কবি আজাদের মন খারাপ। দুপুরে ফোনের পর্দায় খবরটা দেখার পর চোখের কোণ থেকে জল ছিঁটকে বেরিয়ে এসেসংবেদনশীল যন্ত্র ভিজিয়ে দিয়ে যায়। মূহুর্তের মধ্যে বুকের বাম পাশটায় ভূকম্পে নেপালে পরিণত হয়৷ আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ছাড়খার করে দেয় সমস্ত সম্ভাবনা। ঢাকাই সিনেমার জনৈক নায়িকা মা হতে চলেছেন। অথচ কবি আজাদ এসম্পর্কে অবগত নয়। দ্বিপ্রহরের আহার সেরেসবেমাত্র মোবাইলটা হাতে নিয়েছেন, এক ভক্তের বার্তা- 'আজাদ ভাই, নায়িকা তো মা হতে যাচ্ছে। আপনি কি হতে যাচ্ছেন?' ... ...
১. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে৷ আইন্সটাইন তখন আমেরিকায় আত্মগোপনে। মাঝমধ্যে হাওয়া খেতে সন্ধ্যে নামার আগে বের হন। একদিন হাওয়া খাওয়ার পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাড়ি ফেরার রাস্তা গুলিয়ে ফেললেন। একে তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, তার উপর শত্রুদের চোখ রাঙানিতে আমেরিকা এসে আত্মগোপনে আছেন। কে কখন দেখে ফেলবে তার ঠিক নেই। আইনস্টাইন পড়লেন মহাবিপদে৷ ফোন করলেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরিচালক বন্ধুকে। তবে ভালো খবর এই যে, বন্ধুর সহযোগিতায় সেদিনের মত বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন৷ গতবছরের কথা। আইনস্টাইনের হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটা টুকলি করে বিজ্ঞানপ্রিয় পরিবারে ঠুকে দিলাম। ... ...
সদ্য স্কুল পরীক্ষা দেওয়া এক ছেলে একবার তার বান্ধবীর উদ্দেশ্যে হঠাৎ একদিন লিখে ফেলল একটি কবিতা। কবিতার নাম 'একটি চিঠি'। কিছু একটা ভেবে ডাক যোগে বিখ্যাত 'দেশ' পত্রিকার অফিসে পাঠিয়ে দিল সেই কবিতা। ১৯৫১ সালের ৩১শে মার্চ দেশ পত্রিকার মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল কবিতাটি। দেশ পত্রিকার অফিস থেকে সেই ছেলের নামে আসল ভারী একটা খাম। এত ভারী খামের উপরে নিজের নাম লিখা দেখে ঘাবড়ে গেল ছেলেটি। সেই ছেলেটির নাম ছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। ... ...
আমাদের পাঠকদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় লেখকদের মেরে ফেলার অদ্ভুত এক প্রবণতা রয়েছে। অনেকের ধারণা একজন জনপ্রিয় লেখক মাত্রই মৃত। ধৈর্য্য ধরুন, খুলে বলছি। ... ...
১. শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোস্তাক আহমেদকে নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। বঙ্গবন্ধুর পিতা যেদিন মারা যান সেদিন মোস্তাক বঙ্গবন্ধুর পিতার কবরে নেমে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চিৎকার করে বলতে থাকেন, এখন আমার কি হবে? বিব্রত মুজিব মোস্তাককে স্বান্তনা দিয়ে বলেছিলেন, শান্ত হও মোস্তাক। পিতা-মাতা আজীবন কারো বেঁচে থাকে না। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠবন্ধু ছিলেন খন্দকার মোস্তাক। হত্যার মাত্র একদিন পূর্বেই বাড়ি বয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হাঁসের মাংস খাইয়ে এসেছিলেন মোস্তাক। খন্দকার মোস্তাকের প্রতি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস এতটাই অটল ছিল যে সন্তানদের বলেছিলেন, আমার যদি কখনো কিছু হয়ে যায়, তোমরা মোশতাক কাকার কাছে চলে যেও। ২.স্বাধীনতার পর কলকাতা থেকে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ঢাকায় এসেছিলেন শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা ... ...
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একবার সস্ত্রীক রেল পথে ভ্রমণ করছিলের। এক যুবক অনেকক্ষণ ধরে তাঁর স্ত্রীকে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। বিষয়টা বুঝতে পেরে বঙ্কিমবাবু যুবকটিকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কী করা হয়?' ছেলেটি উত্তর দিল যে সে চাকরি করে এবং ত্রিশ টাকা মাইনে৷ বঙ্কিম হেসে বললেন, 'আমি সরকারি চাকরি করি৷ সঙ্গে বইও লিখি৷ হাজার দুয়েক রোজগার৷ সবই স্ত্রীর চরণে দিই। তাও মন পাইনে ভাই৷ ত্রিশ টাকায় সে মন কি তুমি পাবে?' যুবকটি লজ্জিত হয়ে তৎক্ষনাৎ প্রস্থান করে ... ...
গতবছর ধান কাটার মৌসুমের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধকালে শিক্ষার্থীরা যখন আরাম-আয়েসে দিনাতিপাত করছে, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ধান তোলার কাজে সাহায্য করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন৷ সেই ডাকে সাড়া দেন আমাদের এলাকার স্থানীয় ছাত্রলীগের এক শীর্ষনেতা। মাথায় গামছা, নিম্নাঙ্গে লুঙ্গি পেঁচিয়ে হাতে একটা কাস্তে নিয়ে নেমে পড়েন ধান গাছ কাটতে৷ ঘন্টাখানেক বাদে ধান কেটে শ দেড়েক ছবি তুলে সাঙ্গপাঙ্গ সমেত ধান ক্ষেত থেকে উঠে আসেন। কিছুক্ষণ পর ফেসবুকেছবিগুলো সংযুক্ত করে শিরোনামে লিখেন হেলাল হাফিজেরভূমিহীন কৃষকের গান কবিতার প্রথম পঙক্তি। "দুই ইঞ্চি জায়গা হবে? / বহুদিন চাষাবাদ করি না সুখের।" ছবির সাথে এই শিরোনাম দেখে আমি রীতিমতো আঁৎকে উঠেছিলাম। আমার জায়গায় কবি হেলাল হাফিজ থাকলেও নির্ঘাত আঁৎকে উঠতেন। ... ...