এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • 'বীর' সাভারকর ঃ একটি মূল্যায়নের প্রয়াস

    রঞ্জন
    অন্যান্য | ২৮ অক্টোবর ২০১৯ | ২৬২৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ২১:০৭388280
  • ঙ) সাভারকর মাসাহারী ছিলেন । মাছ খেতে খুব ভালবাসতেন। খাবার নিয়ে বাড়াবাড়ি ওঁর পছন্দ নয় । এসব হিন্দুদের দুর্বল করেছে বলে ওঁর ধারণা।
    চ) উনি জাতিব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেও বলেন যে মুসলিম আমলে নিজেদের রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার খাতিরে এই ব্যবস্থা বেশি আঁটোসাটো হয়েছে, আজ দরকার নেই ।
    ছ) উনি গরুকে মাতা বলতে নারাজ। বলেন একটি চারপেয়ে পশু আমার মাতা নয় , বরং বাছুরের মাতা। তবে গরু খুব উপকারী জন্তু , তাই তার পালন জরুরি।
    জ) বদলা নেবার জন্যে সুযোগমত পাকিস্তান-চীন আদি রাজ্যের উপর হামলা করা উনি উচিত মনে করেন।

    গান্ধীজি, ভগত সিং, সাভারকর, জিন্না
    ======================
    গান্ধীজি নিষ্ঠাবান ধার্মিক হিন্দু, রাজনৈতিক হিন্দু নন । উনি সমস্ত ধর্মের মানুষদের সমান নাগরিক অধিকারে বিশ্বাসী। মাইনরিটিকে রক্ষা করা, বিশেষ মর্যাদা দেওয়া উনি কর্তব্য মনে করেন। এদিকে উনি কট্টর শাকাহারী, প্রাকৃতিক চিকিৎসা এবং কৃষিভিত্তিক সমবায়িক অর্থনীতির পক্ষে । উনি শ্রেণীসংগ্রামের বিরুদ্ধে। ধনীদের গরীবদের জন্য ট্রাস্টি হতে বলেন। অধিকার আদায়ের প্রশ্নে অহিংস পন্থা, অসহযোগ এবং সবিনয় অবজ্ঞা আন্দোলনে বিশ্বাসী।
    উনি গোমাতার পূজায় বিশ্বাসী।
    সাভারকর গান্ধীজির সঙ্গে সংঘর্ষে এলেন খিলাফত আন্দোলন এবং ধার্মিক ইলেক্টোরেটে গান্ধীজির অবস্থান দেখে । ভারতের স্বাধীনতার সময় উনি প্রবন্ধ লিখে (২৫/০৯/৯৪৭) গান্ধীর মত ছদ্ম-জাতীয়তাবাদী নেতাদের নাম করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবার আহবান জানালেন।
    ভগত সিং যদিও সাভারকরের সিপাহী বিদ্রোহের উপর লেখা বইটি পড়ে প্রভাবিত হয়েছিলেন। কিন্তু শীগগিরই তিনি মার্ক্সবাদী সাহিত্যে প্রভাবিত হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্যে লড়াইয়ের কথা বলতে থাকেন। তাঁর কল্পনার ভারতে শ্রমিক-কৃষক ছিল, হিন্দু-মুসলিম একে অন্যের 'অপর ' হিসেবে দেখা দেয় নি ।
    ব্যক্তিহত্যার জায়গায় গণান্দোলনে বিশ্বাসী ভগত সিং স্যান্ডার্স হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন কিন্তু অ্যাসেম্বলিতে সাধারণ বোমা ফাটিয়ে লিফলেট ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শুধু প্রচারের উদ্দেশ্যে।
    ১৯১৯-২০ নাগাদ ব্যারিস্টার জিন্না ছিলেন নরমপন্থী স্বরাজী। উনি খিলাফত আন্দোলনে গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের সমর্থনের বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে এর ফলে ভারতবাসীকে দুটো সম্প্রদায়ে ভাগ করে দেওয়া হবে। সংখ্যাগুরু গান্ধীর সমর্হকরা জিন্নাকে সমালোচনা করল। উনি রাওলাট অ্যাক্টের বিরোধিতায় গান্ধীকে সমর্থন করে আদালতে তাঁর পক্ষে মামলা লড়েছিলেন। ১৯২৯ শে নাগপুর কংগ্রেসে উনি গান্ধীজিকে মিঃ গান্ধী বোলে সম্বোধন করায় লোকে প্যাঁক দিয়ে ওনাকে তাড়াল। তারপর উনি মুসলিম লিগে যোগ দিলেন।
    জিন্না সম্ভবতঃ ১৯৩৭-৩৯ এ দ্বিজাতিতত্ত্বের কথা প্রচার করেছিলেন। কিন্তু সাভারকর তার প্রায় দু'দশক আগেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে হিন্দু এবং মুসলমান দুটো আলাদা জাতি। তারা এক রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারে না। এর ভিত্তিতে জিন্না আলাদা করে মুসলিমবহুল অঞ্চল নিয়ে আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন। আর সাভারকরের স্পষ্টঃ মত, হিন্দুস্তানে মুসলমানদের মাথা তুলতে বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপরিচালনার পদে থাকতে দেওয়া উচিত হবে না ।
    [ বিয়াল্লিশের আন্দোলন, গান্ধীহত্যা, অ্যার এস এস এবং সাভারকর নিয়ে শেষ কিস্তিটি কাল লিখব।]
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ২১:০৭388281
  • ঙ) সাভারকর মাসাহারী ছিলেন । মাছ খেতে খুব ভালবাসতেন। খাবার নিয়ে বাড়াবাড়ি ওঁর পছন্দ নয় । এসব হিন্দুদের দুর্বল করেছে বলে ওঁর ধারণা।
    চ) উনি জাতিব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেও বলেন যে মুসলিম আমলে নিজেদের রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার খাতিরে এই ব্যবস্থা বেশি আঁটোসাটো হয়েছে, আজ দরকার নেই ।
    ছ) উনি গরুকে মাতা বলতে নারাজ। বলেন একটি চারপেয়ে পশু আমার মাতা নয় , বরং বাছুরের মাতা। তবে গরু খুব উপকারী জন্তু , তাই তার পালন জরুরি।
    জ) বদলা নেবার জন্যে সুযোগমত পাকিস্তান-চীন আদি রাজ্যের উপর হামলা করা উনি উচিত মনে করেন।

    গান্ধীজি, ভগত সিং, সাভারকর, জিন্না
    ======================
    গান্ধীজি নিষ্ঠাবান ধার্মিক হিন্দু, রাজনৈতিক হিন্দু নন । উনি সমস্ত ধর্মের মানুষদের সমান নাগরিক অধিকারে বিশ্বাসী। মাইনরিটিকে রক্ষা করা, বিশেষ মর্যাদা দেওয়া উনি কর্তব্য মনে করেন। এদিকে উনি কট্টর শাকাহারী, প্রাকৃতিক চিকিৎসা এবং কৃষিভিত্তিক সমবায়িক অর্থনীতির পক্ষে । উনি শ্রেণীসংগ্রামের বিরুদ্ধে। ধনীদের গরীবদের জন্য ট্রাস্টি হতে বলেন। অধিকার আদায়ের প্রশ্নে অহিংস পন্থা, অসহযোগ এবং সবিনয় অবজ্ঞা আন্দোলনে বিশ্বাসী।
    উনি গোমাতার পূজায় বিশ্বাসী।
    সাভারকর গান্ধীজির সঙ্গে সংঘর্ষে এলেন খিলাফত আন্দোলন এবং ধার্মিক ইলেক্টোরেটে গান্ধীজির অবস্থান দেখে । ভারতের স্বাধীনতার সময় উনি প্রবন্ধ লিখে (২৫/০৯/৯৪৭) গান্ধীর মত ছদ্ম-জাতীয়তাবাদী নেতাদের নাম করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবার আহবান জানালেন।
    ভগত সিং যদিও সাভারকরের সিপাহী বিদ্রোহের উপর লেখা বইটি পড়ে প্রভাবিত হয়েছিলেন। কিন্তু শীগগিরই তিনি মার্ক্সবাদী সাহিত্যে প্রভাবিত হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্যে লড়াইয়ের কথা বলতে থাকেন। তাঁর কল্পনার ভারতে শ্রমিক-কৃষক ছিল, হিন্দু-মুসলিম একে অন্যের 'অপর ' হিসেবে দেখা দেয় নি ।
    ব্যক্তিহত্যার জায়গায় গণান্দোলনে বিশ্বাসী ভগত সিং স্যান্ডার্স হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন কিন্তু অ্যাসেম্বলিতে সাধারণ বোমা ফাটিয়ে লিফলেট ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শুধু প্রচারের উদ্দেশ্যে।
    ১৯১৯-২০ নাগাদ ব্যারিস্টার জিন্না ছিলেন নরমপন্থী স্বরাজী। উনি খিলাফত আন্দোলনে গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের সমর্থনের বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে এর ফলে ভারতবাসীকে দুটো সম্প্রদায়ে ভাগ করে দেওয়া হবে। সংখ্যাগুরু গান্ধীর সমর্হকরা জিন্নাকে সমালোচনা করল। উনি রাওলাট অ্যাক্টের বিরোধিতায় গান্ধীকে সমর্থন করে আদালতে তাঁর পক্ষে মামলা লড়েছিলেন। ১৯২৯ শে নাগপুর কংগ্রেসে উনি গান্ধীজিকে মিঃ গান্ধী বোলে সম্বোধন করায় লোকে প্যাঁক দিয়ে ওনাকে তাড়াল। তারপর উনি মুসলিম লিগে যোগ দিলেন।
    জিন্না সম্ভবতঃ ১৯৩৭-৩৯ এ দ্বিজাতিতত্ত্বের কথা প্রচার করেছিলেন। কিন্তু সাভারকর তার প্রায় দু'দশক আগেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে হিন্দু এবং মুসলমান দুটো আলাদা জাতি। তারা এক রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারে না। এর ভিত্তিতে জিন্না আলাদা করে মুসলিমবহুল অঞ্চল নিয়ে আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন। আর সাভারকরের স্পষ্টঃ মত, হিন্দুস্তানে মুসলমানদের মাথা তুলতে বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপরিচালনার পদে থাকতে দেওয়া উচিত হবে না ।
    [ বিয়াল্লিশের আন্দোলন, গান্ধীহত্যা, অ্যার এস এস এবং সাভারকর নিয়ে শেষ কিস্তিটি কাল লিখব।]
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ২১:০৯388282
  • খ,
    কালকেই চেষ্টা করব। নইলে দুদিন পরে ।
    কারণ, পরশু দেড়বছর পর গুড়গাঁও ছেড়ে ভিলাইয়ে যাওয়ার রাজধানী ধরব। গোছগাছ ইত্যাদি।
  • | ***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ২১:৪৯388283
  • কোন তাড়া নাই, সেটল করে ল‍্যাখেন।
  • এবড়োখেবড়ো | ***:*** | ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:১৯388284
  • //গান্ধীজি নিষ্ঠাবান ধার্মিক হিন্দু, রাজনৈতিক হিন্দু নন । উনি সমস্ত ধর্মের মানুষদের সমান নাগরিক অধিকারে বিশ্বাসী।//

    রঞ্জন, এইখানে একটু গণ্ডগোল হল। গান্ধী আদৌ দলিতদের সমান নাগরিক অধিকারে বিশ্বাসী ছিলেন না। পুনে চুক্তি কীভাবে হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ আমি দেওয়ার পরে এই জায়গাটা সামান্য সংশোধন করে নেবেন।

    জিন্না পর্বটা বড্ড সংক্ষেপে সারলেন! ওখানেও আমাকে ঠেকনো দিতে হবে। আর জিন্না ১৯২০এ নাগপুর কংগ্রেসে গান্ধীর সঙ্গে বিরোধে আজীবনের জন্য কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। আপনি হয়তো সামান্য অমনোযোগী হয়ে ১৯২৯ লিখেছেন।

    লেখাটা এত তাড়াতাড়ি গুটিয়ে দিচ্ছেন কেন? আমার লেখার পাশাপাশি এটাকে পরিপূরক একটা লেখা হয়ে ওঠার সুযোগ নিন। সময় নিন। বিস্তারে লিখুন। পড়ছি আগ্রহভরে।
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:০৯388285
  • এবড়োখেবড়ো,
    একদম ঠিক। সালটা ১৯২০।
    আর সংক্ষেপে সারছি এই জন্যে যে অন্য কিছু কাজে আটকে আছি । যেমন, 'মনুস্মৃতি'তে কী আছে, আর টি আই অ্যাক্ট , দেবীপ্রসাদ চট্টো ইত্যাদি। এবং বইমেলায় ছত্তিশগড়ের উপর দুটো বই বেরোচ্ছে, সেগুলোর প্রুফ দেখা, ইত্যাদি।
    গান্ধীর পজিশন জীবনের ফাইনাল ইনিংসে কি ছিল তা লিখেছি। বাকি আপনার লেখার সময় ধরতাই দেব।
    শেষের কবিতার অমিত রায় মনে করুন যে শিলঙয়ে গিয়ে একটা খটোমটো বই মন দিয়ে পড়ছিল লেখকের সঙ্গে মতে মিলবে না এই আশা নিয়ে ।ঃ)))
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:১০388286
  • বিয়াল্লিশের আন্দোলনে যোগ না দেওয়া
    ======================
    গান্ধীজির 'কুইট ইন্ডিয়া' আন্দোলনে যাঁরা যোগ দেন নি তাঁদের লিস্টঃ
    দলিত নেতা আম্বেদকর, মুসলিম লিগ নেতা জিন্না, অল ইন্ডিয়া স্টুদেন্ট কনফারেন্স, কমিউনিস্ট পার্টি , নেহেরুর আশীর্বাদ ধন্য কিছু কিসান সভা এবং কিছু লিবেরাল জনতা যাঁরা মনে করতেন জাপান জিতলে ভারত স্বাধীনতা পাবে।
    এরা কেউ বৃটিশের দালাল নন , কিন্তু কমিউনিস্ট সমেত অনেকের গায়ে কংগ্রেস এই তকমাটা সেঁটে দিয়েছিল।
    প্রত্যেকের আলাদা আলাদা কারণ ছিল। যেমন কমিউনিস্ট পার্টির রাশিয়ার নেতৃত্বে জনযুদ্ধ।
    সাভারকরের কাছে এটা ছিল হিন্দু যুবকদের বিশেষ সুযোগ-- বৃটিশ ফৌজে ঢুকে যুদ্ধবিদ্যা অস্ত্রচালনায় পারঙ্গম হয়ে আগামী দিনের মহাসমরের জন্যে (মুসলিম মুক্ত ভারত) প্রস্তুত হওয়া।

    গান্ধীহত্যা মামলা
    ==========

    স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে এই সময়ের ইতিহাসটাকে যেভাবে দেখায় ব্যাপারটা অমন সরলরৈখিক একেবারে ছিল না । বিজয়ীর লেখা ইতিহাস অমনই হয় । স্তালিনের আমলে লেখা সোভিয়েত বিপ্লবের ইতিহাস পড়লে মনে হবে বলশেভিকরা গোড়া থেকেই বিপ্লবের সমস্ত সম্ভাব্য দিকবদল বাঁক দেখতে পেয়ে সচেতন শক্তি হিসেবে দ্বিধাহীন পদক্ষেপ নিয়ে জারতন্ত্রের অবসান এবং পরবর্তী বিপ্লব ঘটিয়েছে। চিনের মাওজমানায় লেখা আফিং যুদ্ধ থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লব পর্য্যন্ত ইতিহাস মনে করুন ।
    ভারতের ক্ষেত্রে তিরিশ এবং চল্লিশের দশক ছিল অনেকগুলো ক্রস কারেন্টের সমাহার। ব্যাপারটা আদৌ মহাভারতের যুদ্ধের মত একদিকে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ অব্যদিকে গান্ধীজির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ভারত--- এমন ছিল না ।
    তখন অনেক গুলো প্রশ্ন উত্তরের অপেক্ষায় হাঁ করে দাঁড়িয়ে।
    যেমন, বৃটিশ-উত্তর ভারতের চেহারা কেমন হবে ? ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ধার্মিক সমূহের মধ্যে ব্যবস্থার বাঁটোয়ারা কেমন হবে? বৃটিশের তৈরি বিভিন্ন ধার্মিক সমুদায়ের জন্যে আলাদা আলাদা ইলেক্টোরেটস এবং রিজার্ভ সীটের ভবিষ্যৎ কী হবে? ভোট দেওয়ার অধিকার কারা পাবে? বৃটিশ জমানায় শুধু করদাতা এবং জমির মালিকদের ভোটাধিকার ছিল। আর হিন্দু-মুসলিম আলাদা ইলেক্টোরেট হওয়ার ফলে মাইনরিটি মুসলমানের একটি ভোটের ওজন মেজরিটি হিন্দু ভোটের চেয়ে বেশি হয়ে গেছল।
    সাভারকর, আম্বেদকর, দেশি লিব্যারেল, জিন্না, গান্ধী নেহরু সবাই এসব প্রশ্নে নিজের নিজের অবস্থান নিয়ে এনগেজ করছিলেন।
    সাভারকর ব্যস্ত ইংরেজ তাড়াতে নয় , ভারতে লড়াকু হিন্দুসমাজ সংগঠিত করতে। গাঁধি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে উতোর-চাপান চলতে লাগল।
    দাঙ্গার গান্ধীর মুসলিম শরণাআর্থী এবং দাঙ্গাপীড়িতদের সাহায্যে হিন্দু যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বানে সাভারকর খেপে গেলেন। তাঁর হিন্দু মহাসভা এবং তাঁর দেওয়া ফান্ডিং নিয়ে নাথুরাম গোড়সের পত্রিকা --যার মাস্টহেডে সাভারকরের ছবি থাকত-- গান্ধী এবং মুসলিম সমাজের প্রতি আগুন উগরে চলল।
    ১৫ অগাস্টের ঠিক আগে সাভারকর গেরুয়া পতাকাকে স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রীয় ধ্বজ করার প্রস্তাব রাখলেন; সংবিধান সভার ফ্ল্যাগ কমিটি খারিজ করল। তখন উনি পতাকার কেন্দ্রে গান্ধীজির চরখার বদলে সারনাথের অশোক চক্র করার প্রস্তাব রাখলেন; সেটা গৃহীত হোল।
    ২ ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১৪ অগাস্ট, ১৯৪৭ তারিখে ক্যাশ ব্যালান্স ছিল ২২০ কোটি টাকা। ঠিক হোল
    দেশ স্বাধীন হলে বৃটিশের হাত থেকে আনুপাতিক হিসেবে পাকিস্তান পাবে ২৫%, মানে ৫৫ কোটি টাকা। কিন্তু অক্টোবরে পাঠান আদিবাসীরা মহারাজা হরি সিঙয়ের করদ রাজ্য কাশ্মীর আক্রমণ করল। নেহেরু- প্যাটেল টাকা দেওয়া স্থগিত রাখলেন। জানুয়ারি ১৯৪৮, অর্থাৎ যতদিন মহারাজা ভারতে যোগদানের সন্ধিপত্রে দস্তখত না করলেন টাকা আটকে রইল। শেষে নেহেরু-প্যাটেলের বিরুদ্ধে গান্ধীর অনশনে ক্যাবিনেট হার মানল; টাকা দিল পাকিস্তানকে। এটা নিয়ে দেশের জনমানসে টেনশন বাড়ল।
    এই প্রেক্ষিতে গান্ধীহত্যা মামলা দ্যাখা যাক ।
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫২388287
  • গান্ধীর উপর হামলা হোল দু'বার। প্রথমবার ব্যর্থ, দ্বিতীয়বার সফল। প্রথমবার ১৯৪৮ সালের ২০ জানুয়ারিতে বিড়লা হাউসে; দ্বিতীয়বার ৩০ জানুয়ারিতে ।
    প্রথমবারের হামলাকারী মদনলাল পাহওয়া, এক পাঞ্জাবী উদ্বাস্তু কিশোর। গান্ধীজির থেকে ৭৫ ফুট দূরে সুতলি বোম ফাটল।
    দ্বিতীয়বার তিন মারাঠি চিতপাবন ব্রাহ্মণ ( সাভারকরও তাই)। এঁরা হলেন নাথুরাম গড়সে, নারায়ণ আপ্তে এবং বিষ্ণু কারকারে। তিনজনেই হিন্দু মহাসভার অগ্রণী সদস্য। গুলি চালালেন নাথুরাম পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ।

    নাথুরাম ১৯৩০ সালে অ্যার এস এস এর সক্রিয় সদস্য হয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৩৭ সালে সাভারকর সবরকম প্রতিবন্ধ থেকে মুক্ত হয়ে রাজনীতিতে নামতেই হিন্দু মহাসভায় যোগ দিলেন। ১৯৩৮সে হায়দরাবাদের নিজামের বিরুদ্ধে সাভারকরের সবিনয় প্রতিরোধ আন্দোলনে উনি প্রথম ব্যাচের সত্যাগ্রহী হয়ে এক বছর জেল খাটলেন।কারকারে ১৯৪৩ সালে হিন্দু মহাসভার টিকিটে সিভিক কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন।
    সাভারকরের থেকে ১৫০০০ টাকা ধার নিয়ে নাথুরাম ১৯৪৪ সালে শুরু করলেন 'অগ্রণী' পত্রিকার সম্পাদনা, বন্ধু আপ্তে হলেন ম্যানেজার। পত্রিকার মাস্টহেডে সাভারকরের ছবি। শুরুতেই পত্রিকায় গর্বের সঙ্গে লেখা হোল কীভাবে উনি পুণের কাছে হিল স্টেশন পঞ্চগণিতে একটি জাতীয়তাবাদী ছেলেদের দল নিয়ে গিয়ে গান্ধীজিকে হেনস্থা করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে প্রেস অ্যাক্ট ভংগের দায়ে সরকার জরিমানা করায় পত্রিকার নাম বদলে দিয়ে করা হোল 'দৈনিক হিন্দু জাগরণ'। সাভারকর পাবলিক অ্যাপিল করে বললেন হিন্দুত্বে বিশ্বাসী সব পরিবার একটাকা করে দান দিয়ে পত্রিকাটির পাশে দাঁড়াক।
    মামলায় সাভারকরকে করা হোল গান্ধীহত্যা চক্রান্তের মুখ্য মস্তিষ্ক। কিন্তু গড়সে, আপ্তে এবং কারকারে এতে সাভারকরের হাত অস্বীকার করলেন।
    কিন্তু জনৈক অস্ত্রব্যবসায়ী বাড়গে রাজসাক্ষী হয়ে বললেন ঘটনার ক'দিন আগে ১৪ এবং ১৭ জানুয়ারি উনি গড়সে এবং আপ্তের সঙ্গে সাভারকরের শিবাজী পার্কের বাড়িতে গিয়েছিলেন। উনি নীচে ছিলেন , ওরা ওপরে গিয়ে সাভারকরের সঙ্গে বৈঠক করে একটু পরে একটা থলি নিইয়ে নেমে আসে। একজন নামকরা অভিনেত্রী বিম্বা (যিনি নিজের গাড়ি করে ওদের স্টেশন ঠেকে সাভারকরের বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়েছিলেন) এবং সাভারকরের বডিগার্ড ও সেক্রেটারি এর পক্ষে সাক্ষ্য দেন । কিন্তু আলোচনার সময় কি কথা হয়েছিল তার কোন প্রত্যক্ষদর্শী নেই । সাভারকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোটাই সারকামস্ট্যানশিয়াল এভিডেন্স বেসড। যেমন তিন আসামীর সঙ্গে সাভারকরের ঘনিষ্ঠতা, কাজকর্ম এবং তিনজনেরই গান্ধীজির বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং বিশ্বাস যে গান্ধীজির জিন্না তুষ্টিকরণ নীতির ফলে দেশভাগ হয়েছে।
    লক্ষণীয় যে প্রথম হামলাকারী মদনলালা পাহওয়া ও ওই তিনজনের চ্যালা ছিল এবং প্রথম হামলার দিন (২০ জানুয়ারি) গড়সে , আপ্তে, বাড়গে এবং পাহয়া একসঙ্গে দিল্লিতে ছিল এবং একসংগে ট্রেনে মুম্বাই হয়ে পুণে ফিরে এসেছিল।
    সাভারকরের মৃত্যুর পর মনোহর মালগাঁওকর , যিনি 'মেন হু কিল্ড গান্ধী' বইটি লিখেছেন, কারকারে, পাহওয়া এবং গোপাল গড়সেকে প্রশ্ন করেন । ওরা সবাই গান্ধীহত্যার পেছনে সাভারকরের ভূমিকার কথা অস্বীকার করে ।
    নাথুরামকে গান্ধীহত্যার জন্যে ৯ এমেম ব্যারেটা পিস্তল দিয়েছিল গোয়ালিয়রের হিন্দু মহাসভার সেক্রেটারি সদাশিব পরচুরে।
    বিচারের রায় বেরোল। জাস্টিস আত্মারাম আটজন অভিযুক্তের মধ্যে শুধু সাভারকরকে প্রমাণাভাবে মুক্তি দিলেন--কারণ রাজসাক্ষীর বয়ানের কোন স্বতন্ত্র সাক্ষী বা দলিল পাওয়া যায় নঈ। নাথুরাম এবং নারায়ণ আপ্তের ফাঁসি , বাকি পাঁচজনের যাবজ্জীবন (তখন এর মানে ১৪ বছর)। সরকারের এর বিরুদ্ধে আপীল করল না । সাভারকরের ভগ্নস্বাস্থ্যের কারনে তখন শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন হিন্দু মহাসভার সেক্রেটারি । নেহেরু বললেন গান্ধীহত্যার পর ওঁর মন্ত্রিসভায় হিন্দু মহাসভার নেতা মন্ত্রী হবেন এটা উচিৎ নয় । শ্যামাপ্রসাদ মহাসভার সদস্যপদ ছাড়লেন।
    কিন্তু উনি প্যাটেলকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলেন যে সাভারকরের বিচার যেন নিরপেক্ষ ভাবে হয় । প্যাটেল আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে উনি শ্যামাপ্রসাদকে লিখেছিলেন যে আইনের নিক্তিতে সাভারকর ছাড়া পেলেও এই হত্যাকান্ডের নৈতিক দায় থেকে উনি মুক্ত হতে পারেন না ।
    প্যাটেল নেহেরুর অ্যার এস এস নিইয়ে আশংকার উত্তরে জানিয়েছিলেন যে অ্যার এস এসকে অন্য অনেক দোষে দায়ি করা যায় , কিন্তু গান্ধী হত্যার জন্যে নয় ।
    সাভারকর একবছর জেল খেটে ভগ্নস্বাস্থ্য নিইয়ে বেরিয়ে এলেন। কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়ল না । ৬০ এর দশকে তিলকের নাতি জি ভি কেতকর পুণের এক সভায় বললেন যে উনি গান্ধীহত্যার ব্যাপারে ঘটনার অনেক আগেই জানতেন। ১৯৬৬ সালে সরকার এ নিয়ে কাপুর জুডিশিয়াল কমিশন বসাল। কাপুর বললেন যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ একসাথে মিলিয়ে দেখলে সাভারকর এবং তার গ্রুপ মিলে যে ষড়যন্ত্র রচেছিলেন তাই মনে হয় ।
    মোদীজি ক্ষমতায় আসলে এক সাভারকর ভক্ত কাপুর কমিশনের রিপোর্ট নিইয়ে সুপ্রীম কোর্ট গেল। সবোর্চ্চ আদালত তার মে ' ২০১৮ রায়ে বলল যে কমিশনের রিপোর্ট 'জেনারেল অবসার্ভেশন ' মাত্র ; তা কোন ভাবেই ক্রিমিনাল কোর্টের রায় উলটে দিতে পারে না ।
    -- সবমিলিয়ে প্যাটেলের কথাটাই মাথায় আসে-- গান্ধীহত্যার নৈতিক দায় থেকে সাভারকরকে রেহাই দেওয়া কঠিন।
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৭388288
  • শেষের সে দিন
    =========
    বেয়াল্লিশের আন্দোলনের সময় কংগ্রেসি নেতা ও কর্মীরা জেলে। তখন হিন্দু মহাসভার কর্মীরা শ্যামাপ্রসাদ এবং সাভারকরের নেতৃত্বে বেশ কিছু এসেম্বলি ও অন্য সিভিক বডিতে ইলেকশন জেতে। কিন্তু ১৯৪৫-৪৬ এর সেন্ট্রাল এসেম্বলি এবং প্রাদেশিক নির্বাচনে সাভারকরের কংগ্রেসকে পরাজিত করার আহ্বান ব্যর্থ হয় । নভেম্বর ১৯৪৫ এর সেন্ট্রাল এসেম্বলিতে মহাসভা একটাও সিট পেল না । দ্যাখা গেল রামরাজ্য এবং হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কথা বলা কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলনের নেটা গান্ধীজিকেই বৃহত্তর হিন্দুসমাজ অবিসংবাদিত নেতা মেনেছে।
    এরপর গান্ধীহত্যার কলংক লাগায় জনমানস থেকে মহাসভা এবং সাভারকর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। ফলে উনি আরও উগ্র আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন। এইসময়ে লেখা বিভিন্ন চিঠিপত্র এবং প্রবন্ধ তার সাক্ষী। 'সিক্স গ্লোরিয়াস ইপোক্স অফ ইন্ডিয়ান হিস্টরি' পড়লে দ্যাখা যাবে এক অতীতমুখী মন যার চেতনা শুধু অতীতে হিন্দু-মুসলিম বাইনারিতে এবং হিন্দুর কথিত বিক্রমগাথায় সান্ত্বনা খোঁজে (আমি মাত্র পড়েছি, তাই বলছি ), এবং শিগগিরই মুসলিমরা ভারতে মেজরিটি জনগোষ্ঠী হয়ে উঠবে এই প্যারানইয়া থেকে আত্মসমর্পণকারী বন্দী মুসলিমদের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হত্যা তথা 'টু পে ইন দেয়ার ওন কয়েন' নীতিতে মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণকে উচিৎ বা কর্তব্য বোলে ওকালত করেন।
    অসুস্থ সাভারকর ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে ৮৩ বছর বয়সে মারা যান। পীড়ায় অস্থির হয়ে স্স্বেচ্ছামৃত্যু কামনা করেছিলেন , কিন্তু আইনে বাধে । তাই ধীরে ধীরে খাওয়াদাওয়া এমনকি জল পর্য্যন্ত ছেড়ে দিলেন।
    তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তাঁর মরদেহ কোন চিতায় তোলা হয় নি , মন্ত্রোচ্চারণ করা হয় নি , বিনা আড়ম্বরে ইনসিনারেটরে ঢুকিয়ে দেওয়া হোল। বাড়ির কাছে কাকেদেরও কিছু আহার বা পিন্ড দেওয়া হোল না । ভদ্রলোকের কাছে হিন্দু ধর্ম ব্যক্তিগত আচরণ না হয়ে রাজনৈতিক স্তরেই সীমাবদ্ধ রইল।
    ফুটনোটঃ
    সাভারকর অ্যার এস এস কে নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলতেন যে ' দ্য এপিটাফ ফর দ্য অ্যার এস এস ভলান্টিয়ার উইল বি হি ওয়াজ বর্ন, হি জয়েন্ড দি অ্যার এস এস, অ্যান্ড হি ডায়েড উইদাউট অ্যাকমপ্লিশিং এনিথিং'। ওদের গোমাতা থিম উনি মানতেন না । কিন্তু আজ ওরা সাভারকরকে মাথায় তুলে রেখেছে। আন্দামান জেলের নামকরণ আজ ওনার নামে। অথচ ওখানে ওঁর চেয়ে বেশি সময় জেল খেটেছে বা ওখানেই মারা গেছে এমন বন্দীর নামও পাওয়া যাচ্ছে। আজ ওঁর ছবি সংসদে দেয়ালে ঝুলছে। কাল হয়ত ভারতরত্ন দেওয়া হবে।
    এর পেছনে দুটি কারণ আছে বোলে মনে হয় ।
    এক, বিজেপির (অ্যার এস এসএর) স্বাধীনতা সংগ্রামে জেল খেটেছেন এমন নাম খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলীরাম হেড়গেওয়ার জেলে গেছেন কংরেসি কার্যকর্তা হিসেবে। অ্যার এস এস প্রতিষ্ঠার পরে নিজে যান নি , অন্যদেরও নিরুৎসাহিত করেছেন। অথচ কংগ্রেস এবং কম্যুনিস্ট পার্টিতে অনেক নাম, এমনকি সেলুলার জেল খেটেছেন তাদের মধ্যেও।
    দুই, গান্ধীজির নরম হিন্দুত্বের জায়গায় এক এক্সক্লুসিভ আক্রামক হিন্দুত্বের তাত্ত্বিক প্রবক্তা উনি। এবং মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি জনিত প্যারানইয়ার রূপকার।
    কিন্তু আজ এই তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত। গত ১৫ আগস্টে প্রধানমন্ত্রী জনসংখ্যা বিস্ফোটের আশঙ্কার কথা বলেছেন বটে, কিন্তু এটা ভিত্তিহীন। জনসংখ্যা বিস্ফোরণ কোথাও হচ্ছে না , ভারতেও না , অন্য কোথাও নয় । সরকারী তথ্য অনুযায়ী ভারতের গড় প্রজনন রেশিও সূচক ( অর্থাৎ , একটি সমাজে, রাজ্যে বা দেশে প্রজনন- ক্ষম বয়সে একজন নারী গড়ে কজনের জন্ম দিচ্ছে) ২।৩। এটা ২।২ হলেই বর্তমান জনসংখ্যা স্থির হয়ে যাবে । গড়ে এক বছরে যতজনের জন্ম হবে বা যতজনের মৃত্যু হবে তা প্রায় সমান সমান হয়ে কাটাকুটি হয়ে যাবে । মজার ব্যাপার এই রেশিও মুস্লিম প্রধান কাশ্মীরে মাত্র ১।৬ এবং বঙ্গেও তাই। অথচ হিন্দুপ্রধান গুজরাত এবং উত্তর প্রদেশে ক্রমশঃ ২।৬ এবং ৩। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির দর হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে দ্রুতহারে কমছে।
  • রঞ্জন | ***:*** | ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৯388290
  • হানুর কোথা মেনে বইয়ের তালিকা
    ====================
    ১ সাভারকর--হিন্দুত্ব,
    ২ সাভারকর----সিক্স গ্লোরিয়াস ইপোক্স অফ ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি ।
    ৩ সাভারকর-- অ্যান ইকো ফ্রম আন্দামান।
    ৪ সাভারকর-- হোয়ার্লউইন্ড প্রোপাগান্ডা।
    ৫ সাভারকর-ঃ দ্য ট্রু স্টোরি অফ দ্য ফাদার অফ হিন্দুত্ব--- ভি পুরন্দরে।
    ৬ সিডিশন কমিটি রিপোর্ট, ১৯১৮।
    ৭ গান্ধী বিফোর ইন্ডিয়া-- রামচন্দ্র গুহ
    ৮ বীর সাভারকর-- ধনঞ্জয় কীর।
    ৯নেহরু, সিলেক্টেড ওয়ার্কস, ভলুম -৩।
    ১০ হারীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-- লাইফ এন্ড মাইসেলফ, ভল্যুম ১
    ১১ উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যো -- নির্বাসিতের আত্মকথা।
    ১২ বারীন ঘোষ -- দ্য টেল অফ মাই এগজাইল।
    ১৩ আর সি মজুমদার-- হিস্ট্রি অফ দ্য ফ্রিডম মুভমেন্ট ইন ইন্ডিয়া, ভল্যুম-৩
    ১৪ মাল্গাঁওকর-- মেন হু কিল্ড গান্ধী।
    ১৫ গুরুজী গোলওয়ালকর ---- উই অর আওয়ার নেশনহুড ডিফাইন্ড
    ( এতে দ্যাখা যাবে কীভাবে সাভারকরের হিন্দুত্বের আইডিয়া ঋণস্বীকার না করে হুবহু আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে একটি আলাদা চ্যাপটার আছে --আমাদেরশত্রু কারা? তিনটে সাব-টাইটেল আছে -- মুসলিম, ক্রীশ্চান এবং কমিউনিস্ট।)
    ১৬ ইন্ডিয়াজ স্ট্রাগল ফর ইন্ডিপেন্ডেন্স --বিপান চন্দ্র এন্ড আদার্স।
  • অর্জুন | ***:*** | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:৪১388291
  • এ টই আর এগোলও না!!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন