এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • কোলকাতা পুলিশের ফেবু পেজ থেকে

    pi
    নাটক | ০৩ আগস্ট ২০১৭ | ১০০২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • nei | 121.93.***.*** | ০৫ আগস্ট ২০১৭ ১৪:০১368374
  • কিছু দেখতে পাচ্ছি না কেন?
  • pi | 57.29.***.*** | ২০ আগস্ট ২০১৭ ০০:৪৮368375
  • কপুতে কোন সাহিত্যিকের আগমন হয়েছে সে খবর নিশ্চয় জানেন। তো রইল কোলকাতা পুলিস্গের পেজ থেকে কিছু
    নমুনা। বাকিদের নজরে এলেও দিয়ে দেবেন।
    -----

    '
    রহস্য-রবিবার

    পুরোনো কিছু সাড়াজাগানো কেসের ঘটনাপ্রবাহ লিপিবদ্ধ করার অনুরোধ শিরোধার্য করে গত রবিবার একটি মামলার কথা লিখেছিলাম ় সাড়া মিলেছে আশাতীত, অনুরোধ এসেছে আরও "গল্প হলেও সত্যি"র ় পেজের সদস্যরা যেমনটি চাইবেন, হবে তেমনটিই ় " রহস্য-রবিবার"-এর দ্বিতীয় কিস্তি পেশ করছি ় ভালো লাগলে বলবেন, খারাপ লাগলে তো অবশ্যই ়

    থানা বেনিয়াপুকুর ় কেস নম্বর ১০/২/৯৪, ৩০২ /২০১ আই পি সি ( ঈন্দিঅন এনল ওদে) ় খুন এবং প্রমাণ লোপাট ়

    হাড়হিমকরা দৃশ্য, প্রায় ভূতুড়েও বলা চলে স্বচ্ছন্দে় ভরদুপুরে বহু পুরোনো কবরের পাশ থেকে বেরিয়ে আছে দুটি পা ় দেখা যাচ্ছে পরনের জিনসের এক ঝলক ়

    ১৯৯৪-এর ১০-ই ফেব্রুয়ারি, কাহিনী প্রায় সিকি শতক আগের ়

    ১৮৪ , এ জে সি বোস রোড ় মল্লিকবাজারের খ্রিস্টান কবরস্থান, যার অবস্থান প্রায় ১০০ বিঘে জমির বিস্তারে, বহু স্মৃতির ধারক ও বাহক হয়ে ় চারদিকে উঁচু দেওয়াল, যার কিছু অংশ ইতিউতি ভাঙ্গা় ভিতরে বড় বড় আম-পাইন-মহুয়া-বট-অশত্থের ছায়ায় শায়িত বহু কবরস্থ শরীর, অনন্ত শান্তিতে ়

    প্রবেশদ্বারের পাশেই খ্রিস্টান বেরিয়াল বোর্ডের সেক্রেটারির অফিস ় পূর্বদিকে ক্রিমেটোরিয়াল স্ট্রিট , আর তার পাশেই জনবহুল জাননগর বস্তি ় সেক্রেটারি সাহেবের অফিসের কাছেপিঠে মালি আর কবরখননকারীদের ছোট ছোট কোয়ার্টার ় যাঁদের পরিবারের ছেলেপুলেদের কাছে কবরস্থানের বিস্তৃত প্রাঙ্গনই এক পৃথিবী খুশি ় এক কবর থেকে অন্য কবরের আড়ালে লুকোচুরি, আগডুম-বাগডুম, ঘুড়ি ওড়ানো, ভোকাট্টা ়

    শীতের এক বিকেল-ছুঁইছুঁই দুপুরে ঘুড়ি ধরতে গিয়েই কবরস্থানের দীর্ঘদিনের মালি লছমন সিংয়ের কিশোর পুত্রের চোখে পড়ে দৃশ্যটা, শুরুতে যা লিখেছি ় কবরসংলগ্ন জায়গা থেকে বেরিয়ে থাকা পা় আতঙ্কিত কিশোর সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসে জানালো বাবাকে ় পড়িমরি করে দৌড়লেন লছমন এবং অভিজ্ঞ চোখ নিমেষে বুঝে নিলো, বড়োসড়ো গন্ডগোল আছে কোনও ় কবরের মৃতদেহ রাখা হয় মাটির অনেক গভীরে, যাতে কুকুর-শিয়াল নাগাল না পায় আর দেহপচনের দুর্গন্ধও বাইরে না আসে ় এ দেহ কবরের নয় , হতেই পারে না ়

    খবর গেল সেক্রেটারি টেরেন্স স্ট্যানলি আর্নল্ড সাহেবের কাছে ় যিনি এলেন, দেখলেন এবং তৎক্ষণাৎ খবর দিলেন পুলিশে ় বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ এলো, কবর থেকে বেশ কিছু ফুট দূরে জংলা ঘাসজমির উপর আবিষ্কৃত হলো ছোপ ছোপ শুকনো রক্তের দাগ ় তার পাশেই একজোড়া কালো বুটজুতো ় সংশয়ের কোনও জায়গা ছিল না, খুনই ়

    ঘটনাস্থলের ছবি নেওয়া এরপর , মাটি খুঁড়ে মৃতদেহ উপরে তোলা , জল দিয়ে ধোয়ামোছা ় দেহ বছর পঁচিশের এক যুবকের, গলায় গভীর ক্ষত, হাতের তালুতেও কিছু ক্ষতচিহ্ন় পোশাক বলতে জিনস, ফুলহাতা সোয়েটার, তার নিচে স্যান্ডো গেঞ্জি ়

    অভিযোগ দায়ের করলেন আর্নল্ড সাহেব ় তদন্তের বল গড়াতে শুরু করলো, থানার সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখার অফিসাররাও মাঠে নামলেন় খুন অনেকই হয়, কিন্তু এটির মধ্যে রহস্যের উপাদান বেশি থাকায় খবরের কাগজগুলিতে বেরোলো ফলাও করে ় দ্রুত কিনারা করার চাপও যথানিয়মে বাড়লো পুলিশের উপর ়

    কলকাতা এবং তার আশেপাশে কোনও যুবক কি নিরুদ্দেশ হয়েছেন গত কয়েক দিনের মধ্যে ? কোনও মিসিং ডায়েরি হয়েছে কি ? খোঁজ নেওয়া হলো ় উত্তর নেতিবাচক় মুশকিল, দেহ শনাক্ত না হলে তদন্তে অগ্রগতির সম্ভাবনা কম ় শিকারের পরিচয় পেলে তবেই না শিকারির খোঁজ ়

    ইতিবাচক দিশা মিললো ঘটনার পরদিন দুপুরে ় পার্ক সার্কাস ময়দানে মালির কাজ করতেন এক ভদ্রলোক ় তাঁর দুই ছেলে, জ্যোতি রায় এবং রাম রায় বেনিয়াপুকুর থানায় এসে জানালেন, তাঁদের ছোট ভাই গোপাল রায় একটি কুরিয়ার সার্ভিস সংস্থায় ডেলিভারির কাজ করে ় গত ৬ তারিখ বেরিয়েছিল কাজে, ফেরেনি এখনও ় শহরের বাইরে যেতে হয় মাঝেমধ্যে গোপালকে, দু-তিন দিন পরে ফেরে় এবার পাঁচ দিন হয়ে গেল, কোনও আপদবিপদ হয়নি তো , এই আশঙ্কায় থানায় আসা ় ছবি দেখানো হলো দেহের, যা এক ঝলক দেখেই দুই ভাইয়ের কান্না জানিয়ে দিলো, খুন হওয়া ব্যক্তি গোপালই ়

    সেদিনই বিকেলে নীলরতন সরকার হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের সময় মামলায় এলো চমকপ্রদ মোড় ়হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান, প্রফেসর ডঃ রবীন বসু ময়নাতদন্ত শুরুর সময় তদন্তকারী অফিসারকে বললেন, মৃতের জামাকাপড় ভালো করে দেখেছেন তো ? প্রাথমিক দেখা হয়েছিলো আগেই় কী মনে হলো অফিসারের, আর একবার দেখলেন খুঁটিয়ে, এবং কিনারাসূত্র দেখা দিলো চকিতে, মেঘ না চাইতে জলের মতো ়

    এমনিতে জিনসের পকেটে কিছু নেই ় কিন্তু ভালো করে হাতড়ে দেখলে একটা জায়গা একটু ফোলা লাগছে ় খটকা, এবং দ্রুত নজরে এলো পকেটের ভিতর আলগোছে সেলাই করা আরেকটি ছোট পকেট ় যার ভিতরে ত্রিকোণ ছোট্ট রুমাল একটি, এককোণে এমব্রয়ডারি করা তিন অক্ষরের শব্দ ় রেশমা ়

    ময়নাতদন্তের পর প্রত্যাশামতোই ডঃ বসু জানালেন, এটি হত্যাকান্ড ় ব্যবহৃত হয়েছে ধারালো অস্ত্র ় মৃতের হাতের তালুর ক্ষতচিহ্নগুলি "দেফেন্সিভে ৌন্দ্স", প্রতিরোধ করতে গিয়ে আঘাত ়

    ওদিকে রুমাল উদ্ধারের পর এক মিনিটও দেরি করার বিলাসিতা দেখালো না পুলিশ ় ছুটলো মৃতের বেনিয়াপুকুরের বাড়িতে, "রেশমারহস্যের" হদিশ পেতে ় গোপালের দাদারা জানালেন, ভাইয়ের মুখে দু'-একবার রেশমার নাম শুনলেও মেয়েটিকে দেখেননি কখনও, জানেনও না কোথায় থাকে ়

    ওঁরা না জানলেও কুরিয়ার সংস্থায় গোপালের এক সহকর্মী জানতেন ় তাঁর দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে পূর্ব কলকাতায় রেশমার বাড়িতে পৌঁছনো গেল ় রেশমা তখনও জানেন না , গোপাল খুন হয়েছেন ় প্রথমে মুখ খুলছিলেন না, রুমালটা দেখাতেই সত্যিটা বেরিয়ে এলো অনর্গল ় সঙ্গে অঝোর কান্না ়

    গোপালের সঙ্গে রেশমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো , যা একেবারেই মেনে নিতে পারছিলো না গোপালের তিন বন্ধু ় জাননগরের নাদির ও রাজ এবং তপসিয়ার আজাদ ় এরা তিনজনই রেশমার প্রণয়প্রার্থী ছিলো ় যাদের রেশমা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলো, সে গোপালকেই ভালবাসে ় ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিলো এ নিয়ে বিস্তর গোপালের সঙ্গে বাকি তিনজনের ় এক নারী, তিন তরবারি !

    পাওয়া গেল সম্ভাব্য মোটিভ, যা যথেষ্ট ছিল তিনমূর্তির বাড়ি অবিলম্বে হানা দেওয়ার জন্য ় তিনজনই দেখা গেল ফেরার, মহল্লায় দেখা যাচ্ছে না হপ্তাখানেক ধরে ় খোঁজ শুরু হলো হন্যে হয়ে, গঠিত হলো একাধিক বিশেষ দল ় ছড়িয়ে দেওয়া হলো সোর্স শহরজুড়ে ়

    ১৭ ই ফেব্রুয়ারি ধরা পড়লো নাদির গোপন সূত্রের খবরে, বাঁ হাতের তর্জনীতে দেখা গেল পুরোনো ক্ষতচিহ্ন ় কী করে হলো ? ভাজা মাছটি উল্টে খেতে শেখেনি, এমন মুখ করে নাদির বললো, এন্টালিতে গাড়ি সারাইয়ের গ্যারেজে কাজ করে সে, টিনের পাতে লেগে কেটে গিয়েছিলো ় গ্যারেজে যাওয়া হলো নাদিরকে নিয়েই, ডাহা মিথ্যে ধরা পড়লো ় এরপর গ্রেফতার এবং লালবাজারে টানা জেরার পর নাদির ভাঙল এবং মচকালোও ় জানা গেল, যা ঘটেছিল আর যেভাবে ঘটেছিল ়

    খুনটা হয়েছিল ৬ ফেব্রুয়ারির রাতে, পূর্বপরিকল্পনামাফিক ় প্রণয়ঘটিত ঈর্ষা ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠেছিল তিন বন্ধুর কাছে ় ঘটনার দিন গোপালের সঙ্গে মিটমাটের অভিনয়, তারপর সন্ধে নামতে কবরস্থানের নির্জনে মদ্যপান আকন্ঠ ় হঠাৎই একসময় একযোগে গোপালকে আক্রমণ ় রাজ আর আজাদ চিৎ করে ফেলে দেয় আর নাদির বুকের উপর চেপে ক্ষুর চালায় গলায় ় প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলো গোপাল, ধস্তাধস্তিতে বাঁ হাতে আঘাত পায় নাদির , লুঙ্গিতে লেগে যায় রক্তের দাগ ় এরপর পুরোনো একটি কবরের পাশেই অগভীর গর্ত খুঁড়ে অনভিজ্ঞ হাতে তিনজন চাপা দেয় মৃতদেহ ় পালানোর সময় কবরস্থানের প্রত্যন্ত সীমানায় নাদির পুঁতে দেয় রক্তমাখা লুঙ্গি ও ক্ষুর ় যা উদ্ধার হয় নাদিরেরই বয়ান অনুযায়ী ়

    আজাদ ধরা পড়ে মাসখানেক পর ় দুজনেই আদালতে দোষ কবুল করে স্বীকারোক্তি দেয় ় রাজ ধরা পড়ে প্রায় বছরখানেক পর, পালিয়ে গিয়েছিলো দূরদেশে ়

    পোস্টটি একটু বড় হয়ে যাচ্ছে বোধহয় ়রবিবার এতটা সময় নিতে দ্বিধা হয় কিঞ্চিৎ, সংক্ষিপ্ত করা যাক ়

    গ্রেফতার থেকে দণ্ডাদেশ এক দীর্ঘ পথ ় সামান্য ভুলচুকেও অভিযুক্ত খালাস পেয়ে যেতে পারে ়নিখুঁত তদন্ত করেছিলেন হোমিসাইড বিভাগের সুশান্ত ধর ় তখন সাব-ইন্সপেক্টর ছিলেন, এখন স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের এ সিপি ় ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা রক্ত যে মানবদেহের এবং গোপালের জামাকাপড় আর নাদিরের ক্ষুর ও লুঙ্গিতে লেগে থাকা রক্ত যে একই গ্রুপের, সেটা ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণ করা থেকে শুরু করে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ একমুখী অধ্যবসায়ে সংহত করা, কাজটা নেহাত সহজ ছিল না ় পেশ করা হয় নিশ্ছিদ্র চার্জশিট, ফাঁকফোকর ছিল না কোনও ়

    আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে নাদির ও আজাদকে ় আদেশ বহাল রাখে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ় সাজার মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে দুজনের ় রাজ এখনও সংশোধনাগারে, বিচারাধীন ়

    কী দাঁড়ালো শেষ পর্যন্ত ?

    ফেলুদার গল্পেই হোক বা বাস্তবে, গোরস্থানে সাবধান !'
  • pi | 57.29.***.*** | ২০ আগস্ট ২০১৭ ০০:৫০368376
  • আরেকটি।

    '#ইতিহাসেরআয়নায়

    ঘটে যাওয়া অপরাধ এবং তার কিনারা , আর মাঝেমধ্যে কিছু অন্যরকম সামাজিক বা মানবিক কাজ ় এ যাবৎ এই পেজের পোস্টগুলির মোটামুটি এটাই নির্যাস ়

    অনেকেই পেজটি পছন্দ করেছেন , করছেন ় তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ় বেশ কিছু অনুরোধ সম্প্রতি এসেছে ইনবক্সে, পুরোনো মামলার পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ইতিহাসের কথিত বা অকথিত কিছু কাহিনী যদি ভাগ করে নেওয়ার কথা বিবেচনা করি আমরা ় সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতেই এই পোস্ট ় একটু স্বাদবদল হলে মন্দ কী ! আপনাদের পছন্দ হলে ইতিহাস ফিরে দেখবো আমরা কোনও কোনও দিন ়

    কলকাতা পুলিশের ইতিহাস শতাব্দীবিস্তৃত ় বিদগ্ধ গুণিজনের নানা গবেষণা আছে সে ইতিহাসের বিবর্তন নিয়ে, আছে একাধিক তথ্যসমৃদ্ধ বই ় যাতে গচ্ছিত রয়েছে বহু জানা-অজানা গল্প-কাহিনী ় তেমনই একটি ভাগ করে নিচ্ছি ়

    যাঁর বসবাস আমাদের নিত্যদিনের নিশ্বাস-প্রশ্বাসে, তাঁকে দিয়েই শুরু ় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , আইনের মারপ্যাঁচে যাঁর একবার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর উপক্রম হয়েছিল, এবং খোদ লালবাজারে !

    দাগী চোর স্বয়ং রবিঠাকুরকেও ছাড়লো না , জোড়াসাঁকোর বাড়ি থেকে সাধের ঝর্ণা-কলমটি চুরি হয়ে গেল় সেটা ১৯১৮ সাল ,নোবেলপ্রাপ্তির পাঁচ বছর পরের ঘটনা ় কবি ভারি বিচলিত, প্রায়ই আক্ষেপ করেন ঘরোয়া সাহিত্যআড্ডায় ়

    এর কিছুদিন পর হঠাৎ একদিন জোড়াসাঁকো থানার ওসি -র আবির্ভাব ঠাকুরবাড়িতে ় সঙ্গে কোমরে দড়ি-বাঁধা চোর, যার থেকে উদ্ধার হয়েছে অন্য অনেক চোরাই জিনিসপত্র ছাড়াও একটি ঝর্ণা-কলম এবং চোর কবুল করেছে, কলমটি এই বাড়ি থেকেই চুরি করা ়

    দেখেই চিনলেন কবিগুরু, শিশুর উচ্ছাসে ফেরত চাইলেন কলমটি ় অফিসার আইনের ব্যাখ্যা শোনালেন রবীন্দ্রনাথকে় জানালেন, চুরির মামলা চলবে, শনাক্তকরণের জন্য যথাসময়ে ডাক পড়বে ় তারপর তিনি কোর্ট-মারফত কলম ফেরত পাবেন ় আইনমাফিক ভুলও বলছেন না কিছু ; কবি আর কথা বাড়ালেন না ়

    যে সময়ের কথা বলছি, তখনও পাকাপাকিভাবে লালবাজার কলকাতা পুলিশের সদর দফতর হয়ে ওঠেনি, পুলিশ কোর্ট বসতো লালবাজারের একটি অংশে ় সেই কোর্ট থেকে নিয়মাফিক সমন পৌঁছলো ঠাকুরবাড়ি, সাক্ষী হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে হাজিরার আইনি নির্দেশ !

    বিব্রত কবি ঘটনাটি জানালেন পুলিশ কোর্টে মামলা লড়েন এমন এক আইনবিদকে ় সৌরীন্দ্র মোহন মুখোপাধ্যায়, ঠাকুরবাড়ির খুবই ঘনিষ্ঠ, ওকালতির পাশাপাশি মননশীল সাহিত্যচর্চা করেন় কিংবদন্তি গায়িকা সুচিত্রা মিত্র এঁরই কন্যা ় সৌরীন্দ্র মোহনের " উকিলের ডায়েরি " বইটিতে পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের সরস বিবরণ রয়েছে ়

    রবিঠাকুর সৌরীন্দ্রবাবুকে জানিয়ে দিলেন, কলম ফেরত পেতে কোর্টে হাজিরা দেওয়ার ঝক্কি তাঁর পোষাবে না ় বিষয়টি নজরে আনা হলো ম্যাজিস্ট্রেটের ,যিনি প্রবল সাহিত্যানুরাগী এবং সব জেনেশুনে মাথায় হাত ় কোর্ট ইন্সপেক্টরকে ডেকে তুমুল বকাঝকা করে বললেন, আইনের সামান্য ব্যতিক্রম যদি রবীন্দ্রনাথের জন্যও করা না যায়, তবে তেমন আইন না থাকাই ভালো ় সৌরীন্দ্রবাবুকে করজোড়ে বললেন, হাজার কাগজ সই করার ফাঁকে খেয়াল করেননি, সমন পাঠিয়ে তিনি মহাপাপ করেছেন, কবি যেন ক্ষমা করে দেন ় এর পর ? কলম যথোচিত যত্নে ফেরত পাঠানো হলো রবীন্দ্রনাথের কাছে ়

    সত্যি যদি কলম শনাক্ত করতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো নোবেলজয়ী বিশ্বকবিকে ? কী কান্ডটাই না হতো !

    ভাগ্যিস হয়নি ় ফুটবলের পরিভাষায় বললে প্রায় " গোললাইন সেভ " !'
  • de | 24.139.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:২৭368380
  • বাঃ - বেশ তো!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন