করোনার সময় গান্ধী থাকলে কি করতেন এনিয়ে ল্যান্সেটে একটা ভাল প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।
ডাঃ অভয় বাংগ এর লেখা।
সেই পদ্মশ্রযিডাঃ বাংগ, যাঁর শিশু ও মায়ের মৃত্যু কমানোর ফেনোমেনাল কাজ আছে, প্রত্যন্ত অতিদরিদ্র আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে, স্ত্রী ডাঃ রাণী বাংগ এর সংগে, যে কাজ দেশেবিদেশে হু, হপকিন্স ইউনিসেফ ল্যান্সেট থেকে শুরু করে বহু জায়গায় বহুপ্রশংসিত পুরস্কৃত, স্বীকৃত, দেশেও যে মডেল সরকারি পলিসিতে গৃহীত। ২০০৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনের গ্লোবাল হেলথ হিরো ছিলেন।
আরো প্রচুর কাজ আছে। কাজ বলতে একেবারে বড় স্কেলে বহু মানুষকে ইম্প্যাক্ট করার মত কাজ। আর সেইসব মানুষ মূলতঃ প্রান্তিক, মূলনিবাসী।
এখন ওঁর বক্তৃতা চলছে, আইসিএমআর এর গান্ধীজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে। গান্ধী এবং স্বাস্থ্য নিয়ে। সেটাই বিষয় হলেও, শুধু স্বাস্থ্য নিয়ে বলছেন না। এই কোভিড সময়ে গান্ধী থাকলে সার্বিকভাবেকী করতেন, সেই নিয়েই বলছেন।
বললেন, সবার আগে কোভিড নিয়ে ভয়, প্যানিক তাড়াতেন। ডেথ রেট অনেক কম, বয়স্ক, কোমর্ডিটি ছাড়া তেমন দুশ্চিন্তা করতে বারণ করতেন।
নিজেই অসুস্থের সেবার জন্য এগিয়ে যেতেন।দেশের প্রান্ত থেকে প্রান্তে। বিবিধ ব্যবস্থা নিতেন, নিজের হাতে।
'ন্যাচারাল পাওয়ার অব হিলিং ' এ জোর দিতেন। এই অগস্টের সেরোসারভেলেন্স দেখিয়ে দিয়েছে কতটা ছড়িয়েছে, যারা অসুস্থই হন নি বা নিজেরাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কীভাবে বেশিরভাগ মানুষ সেটা
ভেন্টিলেটরের থেকে বেশি ভাল ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতেন। ভাল হাইজিন, স্যানিটেশনের উপর বেশি জোর দিতেন, প্রচুর দামি হাস্পাতাল কেন্দ্রিক মডেল থেকে বেরিয়ে।
সেই স্বাস্থ্য মডেলকে প্রোজেক্ট করতেন, যা গ্রাম কেন্দ্রিক, খুব লো কস্ট, শুধু কোভিড না, অন্য রোগের জন্যেও, যা এখন কোভিডের কারণে অবহেলিত।
'আরোগ্য স্বরাজ' আনতেন।
মাইগ্রান্ট শ্রমিকদের এরকম দুরবস্থা হতে দিতেন না। গান্ধী নিজে গিয়ে গিয়ে এঁদের সবার সেবাশুশ্রূষা যত্ন আত্তি করতেন। খাবার, জল, ওষুধ দেওয়া ছাড়াও আশা দিতেন।
হয়তো মাইগ্রান্টদের সংগে নিজেই হাঁটতেন দিনের পর দিন। হয়তো এটাই হত ঐতিহাসিক দ্বিতীয় ডান্ডি মার্চ।
সব ধর্ম বর্ণের মধ্যে এরকম বিভেদ ঘটাতে দিতেন না। এই তবলিগি ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াতে দিতেন না।
তথাকথিত অচ্ছুত, ট্রাইবাল, মুস্লিম, ক্রিশ্চান সবার মধ্যে যেতেন, অবিশ্বাস দূর করার চেষ্টা করতেন।
পথে পথে ঘুরতেন।
প্রতিবেশীদের মধ্যেও এই কোভিডের কারণে যে অবিশ্বাস, অসহযোগিতার পরিবেশ তৈরি হল, হতে দিতেন না।
কোভিড কন্ট্রোল নিয়ে যা যা ভুল হত, স্বীকার করতেন। সবার সামনে। চৌরিচৌরার মতন।
বলতেন, কোভিড নিয়েই থাকতে হবে, বেশিরভাগই আসিম্পটোমেটিক, এটা আগে বলা হয়নি, সেই ভুল স্বীকার করতেন।
লোকাল ইকনমি, লোকাল কন্সাম্পশন, লোকাল সম্পর্কে জোর দিতেন। ওয়াশিংটন, বেজিং, দিল্লির আওতার বাইরে। লোকালাইজড লাভিং কেয়ারিং ইকনমি। গ্রামীণ স্বরাজ।
কন্সাম্পশন কমাতে বলতেন। নিড আর গ্রিডের মধ্যে পার্থক্য করতে বলতেন। ওয়ার্ল্ড নিড পূরণের জন্য যথেষ্ট, গ্রিডের জন্য নয়, এই মেসেজ আবার দিতেন।
গ্লোবাল ওয়ার্মিংং ও এর সংগেই জড়িত, বোঝাতেন।
এই প্যানডেমিকের মত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পিছনে এই গ্রিডের ভূমিকা বোঝাতেন।
স্বরাজ ইজ নট রুল অফ দ্য সেল্ফ বাট রুল অন দ্য সেল্ফ।
এইসব।