আমরা সকলেই প্রায় নিশ্চিত। পশ্চিমবঙ্গে ছেলেমেয়েদের আর চাকরি নেই। শুধুই যে রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিরোধীতার পরিসরেই এই বিষয়টি বারংবার উঠে আসছে, তাই নয়। মিডিয়া জুড়ে সকলেই এই একটি বিষয়ে একমত। কারণ পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিল্প তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কলকারখানায় তালাচাবি পড়ে গিয়েছে। বাঙালির ছেলেমেয়েদের তাই চাকরি পেতে দিল্লী বোম্বে মাদ্রাজ ব্যাঙ্গালোরে ছুটতে হচ্ছে। আমাদের নিজেদের ঘরে ঘরেই তো এই ছবি। ফলে এই বিষয়ে আর যাই হোক বিতর্ক নেই যে, পশ্চিমবঙ্গে ছেলেমেয়েদের চাকরি নেই। আর থাকবেই বা কি করে? শুধুই তো শিল্প বাণিজ্যে পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে রয়েছে, তাই নয়। রাজ্যসরকারের, কেন্দ্র সরকারের দপ্তরগুলিতেও যে নিয়মিত ভাবে যথেষ্ট সংখ্যক চাকরির দরজা খুলে যাচ্ছে, তাও ... ...
আপাতত ১৮০৬ জন! দাগী চোর ডাকাত রাজনীতিবিদ নয়! দাগী শিক্ষক শিক্ষিকা। তাহলে ব্রাত্যের কথাই মিলে গেল! যেমন কথা তেমন কাজ। শিক্ষা কেলেঙ্কারির অনেক আগেই ব্রাত্যই প্রথম বলেছিলেন। তৃণমূলের ছেলেমেয়েরাই চাকরি পাবে। তবে এও বলেছিলেন, কবে পাবে কিভাবে পাবে কোথায় পাবে সে কথা তিনি বলবেন না। এখন যদিও দিনের আলোর মতো সুস্পষ্ট। কবে পেয়েছিল। কিভাবে পেয়েছিল। কোথায় পেয়েছিল। যদিও মোট কতজন পেয়েছিল, সে কথা আজও জানায়নি ব্রাত্যের মন্ত্রীত্বের নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষাদপ্তর। কিন্তু যে কয়জনের নাম জানিয়েছে। তাতেই অনেকের আক্কেলগুড়ুম। এখনো যাঁরা মা মাটি মানুষের সততায় বিশ্বাসী। সম্পূর্ণ সাদা পাতা জমা দিয়ে টগবগিয়ে সরকারি চাকরিটা কেমন বাগিয়ে নিয়েছিল! বাগিয়ে নিয়ে মাসের পর মাস ... ...
শিক্ষিতই হোক আর অশিক্ষিত। মোটামুটি ভাবে বলা যায় বাঙালি মাত্রেই মনে করে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনই শিক্ষার প্রধান মাপকাঠি। এবং শিক্ষিতের সবচেয়ে বড়ো পরিচয়। এই মনে করার বিষয়ে আবার হিন্দু মুসলিমে অগাধ মিল। সেই অগাধের থেকে ‘অ’ টুকু বাদ দিয়ে ‘গাধ’ -র শেষে একটি আকার জুড়ে দিলেই বাঙালির দৃষ্টিতে ইংরেজি না জানা বাঙালির আসল পরিচয়। দেশ ভাগ হয়ে গেলে কি হবে। এই বিষয়ে দুই দেশের বাঙালিরই এক রা। ফলে কে আর বাঙালির সমাজে গাধা পরিচয়ে পরিচিত হতে চায়? ফলে কেউই যে ‘গাধা’ নয়। অন্তত পক্ষে সেইটুকু প্রমাণ করতেই বাঙালি শৈশবের একেবারে গোড়া থেকেই নিজের সন্তানকে ইংরেজি শেখানোর জন্য আদাজল খেয়ে ... ...
জনতা মানেই কি বেকুব? নাকি বেকুব মানেই জনতা? জনতারই করের টাকা। জনতার প্রয়োজনেই তৈরী। জনতাই তার মূল্য চোকাবে নতুন করে ভাড়া গুণে গুণে। আর জনপ্রতিনিধিরা, যারা কস্মিনকালেও নিজের পকেটের পয়সা ব্যায় করে মেট্রোরেলে চড়বে না। তাদের সামনে পিছনে সরকারি লালবাতি নীলবাতি গাড়ি। আর কম্যাণ্ডো বাহিনী। সেও জনতারই করের টাকায়। অথচ টিভি খুললেই দেখতে হচ্ছে মহানুভ সরকারের শ্রীমুখ। এই যেন জনসাধারণের জন্য তৈরী মেট্রোরেল আসলে রাজনৈতিক দলের বদান্যতার দান। সেই মেট্রোরেল করে দিয়ে জনতাকে কৃতার্থ করা হলো। তাই আজ মেট্রোরেলের উদ্বোধন হচ্ছে। সেও হচ্ছে সেই জনতার টাকা ভেঙ্গেই। এক উদ্বোধন সমারোহেই কয়েক কোটি কি কয়েকশো কোটি ব্যায়। তারপর এর পকেট ওর ... ...
‘যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই – প্রীতি নেই –করুণার আলোড়ন নেইপৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া’।আজ নয়। অনেক বছর আগেই কবি’র দৃষ্টিতে ধরা পড়ে গিয়েছিল গভীর এই সত্য। ভেবে দেখুন। ২০০২/২০০৩ সালের ভোটার লিস্টে যাঁদের নাম রয়েছে। তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি ফর্ম বিলি করে আসবেন। সেই ফর্ম যথাযথ ভাবে পূরণ করে নির্দিষ্ট এগারোটি সরকারি নথি’র ভিতরে যে’কোন একটি নথি সহ সেই ফর্ম আবার নির্বাচন কমিশনের প্রেরিত প্রতিনিধির হাতে তুলে দিতে হবে। না, সেখানেই গল্পের শেষ নয়। নির্বাচন কমিশনের সেই প্রতিনিধি যদি আপনাকে ‘রেকমেণ্ড’ করেন তবেই হয়তো নিশ্চিত ভাবে আপনার নাম রয়ে যাবে সরকারি ভোটার লিস্টে। আর তিনি ... ...
আর জি কর কাণ্ডে ন্যায় বিচার এখনো অধরা। ঘটনার পর বছর ঘুরে গেলেও। কেন্দ্র রাজ্য সমন্বয়ের একটা ছবি আবছাই হোক আর সুস্পষ্ট হোক, ধরা পড়ছে অনেকেরই কাছে। বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতেই কাঁদুক আর রাজপথ কাঁপিয়েই কাঁদুক। কাঁদতে তো হচ্ছেই। কারণ আসল খুনিরা আজও অধরা। তারা দিব্যি গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরকারি হাসপাতালের করিডোর থেকে বুথে বুথে ভোটার লাইনের নাগরিক পরিসরে। যাঁদের কথা ছিল যথাযোগ্য শাস্তির পরিসরে দিন কাটানোর। সেটি হয়নি। হওয়ার কথাও ছিল না। কারণ একটাই। গণতন্ত্রে গণের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি আসলেই সোনার পাথরবাটিতে কাঁঠালের আমসত্ত্ব খাওয়ার মতো বিষয় একটি। গণ এখানে ভোটার মাত্র। তার বেশি কিছু নয়। আর যদি ... ...
কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা দেখে শেখেন। কিছু আছেন, যাঁরা ঠেকে শেখেন। আর কিছু কিছু মানুষ কিন্তু ঠকে শেখেন। এখন কোন মানুষ, কে কিভাবে শিখবেন। সেটি অবশ্যই তাঁর বা তাঁদের ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। সেখানে বাইরে থেকে কারুর নাক গলানো শোভা পায় না। এখন প্রশ্ন একটাই। হঠাৎ এই দেখে শেখা, ঠেকে শেখা আর ঠকে শেখার প্রসঙ্গ উঠলো কেন। আজ থেকে আঠারো বছর আগে তৎকালীন বামফ্রন্টের আমলেও আমরা দেখেছিলাম রিজওয়ানুর রহমানের হত্যাকাণ্ডকে সরকারি পুলিশ কিভাবে আত্মহত্যার কাণ্ড বলে চালিয়ে দিয়েছিল। কিভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য, রিজওয়ানুরের হত্যাকারীর বিচার চেয়ে। সেদিন কিন্তু রাজ্যবাসী হত্যাকারীকে চিহ্নিত করতে পেরেছিল। কিন্তু তারপরেও তৎকালীন সরকার এবং সরকারি ... ...
তাহলে বিষয়টা ঠিক কি দাঁড়ালো? বাংলাদেশের ভাষা আর বাংলা নয়। বাংলাদেশী ভাষা। অর্থাৎ বাংলাদেশের ভাষায় কথা বললেই সে’ও বাংলাদেশী। একেবারে জলের মতো সহজ হিসাব। এখন দেখে নিন একবার, আপনিও কি আজ সকাল থেকে ঘরে বাইরে কোথাও ভুল করে বাংলাদেশের ভাষায় কথা বলে ফেলেছেন? মানে সেই যে ভাষায় আমাদের বিদ্যাসাগর বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ আর দ্বিতীয় ভাগ তুলে দিয়ে ছিলেন আমাদের হাতে। সেই যে ভাষায় আমাদের রবীন্দ্রনাথ সহজ পাঠে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন আমাদের শৈশবকাল। যে ভাষায় সাহিত্য কীর্তির জন্য বিশ্বকবির নোবেল পুরস্কার জুটে ছিল কোন একদিন। যে ভাষার জন্য বাহান্নোর ভাষা আন্দোলনের ভিতর দিয়ে এক সময়ে মুক্তিযুদ্ধের পথে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল একটি ... ...
আ মরি বাংলা সিরিয়াল। স্থান কলকাতা। কুশীলব দুই একজন বাদে সকলেই বাঙালি। ভাষা বাংলা। ব্যাস এইটুকুই বাঙালিত্ব। এরপর সবটাই প্রায় হিন্দুস্তানি সংস্কৃতির কপিপেস্ট। আ মরি বাংলা সিরিয়ালে প্রতিটি গল্পই প্রায় একটি পরিবারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে। যে পরিবার আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড়ো বড়ো শিল্প বাণিজ্যের সাথে যুক্ত থাকবে। এবং তাদের গৃহে গৃহে দেব দেবীরা প্রায় সকলেই হিন্দুস্তানি দেবদেবীদের ন্যায় দেখতে হবে। যার ভিতরে আবার শ্রীগণেশ এবং শ্রীহনুমান রামসীতার থেকে ভারে এবং বহরে মোটেই কম যাবেন না। এবং অধিকাংশ পুরানো হিন্দি সিরিয়ালের মতোই বাড়ির একটি বৌ যত রকমের নির্যাতনের শিকার হতে থাকবে। আর একটি বৌ হবে যত নষ্টের গোড়া। এবং বাড়ির ... ...
ভারতবর্ষের বাঙালি, সেই রামমোহনের যুগ থেকে আজকের দিনেও নিজের ধর্মে অবিচল। ভারতবর্ষে বাঙালির উপরে যাই ঘটে যাক না কেন। বাঙালি সবসময়ের জন্যেই ভারতীয়। অবশ্য বাংলাদেশী বাঙালিদের কথা বাদ দিলে। তাঁরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। তাঁদের কথাই আলাদা। আলদা বলেই আমাদের চোখে তাঁরা আজকে বাংলাদেশী। ঠিক আমাদের মতো বাঙালি নন। আর নন বলেই ভারতবর্ষের গোবলয়ে মুখে বাংলা বললেই বাংলাদেশী বলে দেগে দিলে আমাদের বুকে ততটাও ব্যথা লাগে না। আর লাগলেই বা কি? তারও মলম রয়েছে। আমাদের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের কেউ কেউ যখন বলে দিচ্ছেন গোবলয়ে বাঙালি ডাক্তার বাঙালি ইঞ্জিনিয়র বাঙালি শিক্ষক বাঙালি ছাত্র বাঙালি চাকুরিজীবীদেরকে তো আর বাংলাদেশী বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে না। দাগানো হচ্ছে ... ...