এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিস্থাপনকারীদের অনুভবের আলোতে সেই অন্তর্দৃষ্টির চরিত্র সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক ‘বিজ্ঞান’ শিক্ষাক্রম থেকে উৎসারিত নানা বিভ্রান্তিকর ধারণার উপরে একটা বই

    সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুলী
    বইপত্তর | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ১৫০৯ বার পঠিত
  • ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিস্থাপনকারীদের অনুভবের আলোতে সেই অন্তর্দৃষ্টির চরিত্র সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক ‘বিজ্ঞান’ শিক্ষাক্রম থেকে উৎসারিত নানা বিভ্রান্তিকর ধারণার উপরে একটা বই
    সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুলী (subhasganguly@gmail.com

    প্রাতিষ্ঠানিক ‘বিজ্ঞান’ শিক্ষাক্রম অনুযায়ী কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ‘বিজ্ঞান’-শিক্ষা ষাটের দশকের শেষ দিক পর্যন্ত চলছিল । ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে সেই শিক্ষাক্রম থেকে নিঃশ্বাসের সাথে পাওয়া নানা ধারণা থেকেই সামাজিক অসাম্যের অবসানের লক্ষ্য নিয়ে সেই সময়ে শুরু হওয়া এক আন্দোলনেরও শরিক হয়েছিলাম, কারণ তার প্রেরণা এসেছিল এমন এক মতাদর্শ থেকে যার উপরে ঐতিহাসিক ভাবে ‘বৈজ্ঞানিক’ ছাপ ছিল । রাষ্ট্রীয় হিংস আক্রমণের সামনে পড়ে সে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বিপুল সংখ্যার প্রাণনাশের পরে সত্তর দশকের শেষ দিক থেকে আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায় । বেঁচে যাওয়া অংশগ্রহণকারীরা অনেকেই পাগল হয়ে যাবার কাছাকাছি পৌঁছে যায় । সামাজিক অসাম্য যেমন ছিল তেমনই থেকে যায় ।
    তখন থেকেই ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক ‘বিজ্ঞান’ শিক্ষাক্রম থেকে পাওয়া ধারণাগুলির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দশকের পর দশক ধরে মনের মধ্যে আলোড়ন ও খোঁজা নিজের অজান্তেই চলতে থাকে । সেই খোঁজারই পথেই যেন হঠাৎই ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে আলোকোজ্জ্বল এমন সব অনুভবের লিখিত বিবরণ পাই যা এসেছে ‘পদার্থ বিজ্ঞান’ নামে পরিচিত শাখার সাথে জড়িত ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিস্থাপনকারীদেরই অনুভবের জগৎ থেকে । সেসব পড়তে গিয়ে একেবারে চমকে গিয়ে আবিষ্কার করি যে ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক ‘বিজ্ঞান’ শিক্ষাক্রম থেকে পাওয়া সব ধারণাগুলিই বিভ্রান্তিকর । যেমন ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিস্থাপনকারীদের অনুভব অনুযায়ী প্রকৃতি সম্পর্কিত তাঁদের নিজেদের প্রস্তাবিত সমস্ত ‘বৈজ্ঞানিক’ সূত্র/তত্ত্বই (যার ভিত্তিতে আজকের চোখ ধাঁধান নানা কারিগরী ফসল একই সাথে মঙ্গল ও অ-মঙ্গল দুইই ডেকে এনেছে) ‘সত্যের’ সন্নিকটস্থ মাত্র এবং অনিশ্চিত । সত্যিকারের সত্য কী তা মানুষের মানসিক সীমাবদ্ধতার কোনো দিনই জানা যাবে না । যেমন অণু –পরমাণু জগতের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে সাথে জড়িত একজন সুপরিচিত বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানের অনুভবের একটি টুকরোঃ “ বিভিন্ন জিনিষ সম্পর্কে নানা মাত্রার নিশ্চয়তা নিয়ে আমার সন্নিকটস্থ উত্তর ও সম্ভাব্য বিশ্বাস আছে। কিন্তু কোন কিছু সম্পর্কেই আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই” (During an interview in BBC’s Horizon Programme)। বিশ্বজগৎ বা প্রকৃতির নানা দিক নিয়ে ‘বৈজ্ঞানিক’ অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিস্থাপনকারীদের এক জন সুপরিচিত ব্যক্তি আলবার্ট আইনস্টাইন এক জায়গায় বলেছেন, “ বাস্তবতার পিছনের সত্যকে বুঝতে গিয়ে আমাদের অবস্থাটা অনেকটা এমন এক জনের মত যে ডালাবন্ধ এক ঘড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ঘড়ি কি করে চলছে বুঝতে চাইছে । সে ঘড়ির কাঁটা চলা দেখতে পারছে, টিক টিক শব্দ শুনতে পারছে কিন্তু ডালা খোলার উপায় তার জানা নেই” (Evolution of Physics) । ‘বিজ্ঞানের’ কথা এলেই ‘যুক্তি’ শব্দটার ব্যবহার খুব ব্যাপক । এই প্রসঙ্গেই আইনস্টাইনেরই অনুভবের আর একটি টুকরোঃ “ যুক্তির পথে এই সব প্রাথমিক সূত্র আবিষ্কার করা যায় না । সেসব আবিষ্কার করা যায় কেবল স্বজ্ঞার (intuition) পথ ধরে । বাইরের চেহারার পিছনে যে নিয়ম কাজ করছে সেই ব্যাপারে একটা অনুভূতি এই পথে সাহায্য করে (Preface to the book’Where is science going’ by Max Planck) । অণু-পরমাণুর জগতের সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টির সাথে যাঁদের নাম জড়িয়ে আছে তাঁদের অন্যতম একজন ব্যক্তি নিলস বোর (Niels Bohr) সেই জগৎ সম্পর্কিত আবিষ্কার প্রসঙ্গে বলেছেনঃ “ আমাদের কাছে এটা পরিষ্কার থাকা দরকার যে পরমাণুর বেলায় ভাষার ব্যবহার কবিতার মত। কবিও ঘটনার বিবরণে ততটা চিন্তিত নন, যতটা চিন্তিত নানা রূপক/ উপমা ও তাদের মধ্যে মানসিক যোগাযোগ তৈরী করায়” ( Discussions about language)। ভিত্তিস্থাপনকারীদেরই অনুভবের জগৎ যে প্রকৃতির জগতের রহস্যের সামনে কতটা অভিভূত তা তাঁদের বিভিন্ন জনের রচনায় নানা ভাষায় ফিরে ফিরে এসেছে । আইনস্টাইনের রচনা থেকে একটা উদাহরণঃ “সবচেয়ে সুন্দর যে অভিজ্ঞতা আমরা পেতে পারি তা হ’ল রহস্যময়তার (mysterious) অভিজ্ঞতা । এই হ’ল সেই সবচেয়ে ভিত্তিস্বরূপ আবেগ যা সত্যিকারের ...বিজ্ঞানের দোলনার ( cradle) কাছে দাঁড়িয়ে আছে”। (What I believe)
    এইরকম অসংখ্য সব অনুভবের টুকরোবাহী নানা রচনার সাথে পরিচিত হতে হতে নিজের যেসব ভাবনা আসতে থাকে তা নানা বন্ধু জনের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিনিময় করতে থাকি । তাদের অনেকেই এগুলিকে লিপিবদ্ধ করার তাগিদ দিতে থাকেন । আরও অনেকের সাথে এই ভাবনাগুলি ভাগ করে নেবার আশায় শেষ পর্যন্ত সেগুলি কয়েকটি ইংরেজী রচনা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ও কোন কোনটি ইন্টারনেটে বা ছাপা হয়ে পত্র–পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । তার পর এই বন্ধুদেরই দু’জনের (অমিয় ভট্টাচার্য ও শম্ভূ সেন) উদ্যোগে একটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয়, যার নাম দেওয়া হয় —
    THE FORGOTTEN MESSAGES FROM THE PIONEERS OF ‘SCIENCE’
    VS.
    INSTITUTIONAL ‘SCIENCE’ EDUCATION & ‘SCIENTIFIC’ SOCIAL ACTIVISIM
    সেই বইয়েরই ভূমিকার বাংলা অনুবাদ নিচের Link-এ গেলে পাওয়া যাবে । বইটার খবর কিছু সম্ভাব্য পাঠকের কাছে পৌঁ ছে দেওয়ার জন্য এই ‘টই’-টা খুলছি । আশা এই যে ভূমিকাটা পড়ে বইটা সংগ্রহে কারও কারও আগ্রহ হলেও হতে পারে এবং তার ফলে সেখানে উপস্থাপিত বিষয় নিয়ে সামাজিক স্তরে আলোচনা বা চিন্তা-ভবনার আদান প্রদানের একটা সূচনা হলেও হতে পারে ।
    বইয়ের ভূমিকার বাংলা অনুবাদের Link :
    https://drive.google.com/file/d/0B2_MdyMdGo1LbUR6R0JWQlhmWVp0NF9aVkl2WGpPVXhRQnpz/view?ts=5e392ef1

    বইটির প্রকাশনা সংক্রান্ত নাম ঠিকানা ও কোথায় কোথায় পাওয়া যেতে পারে তা নিচে দিয়ে দেওয়া হল —
    1. প্রকাশনা ঘর বা সংস্থার নাম ‘রূপালি’
    কিনতে পাওয়া যাবে এই ঠিকানায়। 206 বিধান সরণি, কলকাতা-700006
    প্রকাশকঃ সূর্যেন্দু ভট্টাচার্য, Mobile 9432062928 / 8479912362
    2. আগামী 9 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কলকাতা বই মেলা 2020 (সেন্ট্রাল পার্ক মেলা গ্রাউন্ড সল্ট লেক কলকাতা- 700091) :
    i) রূপালি(RUPALI), স্টল নং – 249,
    ii). ‘বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী’ – লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন, টেবিল নং -১০৬
    3. এছাড়া ইন্টারনেট-এর নিচের লিংকগুলতে গেলে বইটা কেনা যাবে
    https://boighar.in/product/the-forgotten-messages-from-the-pioneers/
    boighar.in
    https://www.amazon.com/dp/169972718X/ref=sr_1_2?keywords=THE+FORGOTTEN+MESSAGES+FROM+THE+PIONEERS+OF+SCIENCE&qid=1571326378&sr=8-2
    amazon.com

    লেখকের (সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুলী ) নিজের নানা রচনা সমন্বিত দুটো ওয়েব সাইটঃ
    1. https://sites.google.com/site/subhascganguly/writings
    Writings of Subhas Chandra Ganguly: An Open Access E- book
    2. https://sites.google.com/site/writingsofsganguly/home?pli=1
    RANDOM THOUGHTS
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন