এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কমলকুমার, অনিরুদ্ধ লাহিড়ি ও পিছুটানের কলকাতা..

    Debarshi Bandyopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩১ অক্টোবর ২০২০ | ১০২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  •  কমলকুমার-রাধাপ্রসাদ-হরিসাধন-চিদানন্দরা একটা পুরোনো কলকাতার বন্ধুদল। এ লেখা কিছুটা সে কলকাতা নিয়েও। যে কলকাতার গল্প আমাদের আজীবন বললেন কেউ কেউ। অনিরুদ্ধবাবু তাঁঁদের মধ্যে অন্যতম।


    আশি বছর বয়সী অনিরুদ্ধবাবু থাকেন কালীঘাটে। বইঠাসা একটা ঘরে একলাই। বন্ধুরা বিগত। তাঁর কলকাতাও বিগত। এককালে আড্ডার জন্য বিখ্যাত ছিল তাঁর ঠিকানা। সাহিত্যের আড্ডা। শিল্পের আড্ডা। সাথে পানভোজন। পিএনপিসি না। রসিকতা, যা বিগত।


    আমি কমলকুমার আর তাঁর কলকাতা খুঁজতে খুঁজতে পৌঁছই অনিরুদ্ধবাবুর দরজায়। আমার এ খোঁজ, অর্থাৎ ইতিহাস, আমায় নিয়ে গিয়েছে অনেক এমন দরজায় এ শহরের। যারা বাগবাজার, যারা ভবানীপুর, যারা গড়িয়া। যারা পাণ্ডিত্যের বটগাছ, মিশেছেন আজীবন বাঘেদের সাথে। তাই বামনদের সাথে আজ ঠিক পেরে ওঠেন না। বাড়িতেই থাকেন। একা। স্মৃতির সাথে।


    শুভ মুখোপাধ্যায়ের সাথে আলাপের পর আমি আশ্বস্ত হয়েছিলাম, নিঃসন্তন কমলকুমারকে নিয়ে বানানো বাংলাবাজারের মিথগুলি ভাঙবেন তিনি। ভেঙেছেনও। সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও জারি বোবাযুদ্ধের প্রচেতা ঘোষ আমায় নানা সময়ে ধরতাই দিয়েছেন কমলকুমারের। সঞ্জয়দা তো সঙ্গ করেছেন সন্দীপন বা অনন্যর সাথে কমলবাবুর। সঞ্জয়দা বলেছিলেন, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কমলবাবুর সেই প্রবাদপ্রতিম উক্তির কথা, নিকোনো আকাশের নীচে কি দীনা এই পৃথিবী...বলতেন, কমলবাবুর মতে, কলমের ডগায় ঈশ্বর এসে না বসলে এ লাইন লেখা যায়! মানিককে কমলবাবু বলতেন, মাইটি রাইটার!


    অনিরুদ্ধবাবু, শুভদারা সাউথ পয়েন্ট স্কুলে চাকরি করেছেন কমলবাবুর সাথে। কর্নফিল রোড, ফার্ন রোডের অলিগলি স্কুলের পর বিকেলে ঘুরে বেড়াতেন তাঁরা। গড়িয়াহাট মোড়ের কাছে দাঁড়িয়ে চলত তারপর আড্ডা। মদ্যপ, ভাবালু কত মিথে ভূষিত বাংলা বাজারে। শুভদা জানান, সবকটিই ভুল। রীতিমত সিধে লোক ছিলেন তিনি। জানান, নকশাল আন্দোলনকেও সমর্থন করতেন। আনন্দবাজারে আর্ট ক্রিটিকের কাজ ছুড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। স্কুলের সময় মদ ছুঁতেন না। তারপরেও পরিমিত পান করতেন। নিঃসন্তান এই জিনিয়াস স্কুলের  বাচ্চাদের বকলে, বিকেলে নিয়ম করে আইস্ক্রিম খাওয়াতেন। কারও তাঁবেদার ছিলেন না। বলা ভুল হবে না, আন্তর্জাতিক বাঙালি, যাদের পয়সা ছিল না কিন্তু মেধা ছিল আন্তর্জাতিক, তাদের শেষ আইকন ছিলেন তিনি..


    রামকৃষ্ণর ভক্ত কমলবাবু মনে করতেন কোনও কাজ তিনি একা করতেন না। ঠাকুরও করতেন তাঁর সাথে। আমার অনুমানকে মেনে নিলেন শুভদা আর অনিরুদ্ধদা দু জনেই। কমলকুমারের গদ্যে ফরাসির চেয়ে রামকৃষ্ণ কথাম্রতর প্রভাব, বঙ্কিমের প্রভাব অনেক বেশি। এমনকি, তিনি পণ্ডুলিপিও দেখেছিলেন মহেন্দ্র গুপ্তর। যে রহস্য, যে পৌরুষ, যে তন্ত্র তার ভাষায়, তার বীজ উনিশ শতক, মহেন্দ্র গুপ্ত। চিন্তার দাউদাউ!


    সত্যজিৎকে পাত্তা দেননি তিনি, যৌবনের বন্ধু হয়েও। সম্পর্ক রাখেননি। তাঁর অভিযোগ, সত্যজিৎ পথের পাঁঁচালিতে গ্রাম দেখাতে পারেননি। তবু সত্যজিৎ মনে করতেন, কমলবাবু শিল্পীদের শিল্পী। তাঁর চেয়েও মেধায় বড়ো। অথচ, এত দারিদ্র? তাঁর বিখ্যাত জবাব, "দারিদ্রে গ্রাঞ্জার আপনি বুঝবেন না মানিকবাবু।" আপনি আমার বাড়ি আসেন না কেন? "আপনার বাড়িতে অনেক বেশি ভদ্রলোক আজকাল.." সত্যজিতের এরপর জবাব, "যবে আসবেন জানাবেন, ক জন ছোটলোক আনিয়ে রাখব.."


    শত্রুতারও একটা রস আর শিল্প ছিল সে কলকাতায়।


    আজ যা লুপ্ত। বাঙালির পয়সা হয়েছে তবু ভিখিরি। অথচ ঠিক উল্টো ছিলেন তাঁরা। শহরে রেনোয়া এলে, কমলকুমারের বৈদগ্ধে মুগ্ধ হতেন। রাসবেহারী মোড়ের রাস্তায় সকালে দল বেঁধে হাস পার হত। সুনীল ও তাঁর বন্ধুদলকে নিয়ে নাটক করাতেন কমলবাবু। সুনীল নিজের প্রথম উপন্যাস কমলবাবুকে দিয়ে বলতেন, "জানি আপনি পড়বেন না, খাটের পায়া নড়লে তার নীচে রাখতে পারবেন হয়তো.."


    কমলবাবু বুঝতে পারছিলেন কলকাতার রুচি বদলাচ্ছে। অবিদ্যার চর্চা বাড়ছে। দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে এ জাতি। রুচির কারুকাজ, মেধার জটিলতা কমছে। গলা কাটা হচ্ছে এ জাতির। ঘাড় কাত করলেই বোঝা যাবে, গলা নেই। এখনও গলাটা বসে আছে ঘাড়ে, তাই বোঝা যাচ্ছে না। রাজধানী স্থানান্তরিত। দেশভাগের পর থেকেই ধারাবাহিক বিশ্বাসঘাতকতা। ইহুদিরা সচেতন তাঁদের দুশো বছরের ইতিহাস। বাঙালি বাংলা ভাষাই জানে না আর। মকাম্বোর পাশে বইয়ের দোকান বেচে রেসের মাঠে উড়িয়ে দিয়েছে, পরে ক্যাসেট বিক্রি করত সে বিখ্যাত বইদোকান। 


    সে কলকাতায় রেস্তোরাঁর নাম ছিল, বনফুল-সাঙ্গুভ্যালে-অম্রিতায়ন-অলিম্পিয়া। বুদ্ধিজীবীর নাম ছিল অরুণ মিত্র-সমর সেন-বিনয় ঘোষ-রাধাপ্রসাদ-সুবীর রায়চৌধুরী -বুদ্ধদেব বসু-নীহাররঞ্জন রায়-নীরদ চৌধুরী। অন্যদিকে, ঘটক-বিজন-দেবব্রত-হেমাঙ্গরা ভবানীপুর-কালীঘাট-রাসবেহারীজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জোড়া গীর্জায় বই বিক্রি করতেন নির্মলকুমার। সেসব পুরোনো বই কিনতে হাজির হতেন সত্যজিতরা৷ রাধারমণ মিত্রের আদলে সত্যজিৎ বানাতেন সিধু জ্যাঠাকে। সন্দীপন সুনীলকে খোচা মারতে ভোর ভোর তার বাড়ি হাজির হয়ে জানাতেন, "সুনীল তোমায় কে বেশি গালি দেয়? আমি না শ্যামল গাঙ্গুলী?"


    আজকের মত ছেলেমেয়েরা খোলামেলা মিশতে পারত না সে কলকাতায়। বিয়ের আগে বাইরে একরাত্রি কাটানো ছিল বিপ্লব। অসম্ভব। আজ অনায়াসে কাপলরা অদূর রাজ্যে ক মাস অনিশ্চিত চাকরি আর সম্পর্ক নিয়ে কাটিয়ে এসে ব্রেক-আপ করে। এ সময়টাই তো ব্রেক-আপ আর লক-ডাউনের। এখানে সবকিছুই অনিশ্চিত, ডিস্টোপিক, ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড। সে কলকাতায় কেউ মিথ্যে মিথ্যে কামু পড়ে জাহির করলে, ধরে ফেলতেন সন্দীপন, জানাতেন, "আপনার মুখে তো ছাপ নেই? কামু পড়েছেন বলছেন?" এরপর নিজেই নিজেকে ডক্টরেট দিতেন সন্দীপন। অনন্য রায় মদ্যপান উপলক্ষে রোজই স্মরণ করতেন, আজ জেমস জয়েস বা আজ তারকভস্কির জন্মদিন..


    অমিতাভ সেন-পরিতোষ ঠাকুর-ইন্দ্রনাথ মজুমদার-রমেন বসু-বিমান সিংহ এমন অসংখ্য মেধাবী মননের নাম ভাসত হাওয়ায় সে কলকাতায়। রবিশংকর বা রসেলিনি কলকাতায় এসে খোঁজ করতেন কমলবাবুর। অসুস্থ 


    ঋত্বিক ঘটক যদুবাবুর বাজারে নোংরা পাজামা পড়ে  চোলাই কিনে, ফোন করতেন ইন্দিরা গান্ধীকে, তারপর রাগতভাবে জানতে চাইতেন, "ওপার থেকে তার ছবি কবে আনা যাবে এ বাংলায়? কবে দেখানো যাবে তিতাস?"


    কমলবাবু ছাড়াও স্পিরিচুয়ালিটি পেয়েছি বিভূতিভূষণে, নবারুণে। বাংলাভাষার জোর এখানে। আজকের প্রজন্ম হন্যে হয়ে আশ্রয় খুঁজছে আধ্যাত্মে। নিউ লেফট বা অলটারনেটিভ রাইট যে নামেই ডাকা হোক। কথা ঈশারা বটে" আর শিল্প মানে "তাহাকে ডাকা"। মত কমলকুমারের। হাজার বছরে ইতিহাস এ দেশের। জানতেন কমলকুমার। তাই রাস্তায় লাল পতাকা উড়িয়ে চলে যাওয়া বাহিনী দেখে তাঁর রসিক মত,, অনিরুদ্ধ ওই কাপড়টুকু দিয়ে তো ল্যাঙট হয়ে যেত হে...কয়েক জনের... 


    কমলকুমার আজকের একটা জরুরি লেন্স হতে পারে। যদি আমরা ব্যবহার করি তাঁকে। কমলকুমার, এক মায়াবি পিছুটান..এক, সেকেলে বাবু ও সাহেব কলকাতার অজানা কিসসা..যেখানে জড়ানো বাঙালির আত্মপরিচয়ের ভ্রূণদলা.. 


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন