অদ্ভুত অন্ধকারে বসে আছি। আমার পাশে ডিলান। আমরা দুজনেই গাঢ় অতল অন্ধকারের দিকে চোখ রেখে নীরব হয়ে আছি অনেকক্ষণ! চির অস্থির কালপ্রবাহের ধারে স্ববিরোধী মানুষের উন্মুক্ত অঙ্গন! কোপাইয়ের ধার থেকে, কিংবা অন্ধকারের উৎস থেকে ঠিকরে পড়ছে কীর্তণ-শব্দ! আর্তি! আরাধনা! সঙ্গীত। হাজার বছর আগে এক নিগ্রো কৃষক আকাশের দিকে তাকিয়ে এলোমেলো কথা ছুঁড়ে দিয়েছিল। সঙ্গীত ভূমিষ্ঠ হয় সেইদিন! সেইদিনই সঙ্গীতের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাত্রা! নিরন্তর যাত্রা! ডিলান জানেন সঙ্গীতের সময় আত্মা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়! আজ রবি ঠাকুরকে খুব মনে পড়ছিল। এই ভয়ানক একাকীত্বে রবি ঠাকুরই জলসাঘরের ভৃত্য অনন্তর মতো দাঁড়িয়ে থাকেন হাতে বাতি নিয়ে। বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মজিছে, গানটা গুনগুন করতে করতে ... ...
তপন সিনহার গল্প হলেও সত্যি মনে আছে?ধনঞ্জয় চলে গেছিল। বলে গেছিল আর ওর ফিরে আসার দরকার পড়বে না। মধ্যবিত্ত কুয়াশা প্রাচীর ঠেলে একেবারে ভ্যানিশ হয়ে গেছিল! ঘরে ফিরে এসে আমরা দেখলাম জন্মান্তরের পাঁক,সেই একইরকমই আছে! একান্নবর্তীর জৌলুস ক্ষয় হচ্ছে, দেওয়ালে পিঁপড়ের মিছিল, পিছল উঠোন আর এন্ডলেস বিতন্ডা! টনসিল,বেকারত্ব, কুঁচকির ফোঁড়া,জলবসন্ত, হাঁপানি, অম্বল আরো কত মরবিড তুচ্ছতা! এভাবেই পালক গুলো উড়ে চলে গেল সপ্তসিন্ধুর দেশে! আমাদের সাদা কালো টেলিভিশন জুড়ে ধূসর মনস্তাপ!আকাশে হারিয়ে গেলেন কল্পনা চাওলা! গলার কাছে আটকে রইল খরখরে চিঠি! মৃণালের একদিন প্রতিদিন! ইনসিকিওর বাস্তু, ভ্রুকুটি, ভীতু ভালোবাসার গায়ে মর্গের সেলাই!মন থেকে মুখের দুরত্ব কত ! রাস্তায় নীতার চটিটা ছিঁড়ে গেছিল! ... ...
গাছটা আগের বছরেও ছিল। এখন নেই। ছায়া ছিল আগের বছর। এখন রোদ সোজা মাথার ওপরে। সেটা নিয়েই কথা হচ্ছিল চায়ের দোকানে। এখন গ্রীষ্ম। গাছটাকে সবার মনে পড়ছে। শোক নয়। বরং প্রয়োজনের স্মৃতি। গাছটায় অনেক পাখি থাকত। ওরাও আর নেই কিংবা আছে কোথাও। মরজগৎ য়ে দাঁড়িয়ে আছে গাছ, আছে অভিমানের ছায়া, হয়ত আছে আধো আধো নীড় গুলিও। একটা গাছের হারিয়ে যাওয়া কী এমন ব্যপার! সে চলে গিয়েছে তবুও যায়নি যেমন যায় না আসলে যে কেউ! ঠাকুমা শেষ বয়সে উন্মাদ হয়ে গেছিলেন। চিৎকার করে করে কাদের সব নাম ধরে ডাকতেন, আমরা কোনোদিন শুনিনি সেসব নাম। ঠাকুমার গাঁ ছিল বাংলাদেশে। হয়ত সেই মুছে ... ...
একটা চায়ের দোকান, প্রবীনের ভিড়! শুধুমাত্র একটা গল্পই তো! তারই গলিখুজিতে হন্যে হয়ে হয়ে, শব্দ কল্প দ্রুম!! মহানন্দার তীরটা ঘোলাটে ঠেকছে। চা ফুটছে এবং তার একটা অলস ঘ্রাণ আছে। জগাদা এসে বসে প্রায়ই! এসে বসা,খানিক গুজবস্নানে ধরা শুচি হয় কিনা জানিনা,তবে এইসময় গাঁজা ধরায় জগাদা। তারপর ডার্ক কথাবার্তা বলে। ডিমেনশিয়া নিয়ে ভাবছি। এ ভাবনার কারণ নেই! শুধু জানলার চৌকো খোপ দিয়ে পাশের বাড়ির ব্যালকনিতে এসে পড়া রোদ আর রোদের ওপর একটা চেয়ার, চেয়ারের ছায়া, গোটা একটা মানুষ,বৃদ্ধ! স্মৃতিভ্রষ্ট। চোখে পড়লে ডিমেনশিয়া নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করে। বৃদ্ধের নব্বই শতাংশ স্মৃতি বিলুপ্ত! বাকি দশের ওপর স্ক্রিবলিং করছে মহাকাল! অর্থাৎ, বিগত বিহানের কোনো ... ...
গতকাল রাত্তিরে নন্দিনী সুন্দরের লেখা দ্য বার্ণিং ফরেস্ট বইটি পড়ছিলাম। বাস্তারের সেই ভয়াবহ যুদ্ধ,নকশাল বনাম সরকারের। শয়ে শয়ে সাধারন মানুষের মৃত্যু, ঘরে ঢুকে মেয়েদের ধর্ষণ,আরো কত কী! ঘন জঙ্গল যেখানে আর্মি টেরিটরি। বছরে প্রতি চারজন আদিবাসীর একজনকে ডিসপ্লেস করে দেওয়া, গ্রাম ঘিরে রাখা গুন্ডাবাহিনী দিয়ে। নকশালের বউ সন্দেহে এক মহিলার স্তন কেটে দেওয়া ইত্যাদি। হঠাৎ মনে পড়ল ঋত্বিক ঘটকের ১০০ বছর চলছে। কী সমাপতন! ঋত্বিক ঘটক, যাকে সত্যিই ভালোবেসে ফেললে কপালে অশেষ দুঃখ! যাকে সত্যিই ভালোবেসে ফেললে আপনাকে এক অন্য অক্ষরেখা নির্বাচন করতেই হবে। পুড়তে পুড়তে পোড়ানো, ভুগতে ভুগতে ভোগানোর মতো সুইসাইডিয়াল! এদিকে নন্দিনী লিখছেন, "Either we should not suffer at ... ...