এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • ইঁদুর-১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ২৭ জুন ২০২২ | ৭৮০ বার পঠিত
  •     ইঁদুর --১
    নমস্কার। আরে, এত্ত দর্শক,  উরিত্তারা! এ যে শালা জ্যাকপট!
    মাপ করবেন।   কোভিডের সময় থেকে অনেকদিন কেউ আমাদের নাটক দেখতে আসেনা তো, তাই আপনাদের , মানে এত সব জ্ঞানীগুণী, মানে বিদ্বজ্জন, মানে কি যেন বলে— সাহিবান, মেহেরবান, কদরদান,  ধ্যাৎ - সুশীল সমাজ।
     হ্যাঁ, সুশীল সমাজের লোকজন যেচে আমাদের নাটক দেখতে এসেছেন এতে আমরা কৃতজ্ঞ, অভিভূত,- আমোদিত, আহ্লাদিত এবং আনন্দিত, এই আর কি!
     নাটকের  নাম ?  হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলছি বলছি।   আমাদের আজকের নাটক  ইঁদুর।
     ইঁদুর?
     হ্যাঁ, ইঁদুর।  মানে মুষিক, চুহা, মুসুয়া।
    রাগ করবেন না।  কাল সন্ধ্যেতে পোস্টার সাঁটিয়েছিলাম ‘রোমিও জুলিয়েট’ । আমার দল একমাস ধরে ভাল করে রিহার্সাল দিয়েছে।  কিন্তু আজ ভোরবেলা স্বপ্নে দেখলাম আমি ইঁদুর হয়ে গেছি।  আর কে না জানে ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়।
    -- অ! তোমার মনে হল তুমি ইঁদুর আর অমনি স্ক্রিপ্ট বদলে দিলে? তা’ বেশ করেছ, কিন্তু পেছনে হাত দিয়ে দেখলে?
    --কী দেখব?
    --দেখবে তোমার লেজ গজিয়েছে কিনা। আরে ইঁদুর হয়ে গেলে লেজ গজাবে না?
    --শালা! আমার নাটক যখন শেষ হবে দেখবি সবার পেছনে লেজ বেরিয়েছে; তোর , আমার, তোর গার্লফ্রেন্ড। সব্বার।
    -এঃ বিষ নেই, তায় কুলোপানা চক্কর!
    -কোথায় রোমিও জুলিয়েট!লাভ জিহাদ, তলোয়ারবাজি, রাস্তায় ক্যাচাল,  বিষ খাওয়া-- তার বদলে এখন হবে ইঁদুরের কিচকিচ আর দৌড়োদৌড়ি।  এ তো শালা মহাঢপ! আমি বাড়ি যাব, তার আগে টিকিটের পয়সা ফেরত চাই।
    - কিন্তু এ নাটকে তো টিকিট নেই । আমাদের নাটক কেউ টিকিট কেটে দেখে না । তবে নাটকের শেষে আমরা দর্শকদের সামনে গামছা বিছিয়ে দিই। ভাল লাগলে যার যেমন মনে হয় দেবেন, নইলে দেবেন না।
    -- ফালতু রেলা নেবে না।  টিকিট নাও নি তো কী হয়েছে? আমাদের সময়ের দাম নেই? আমরা মানুষের নাটক দেখতে এসেছি, ইঁদুর-বেড়ালের গপ্পো নয় ।  উঠুন তো সবাই। চলুন বাড়ি গিয়ে সিরিয়াল দেখি।  ‘চাঁদ-সদাগর’ আর ‘সিঁদুর নিও না মুছে’ ; দুটোই ঝক্কাস!
    -- এক মিনিট! আপনি মানুষের নাটক দেখতে চান? নিজেদের কথা শুনতে চান?
    -- (ভেঙিয়ে) তা কেন, ইঁদুর-বেড়ালের প্রেম মান অভিমান এই সব দেখব; তাই তো?
    -- ভুল বুঝছেন; আপনারা এই নাটকটাই দেখবেন , কারণ আপনি আমি সবাই ইঁদুর।
     -- দেখ হে ছোকরা, বাড়াবাড়ি কর না ।  তুমি ইঁদুর হতে পার, আমি না।  আমি একজন সরকারি কর্মচারি।  রীতিমত পরীক্ষা দিয়ে ঢুকেছি; এখন প্রমোশন পেয়ে অফিসার।  তোমার মত বাপের অন্ন ধ্বংস করা বখাটে বেকার নই।
    - সত্যি কথাটা স্বীকার করতে লজ্জা পাচ্ছেন কেন? বলছি আপনিও একজন ইঁদুর। 
     -আচ্ছা-আ-আ! 
    বেশ, প্রমাণ কর; নইলে আমি কোর্টে যাব। মানহানির মামলা করব। সরকারি আধিকারিককে সর্বসমক্ষে ইঁদুর বলিয়া গালি দিয়া অপমান করা। এই এত্তজন সাক্ষী।
     কী হল? সব ফুস হয়ে গেল। চ্যালেঞ্জ নিবি না শালা?
    - নেব।  বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনি অফিসে ইঁদুর দৌড়ে সামিল হন নি? বসের কাছে কলিগদের নামে চুকলি করেন নি? বসের জন্মদিনে গিফট পাঠান নি? ওঁর মেয়েকে শহরের নামি স্কুলে ভর্তি করতে জ্যাক লাগান নি? ওঁর স্ত্রীর বাপের বাড়ি যাবার সময় ট্রেনের টিকিট কেটে দেন নি?
    সন্নাটা! সন্নাটা। 
     ১মঃ (দর্শকদের ) আমি জানি এবার আপনারা সবাই আমাদের নাটক দেখবেন।  খোলা মনে দেখুন।  কোন চাপ নেবেন না ।
    ২য়ঃ হেব্বি দিয়েছ গুরু, ব্যাপক।  ডারউইন সাহেবের এইসি কী ত্যায়সি করে দিলে।  বাঁদর থেকে মানুষ; আবার মানুষ থেকে ইঁদুর।
    ( ফিসফিস করে) কিন্তু স্ক্রিপ্ট কই? রিহার্সাল হয় নি, এবার ঝোলালে পাবলিক উদোম ক্যালাবে।
    ১মঃ (ফিসফিস করে) চাপ নিস না ।   আমরা আমাদের নিজেদের কথা বলব।  (পাবলিককে) এক মিনিট।
    ওরা তিনজন দর্শকদের দিকে পিছন ফিরে খেলার মাঠে ম্যাচে নামার আগের মত গোল হয়ে জড়াজড়ি করে ফিসফিস করে; কুড়ি সেকেন্ড।  তারপর দর্শকদের দিকে ফিরে বলেঃ
    ১মঃ ধন্যবাদ! এবার আমাদের নাটক শুরু হচ্ছে—“ইঁদুর” ; বা মুষিক বা মুসুয়া।  যার যে নাম পছন্দ।  মহাকবি বলে গেছেন—নামে কী বা আসে যায়!
    প্রথমে কোরাসের গান।  (৩য়কে) নে; শুরু কর।
    ৩য়ঃ রাষ্ট্রগীত ইয়া রাষ্ট্রগান?
    ১মঃ আরে ওসব নাটকের শেষে।  এখন নাটকের প্রস্তাবনা- পর রাষ্ট্রভাষা মেঁ; অব খুশ? লে, চালু হো জা।
     [ ৩য় সামনে এসে হাত জোড় করে শুরু করে। ও প্রথম লাইন গায়; বাকি দুজন দ্বিতীয় লাইন। এইভাবে চলতে থাকে।]
    কোরাসঃ
    “ কহত কবীরা সুনো ভাই সাধো, ঘোর কলযুগ আয়া হ্যায়।
    জব নাটক দেখনা ছোড়কে লোগোঁ ঘর মেঁ টিভি লায়া হ্যায় ।।
    টিভি চলাকর বিবি হমারী ভুলে পকানা খানা,
    অউর বচ্চে হমারে দিনভর গায়ে ওলে-ওলে গানা।
     বচ্চো কো নাহি দোষ-দোষ পর হম ভী তো হ্যায় মদহোশ,
    নেটফ্লিক্স কী ফিলিম দেখতে হী আতী হমারী জোশ।
    কহতে কবীরা--------।।
    ইসীলিয়ে তো আপকে সামনে খেল রহে ইয়ে নাটক।
    খুলেঁ বন্ধ অকল কে তালে, খুলে দিমাগ কে ফাটক।
    ইস  নাটক মেঁ আপ কে লিয়ে  হ্যায় ভরপুর মনোরঞ্জন,
    নয়ে দামাদ কো জ্যায়সে শাসু পরসে রোচক ব্যঞ্জন।
    কহত কবীরা---।।
    অব ইস নাটক কো দেখ হী লৌগে তো ক্যা বিগড়েগী আপকা?
    চিত ভী মেরী, পট ভী মেরী, আন্ঠা* মেরা বাপ কা!!
    [ তিনজনে স্টেজের উপর ঘুরে ঘুরে ওই একটি লাইন বারবার বলতে থাকেঃ চিত ভী মেরী, পট ভী মেরী, আন্ঠা মেরা বাপ কা!! বলতে বলতে হটাৎ ঘুরে গিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে—সাবধান!]
    ১মঃ আরে এই হলে একগাদা ইঁদুর দৌড়ে চলে গেল, ওই যে লুকিয়ে পড়ল।
    ২য়ঃ খুব সাবধান। ওই ইঁদুর থেকে প্লেগ ছড়াচ্ছে—টাইটানিক না বিউবোনিক?  না আরও কি কি!
    ১মঃ প্রথমে গুজরাত, তারপরে মহারাষ্ট্র – লাতুরের ঘটনা ভুলে গেলেন! একবার যদি প্লেগ হয় তাহলে--
    ২য়ঃ বগলের লসিকা গ্রন্থি ফুলিয়া উঠিবে, প্রচণ্ড মাথার যন্ত্রণা, গা বমি বমি ও জ্বর। ক্রমশঃ গাত্রতাপ বাড়িবে, জলপিপাসা বৃদ্ধি পাইবে, রোগী প্রলাপ বকিবে। তারপর ক্রমশঃ মৃত্যুর কোলে ঢলিয়া পড়িবে।  ইহার লাক্ষণিক চিকিৎসা হয়, দেহের উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ দরকার।
    ১মঃ কিন্তু ইঁদুর থেকে রোগ ছড়াচ্ছে, মরা ইঁদুর দেখলেই মিউনিসিপ্যালিটিতে খবর দেবেন।
    ৩য়ঃ ফালতু আতংক মত ফ্যায়লাইয়ে ভাইজি।  হমারি নগরপালিকা বহোত সক্রিয় হ্যায় ।  স্বচ্ছ ভারত যোজনা কে তহত শহর মেঁ সাফ সাফাই অতি উত্তম।  কোই প্লেগ-বেগ কা চক্কর নহীঁ  হ্যায় ।
    ২য়ঃ কিন্তু কাল থেকে শহরের অলিগলিতে মরা ইঁদুর দেখা যাচ্ছে।  কে বা কাহারা ঘরের ভিতর ইঁদুর মারিয়া রাস্তায় ফেলিতেছে। ইহা বিপদজনক।
    ১মঃ কী মুশকিল! আমি তো এই হলের মধ্যেই ইঁদুরের চলাফেরা ফিসফাস দাঁত কিচকিচ দেখতে  পাচ্ছি। এরা কি দলে দলে রাস্তাঘাট আস্তাকুঁড় থেকে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ছে নাকি? লক্ষণ ভাল মনে হচ্ছে না ।
    ২য়ঃ আরে ওই যে! (একজন মহিলাকে) উঠুন তো, শিগগির উঠুন। এই এত্ত বড় মেঠো ইঁদুর! আপনার চেয়ারের নীচে লুকিয়েছে!
    [ব্যাপক হট্টগোল আর চেঁচামেচির মাঝখানে ৩য় স্টেজের উপর ধপ করে পড়ে যায়। ]
    আরে কী হল?
    ১মঃ ( দৌড়ে গিয়ে ওর মাথা কোলে তুলে নিয়ে মাটিতে বসে পড়ে।) এ কী ! জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।  এমন করছিস কেন?
    ৩য়ঃ ভাইয়া, মাথায় বড় যন্ত্রণা,  অউর গলা সুখ রহা হ্যায় । পানি! থোড়া পানি!
    ১মঃ যা না! শীগগির কোথা থেকে জল জোগাড় করে আন।
    ৩য়ঃ (২য়কে) ভাইয়া, মুঝে ডর লগ রহা হ্যায় ।   আমি গাঁয়ে ফিরে যাব।  মায়ের হাতে তৈরি পাঁচন খাব।  হমে ঘর লে চলো।
     ২য়ঃ (হাঁটু গেড়ে ওর পাশে বসে)ভয় পাস না ভাই, তোর কিচ্ছু হবে না ।  আমি আছি, তোর মাকে বলে এসেছিলাম। তুই আমার সঙ্গে ফিরবি।
    (১মকে) আমরা একই পাড়ার।  ওকে সঙ্গে করে এনেছিলাম।  হথবন্দ আইটি আই থেকে মেশিনিস্ট পাশ করেছে।  টাটিবন্দে একটা ইন্টারভিউ কল পেয়েছে, পরশু।  এখন এই অবস্থায় তো— হঠাৎ করে এত জ্বর, মাথাব্যথা।
     ৩য় আচমকা পেট চেপে ওয়াক তুলে বমি করতে থাকে।  ২য়া লাফিয়ে উঠে রওনা দেয়।
    ২য়ঃ যাচ্ছি, যাচ্ছি। এক্ষুণি জল নিয়ে আসছি। 

     ১মএর কোলে ৩য়; ১ম একবার দর্শকদের দিকে তাকায়, একবার উইংসের দিকে। ওর চেহারায় আতংক। 
    ১মঃ জল আনতে কতক্ষণ লাগে? শালা সেই যে গ্যাছে তো গ্যাছেই। একঘন্টা হয়ে গেল কোন পাত্তা নেই ।
    ৩য়(বিড়বিড় করে) পানি! থোড়ি সী পানি!
    ১মঃ আসছে, তোর গাঁওবালে ভাইয়া জল নিয়ে আসছে। একটু ধৈর্য্য ধর বাপ! শালা কি কেটে পড়ল নাকি? ভয় পেয়েছে? কিসের ভয়? হুঁঃ যত্তোসব।
    ৩য় (বিড়বিড় করে) পানি! খুব পানি। বহোত পানি।
    ১মঃ কী? কী বলছিস?
    ৩য়ঃ (প্রলাপ) চুহে, চুহে।  চুহে অউর চুহিয়া। পর বিল্লি কৌন? চুহা হোগা, তো বিল্লি ভি হোগী। চুহা-বিল্লি খেল শুরু হোগা।
    আও আও! চুহে আও, চুহিয়া আও। আও মেরে বিরাদরিকে ।  আও, গম ভুলাতে আও; অব খুশি মনাতে আও। সব নাচতে গাতে আও, ব্যান্ড-বাজা কে সাথ আও।
    আও বিল অউর নালে সে, আও বন্দ গোদাম কে তালে সে। আও রসোই ঘর কে কোনে সে, আও খেত-খমার-কারখানে সে। 
    পানি ! পানি! বহোত পানি! বাঢ় কী পানি।  পানি ঘুস রহে বিলোঁ মেঁ।  বরবাদ হো জায়েঙ্গে হমারে বিরাদরি।  বেচারে চুহে! কহাঁ জায়েঙ্গে।  মরেঙ্গে, সব মরেঙ্গে!
    (ছটফটাতে থাকে) ভাইয়া, ভাইয়া! বচা লো। বেচারে চুহে অউর চুহিয়া কো বচা লো! ভাইয়া ! বচা লো মুঝে, ভাইয়া—য়া-য়া!  (খিঁচুনির সাথে শক্ত হয়ে যায়)।
     ১ম বিস্ফারিত চোখে ওকে দেখতে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে ভূতগ্রস্তের মত  উঠে দাঁড়ায়। কোমরের উত্তরীয়টি খুলে মৃতদেহটি ঢেকে দেয়।
    ( বিড়বিড় করে) জ্বর, মাথাব্যথা, বমি আর চলে যাওয়া। বিউবনিক না নিউমোনিক প্লেগ , কী যেন?
    খারাপ লাগছে? জানি আপনাদের খুব খারাপ লাগছে। আমার নাটকের দলের মৃতসাথীকে ছেড়ে দিয়ে পালাচ্ছি।  আমাকে খুব নীচ স্বার্থপর ভাবছেন, তাই তো?
    আমারই কি ভাল লাগছে ? কিন্তু কী করি বলুন তো? আর কী করতে পারতাম! ওর পাড়াতুতো দাদা ঢপ দিয়ে পালিয়ে গেল।  আর আমি? ওর সঙ্গে মাত্র আলাপ হয়েছে।
    ও, বাজে কথা বলছি? কী বলছেন ? আমার উচিত ছিল প্লেগের মড়া কোলে নিয়ে অপেক্ষা করা যতক্ষণ না কেউ আসে? তা আমাকে এসব ফান্ডা না দিয়ে নিজে করে দেখান না ! আপনি আচরি ধর্ম!
     আরে আমার বৌ আছে, দুটো ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমি সমাজসেবা মানবহিত  এর চক্করে পরে প্লেগ হয়ে টেঁসে গেলে ওদের কে দেখবে? আপনি? আপনারা?
    আরে কী দেখবেন, কত দেখবেন সব আমার জানা আছে। অল্পবয়েসি বিধবা, বীমা কোম্পানির টাকা।  হুঁঃ!
    আমি চললেম, এই রইল ও সাদা চাদরের নীচে; যাদের শখ আছে তারা যতক্ষণ কেউ না আসে এই মড়ার সঙ্গে বসে আলাপ চালিয়ে যান।  

    খানিকক্ষণ পরে একটি নীল আলোর বৃত্তে মৃতদেহটি ধীরে ধীরে মুখের চাদর সরিয়ে উঠে বসে।  ধীর লয়ে ওর মাথা নড়ে, ঘাড় ঘোরে এদিক ওদিক।  তারপর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে মাপা  পদক্ষেপে দর্শকদের দিকে এগিয়ে এসে ফ্যাকাশে হাসি হাসে।
    ৩য়ঃ ভাগ গয়ে; সব শালে ভাগ গয়ে। মেরে গাঁওবালে ভাইয়া, মেরা নাটক কে ডায়রেক্টর; সব হারামখোর। 
    যাকগে, পালিয়ে গিয়ে ভালই করেছে, নইলে মারা পড়ত।
    যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আমাদের মুষিকবাহিনী হামলা শুরু করেছে। একের পর এক শহর আত্মসমর্পণ করছে। ওই দেখুন, ঈশানপকোণে আমাদের ফৌজ বাহাদুরের মত লড়ছে। অগ্নিকোণে মানব সেনা আমাদের গেরিলা বাহিনীর সামনে অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করছে। শুনতে পাচ্ছেন-পশ্চিম দিগন্তে প্রদোষকাল, ঝঞ্ঝাবাতাসের দীর্ঘশ্বাস! মানবসভ্যতার অন্তিম দিন ঘনিয়ে এসেছে।
    আও হমলা বোল । 
     এবার তিনজন  দুই হাত মুখের সামনে নাকের উপর ধরে ইঁদুরের মুখ বানিয়ে ফুগড়ি খেলার ভঙ্গিতে উবু হয়ে বসে নাচতে নাচতে  এক দিক দিয়ে ঢুকে আর এক দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। 
     
     ৩য় এক হাত শূন্যে তুলে এক একবার একেকদিকে দেখায় এবং   চিৎকার করেঃ হামলা বোল্‌! 
     
    অদৃশ্য ভীড় স্লোগান দেয়ঃ   মনুষ্যরাজ খতম করো; মুষিকরাজ কায়েম করো।

     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন