ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী বাজে লোক, কিন্তু আপনার কি হবে?
কুৎসা রটানোর কারণ:
১) অবশ্যই আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা
২) মেরুদন্ড সোজা রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চাকরি করেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরের দূর্নীতি নিয়ে বার বার সরব হওয়া
৩) ১৩ বার বদলি করেও দলদাসে পরিবর্তন করতে না পারা
৪) এতো অসহযোগিতা করার পরেও জনস্বাস্থ্যে ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামীর কাজকে মডেল হিসাবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হওয়া
৫) যেখানে যেখানে বদলি হয়ে গেছেন সেখানে ডাক্তারদের সংগঠিত করে দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জনস্বাস্থ্যে আরো ভালো কাজের উদ্যোগ নেওয়া।
৬) যেখানে যেখানে বদলি হয়ে গেছেন সেখানেই সাধারণ মানুষের ভালোবাসা কুড়ানো যার কারণে দলমত নির্বিশেষে ওনার বদলি আটকানোর জন্য মানুষের আন্দোলন
ভিত্তিহীন কুৎসা:
১) ২০০১ সালে যখন ওই ছাত্রের মৃত্যু ঘটে তখন ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী ছাত্রনেতা। তার মানে সে সব ঘটনার জন্য দায়ী এ কেমন যুক্তি?
২) তার নামে কোনো অভিযোগ, তদন্ত রিপোর্ট কিছু নাই। তার দোষ ওই সময় সে এস.এফ.আই নেতা ছিল। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন অভিযোগ থাকলেও কাওকে অভিযুক্ত বলা যায় না। এখানে তো অভিযোগই নাই।
৩) ওই ছাত্রের মা বলেছিলেন যে তার ছেলেও এস.এফ.আই করে, তাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এর নেতারা ওর উপর অত্যাচার করতো। এস.এফ.আই এর নেতা ডাঃ ধর, ডাঃ দুবে, ডাঃ গোস্বামী এরা আমার ছেলের ব্যাপারে সব জানে। এর অর্থ এই নয় যে খুনের ব্যাপারে জানে, এর অর্থ আমার ছেলে এস.এফ.আই করে এটা জানে। এটাকে বিকৃত ভাবে এস ইউ সি আই এর ছাত্রেরা অপপ্রচার চালায় শুধু "এরা সব জানে" এই বলে।
৪) ফাইনালি তো তৃণমূলেরই এক ছাত্র ধরা পরে ও জেল খাটে।
৫) এই তৃণমূল ও এস.ইউ.সি.আই মিলে জোট সরকারে আসে ২০১৩ সালে। তখন থেকে ২০২৪ সাল অর্থাৎ ১১ বছর না তৃণমূল না এস ইউ সি আই কেউ একবার ও ওই কেস নিয়ে একটা কথাও বলেনি।
৬) এখন বলছে সৌমিত্রের মা কে বিচার পাওয়াতে কেস রিওপেন করবে। করুক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সৌমিত্রের মা বেঁচে ছিলেন ২০১৩ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ ২০১১ - ২০১৩ দুইবছর সময় ছিল তৃণমূল ও এস.ইউ.সি.আই জোট সরকারের কাছে, ওই মা কে বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য। সরকার ওদের, পুলিশ ওদের। তখন ভুলে গেছিল? ভাবুন।
৭) দ্রোহের কার্ণিভাল সিনিয়র ডাক্তার দের ডাকে হয়েছিল। ওই দিন জুনিয়র ডাক্তাররা মানব বন্ধন করেছিলেন। দ্রোহের কার্ণিভাল এ প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তার পরের দিন ওনাদের সৌমিত্রের মা এর কথা মনে পড়লো। দুর্ভাগ্য তিনি ২০১৩ সালে মারা যান।
৮) বর্তমান পত্রিকার বিরুদ্ধে ডাঃ গোস্বামী আইনী নোটিশ পাঠানোর পরের দিনই বর্তমান তাদের পত্রিকায় লিখতে বাধ্য হয় ডাঃ গোস্বামীর বিরুদ্ধে তারা কোনো অভিযোগ করে নাই। কেন? ভাবুন। ভিত্তিহীন বদনাম করতে ট্যাক্স লাগে না। কিন্তু কেস খেতে হতে পারে। সেটা বর্তমান বুঝেছে। আপনি বুঝছেন না।
৯) একজন সাধারণ মানুষ যার একটু মাপ সম্পর্কে সাধাণ ধারণা আছে সেই জানে একজন পুরুষের বীর্য সাধারণত এক একবারে ২-৫ গ্রাম বের হয়। একজন ডাক্তার যার ডাক্তারির অভিগ্গ্তা ২৪ বছর তিনি এটুকু জানবেন সেটা খুব স্বাভাবিক। তাই ১৫০ গ্রাম বীর্য হতে গেলে কম করে ৩০ জন মানুষের দরকার সেটা তিনিও জানেন। তাই তার এরকম কথা না বলার চান্সই বেশী এটুকু তো যে কেউ মানবেন।
১০) অটপসি রিপোর্টে লেখা আছে, যে ১৫১ গ্রাম থকথকে তরল পাওয়া গেছে। "White thick viscid liquid” present inside the endocervical canal, which is collected as noted above. - wt 151 gm"
অর্থাৎ ডাঃ গোস্বামী “১৫০” ও “গ্রাম” ও “তরল” এই শব্দ গুলি বানিয়ে বলেন নি। শব্দ গুলি সত্য পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে ছিল।
১১) ডাঃ গোস্বামী বলেছেন "এর মধ্যে" “কিছুটা” রক্তমাখা “সিমেন হতে পারে।” তার ভিডিওতেও তাই বলতে শোনা যাচ্ছে।
এ থেকে বোঝা যাচ্ছে ডাঃ গোস্বামী বলেছেন
ক) ওই ১৫০ গ্রামের মধ্যে “কিছুটা” সিমেন হতে পারে
খ) ওই কিছুটাও শুধুই সিমেন না, “রক্তমাখা সিমেন” হতে পারে
গ) ওই কিছুটা যে রক্তমাখা সিমেনই সেটাও উনি বলেন নি, বলেছেন “হতে পারে”।
এখন এই "এর মধ্যে", “কিছুটা”, “হতে পারে” এই শব্দগুলো বাদ দিয়ে প্রচার হচ্ছে ওনাকে ম্যালাইন করার জন্য, ট্রোল করার জন্য।
১২) এই নিম্নরুচির প্রচার তৃণমূলের পক্ষেই সম্ভব। আর এই প্রচারে ওনারাই বার বার অপমান করছেন অভয়াকে। ওনারা ভাবছেন এসব বললে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে ডাঃ গোস্বামী আন্দোলন থেকে দূরে সরে যাবেন। কিন্তু সে গুড়ে বালি।
১৩) ওনার নাকি বি.এম.ডব্লিউ গাড়ি আছে: ওনার স্ত্রীর একটা স্কুটি আছে ।এছাড়া ওনার আর কোনো গাড়ি দূরের কথা, বাইক ও নাই। ব্যক্তিগত জীবনে ট্রেন, বাস, ওলা, উবের এই যাতায়াত করেন। মাঝে মাঝে সাইকেল নিয়েও বেরোতে দেখা যায় ওনাকে।
১৪) নার্সিংহোমে প্রচুর টাকা ফিজ নেন: উনি সরকারি ডাক্তার। কোনো প্রাইভেট প্রাকটিস করেন না। নার্সিংহোম ও না আর ওনার কোনো ব্যক্তিগত চেম্বার ও নাই। বরং মানুষ ওনাকে ফোন করলেই উনি তাদের সাহায্য করেন বিনা পরিচয়েই। সে রকম উদাহরণ ভুরি ভুরি। কোভিডের সময় সারা রাজ্যের মানুষ ওনার থেকে পরামর্শ পেয়েছেন।
এতে আসল সমস্যায় কারা পরছেন?
ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামীর বদনাম যারা করছেন তারা তৃণমূলের মাথার মদতে এটা করছেন। যারা করছেন, তারা অনেকে এর জন্যই টাকা পান। আপনি পান না। কারণ সরকারের এখন মাথাব্যথা এই আন্দোলন টা নিয়ে। দুর্নীতি প্রকাশ হযে যাওয়া নিয়ে। যে কেস গত ১৩ বছরে সরকার ভাবে নি সে কেস নিয়ে যে আজও কিছু করার নাই শুধু বদনাম করা ছাড়া সেটা বাচ্ছা ছেলেও বোঝে। ১৫০ গ্রাম বলে বলে বা ডা: গোস্বামী কে বিচিত্রবীর্য বলে নিজেদের নিম্নরুচির পরিচয় দিয়ে কদিন কাটাবেন। তারপর কি হবে? ওনার কিছু আসে যায় না। উনি মাথা উঁচু করে চলেন বলে ১৩ বার বদলি ছাড়া ওনার বিরুদ্ধে কিচ্ছু করতে পারে নি সরকার। ওনার যা মাইনে ওনার তাতে ভালো ভাবেই চলে যায় ও যাবে। কিন্তু আপনার কি হবে?
ক) হাসপাতালে তো আপনাকে যেতে হবে, আপনার মা বাবা ছেলে মেয়ের চিকিৎসার জন্য যেতে হবে। সেখানে গিয়ে কিন্তু পড়াশোনা করে পাশ করা ডাঃ বিচিত্রবীর্য না পেয়ে ঘুষ দিয়ে পাশ করা ডাক্তার পাবেন। বা টুকে পাশ করা ডাক্তার পাবেন বা ঘুষ দিয়ে মেডেল পাওয়া ডাক্তার পাবেন। ডাঃ বীরুপাক্ষ না ডাঃ অভীক কার কাছে নিজের ছেলেমেয়েকে নিয়ে যাবেন চিকিৎসার জন্য? নাকি ডাঃ সুবর্ণ? ভেবে দেখবেন! আপনি কোনটা চান?
খ) হাসপাতালে যে ওষূধ দেবে তা হবে জাল। আপনার রোগ সারতে ৩ দিনের জায়গায় ৩০ দিন লাগবে। নাও সারতে পারে। আপনার কাছের কেউ মারাও যেতে পারে।
গ) হাসপাতালে ব্যবহৃত জিনিস জালি করে ঘুষের বিনিময়ে আবার হাসপাতালে ঢুকছে। ফলে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, স্যালাইন, তুলো থেকে আপনার শরীরে এইডস বা অন্য কোনো জটিল রোগ ঢুকে পরতে পারে। আপনি কি সেটা চান?
ঘ) আপনার কেউ মারা গেলে সেই মৃতদেহ ছাড়াতে আপনাকে ঘুষ দিতে হবে, আপনি চান?
ঙ) আপনার ছেলে মেয়ে ডাক্তারি তে চান্স পেলে পড়াশোনা করে না ঘুষ দিয়ে পাশ করবে আপনি কোনটা চান?
তাহলে, আপনি এখন ডাঃ গোস্বামীর বদনামে ব্যস্ত থাকবেন নাকি হাসপাতালে দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ব্যস্ত হবেন সেটা আপনিই ঠিক করুন। ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামীর বিরোধিতা নাকি হাসপাতালের দূর্নীতির বিরোধিতা কোনটা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ? ভাবুন। ভাবা প্রাকটিস করুন।