আর পাইনি কোথাও। আর অন্য কোথাও পাওয়ার জন্য ছুটে বেড়াতেও চাই না। সব, সঅ..ব যেন এক জায়গায় থিতু হয়ে আছে। সকাল থেকে নিদাঘ দুপুর পেরিয়ে আরক্তিম সন্ধ্যা এখানে সব থমকে থেকেও কেমন যেন অবিরাম, নির্বাধ! কী এক অন্তরালের ফল্গুধারা বয়ে চলেছে। দাঁড়িয়ে থাকি বড়ো চাঁপা গাছটার নীচে, কেউ এসে পিছন থেকে কাঁধে আলতো হাত ছুঁয়ে বলে... "এসো জ্যোতির্ময়, এসো!" আমি যাই... হাসি... তুমুল গল্প চলে... সেখানে দুঃখী হতে ভালোবাসার কোনো দুঃখবিলাস চলে না। যথার্থ দুঃখীর কথা, নিরন্নের কথা, আর্তের আরতির কথা চলে... কাজ কাজ কাজ... এবং বেলা গড়ায়। যে বলেছিল "এসো জ্যোতির্ময়, এসো", সে-ই বলে, " সন্ধ্যা হলো মা... এবার এসো জ্যোতির্ময়"
রেনোয়ার ছবিতে সে গগন বৈরাগীর সুর খুঁজেছে। তার মাতিসের ক্যানভাস বদলে যায় হৈমন্তিক মেঠো পথে এবং সেখানেই নাকি দাঁড়িয়েছিল সলিটারি রিপারের সেই বিষণ্ণ একাকিনী। ভাবতে ভাবতে কীসের নেশায় যখন বুঁদ হয়ে ফিরি, দেখি নির্জন পুষ্করিণীতীরে ভ্যানগঘ ঢিল ছোঁড়ে এক... দুই... তিন… উশকো খুশকো... সেই জলতরঙ্গ মিলিয়ে যায় অতিদূর-অনতিদূরের নভোনীলরেখায়।
সে ধন্যবাদ দেয়... আজ সবার রঙে রং মিলাতে পেরে। জানি না অদৃষ্টের কোনো ধন্যবাদ সে পায় কিনা! আমি দিতে চাই... জানি না সে-দেওয়া দেওয়া হয়ে উঠবে কিনা! পথে, প্রান্তের এমনতর অনাবিল অনশ্বর বেদনা জানি না আমার মুখোমুখি হবে কিনা! তবে দেখেছি এই বিশ্বমাঝের মরমব্যাথা একের প্রাণে কেমন বাঙ্ময় হয়ে ওঠে...
তারা বলে... "চলো জ্যোতির্ময়, চলো" তারা চলে...
আমি দেখি এখানকার আকাশ বাতাস ফুলদল মেঘভার সকলে সক্কলেই বলে অহর্নিশ... চরৈবেতি চরৈবেতি।