এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে একটি বাল্য প্রেমের গল্প

    PRABIRJIT SARKAR লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯৩ বার পঠিত | রেটিং ১ (১ জন)
  • হাঁদাকান্তের বাল্য প্রেম
    প্রবীরজিৎ সরকার

    আমি ছিলাম হা করা ছেলে। সব কিছু হা করে দেখতাম। আসলে আমার মুখের গড়ণের দোষে খেয়াল না করলে মুখটা হা হয়ে থাকত। তার উপর অনেক কিছু বুঝতাম না। কাউকে জিগ্যেস করলে বোকা হাঁদা বলে দাগিয়ে দিত। মা পর্যন্ত তাই বিশ্বাস করত।

    আমার যখন  ছ সাত বছর তখন মাথায় ঢুকল একটা প্রশ্ন: প্রেম পত্র বস্তুটা কি? যুবক বয়সের ইমরান খানের মত দেখতে আমার মেজ মামাকে আমাদের বাড়িওয়ালার বড় মেয়ে- ডাক নাম খুকু- বেশ কয়েকটা এই পত্র লিখেছিল। মামা আমাদের আশ্রয়ে থেকে এই প্রেমের ডাকে সাড়া দিতে সাহস পান নি। হয়তো ইচ্ছুক ও ছিলেন না। মামা খুব ভোরে উঠে বাথরুমে গিয়ে সকাল বেলা কারখানায় চলে যেতেন। খুকুদি সেটা খেয়াল করেছিল। তাই আগে থাকতে ভাড়াটেদের জন্য নির্দিষ্ট বাথরুমে ঢুকে বসেছিল। সে যুগে ঘরের মধ্যে বাথরুম কমই দেখা যেত। একটু দূরেই হত।  যেই মামা ঘুম চোখে বাথরুমের দরজা খুলতে গেছে খুকুদি  বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে লোক জড় করে মামাকে গণ ধোলাই দেওয়ালো। পরে বাবা এসে মামাকে উদ্ধার করে। আমার পরের ভাইটা চালাক চতুর। ও জেগে উঠে শুনতে পেল বাবা বলছে, 'এরপর প্রেম পত্রগুলো প্রকাশ করে দেব।'

    বাড়িওয়ালার ছেলে মেয়েদের সঙ্গে ঝগড়া বেশি গড়িয়ে গেলে ওই ভাইটা আমাদের বলত, 'একদিন বাবা প্রেম পত্র প্রকাশ করে দেবে তখন বুঝবে ঠ্যালা।' আমি হা করে ভাবতাম ওটা কী?

    এরপর ওই পাড়া ছেড়ে নতুন এলাকায় বাবা বাড়ি করে উঠে এলেন। আমাদের চরিত্র গঠন আর সংস্কৃতিবান গড়ে তোলার জন্য বাবা তার এক অফিস সহকর্মীর পরামর্শে মনিমেলায় ভর্তি করে দিলেন। তখন আমার বয়স দশ বছর।

    মনিমেলায় গিয়ে শুনলাম এক তের চোদ্দ বছরের মনি ভাই এক মনি বোনকে প্রেমপত্র দিয়ে খুব মার খেয়েছিল। তখন কিছুটা নিজের ভাষা জ্ঞান থেকে বুঝলাম কাউকে ভাল লাগলে চিঠি দিয়ে জানানোকে প্রেম পত্র বলে। এই জানানো খুব খারাপ ব্যাপার। শত‌ং বদ মা লিখ: মুখে যত পার বল কিছু লিখনা। দাদাদের হাতে পড়লে বেদম পিটবে।

    এই ঘোটালায় মেয়েটা মনিমেলা ছেড়ে দিয়েছিল। পরে আবার ফিরে আসে আর উচ্চতা অনুসারে আমার পাশে দাঁড়াতো। মাজা মাজা রং আর মুখটা বেশ সুন্দর। ওই বয়সে সুন্দরী বলতে এরকমই কিছু মনে হত। ওর ডাকনাম পুঁটি। ভাল নাম মনে নেই। ও টুকটাক আমার সঙ্গে কথা বলত। আমার ভালোই লাগতো। আবার ভয় হত।

    ওর আরেক বোন (খুড়তুতো) আমার পিছনে দাঁড়াত। নাম শিলু। প্রথমে আমার আগে দাঁড়াতো। পরে উচ্চতায় বেশি বাড়েনি। তাই অনিচ্ছা সত্বেও ওকে আমার পরে দাঁড়াতে হত।

    মনি মেলায় নানা রকমের খেলা হত। একটা খেলা ছিল তিন জনের গ্রূপ করে দুজন হাতে হাত দিয়ে পালকি বানিয়ে একজনকে বসিয়ে দৌড়াত। প্রথম প্রথম পুঁটিকে বসিয়ে দৌড়াতাম। ও আমার কাঁধে একটা হাত আর ওর নরম উরু আমার হাতের উপর রেখে আরাম করে বসত। কিন্তু নাম পুঁটি হলেও ও বেশ ভারী ছিল। আমি খুব রোগা আর দুবলা ছিলাম। একদিন দৌড়াতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়লাম। আর পুঁটির পিঠে চড়ে বসলাম। শিলু হোঁচট খেয়ে আমার উপর পড়ল। দুটো নরম মেয়ের মাঝে স্যান্ডউইচ হয়ে আমার ব্যথা লাগলো না। অনেক কষ্টে দুটো মেয়েকে চটকে উঠে দাঁড়ালাম। ওরা বলল,'তুমি বসে থাক আমরা তোমায় নিয়ে দৌড়াব'। তারপর থেকে এই খেলা হলে ওরা আমায় বসিয়ে রেস লড়ত। আমার লজ্জা লাগত আবার আরামও লাগত। দুহাত দিয়ে দুটো মেয়েকে জড়িয়ে ওদের নরম হাতের উপর বসতাম। তখনো জাঙ্গিয়া পরার কথা জানতাম না। ওরাই বলল এরপর থেকে জাঙ্গিয়া পরে এস। বড় হোচ্ছ। তখন আমার বয়স এগারো বারো। মা কে বলতে মা বলল এখনই কি দরকার!

    খো খো খেলতে গিয়ে মঞ্জু নামে আরেকটা মেয়ের সঙ্গে ভাল রকমের ধাক্কা লাগলো। ও বলে উঠলো ধ্যাৎ। আমার লাগলো নরম বুকের সঙ্গে বুকের পরশ। কেমন একটা সুখানুভূতি জেগে উঠলো। কিন্তু এটাই প্রেম কিনা জানতাম না। ওই শিলু ছাড়া আর সবাই আমার চেয়ে বয়সে বড়। শিলু হয়তো সম বয়সী কিন্তু দ্রুত লম্বা হয়ে ওর আগে আমার দাঁড়ানো ওর পছন্দ ছিল না।

    স্কুলে আমায় হাঁদা ভাবার কোন কারণ ছিল না। দৌড়ঝাঁপ খেলাধুলায় সম বয়সীদের সঙ্গে পেরে উঠতাম না দুবলা আর টিং টিঙে ছিলাম বলে। কিন্তু অংক ছাড়া অন্য বিষয় নিয়ে পড়াশুনায় ওদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকতাম। ক্লাস এইটে উঠলাম অঙ্কে টায় টায় পাস করে। অন্য বিষয়গুলোতে ফার্স্ট হলাম। আমার স্কুলের অংকের মাস্টারমশাই ঘাড় ধরে তার কোচিং ক্লাসে নিয়ে এলেন। বিনা মূল্যে পড়াতেন আমাকে। ওনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যান্য মাস্টারমশাইরা অন্য বিষয়গুলো দেখিয়ে দিতেন। ওনারা চাইতেন স্কুলের কেউ ভাল রেজাল্ট করে স্কুলের নাম উজ্জ্বল করুক।

    ওই কোচিং যাদের বাড়িতে হত তাদের বাড়ির এক মেয়েও ওই কোচিং ক্লাসে রোজ আসত। ওর নাম নীলাঞ্জনা সংক্ষেপে নীলা। ফর্সা রং সুমধুর কন্ঠ। আর আমি লেখা পড়ায় ভাল শুনে আমার সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করত। স্যারদের নির্দেশে আমি ওকে পড়া বুঝিয়ে দিতাম। দুজনেই ক্লাস এইটে পড়তাম। ও ফ্রক পরত। ফর্সা মসৃন উরু দেখে কেমন জানি লাগত। আকর্ষণ হত আবার নিজেকে ধিক্কার দেওয়া বিকর্ষণ হত। এখন মনে হয় মাতৃ জঠর থেকে বেরোনোর স্মৃতি মনের অবচেতন স্তর থেকে এই ভাল লাগা সৃষ্টি করত। ওর মধুর ব্যবহারে প্রেম প্রেম ভাব জাগত। আবার ভয় ও হত। জানাজানি হলে স্যারদের কাছে মুখ দেখাব কি করে! ওর গাট্টা গোট্টা দাদাও ছিল। একটা চড় মারলে আরেকটা চড় খাবার জায়গা থাকবে না।

    কদিন বাদে ওর খুড়তুতো বোন ভর্তি হল। অপূর্ব সুন্দরী। তেমনি চোখ ধাঁধানো ফর্সা। ওর বাবা কি চাকরি করতেন জানি না। কাশ্মীরে থাকতেন। মেয়েটাকে মনে হত কাশ্মীর কি কলি। ছোট বেলায় জংলী বলে একটা সিনেমা মেজ মামা দেখিয়েছিলেন। ওখানে সুন্দরী সায়রা বানু অভিনয় করেছিলেন। মেয়েটাকে দেখতে এই সায়রা বাণুর মত। মেয়েটা আমার বয়সী বা এক দু বছর বেশি হতে পারে। ক্লাস এইটেই পড়ত। ওর নাম শ্বেতা। শাড়ি পরতো।

    আমাদের কোচিং সেন্টার ছিল বাস স্ট্যান্ডের কাছে। ওখান থেকে দশ মিনিট হাঁটা পথে আমার বাড়ি আর ওই শ্বেতার বাড়ি আমার বাড়ি ছাড়িয়ে আরো ভিতরে। এলাকাটা ছিল নয়া জনপদ। জলা জঙ্গলে ভর্তি। খুব দায়ে না পরলে কেউ কোন রিকশায় আসা যাওয়া করত না। রাস্তা চাঁদা তুলে এক রকম বানানো হয়েছিল। বেশির ভাগ সময় আমরা সবাই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতাম। আমার সাইকেল ছিল না। চালাতে ও শিখিনি। পুরোপুরি গ্রাম হলে ছেলে মেয়েরা সাইকেল করে যাতায়াত করে। মেয়েদের বুকের সামনে বসিয়ে ছেলেরা স্কুল কলেজ নিয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক দৃশ্য। এই রকম আধা গ্রামে দু চারজন সাইকেল চড়ে যাতায়াত করত। তাদের মধ্যে ওই মেয়েটার দাদা একজন। একটু গুন্ডা প্রকৃতির। ওই দাদা কয়েকবার ফেল করে ক্লাস এইটেই পড়ত। দাদা বোনে ঝগড়া ছিল। দাদার গুন্ডামি বোন বাড়িতে বলে দিত। তাই কোচিং সেন্টার থেকে সুন্দরী বোনকে নিয়ে ও ফিরত না। শ্বেতা আমার সঙ্গে ফিরত। ওই দাদার আড় গুণ নেই ছাড় গুণ আছে। বোনকে আমার সঙ্গে ফিরতে বাধ্য করে আবার আমায় চিবিয়ে চিবিয়ে হুমকি দিত। ঠিক কি বলত বুঝতাম না। মনে হত ও বলছে যদি দেখে বোনের সঙ্গে প্রেম করছি তাহলে উদোম করে বেদম ক্যালাবে।

    শ্বেতাকেও অনেক সময় পড়া দেখিয়ে দিতাম। দুই বোনকে বেশ ভাল লাগতো। ওদের মধুর ব্যবহার আমার মনে রং ধরাত। কিন্তু মার খাবার ভয় ছিল। তাই এড়িয়ে যেতাম। আগের গল্পে এর বেশি লিখতে সাহস হয় নি। চেপে গেছিলাম। আসলে যা হয়েছিল তাকে বলা যায় বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো।

    একদিন শ্বেতার সঙ্গে ঘটে গেল অঘটন। শীতের রাত। রাস্তায় লোক নেই। দুজনে হন হন করে হাঁটছি। ওর পাশে হাঁটব না বলে রোজকারমত আমি একটু জোরেই হাঁটছি। হঠাৎ বোমা ফাটল। কিছু লোক নানা অস্ত্র নিয়ে ছোটাছুটি করছে। পিছন থেকে একদল আর সামনের দিক থেকে আরেকদল। বিকল্প রাস্তা নেই দেখলাম। শ্বেতা আমায় জাপটে ধরে রাস্তার পাশে ঝোপের আড়ালে শুয়ে পড়ল। একই সঙ্গে ভয় আর নরম নারীর বুকের উষ্ণ পরশ। আমরা আবিষ্ট হয়ে শুয়ে রইলাম। কি ভাবে কি ঘটল বুঝলাম না। আমরা খাপে খাপে গেঁথে গেলাম। শীতের রাতে ওর উষ্ণতা আমার মধ্যে এক পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটাল মনে হল। ভয় মিশ্রিত এক অজানা সুখের অনুভূতি। কতক্ষন এই ভাবে দুজন দুজনকে জড়িয়ে শুয়ে রইলাম জানি না। এক সময় বোমা বাজি বন্ধ হল। চারি দিক নিস্তব্ধ। দুজনে দৌড়াতে লাগলাম।

    আমাদের নেশা ধরে গেল। আমরা মাঝে মাঝেই ওই ভাবে অন্ধকারে আবিষ্ট হতে লাগলাম। ও ওর বোনকে একদিন সব খুলে বলল। তারপর রোজ কোচিং শুরু হবার একটু আগে দুই বোন আমায় জড়িয়ে আদর করতে লাগল। আর জঙ্গলে না শুয়ে ওই নীলার ঘরে মিলিত হতে লাগলাম।

    নীলার ঘরটা কোচিংয়ের লাগোয়া। কোচিংয়ের একটা দরজা বাইরের দিকে আর ভিতরে নীলার ঘরে ঢোকার একটা দরজা। আমি একটু আগে আসতাম। বিনা পয়সায় পড়ি। একটু গতর দিয়ে সার্ভিস দিতাম। আগে এসে কোচিংয়ে শতরঞ্জি ঝেড়ে পেতে রাখতাম। পরে এক এক করে সবাই আসতো। এরপর থেকে দুই বোন আমার কাজ এগিয়ে রাখত। আমি বাইরের দরজা ঠেলে ঢুকে নীলার ঘরে ঢুকে পড়তাম। ওখানে শ্বেতাও থাকত।

    আমি বিশেষ কিছু বুঝতাম না। আমায় তাতিয়ে ওরা যা করার করত। আমায়ও আদর করতে বলত। আমি গালে চোখে ঠোঁটে আদর করতাম। দুজনেরই ঠোঁট আর নাকের মাঝখানের এলাকা বেশ সুগঠিত ছিল। কোন মেয়ের দিকে এক ঝলক তাকিয়েই চোখ গাল আর ওই এলাকা দেখে ফেলতাম। আমি মনে মনে এই ঠোঁটের নাম দিয়েছিলাম পিয়া পিয়া ঠোঁট। দুজনেরই এই পিয়া পিয়া ঠোঁট ছিল। ওখানে চুমু দিতাম। ইংরাজি সিনেমায় যে সব কায়দার চুমু দেখায় আমি সেগুলো জানতাম না। আমি ওদের নরম ঠোঁটে আলতোভাবে ঠোঁট ছুঁয়ে চুমু দিতাম।
     
    হাঁদাকান্ত আমি ভাবতাম সব বড় মেয়েদের বুকে দুধ থাকে। যেমন ভাবতাম কলা গাছ কাটলেই থোড় পাওয়া যায়। বাড়িতে একটা কলা গাছে কলা হল না। আমি মা কে বললাম ওটা কাটিয়ে থোড় বার কর। মা বিরক্ত হয়ে বললেন, 'বোগদার মরণ যত!' যাই হোক ওদের বুকে আদর করে মুখ দিয়ে দুধ খাবার চেষ্টা করতাম। এই রকম হাঁদা কাজ কর্ম ওদের তাতিয়ে দিত। উরুর দিকে আকর্ষণ হলেও হীনমন্যতায় ভুগে ওখানে চুমু দিতাম না। ওদের এসব ছিল না। আমার সামনে নিবেদনের ভঙ্গিতে হাঁটু মুড়ে বসে ওরা পালা করে আদর করত। তারপর পালা করে মিলিত হত -একদিন নীলা আরেকদিন শ্বেতা। কোন কোন দিন পর পর দুজন। আসলে অল্প বয়স। ভরা যৌবন। মেদহীন শরীর। রোগা দেখলে লোকে রুগ্ন ভাবে আর ভাবে এসবে অক্ষম। আমার যুবক বয়সে দল বদ্ধ মেয়েরা এমনকি বাচ্চাদের স্কুলের সামনে বসে থাকা যুবতী মায়েরা ও এরকম কোন ইঙ্গিত দিয়ে আমায় আওয়াজ দিত। যদ্দিন রোগা পাতলা ছিলাম ভালোই সক্ষম ছিলাম। ভুঁড়ি হবার পর বরং ঝিমিয়ে আছি।

    শ্বেতার বাড়িতে মুরগি পুষতো। সেই মুরগির ডিম দু চারটে সিদ্ধ করে নিয়ে এসে আমায় খাওয়াত। বাড়িতে সপ্তাহে একদিন আমিষ হত। ও সেটা জানত। তাই এই ব্যবস্থা।

    আগেই মনিমেলার মনি বোনেরা জাঙ্গিয়া পরার পরামর্শ দিয়েছিল। ক্লাস এইট অব্দি হাফ প্যান্ট পরতাম। সেই অবস্থায় এই সব চলছে। জাঙ্গিয়া পরতে আরো অস্বস্তি হত। জাঙ্গিয়ার নরম কাপড় আমায় কামার্ত করে তুলত। হিসু করতে অসুবিধা হত। তাই ছোট হাফ প্যান্টের উপরে ফুল প্যান্ট পরা ধরলাম। তখন এতো জিপ বা চেনের চল ছিল না। ভিতরের প্যান্টে একটা বোতাম খোলাই রাখতাম। এতে দুই বোনের সঙ্গে মিলনে আরো সুবিধা হত। আমি রোগা তাই ঢোলা জামা পরতাম। টাইট ফিট পরলে বেশি রোগা দেখায়। জামা প্যান্টে গুঁজে পরতাম না। তাতে প্যান্ট ভিজে থাকলে কেউ দেখতে পেত না।

    এই সময় পাড়ায় একটা বিক্ষোভ আমায় ঘাবড়ে দিল। স্কুলে ঢোকার মুখে স্কুলের বড় কর্তার বেকার ছেলে একটা স্টেশনারি দোকান দিয়েছিল। ছেলেটাকে আমরা স্বাধীনদা বলে ডাকতাম। ওর দোকান চালাবার চেয়ে একটা স্থানীয় মেয়ের সঙ্গে গল্প করায় মন বেশি ছিল। অনেক রাত অব্দি দোকান খোলা আর এই গল্প গুজব চলত। একদিন দোকান ভাঙচুর হল। কী ব্যাপার! খোঁজ নিয়ে জানলাম ওই মেয়েটা মা হতে চলেছে আর স্বাধীনদা লোকের তাড়া খেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তখন গর্ভপাত আইন সিদ্ধ ছিল না। কিন্তু হত। সেই ভাবে পাড়ার লোকের সহযোগিতায় মেয়েটার বিয়ে হল। কিন্তু আমার মনে ভয় ধরল। কিন্তু রোজকার প্রেম লীলা চলতে লাগল।

    ক্লাস টেনে ওঠার কিছু পরে পাড়ায় বোমাবাজি খুনখারাপি বাড়ল। একদিন আমার অংকের স্যারকে ধরে নিয়ে গেল এক দল। সারা স্কুলের বাচ্চারা গিয়ে ওই দলের ডেরায় হামলে পড়ল। ওরা ওনাকে ছেড়ে দিল। স্যার ভয় পেয়ে কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন।

    নীলা আর শ্বেতা আগেই খবর পেয়ে শেষের কদিন আমায় জড়িয়ে রোজ আদর করত আর চোখের জল ফেলত। আমার চোখে জল আসে না। বুকটা কেমন মুচড়িয়ে উঠত। মনটা হু হু করত।

    কিছু দিন বিরহে কাটার পর একদিন নীলার বাবা একজন কে দিয়ে আমায় ডেকে পাঠালেন। গিয়ে দেখি শ্বেতার বাবাও উপস্থিত। আমি রোগা পটকা ছিলাম তাই আমায় বারো কি তেরো মনে হত। বোকা হাঁদা একটা শিশু সুলভ লুক ছিল। দুজনের বাবা আমায় দেখে বলাবলি করল এতো দুধের শিশু। এই বয়সে এত করিৎকর্মা! আমাদের দুই মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা! একটা মারলে আরেকটা মারার জায়গা পাওয়া যাবে না। দেখলাম একটা পুলিশের লাঠি রাখা। দুজনেই ওই দিকে একবার তাকালেন। আর আমি ভয় পেয়ে গেলাম। এর মধ্যে দেখি আমার দুই কিশোরী প্রেমিকা পর্দার আড়ালে লুকিয়ে আমায় দর্শন দিল। ওদের ডাগর দু চোখে জল।

    ওখানে আরো দুই যুবক উপস্থিত ছিল। বুঝলাম ওরা শ্বেতা আর নীলার হবু বর। একজন আমার ক্লাসেরই ছাত্র। বয়সে বেশ বড়। আমরা ডাকতাম তপন দা বলে। ও নীলার বাড়ির কাছেই থাকত। পাড়ার বিশিষ্ট লোকের ছেলে। অন্য জন আর একটু বয়স্ক। ব্যায়াম করা পেটানো শরীর। সবাই পাপান দা বলে ডাকত। শ্বেতার বাড়ির কাছে থাকত। দুজনেই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, 'যা হয়েছে ভুলে যাও।'

    উঠে আসব ভাবছি। নীলা আর শ্বেতার মা এক সঙ্গে ঢুকলেন। মাঝ বয়সী কিন্তু দুর্গা প্রতিমার মত সুন্দরী মা মা ভাব। আমায় দুজনে দুহাতে ধরে অন্দর মহলে নিয়ে গেলেন। কেউ কিছু বলার আগেই ওরা বললেন ওর সঙ্গে আলাপ করব। অন্দর মহলে ঢুকতেই দুজনে দুটো ঘরে বানানো ছাপার সন্দেশ আমার মুখে পুরে দিলেন। আমি দুজনকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। ওনারা গাল টিপে হাত মুখে দিয়ে চুমুর আওয়াজ করলেন। তারপর একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিলেন। সেখানে দুজন কাঁদছিল। আমায় দেখে দুজনে আমায় দুদিক থেকে জড়িয়ে ধরল। ওদের মা দরজা বন্ধ করে দিলেন। আমার মুখের সন্দেশ কিছুটা করে দুজনের মুখে উগরে দিলাম।

    তারপর দুজনে মিলে আমায় আদর করতে লাগল। দুই বাবা ডান্ডা পেটা করবে এই ভয়ে আমার হিসু পেয়ে গেছিল। আর চেপে রাখতে পারছিলাম না।  ওরা আমায় টয়লেট যেতে দিল না। দুজনে সাক করে আমায় অসুবিধা মুক্ত করল। বলল আমরা তোমার জন্য সব পারি। আমি বুকে টেনে নিলাম দুজনকে দু হাত দিয়ে আর চুমু খেতে গিয়ে একটা মাদকতা মাখানো গন্ধ পেলাম। আমার ভয় ভয় ভাব কেটে গেল। পৌরুষের উদ্দামতায় দুজনের সঙ্গে মিলিত হলাম। তারপর দুজনের উপর শুয়ে রইলাম আবিষ্ট হয়ে। তারপর দরজায় লাঠির বাড়ি পড়তে লাগল দমাদদম। তাল কেটে গেল। দরজা খুলতেই দেখি লাঠি হাতে শ্বেতার বাবা। শ্বেতা আর নীলা আমার সামনে ছুটে গিয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়ালো। আমি ওদের বাবার সামনে দুই কিশোরীকে জড়িয়ে ধরে পিঠ চাপড়ে বললাম ভাল থেকো। হয়তো আর দেখা হবে না। রিক্ত নিঃস্ব সর্বহারা হয়ে টলতে টলতে বাড়ি ফিরলাম।

    পরে শুনেছিলাম তপন দা আর পাপান দা দুজনেই এই দুই অপরূপা মেয়েদের প্রেমে পড়ে এদের বিয়ে করতে চেয়েছিল। আমার দুই প্রেমিকার সঙ্গে ওই দুই পাত্রের  বিয়ে হয়েছে। নীলার বাপের বাড়ি আর শ্বশুর বাড়ি আমার বাস স্টপ যাবার রাস্তায় পড়ত। তাই মাঝে মধ্যে দেখা হত কলেজ যাবার পথে। দু চারটে কথা হত। শ্বেতার সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি।

    জানি না ওদের গর্ভপাত করে ছিল কিনা। দুজনেরই মেয়ে হয়েছিল মায়েদের মতই সুন্দরী। কখনো জানতে পারিনি ওদের বাবা আমি না ওদের স্বামী।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • এ যে পানু | 2607:fb90:3fe0:5a18:1184:6f11:904d:***:*** | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৩২541125
  • :€
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন