এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বিপ্লবীর স্ত্রী

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৯২২৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Debabrata Chakrabarty | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:২১718171
  • পিনাকী আপনার বক্তব্যের সাথে অনেকটা সহমত ,আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেককে খুব কাছ থেকে দেখেছি ,অনেকের মধ্যে অনেক কিছু গড়বড় আছে , আমি এই রাজনীতির এমন একজনা কে চিনি যাকে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সকলেই চেনেন বা নাম জানেন -তিনি মারাত্মক রকমের মুসলমান বিদ্বেষী । অনেকের মধ্যে সামন্ততান্ত্রিকতার ভুত বাসা বেঁধে আছে ,অনেকের রাজনৈতিক পড়াশুনা বেদবাক্য পড়বার মত কিন্তু অনেকের মধ্যেই এই সমস্ত দ্বন্দ্ব প্রতিহত করবার একটা ধারাবাহিক প্রয়াস আছে । উচ্চ-নীচ হায়ারার্কি আপনি কমিউনিস্ট পার্টির লেনিনীয় গঠনতন্ত্রে এড়াতে পারবেন না ,কিন্তু তবুও এই মানুষগুলোর স্বার্থত্যাগ মনে রাখবার মত। সোমেনের কথা বা তার স্ত্রী শিখার কথা নিজস্ব সার্কেলের বাইরে তো কেউ লিখবেনা,জানবেও না তাও যদি কিছুমাত্র কোথাও রেকর্ড হয়ে থাকে ।
  • Ranjan Roy | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৫৬718174
  • পিনাকীর মূল বক্তব্যের সঙ্গে অনেকটাই একমত।
    হ্যাঁ, নারায়ণ দাস সান্যাল সম্বন্ধে দুচার কথা। বঙ্গে ওনাকে আমজনতা চেনেই না।
    সিপিআই (মাওবাদী)র পলিট ব্যুরোর এই সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে। উনি হার্টের প্রবলেমের চিকিৎসার জন্যে অন্ধ্র থেকে এসেছিলেন বলে সংবাদপত্রের খবর। তারপর ওঁর কোন খবর নেই। কোলকাতা থেকে ছোট ভাই মাধবদাস এসে খোঁজখুজি করলে ছত্তিসগড় পুলিশ অম্লানবদনে বলে যে ওঁদের কাছে এমন কেউ নেই, ওরা এমন কাউকে ধরে নি। অথচ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
    কয়েকমাস পরে মাধবদাস বিলাসপুরে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের রিট দায়ের করলে পুলিস কোর্টকে বলে অন্ধ্রে ওঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল। তাই ওরা সেখানে হ্যান্ড ওভার করেছে। কোর্টের কাছে অন্ধ্র পুলিশের তারবার্তায় বলা হয় ওই ভদ্রলোকের নামে এত গুলো আই পি সির ধারায় কেস আছে। সেখানে কিছুই প্রমাণ হয় নি।
    তারপর নারায়ণদাকে ছত্তিস্গড়ের রায়পুর ও বিলাসপুর সেন্ট্রাল জেলে পালা করে রাখা হয়। একের পর কেস ওঠে ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা কোর্টে। সমস্ত মামলায় উনি নাকি মাস্টারমাইন্ড। এমনকি উড়িষ্যার কোরাপুটে নকশালদের সশস্ত্র বাহিনী এসে শহর দখল করে জেল খালি করে সমস্ত বন্দীদের মুক্ত করে অস্ত্রাগার লুঠ করে যে কান্ডটি করেছিল--তারও মাস্টারমাইন্ড নাকি উনি!
    কিছুই প্রমাণ হয় নি। শেষে ছত্তিশগড় জনসুরক্ষা অধিনিয়মে বন্দী করে রাখা হয়। তারপর বিহার ও ঝারখন্ডেও কিছুই প্রমাণ হল না। এদিকে ফুসফুস ও লিভারে ক্যান্সার ধরা পড়ে্ছে। ছ'সাত মাস আগে সরকার মুক্তি দেয়।
    আদালতে নারায়ণদা কখনও অস্বীকার করেন নি যে উনি সিপিআই (মাওবাদী) পলিটব্যুরোর সদস্য। কিন্তু ওঁর উপরে লাগানো হত্যা/অপরাধিক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি চার্জ অস্বীকার করেছেন।

    ব্যক্তি নারায়ণদার কিছু কথাঃ
    নারায়ণদা রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মী ছিলেন। সুপুরুষ বলিষ্ঠ কাঠামো। ফর্সা শরীরে ঘন লোম--এই নিয়ে খেপালেও খেপতেন না। সবস্ময় হাসিমুখ।
    ওঁর বন্ধুবান্ধব ছিল অগণিত। পার্ক স্ট্রীটের উচ্চবর্গীয় পরিবারের ছেলেমেয়ে থেকে ভবানীপুর বেহালা সর্বত্র। বিতর্কে কখনও প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বার্তায় উত্তেজিত হয়ে মাত্রা হারাতেন না। জুনিয়ররা আবেগের বশে কারো সম্বন্ধে কোন নালিশ করলে সবটা শুনে ভাল করে ইনভেস্টিগেশন না করে মেনে নিতেন না।
    যতদিন বেহালার সংযুক্ত পরিবারে ছিলেন ( ওঁর বাবা পেশায় উলিল, ১৯৬৮তে ক্যান্সারে মারা যান), পারিবারিক দায়িত্ব পালনে যত্নশীল ছিলেন।
    সেই সময়ে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন অনন্ত সিং এর আর সিসি আই গ্রুপে। শুরু থেকে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্রের রোম্যান্টিসিজমের বিরোধিতা করেছিলেন। মূলতঃ ওনার ইনিশিয়েটিভে অনন্ত সিং এর দল থেকে একটা বড় অংশ বেরিয়ে এসে সিপিআই (এম-এল ) এ যোগ দেয়। যারা থেকে যান ( বৃটিশ শিক্ষিকা মেরী টাইলার ও অন্যেরা) তারা একটা বালখিল্য যদুগোড়া অভিযান করে দুদিনে ধরা পরে যান।
    সত্তরের দশকে পুরুলিয়ায় ধরা পরে নারায়ণ জেলে ছিলেন। তিনসঙ্গীর সঙ্গে জেল থেকে পালাবার চেষ্টায় ফের ব্যর্থ হলে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে শুইয়ে রাখা হয়।
    জরুরী অবস্থার পরে বামেরা ক্ষমতায় ফিরলে বন্দীমুক্তির সময় উনিও ছাড়া পান। সঙ্গীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে ঘর সংসার পেতে বসলেন।
    নারায়ণ ফিরে গেলেন তৎকালীন বিহারের হাজারীবাগে আন্ডারগ্রাউন্ড জীবনে। বাকি তো এখন পুলিশের খাতায়। ইউনিটি কমিটি হয়ে শেষে অন্ধ্রের জনযুদ্ধ গ্রুপের সঙ্গে মিলে সিপিআই (মাওবাদী)।
    প্রসাদ নাম নিয়ে একটি প্রবন্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন-- যদিও আমরা জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবার কথা বলি, কিন্তু কার্যতঃ পিরামিড স্ট্রাকচারের ফলে সেসব শেষপর্য্যন্ত শীর্ষে বসে থাকা মুষ্টিমেয় নেতার সিদ্ধান্তেই সীমিত হয়ে যায়। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? যে যায় লংকায় , সেই হয় রাবণ-- এর বিপরীতে সিস্টেমের মধ্যে কোন আভ্যন্তরীণ ক্রসচেক বা সেফটি ভালভ কী করে তৈরি করা যায়? বৃহত্তর গণতন্ত্রের প্রশ্ন কি অধরাই থেকে যাবে?
    --নারাণদা, এর উত্তর যে আজও খুঁজে চলেছি। জীবন এত ছোট ক্যানে?
  • Ranjan Roy | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৫৬718173
  • পিনাকীর মূল বক্তব্যের সঙ্গে অনেকটাই একমত।
    হ্যাঁ, নারায়ণ দাস সান্যাল সম্বন্ধে দুচার কথা। বঙ্গে ওনাকে আমজনতা চেনেই না।
    সিপিআই (মাওবাদী)র পলিট ব্যুরোর এই সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে। উনি হার্টের প্রবলেমের চিকিৎসার জন্যে অন্ধ্র থেকে এসেছিলেন বলে সংবাদপত্রের খবর। তারপর ওঁর কোন খবর নেই। কোলকাতা থেকে ছোট ভাই মাধবদাস এসে খোঁজখুজি করলে ছত্তিসগড় পুলিশ অম্লানবদনে বলে যে ওঁদের কাছে এমন কেউ নেই, ওরা এমন কাউকে ধরে নি। অথচ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
    কয়েকমাস পরে মাধবদাস বিলাসপুরে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের রিট দায়ের করলে পুলিস কোর্টকে বলে অন্ধ্রে ওঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল। তাই ওরা সেখানে হ্যান্ড ওভার করেছে। কোর্টের কাছে অন্ধ্র পুলিশের তারবার্তায় বলা হয় ওই ভদ্রলোকের নামে এত গুলো আই পি সির ধারায় কেস আছে। সেখানে কিছুই প্রমাণ হয় নি।
    তারপর নারায়ণদাকে ছত্তিস্গড়ের রায়পুর ও বিলাসপুর সেন্ট্রাল জেলে পালা করে রাখা হয়। একের পর কেস ওঠে ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা কোর্টে। সমস্ত মামলায় উনি নাকি মাস্টারমাইন্ড। এমনকি উড়িষ্যার কোরাপুটে নকশালদের সশস্ত্র বাহিনী এসে শহর দখল করে জেল খালি করে সমস্ত বন্দীদের মুক্ত করে অস্ত্রাগার লুঠ করে যে কান্ডটি করেছিল--তারও মাস্টারমাইন্ড নাকি উনি!
    কিছুই প্রমাণ হয় নি। শেষে ছত্তিশগড় জনসুরক্ষা অধিনিয়মে বন্দী করে রাখা হয়। তারপর বিহার ও ঝারখন্ডেও কিছুই প্রমাণ হল না। এদিকে ফুসফুস ও লিভারে ক্যান্সার ধরা পড়ে্ছে। ছ'সাত মাস আগে সরকার মুক্তি দেয়।
    আদালতে নারায়ণদা কখনও অস্বীকার করেন নি যে উনি সিপিআই (মাওবাদী) পলিটব্যুরোর সদস্য। কিন্তু ওঁর উপরে লাগানো হত্যা/অপরাধিক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি চার্জ অস্বীকার করেছেন।

    ব্যক্তি নারায়ণদার কিছু কথাঃ
    নারায়ণদা রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মী ছিলেন। সুপুরুষ বলিষ্ঠ কাঠামো। ফর্সা শরীরে ঘন লোম--এই নিয়ে খেপালেও খেপতেন না। সবস্ময় হাসিমুখ।
    ওঁর বন্ধুবান্ধব ছিল অগণিত। পার্ক স্ট্রীটের উচ্চবর্গীয় পরিবারের ছেলেমেয়ে থেকে ভবানীপুর বেহালা সর্বত্র। বিতর্কে কখনও প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বার্তায় উত্তেজিত হয়ে মাত্রা হারাতেন না। জুনিয়ররা আবেগের বশে কারো সম্বন্ধে কোন নালিশ করলে সবটা শুনে ভাল করে ইনভেস্টিগেশন না করে মেনে নিতেন না।
    যতদিন বেহালার সংযুক্ত পরিবারে ছিলেন ( ওঁর বাবা পেশায় উলিল, ১৯৬৮তে ক্যান্সারে মারা যান), পারিবারিক দায়িত্ব পালনে যত্নশীল ছিলেন।
    সেই সময়ে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন অনন্ত সিং এর আর সিসি আই গ্রুপে। শুরু থেকে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্রের রোম্যান্টিসিজমের বিরোধিতা করেছিলেন। মূলতঃ ওনার ইনিশিয়েটিভে অনন্ত সিং এর দল থেকে একটা বড় অংশ বেরিয়ে এসে সিপিআই (এম-এল ) এ যোগ দেয়। যারা থেকে যান ( বৃটিশ শিক্ষিকা মেরী টাইলার ও অন্যেরা) তারা একটা বালখিল্য যদুগোড়া অভিযান করে দুদিনে ধরা পরে যান।
    সত্তরের দশকে পুরুলিয়ায় ধরা পরে নারায়ণ জেলে ছিলেন। তিনসঙ্গীর সঙ্গে জেল থেকে পালাবার চেষ্টায় ফের ব্যর্থ হলে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে শুইয়ে রাখা হয়।
    জরুরী অবস্থার পরে বামেরা ক্ষমতায় ফিরলে বন্দীমুক্তির সময় উনিও ছাড়া পান। সঙ্গীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে ঘর সংসার পেতে বসলেন।
    নারায়ণ ফিরে গেলেন তৎকালীন বিহারের হাজারীবাগে আন্ডারগ্রাউন্ড জীবনে। বাকি তো এখন পুলিশের খাতায়। ইউনিটি কমিটি হয়ে শেষে অন্ধ্রের জনযুদ্ধ গ্রুপের সঙ্গে মিলে সিপিআই (মাওবাদী)।
    প্রসাদ নাম নিয়ে একটি প্রবন্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন-- যদিও আমরা জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবার কথা বলি, কিন্তু কার্যতঃ পিরামিড স্ট্রাকচারের ফলে সেসব শেষপর্য্যন্ত শীর্ষে বসে থাকা মুষ্টিমেয় নেতার সিদ্ধান্তেই সীমিত হয়ে যায়। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? যে যায় লংকায় , সেই হয় রাবণ-- এর বিপরীতে সিস্টেমের মধ্যে কোন আভ্যন্তরীণ ক্রসচেক বা সেফটি ভালভ কী করে তৈরি করা যায়? বৃহত্তর গণতন্ত্রের প্রশ্ন কি অধরাই থেকে যাবে?
    --নারাণদা, এর উত্তর যে আজও খুঁজে চলেছি। জীবন এত ছোট ক্যানে?
  • Ranjan Roy | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:৫৬718172
  • পিনাকীর মূল বক্তব্যের সঙ্গে অনেকটাই একমত।
    হ্যাঁ, নারায়ণ দাস সান্যাল সম্বন্ধে দুচার কথা। বঙ্গে ওনাকে আমজনতা চেনেই না।
    সিপিআই (মাওবাদী)র পলিট ব্যুরোর এই সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে। উনি হার্টের প্রবলেমের চিকিৎসার জন্যে অন্ধ্র থেকে এসেছিলেন বলে সংবাদপত্রের খবর। তারপর ওঁর কোন খবর নেই। কোলকাতা থেকে ছোট ভাই মাধবদাস এসে খোঁজখুজি করলে ছত্তিসগড় পুলিশ অম্লানবদনে বলে যে ওঁদের কাছে এমন কেউ নেই, ওরা এমন কাউকে ধরে নি। অথচ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
    কয়েকমাস পরে মাধবদাস বিলাসপুরে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের রিট দায়ের করলে পুলিস কোর্টকে বলে অন্ধ্রে ওঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল। তাই ওরা সেখানে হ্যান্ড ওভার করেছে। কোর্টের কাছে অন্ধ্র পুলিশের তারবার্তায় বলা হয় ওই ভদ্রলোকের নামে এত গুলো আই পি সির ধারায় কেস আছে। সেখানে কিছুই প্রমাণ হয় নি।
    তারপর নারায়ণদাকে ছত্তিস্গড়ের রায়পুর ও বিলাসপুর সেন্ট্রাল জেলে পালা করে রাখা হয়। একের পর কেস ওঠে ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা কোর্টে। সমস্ত মামলায় উনি নাকি মাস্টারমাইন্ড। এমনকি উড়িষ্যার কোরাপুটে নকশালদের সশস্ত্র বাহিনী এসে শহর দখল করে জেল খালি করে সমস্ত বন্দীদের মুক্ত করে অস্ত্রাগার লুঠ করে যে কান্ডটি করেছিল--তারও মাস্টারমাইন্ড নাকি উনি!
    কিছুই প্রমাণ হয় নি। শেষে ছত্তিশগড় জনসুরক্ষা অধিনিয়মে বন্দী করে রাখা হয়। তারপর বিহার ও ঝারখন্ডেও কিছুই প্রমাণ হল না। এদিকে ফুসফুস ও লিভারে ক্যান্সার ধরা পড়ে্ছে। ছ'সাত মাস আগে সরকার মুক্তি দেয়।
    আদালতে নারায়ণদা কখনও অস্বীকার করেন নি যে উনি সিপিআই (মাওবাদী) পলিটব্যুরোর সদস্য। কিন্তু ওঁর উপরে লাগানো হত্যা/অপরাধিক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি চার্জ অস্বীকার করেছেন।

    ব্যক্তি নারায়ণদার কিছু কথাঃ
    নারায়ণদা রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মী ছিলেন। সুপুরুষ বলিষ্ঠ কাঠামো। ফর্সা শরীরে ঘন লোম--এই নিয়ে খেপালেও খেপতেন না। সবস্ময় হাসিমুখ।
    ওঁর বন্ধুবান্ধব ছিল অগণিত। পার্ক স্ট্রীটের উচ্চবর্গীয় পরিবারের ছেলেমেয়ে থেকে ভবানীপুর বেহালা সর্বত্র। বিতর্কে কখনও প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বার্তায় উত্তেজিত হয়ে মাত্রা হারাতেন না। জুনিয়ররা আবেগের বশে কারো সম্বন্ধে কোন নালিশ করলে সবটা শুনে ভাল করে ইনভেস্টিগেশন না করে মেনে নিতেন না।
    যতদিন বেহালার সংযুক্ত পরিবারে ছিলেন ( ওঁর বাবা পেশায় উলিল, ১৯৬৮তে ক্যান্সারে মারা যান), পারিবারিক দায়িত্ব পালনে যত্নশীল ছিলেন।
    সেই সময়ে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন অনন্ত সিং এর আর সিসি আই গ্রুপে। শুরু থেকে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্রের রোম্যান্টিসিজমের বিরোধিতা করেছিলেন। মূলতঃ ওনার ইনিশিয়েটিভে অনন্ত সিং এর দল থেকে একটা বড় অংশ বেরিয়ে এসে সিপিআই (এম-এল ) এ যোগ দেয়। যারা থেকে যান ( বৃটিশ শিক্ষিকা মেরী টাইলার ও অন্যেরা) তারা একটা বালখিল্য যদুগোড়া অভিযান করে দুদিনে ধরা পরে যান।
    সত্তরের দশকে পুরুলিয়ায় ধরা পরে নারায়ণ জেলে ছিলেন। তিনসঙ্গীর সঙ্গে জেল থেকে পালাবার চেষ্টায় ফের ব্যর্থ হলে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে শুইয়ে রাখা হয়।
    জরুরী অবস্থার পরে বামেরা ক্ষমতায় ফিরলে বন্দীমুক্তির সময় উনিও ছাড়া পান। সঙ্গীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে ঘর সংসার পেতে বসলেন।
    নারায়ণ ফিরে গেলেন তৎকালীন বিহারের হাজারীবাগে আন্ডারগ্রাউন্ড জীবনে। বাকি তো এখন পুলিশের খাতায়। ইউনিটি কমিটি হয়ে শেষে অন্ধ্রের জনযুদ্ধ গ্রুপের সঙ্গে মিলে সিপিআই (মাওবাদী)।
    প্রসাদ নাম নিয়ে একটি প্রবন্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন-- যদিও আমরা জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবার কথা বলি, কিন্তু কার্যতঃ পিরামিড স্ট্রাকচারের ফলে সেসব শেষপর্য্যন্ত শীর্ষে বসে থাকা মুষ্টিমেয় নেতার সিদ্ধান্তেই সীমিত হয়ে যায়। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? যে যায় লংকায় , সেই হয় রাবণ-- এর বিপরীতে সিস্টেমের মধ্যে কোন আভ্যন্তরীণ ক্রসচেক বা সেফটি ভালভ কী করে তৈরি করা যায়? বৃহত্তর গণতন্ত্রের প্রশ্ন কি অধরাই থেকে যাবে?
    --নারাণদা, এর উত্তর যে আজও খুঁজে চলেছি। জীবন এত ছোট ক্যানে?
  • Debabrata Chakrabarty | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৩718175
  • একটু ছোট কারেকশন নারায়ণ স্যানাল নভেম্বর 2014 সালে হাজারীবাগ জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ,এখন 83 বছর বয়স । বাকি যে তথ্য দিলেন তার ৮০% জানতাম না । ধন্যবাদ ।
  • She | 126.203.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৮718176
  • জুকুর গণতন্ত্রতে আবার কাশ্মীর ইত্যাদি নিয়ে কথা বলা বারন। সেটা অবশ্য বিপ বাবু জেনে না জানার ভান করতেই পারেন।
  • | 183.24.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:২৯718177
  • বিপবাবুর জন্যে আজকের তাজা খবর বা জুকারবার্গের নবতম কীর্তি

    http://www.npr.org/sections/thetwo-way/2016/09/09/493267919/after-facebook-censors-iconic-photo-norwegian-newspaper-pushes-back

    সারাদিন এই নিয়ে এনপিআর তোলপাড়। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীও এই বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। ফেসবুকেগিয়ে Erna Solberg এর পাতাটি দেখে আসবেন।
  • U | 59.204.***.*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৪০718178
  • অমিত বাবু, আপনি তো এখন বাংগালোর বাসী, আগে চেন্নাইবাসী, ওয়েস্ট ম্যানেজ্মেন্ট কোম্পানীর বড়কর্তা - তাই নয়কি? আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগলো।
  • Amit Sengupta | 116.208.***.*** | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:০১718179
  • U
    ঠিক। ধন্যবাদ।
  • Ranjan Roy | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৮718181
  • অমিত,
    আপনি কি সেই কয়েকবছর আগে লুরুতে নাটক দেখতে গিয়ে পরিচয় হওয়া চশমাচোখে হাসিমুখের ব্যক্তিত্বটি?
  • Amit Sengupta | 116.5.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৫২718182
  • রন্জন,
    ঠিক ধরেছেন। আমি ই সে। গুরুতে রন্জন রায়ের লেখা পড়ে এগিয়ে গিয়ে আলাপ করেছিলাম।
    কবে আসছেন লুরুতে?
  • Ranjan Roy | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৬:১৪718183
  • আগামী বছর।
    বন্ধু ছাড়াও শ্বশুরবাড়ির পরবর্তী প্রজন্মের চারজন (পোলাপান) লুরুতেই আস্তানা গেড়েছে!ঃ))
  • π | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:৪৬718184
  • অমিতবাবু, আরো লিখতে পারেন তো।
    আর নাটক নিয়েই বা লেখেন না কেন ?
  • Amit Sengupta | 113.7.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:২৫718185
  • পাই ম্যাডাম,

    ১। চেষ্টা করব।
    ২। গুরুতে লোকেদের লেখার ক্ষমতা ও জ্ঞানের গভীরতা দেখে ভয় লাগে। তবুও।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন