এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তাজুকে নিয়ে গল্প

    pi
    অন্যান্য | ২২ জানুয়ারি ২০১৮ | ৮১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 24.139.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ২১:৩৯371920
  • আমি তাজুর ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। আমি তাজুর গল্প লিখতে চেয়েছিলাম।

    ভীষণভাবে।

    এই দুটোই খুব সত্যি কথা, কিন্তু কেন, সেটা ভাবতে বসে একটু ফাঁপরে পড়েছি।

    তাজুকে আসলে আমি কখনো হাসতে দেখিনি। এছাড়াও তাজুকে কখনো কথা বলতে দেখিনি।

    এই যে আমি আসলে লিখে ফেললাম, তাহলে কি এই না হাসাটাই কি কথা না বলাটাই আমার ছবি তুলতে বা গল্প লিখতে চাওয়ার আসল কারণ? যাহোক, সেটা নিয়ে আরেকটু পরে ভাবছি।

    তাজুকে আমি কখনো হাসতে দেখিনি।

    তাজুকে কেউ হাসতে দেখেনি। কারণ তাজু হাসেনি।

    তাজুকে কখনো কথা বলতে দেখিনি।

    তাজুকে কেউ কথা বলতে দেখেনি। কারণ তাজু কারুর সাথে কথা বলেননি।

    এমনকি কথার বিকল্প যে সৌজন্যমূলক হাসিটুকু হয়, সেটাও তাজু কখনো ফেরত দেননি।

    কখনো, এই ২৬ বছর ধরে। সেরকমই শুনেছিলাম। কিছু জিগেশ করলেও ভাবলেশহীন মুখে ইশারায় উত্তর দিয়ে দিতেন। যদিও উনি বোবা নন। যদিও ঝাড়ুদারকে আর কারই বা কী জিগেশ করার থাকে। কিন্তু না, অন্য কোন কর্মচারীর সাথেও ওনাকে কথা বলতে দেখা যায়নি। হাসতেও না।

    সেরকমই শুনেছিলাম। ওনাকে নিয়ে আপিসে সেরকম কথাই চালু ছিল। যদিও ততটাও চালু না, যে কানে নিজে থেকেই ঢুকে পড়বে। সাফাই কর্মীর না হাসা বা কথা না বলা, হাসাহাসি বা কথা বলার বিষয়, কোনটার জন্যই তেমন চালু নয়। তো, আমি জেনেছিলাম জিগেশ করে।

    প্রথম ক'দিন দেখে, দেখা হতে হাসির উত্তরে একটা ভাবলেশহীন চাউনি পেতে, চেয়ার টেয়ার সরানো নিয়ে কী একটা প্রশ্ন করাতেও সেই রোবোটিকইমোশানের রিপিট পার্ফরম্যান্স দেখার পর ওনাকে নিয়ে আমি কৌতূহলী হয়ে উঠি। প্রথমে ভেবেছিলাম, আমাকে হয়তো কোন কারণে পছন্দ করেন না। বহিরাগত বলে? আসামে আসা বাঙালি বলে ? এ প্রশ্নটা আমার আশেপাশের কোন অসমিয়াকেই করে উঠতে পারিনি বলে নিজেই লক্ষ করা শুরু করে দি।

    আর লক্ষ করে দেখি , না কাউকে কারুর সাথেই উনি কথা বলেন না।

    এরপরেই দুম করে একদিন আমার নতুন কলিগদের জিগেশও করে ফেলি।

    আর জানতে পারি, ২৬ বছর আগে তাজু এই ইন্সটিউটে আসেন। সাফাই কর্মচারী হিসেবে। উনি এখনো সাফাই কর্মচারী। আক্ষরিক অর্থেই নীরব নিরলস কর্মী বলা চলে। কোনদিন লাঞ্চ করতে যেতে দেরি হয়ে গেলে, দেখতে পেতাম বালতি, ঝাড়ু হাতে তাজু চলে আসেন আমাদের আপিসঘরে, আমাদের ছোট্ট পুরানো আপিসঘর আর লাগোয়া ল্যাবে। ঠিক সময়ে লাঞ্চ করতে গেলে ফিরে এসে ঠিক দেখতাম, বাকি ঘর সাফ হয়ে ঠিক দরজার চৌকাঠের বাইরের করিডর মুছছেন তাজু। কারণ তাজুর সময়টা ঠিক হাতে ঘড়ির সাথে বাঁধা ছিল। একটা মস্ত গোল ডায়ালের ঘড়ি ছিল হাতে, যে হাতে ঝাড়ুর ডাণ্ডাটা ধরতেন। আর ধরতেন যখন ঘড়িটা পুরো মুখের পাশে চলে আসত। আমাদের ওই পুরানো ল্যাবের মাকড়সার জালধরা নোনাধরা দেওয়ালের আধজোড়া জংধরা পুরানো যন্তরপাতি আর মাঝেমধ্যে বেরিয়ে থাকা ছোপধরা সাদার ব্যাকগ্রাউণ্ডে সে এক দৃশ্যের জন্ম হত বটে। আর আমি তবুও কেবলি আউড়ে যেতাম।

    আর, আমি এই পোজটার ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।

    জানি, এটা খুব ভাল অভ্যেস না। কিন্তু ছোট থেকেই লোকজনের মুখকে নানা জিনিসপত্রের সাথে তুলনা করার বদভ্যেস আছে আমার। ছোটবেলায় ইন্দিরাদির মায়ের মুখটা বেলগাছের টবের মত বলে মায়ের কাছে মার খেয়েও সেই বদভ্যেস যায়নি। তো, তাজুর মুখটা আমার ঐ ঘড়ির ডায়ালের মত মনে হত। আর সাফ করার সময় ডাণ্ডা ধরা হাতে ঘড়িটা যখন হাসিহীন, ভাবলেশহীন মুখের পাশে প্রায় কানের গোড়ায় চলে আসত, সে ভারি একটা ফোটোজেনিক পোজ মনে হত।

    নাঃ, আমি মনে হয় ঠিক বলছিনা। সত্যি কথাটা হল, এটা আসলে এখন আমার মনে হচ্ছে যে, আমি এই পোজটার ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।

    যেমনটা হয়, কার্যের পরে কারণ খুঁজে বের করার থিয়োরি মেনে বহু ছবি তোলার সময়েই কম্পোজিশন ভেবে ফেলার পরে আমি কেন এটাকে কম্পোজিশন হিসেবে ভাবলাম, সেই কারণটা খুঁজে বের করি, বা বলা ভাল খাড়া করি, বা আরো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কম্পোজিশন ভাবারও আগে ছবি তুলে ফেলি। আবারো ফাঁপড়ে পড়ে যাই, কম্পোজিশন স্বতঃস্ফূর্ত না, নির্মাণ ? সেটাই তুলি, চোখ যেভাবে যা তোলায়। যাদেরকে যেভাবে ক্যামেরার ফ্রেমে বেঁধে চোখ দেখতে ভালবাসে। চোখ

    ভাবতে পারে?

    এসব হ্যাজের থেকে এখন এটা বলা কাজের যে এই ক্ষেত্রেও তাই করলেই হত। মানে ছবি যেমন দুমদাম তুলে ফেলি, সেরকম তুলে ফেললেই তো হত।

    হত না। এক তো আমি এরকম পোর্ট্রেট টোর্টেট বিশেষ ভাল তুলতে পারিনা, তুললেও চলতি রাস্তায় অচেনা লোকজনের ছবি দূর থেকে তুলে স্যাট ক’রে সরে পড়া এক জিনিস, আর এরকম আপিসের লোকের ছবি, তাও আবার কাছ থেকে তোলা আরেক। বলেকয়েই তো তুলতে হবে। আর বলা কওয়ার কথা ভাবতে গিয়েই পিছিয়ে আসতাম। তাজুর সাথে কথা বলব ? তাজুকে প্রশ্ন করব ? তাজু তো উত্তর দেন না। ওই নিরুত্তর মুখের ছবি তুলে নেব?

    নাঃ, এটাও মনেহয় ঠিক বলছিনা, আবার মনে হয় কার্যপরবর্তী কারণ খুঁজে বের করছি। এত ভেবেচিন্তে ছবিটা তুলিনি, এমনটা হয়ত আদৌ নয়। হয়ত আজ বলব কাল বলব আজ তুলব কাল তুলব করে করেই আর তোলা হয়নি। হ্যাঁ, এটা মনে হয় ঠিকই বলছি, তাজুকে দেখলে মনে হত সময় থেমে আছে। থেমেই থাকবে। তুললেই হয় যখন হোক। এরকমই তো থাকবে। তাজু, ঐ পুরানো ল্যাব বিল্ডিংটা আর সময়।

    কিন্তু থাকলো না। তাজু, ঐ পুরানো ল্যাব বিল্ডিংটা আর সময় থাকলেও এই আমরাই আর থাকলাম না। হঠাৎই শুনি নতুন বিল্ডিং অন্য এক ল্যাবের জায়গায় আমাদের বিভাগকে যেতে হবে। দুতিনদিনের নোটিশে যন্ত্রপাতি লোকজন মশা প্যারাসাইটপত্তরদের নিয়ে ঠাঁইবদল করতে হল। সে নতুন মানে আর কি আনকোরাই নতুন বিল্ডিং। রঙ এর গন্ধমাখা শিশুই মনে হচ্ছিল কাঁচের দরজা খুলে, কিন্তু ভিতরে যেতে দেখি সে একেবারে ঝাঁচকচকে যৌবন। অত্যাধুনিক মডিউলার ল্যাব।

    শিফটের ঝক্কির ঘোর কাটতেই চারপাশের অনভ্যস্ত অনেক কিছুতে হোঁচট খেতে খেতে আর পুরানো সব কাজের জিনিসপত্তরকে নতুনের মধ্যে প্রতিস্থাপন করতে করতেই আবিষ্কার করলাম, তাজুকে আমরা ফেলে এসেছি। ফেলে আরো অনেক কিছুই এসেছিলাম। পুরানো জংধরা খরচার খাতায় রাখা যন্ত্রপাতি , তামাদি হয়ে যাওয়া পেপারপত্তর। তাজুকে এই বিল্ডিং এ একেবারে চাইনি। খালি মনে হত, এখানে যেন তাজুর ডিউটি না পড়ে। এখানে যেন তাজুকে দেখতে না হয়। এক্কেবারে মানাইছিনাবে না। পড়েনি। এখন আর সুইপারের পোস্ট পার্মানেন্ট হয়না। নতুন জায়গায় নতুন নিয়মে সবই ঠিকা। আজ আছে কাল নেই। তাজুকে

    আর তখনি আমার মনে হয়েছিল, তাজুকে নিয়ে গল্প লেখার কথা। কাব্যি করে এইসব কিছু পুরানো বিগতযৌবন জংধরা থমকে থাকা সময়ের সাথে মানিয়ে যাওয়া তাজুদের ফেলে আসার কিম্বা হারিয়ে যাবার গল্প।

    এখন মনে হচ্ছে, গল্প লেখার মতই ওই ছবি তোলার কথাও আসলে এইসময়েই মনে হয়। নতুন জায়গায় আসার পরে তবেই আমি টের পাই, তাজুকে ওখানে কত বেশি মানাত। ঐ পোজটা কত বেশি ফোটোজেনিক ছিল। কেন ছিল। আগেকার সব মনে হওয়ার গল্প বোধহয় আসলে এখনকার মনে হওয়া, আজ লিখতে বসে বানানো। মানে, এরকমটা হতেই পারে। আগে মনে হয়নি বলেই হয়তো আগে ছবিটা তুলিনি।

    হ্যাঁ, এখন মনে হচ্ছে ছবি তুলতে চাওয়ার আসল কারণের মত ছবি না তোলার আসল কারণটাও আমার জানা নেই। কী কী বানাচ্ছি সেটাও আমি জানিনা।কিম্বা এটাও তো হতে পারে, জানিনাটা আমি বানিয়ে বলছি? এটাও তো হতে পারে, আমার কোনটা বানানো আমি নিজেও আর ঠিক করে জানিনা, আলাদা করতে আর পারিনা ?

    এই অব্দি লিখে আবারো ধন্দে পড়ে যাই, বানালে কি গল্প হয়? বানালেই কি গল্প হয়? গল্প কি বানাতেই হয়?

    আমি কোনদিন গল্প লিখিনি। মনে হয় লিখলে এই ধন্দে অনেক আগেই পড়ে যেতাম। বা অনেক আগেই উত্তর জেনে গিয়ে আর ধন্দে পড়তাম না।

    কিন্তু গল্প তো আমি পড়েছি। আমি ভাবার চেষ্টা করি আমি যাকে গল্প ভাবি, তাকে বিশ্বাস করি কিনা। সত্যি বলে বিশ্বাস করি বলে ভালবাসি, চমকে যাই, দুঃখ পাই, কষ্ট পাই, আনন্দ পাই, ব্যথায় কাঁদি ? যদি সত্যি বলে নাই ভাবি তো সব ইমোশন গল্পকারের কল্পনা আর মুন্সীয়ানার আপ্রিসিয়েশন মাত্র ?

    কিছু কিছু সত্যি গল্প হয় নাকি কিছু কিছু গল্প সত্যি হয়?

    আমি ওই বিল্ডিং এ ফিরে গিয়ে যন্ত্রপাতি আর স্মৃতির গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে ওর ওই ছবিটা তুলে আনলাম, এই গোল গোল সমাপ্তিটা ভাল গল্প হতে পারে , নাকি তুলব ভেবেও আর গেলাম না কোনদিন, সেই নিরাসক্ত সুতো ছেড়ে দেওয়াটা ? কিম্বা গেলাম এবং জানলাম, তাজুকে স্বেচ্ছা অবসর নিতে বলা হয়েছে, সেই হালকা সমাজসচেতনতার ডোজ দেওয়াটা? একদিন গিয়ে তাজুর মৃত্যুর খবর পেলাম, সেই নাটকীয়তা ? নাকি তাজুর হারিয়ে যাওয়ার ধোঁয়া অস্পষ্টতায় টিপিক্যাল শেষ হয়ে শেষ না হওয়া?

    নাকি যা সত্যি হয়েছিল, সেটাই?

    এই যে জেনেছিলাম, সেই ট্র্যাজিক কাহিনি, গাড়ির আকসিডেন্টে তাজুর মা বাবা বৌ বাচ্চা মারা যাবার কথা, নিজে মাথার বিশাল আঘাত থেকে বহুদিনের যুদ্ধের পর ফিরে আসার কথা আর তারপরেই হাসতে আর কথা বলতে ভুলে যাবার কথা , সবশেষে সেটা লিখলেই কি একটা গল্প দাঁড়াতে পারত?

    গল্প কি এরকমই সত্যি নয় ?

    কিন্তু এরকমও তো হতে পারে, আমি এরকম কিছুই জানিনি। এইটুকু লিখে শেষ করে দিলে বেশ চমকপ্রদ হয়ে যায় লিখে ফেললাম ?

    গল্প কি এরকমই কল্পনা নয় ?

    কিম্বা বানাইনি, এরকম কিছু জেনেছি সত্যই মনে হয়েছিল, এবং সেট্টা ভ্রম ছিল ?

    গল্প কি এরকমই বিভ্রম নয় ?

    অনেকদিন বাদে। নতুন বিল্ডিংএ যাবার বেশ অনেকদিন পরে। না, এর মধ্যে আর পুরানো বিল্ডিং এ অরায় যাইনি, তাজুকে দেখিনি। তাজুর কোন খবর পাইনি, নিইনি। তাজুকে পাছে দেখে ফেলি, সেজন্যই পুরানো বিল্ডিং এ নেহাত দরকারে এক দুবার ছাড়া যাইনি, গেলেও তাজুর কাজের সময় পেরিয়ে গেছি। অথচ প্রতি মুহূর্তে, না প্রতি মুহুর্তটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেল, কিন্তু বহু সময়ই মনে হয়েছে তাজুর ছবি তোলার কথা, তাজুর গল্প লেখার কথা।

    অনেকদিন বাদে, গেটের বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে, অটোর জন্য। সে আর আসেনা। ঘণ্টায় এক দুটোর বেশি অটো না আসাটাই নিয়ম এখানে। উত্তরপুবের এই ছোট শহরের উপান্তে যে চাবাগানের গালিচার মধ্যে আমাদের ইন্সটিটিউটের বেখাপ্পা কয়েকটা বিল্ডিং বসে আছে, আদতে সেটি গ্রামই, প্রায় গণ্ড। তো এত অটোর দরকার পড়ে কই, দরকার থাকলেও অত ভাড়া দিয়ে যাতায়াতের মত মানুষের সংখ্যা কমই। চা বাগানের ট্রেকারে গাদাগাদি হোক, দিনে এক দুবার হোক, তাই সই। ইন্সটিটিউটের বেশিরভাগ লোকেরই গাড়ি। সমস্যা আমার মত কিছু লোকের, তাও শহরে যাইই বা আর কত।অটোর অপেক্ষায়, আসবে গ্রামের ভিতর থেকে।পুরো ভর্তি হয়ে আসেনা , এটাই যা ভরসার, টুক করে গুঁজে তেঁতুলপাতার নবম ব্যক্তিও হয়ে যাওয়া গেলেই হল। রাস্তার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক পুকুরের শেওলার, কি বাঁশবাগানের ছায়ার ছবি টবি তুলছি , মোবাইলে টুংটাং নোটি এলে খুটখাট, কান খাড়া গাড়ির আওয়াজের। অটোর আওয়াজের।

    বেশ খানিক বাদে মনে হল আসছে। তার সাথে অনেকগুলো গলার আওয়াজ।কচি, ধেড়ে, সবই আছে। মোড় ঘুরতে অটোটা দেখে তো হতাশ, পুরো ভর্তি নিঘঘার চারগেট থেকে বাচ্চাকাচ্চা ঝুলছে , সে অবশ্য আমোদ করেই মনে হচ্ছে। তাও হাত দেখালাম।যদি কোনক্রমে একটু।

    থামল।

    বাচ্চার পাশেই এক মহিলা। কোলে শিশু। পাশে আরেক ভদ্রলোক, তাঁরো কোলে আরেকটি, একটু বড়। তার ওদিকে বোধহয় আরো দুই বাচ্চা। সামনে আরো দুই।প্রচুর ক্যালোরব্যালোর কলরোল চলছে, হাসির আওয়াজ। বোঝাই যাচ্ছে, সব সেজেগুজে ফিটফাট হয়ে শহরে, হয়তো ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা।

    ভদ্রলোক দেখি একগাল হাসলেন আমাকে দেখে, বললেন, আর আপনি ! তারপর একটু কাঁচুমাচু হয়েই অসমিয়াতে বললেন, ম্যাডাম, এটাতে তো বোধহয় আপনি উঠতে পারবেন না। পিছনে আরেকটা খালি ওটো আসছে।

    আমি সত্যিই প্রথমে চিনতে পারিনি। বলার অপেক্ষা বোধহয় আর রাখেনা, তাজু।

    বলা বাহুল্য, গল্প লিখতে চাইলে আর একটিও লাইন লেখা উচিত নয়। এটা বাহুল্য হলেও বলে দিলাম। কিম্বা গল্প লিখছিনা বলে। বা, লিখতে চাইছি বলে।
  • | ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ২২:১২371926
  • বাহ!
  • সিকি | ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ২৩:১৬371927
  • অসামান্য। অসামান্য।

    অসামান্য।
  • dd | 59.205.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৮:১৬371928
  • বেশ লাগলো।
  • শঙ্খ | 52.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ১০:৩৫371929
  • আলহামদুলিল্লাহ
  • de | 69.185.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ১৪:৪৮371930
  • ভারী সুন্দর - কথোপকথন, প্রশ্নমালা - নিজের সাথে, পাঠকের সাথে - ধরনটা খুব পছন্দ হোলো -
  • pi | 24.139.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ২১:৪৮371931
  • থ্যাঙ্কু, থ্যাংকু !
  • Debashish Bhattacharya | ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ২২:০১371932
  • তাজুর সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল। জীবনে তাজুরা প্রশ্ন চিহ্ন হয়ে ঝুলে থাকে। কে আর তাদের এমন করে খোঁজে? রচনাটি এক পা এগিয়ে তাজুকে একটা ফ্রেমে ধরতে চেয়েছে। অ্যান্টিক্লাইম্যাক্স হয়ে তাজু কথা বলে ওঠে শেষ মুহূর্তে। আমাদের ধারনা কতটা স্বকপোলকল্পিত বুঝিয়ে দিতে তাজু আসে, এ তো আগমন নয় আবির্ভাব। গণতন্ত্র মানে কি কিছুটা আভাস মেলে, কাজের জায়গায় পাথরচাপা নিষ্প্রাণ তাজু কেন আসলে অন্য কেউ সেটা নিয়েও একটা প্রশ্ন ওঠে।

    তাজুকে সময় দেওয়ার জন্য dhonybad।ধন্যবাদ।
  • aranya | 83.197.***.*** | ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:৪৩371933
  • বাঃ, কী ভাল
  • pi | 24.139.***.*** | ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ২২:৫৬371921
  • আবারো অনেক ধন্যবাদ!
  • কুশান | 113.215.***.*** | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:১৭371922
  • কোনোদিন গেছ কি হারিয়ে
    হাট বাট নগর ছাড়িয়ে
    একটি শিমুলগাছ নিয়ে
    আকাশের বেলা যেথা কাটে?

    সবাই দেখতে পান না। কেউ কেউ পান। এর জন্য দরকার একটি সংবেদনশীল মন। প্রান্তরের নির্জন অই শিমুল, বসন্ত না এলে দৃষ্টি এড়িয়ে যায়।

    এমন শিমুল, আসলে প্রান্তিক। প্রান্তিকদের দেখতে পেতেন বিভূতিভূষণ। তাঁর চোখে ধরা পড়ত দোবরু পান্নার সরল সৌন্দর্য। ইদানিং কালে প্রান্তিকদের নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে অনেকে সরব। কিন্তু তাঁদের নিয়ে সৃজনশীল লেখা চোখে পড়ছে না। তাজুকে নিয়ে আপনার লেখাটি এসব মনে করিয়ে দিল।

    আরো লিখুন ঈপ্সিতা।
  • pi | 57.29.***.*** | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:০৪371923
  • অনেক ধন্যবাদ!
  • Anamitra Roy | ০৬ মার্চ ২০১৮ ১৯:১৩371924
  • সুন্দর!
  • | 52.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৫371925
  • সম্প্রতি কৃষ্ণগোপাল মল্লিকের গদ্যের সাথে একটু ঘনিষ্ঠ ভাবে পরিচয় হচ্ছে। এই গদ্যের সাথে তাঁর একটা গদ্যাংশের বেশ মিল পেলাম। সহজ এবং হয়ত তাইই বেশ ম্যাজিকাল!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন