অর্থাৎ নিজের জীবনকে আয়নায় দেখে নিস্পৃহভাবে লিখে রাখা আর তাকে কখনো গল্প কখনো উপন্যাস বলে ছাপিয়ে দেওয়া। জাগরণের দিনলিপির পাশাপাশি বাকিদের থেকে তিনি সফলভাবে স্বপ্ন কাহিনিগুলিও লিখে রাখতে পেরেছেন এবং সেখানেই তার স্বতন্ত্রতা।
শূন্যের নিচে দৃশ্যমানতা : দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | ইদবোশেখি | ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ৭৭৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
তিন বছর বাড়ি থেকে কাজ করার পর হঠাৎ অফিস সবাইকে ডেকে পাঠিয়েছে। সপ্তাহে দু দিন। কিন্তু লোকজনের গড়িমসি। অভ্যাস হয়ে গেছিল। ঢিকিয়ে ঢিকিয়ে এতদিনে তাও তারা দুদিন করে আসতে শুরু করেছে। সামনের বছর থেকে শোনা যাচ্ছে সপ্তাহে তিনদিন আসতে হবে।
অফিসে আরো অনেককিছু এতদিনে বদলে গেছে। সেখানে ঢোকার মুখে একটা ক্যামেরা। তার পাশে একটি পাতলা টিভি স্ক্রিনে যদি মাথার চারপাশে সবুজ একটা বর্গক্ষেত্র ফুটে ওঠে, অফিসে ঢোকা যাবে। লাল বর্গক্ষেত্র ফুটে ওঠা মানে শরীর ঠিক নেই, জ্বর, সেদিন বাড়ি ফিরে যাওয়া দরকার।
ভেতরে দেওয়ালে দেওয়ালে স্যানিটাইজার ডিস্পেন্সার। চ্যাটচ্যাটে আঠালো তরলে জমে আছে বুদ্বুদ। হাত নিচে নিয়ে গেলেই একদলা ছ্যাত করে হাতে পড়ে। ভুল করে সেই সান্দ্র আঠায় ধোয়া হাতের আঙ্গুল ঠোঁটে বা জিভে লেগে গেলে তেতোভাব।