এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পর্বে পর্বে ভয়

    ভজো
    অন্যান্য | ১৮ মার্চ ২০১৬ | ৬৫৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ভজো | 212.62.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৪:৪২704650
  • বীভত্স্য রসের চর্চার নিমিত্ত একটি টই খুললাম। প্রারম্ভিক হিসাবে দুটি লেখা থাকলো । আশা করি উত্সাহীরা যোগ দেবেন।
  • ভজো | 212.62.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৪:৪৪704661
  • মিষ্টিমুখ
    ----------

    বাড়ি ফিরে লেবু দেখলো সবাই বাড়ি চাপা পরে মারা গ্যাছে | ছোরদিদুর আমলের দোতলা বাড়ি | কলাবাগান বস্তি উন্নয়ন সমিতির তহবিল থেকে একটু একটু করে টাকা সরিয়ে বানিয়েছিলেন| ফাঁকা মিনিবাসে চেপ্টে যাওয়া কোলাব্যাং এর মত ছেতরে দুমড়ে আছে বাড়িটা | শর্ট সার্কিটের আগুন এদিক ওদিক ছিরিক ছিরিক জ্বলছে | মা কে এখনো ঢালাই ভেঙ্গে বের করা যায়নি | কাটা হাতটা কনুই অবধি বেড়িয়ে | মা হাতকাটা না হলে বেশ শাঁখাপলা কবজি এতক্ষণে বেড়িয়ে থাকতো ইঁট সুরকির মধ্যে থেকে| কেমন দেখতে লাগত ভাবলো একটু লেবু |ডালা খোলা তোবরানো ফ্রিজ টার দিকে এগিয়ে গ্যালো | রসকদম্ব থাকার কথা আধ বাক্স | কিম্বা ভাইদুটো হয়ত আগেই মেরে দিয়েছে| মানে মড়ার আগে |পাশের বাড়ির তোচনকাকু কাঁদছে| কাওকে বাঁচাতে পারলুম না রে|টোনা-মোনার মাথা দিয়ে ঘিলু ওহো হো হো | আবার কাঁদতে থাকলো| বাগানে ছড়িয়ে থাকা তেলতেলে মালগুলো তাহলে ঘিলু | কে একটা বলল আহা লেবুটা দেখতে পেলনা | কে একটা উত্তর দিলো ও তো সেই কোচিন গিয়ে| চারজন কনস্টেবল জায়গাটা দড়ি দিয়ে ঘিরছে | সিনেমায় দেখায় সেই রঙ্গীন টেপ না , কুযোর দড়ি | ভীড়ের মধ্যে দিয়ে আস্তে সুস্থে বেড়িয়ে ন পাড়ার গলি ধরলো | পুপুলদি হেলে দুলে ফিরছে| একটা রিসকো নিলো লেবু | কুটিঘাট চল | চারদিকে অন্ধকার নাবছে অলরেডি| সূর্য ফুর্জো ডুববে বোধায় | কালিকা টা বন্ধ না হলেই হয়|রিস্কালা যথারীতি প্যাচ প্যাচ | আরে তোমাদের বাড়িচাপা হলো কেমন বুঝছো? তাড়াতাড়ি চালা ,কালিকা বন্ধ হয়ে যাবে| তুই যে সেই চোলাই কেস খেলি কী হলো তার ? মাল্টার সঙ্গে এট্টু খেজুর না করলে রিসকো টানতে পারেনা | কী আবার হবে , বউ তো পেল এক লাখ|রঙ্গীন টিভি লিয়েছে | বুঝলে| বুঝলাম| যাক কালিকা মিষ্টান্ন ভান্ডার খোলা | রসকদন্ব দাও তো ! না নিয়ে যাবো না খাবো | না না বাক্সেই দাও| সাদা চিনিমাখানো হাতে বাক্স এগিয়ে আসে |

    গরম রস পরেছে বোধায়| চাকা চাকা ফোস্কা | রিস্কালা জিভ চাটছে | চটপট ঘাটের দিকে হাঁটা লাগালো লেবু | বাঁ পকেটে পলিপ্যাক টা ঠিক আছে তো| বেরোবার মুখে দুহাতা সমান ঘিলু তুলে নিয়েছিল ভাগ্যিস . এবার এই ঘাটের লাল ধাপিতে পা তুলে বসে রসকদম্ব মাখিয়ে ,আআহ ! জলের ওপর একটা বডি ভেসে যাচ্ছে না ? থাক ,আজ আর পচাপাচকো নয় |
  • ভজো | 212.62.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৪:৪৬704663
  • বিষক্ষয়

    ----------

    ধবলীপুর নিম্ন বিদ্যালয়ে রতন কে চিনিত না এরূপ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিরল | বালকবয়েসে কেহ আবৃত্তি করিয়া নাম কেনে , কেহ জিলিপি রেসে ফিবত্সর প্রথম হয়| রতন খ্যাতিলাভ করিয়াছিল ভয় পাইয়া | যে হেডমাস্টারমহাশয় কে ইস্কুলের দারোয়ান অবধি অসাক্ষাতে গোলবাবু বলিয়া সম্বোধন করিত ,সেই স্ফীতোদর ছাত্রঅনুকম্পাপ্রত্যাশী গোলক মিত্তির কে দেখিলেও রতন ভয়ে কম্পিত হইত| বয়স্যদের নকল করিয়া ভূগোল স্যারের গায়ে আরশোলা নিক্ষেপ তো দুরের কথা আরশোলা ও ভূগোল স্যারের মধ্যে কাহাকে বেশি ভয় পাওয়া উচিত এই সিদ্ধান্তটুকুও সে সাহস করিয়া লইতে পারে নাই | চারিপাশের সকল মনুষ্য, মনুষ্যেতর প্রাণী ,প্রায়ান্ধকার কেলাশরুম , বাথরুমের দেয়ালে অঙ্কিত ও "এর নাম ঘোঘো" চিহ্নিত কোনো এক অজ্ঞাতকুলশীলের দূরুহ দন্তবিকাশ ব্যঙ্গপ্রচেষ্টা , এই লিস্টির যথার্থই শুরু আছে শেষ নাই|

    তাই বলিয়া রতনের বয়স্যেরা হাল ছারিয়াছিল তাহাও নহে. নানারূপে বুঝাইয়া যখন কোনো কিনারা হইলো না তাহারা ঠিক করিল বিষে বিষক্ষয় করিবে. কেলাস ফাইবের রমাপদ অবশ্য ভাবার্থ করিয়াছিল বিশ হইতে বিশ অন্তর করিলে শুন্য পরিয়া থাকে , সে গণিতে অলিম্পিয়াড না কী একটা পাইয়াছে তাই সকলে প্রথমটা তাহার কথা মানিয়া লয়. কিন্তু ঈর্ষাপরায়ন অরিন্দম কোথা হইতে বাংলা স্যারকে সাক্ষী মানিয়া সাব্যস্ত করিল বিষ দিয়াই বিষের ক্ষমতা কাটাইতে হয় | অতএব যে এত ভীতপ্রান তাহাকে আরও ভয় দেখাও. স্বভাবতই ,দ্বিতীয় অংশটি বাংলা স্যার বলেন নাই| ছাত্রদলের গভীর মন্ত্রণা ও গুপ্তসভার খবর তাঁহারা রাখিতেন না|

    সরস্বতী পূজার দিনটি বালকদিগের কাছে বিশেষ আকর্ষণের | এই একটি দিন , প্রভাতে করজোড়ে অঞ্জলিপ্রদানপর্ব কোনক্রমে মিটিয়া গেলেই ইস্কুলে যেন মেলা বসিয়া যায়. পংক্তিভোজের আকর্ষণ তো আছেই ,তাহার চেও বড় মজা যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতা. রমাপদ গেলবত্সর আইনস্টাইন সাজিয়া প্রথম হইয়াছিলো. যদিও শোনা যায় পুরস্কারটি পাগল সাজার জন্যে প্রদত্ত| নিন্দুকে যাহাই বলুক সেজোমামার যাত্রার উইগ পরিয়া ঘন ঘন মাথা চুলকানো রমাপদ কে দেখিতে ভীড় মন্দ হয় নাই . এই পল্লীগ্রামে চাষী-পুলিশ-চাচা নেহরু সাজা প্রতিযোগীর সঙ্গে সকলেই পরিচিত| এইবত্সর নতুন কিছু চাই| রমাপদ কে হারাইতে হইবে| এই লইয়া তিনটি ছাত্র ,পূজার দুই দিবস পূর্বে,দ্বিতল সোপানের নিম্নে ক্লাস কাটিয়া জল্পনা করিতেছিলো| এমন সময় রতন ভয়ে ভয়ে তথায় হাজির|

    কীরে রতন , তুই কী সাজবি ?
    রতন নিরুত্তর|
    তোর তো সবেতেই ভয় , তুই বরং ভুত সাজ ! অরিন্দমের মস্করায় বাকি দুজন কৌতুকে গড়াইয়া পরিল|
    রতন নিরুত্তর| কিন্তু তাহার মনের মধ্যে যুদ্ধ চলিতেছে| সতীর্থদের কৌতুকের পাত্র হইতে কাহার ভালো লাগে| এদিকে অন্তরাত্মা অজানা ভয়ে গুটাইয়া আসিতেছে ভুতের নাম শুনিয়াই, তবু সে কাঁপিতে কাঁপিতে জিজ্ঞাসা করিল : ভুত আবার কেমন করে সাজে ?
    অরিন্দম ভারী মুরুব্বি ভঙ্গীতে বলিল: ভুত সাজা অত সোজা নয় বুঝলি? পুলিশ-কেরানিবাবু এসব তো জীয়ন্তে হয়| ভুত সাজতে গেলে আগে মরতে হবে|
    আবার কী একটা বিষম কৌতুকের কথা হইয়াছে এইভাবে অপর দুইজন হিক্কা তুলিয়া হাসিতে থাকিল| রতনের মনে হইলো সে এক্ষুনি ছুটিয়া পলায় না হইলে ভয়ঙ্কর বিপদ কিছু ঘটিবে| বুক ধরফর করিতেছে,কোনোক্রোমে কানে হাত চাপিয়া সে মাঠের দিকে দৌড় দিলো. শুনিতে পাইল পশ্চাতে সঙ্গীরা বলিতেছে: আহা এতে ভযের কী আছে, স্বরস্বতী পুজোর দিন আসিস আমরা সাজিয়ে দোবো !

    প্রতিদিনের মত তরিতবেগে বাটীতে ঢুকিয়া দেয়ালের দিকে মুখ করিয়া রতন হাঁপাইতে থাকিলো| রতনের পিতা এই দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত তাই গায়ে মাখিলেন না| সবে জমিতে কীটনাশক দিয়া ফিরিয়াছেন| বিস্তর খাটুনি গিয়াছে| এমন স্বভাবসন্ত্রস্ত ছেলেকে লইয়া কী করিবেন এই চিন্তা তাঁহাকে মধ্যে মধ্যে আচ্ছন্ন করে বটে, আবার এই ভাবিয়া মন কে প্রবোধ দেন যে বালকবয়েসে ভয়ডর থাকা ভালো| রতনকে উঠিতে বলিলে উঠে ও বসিতে বলিলে বসে| অন্য বালকদিগের ন্যায় বায়না বা জিদ করেনা| ইহা মন্দ কী| ফলিডলের শিশিটি ঘরের কোনে ঠেলিয়া দিয়া স্নান করিতে চলিয়া গেলেন| রৌদ্রস্নাত পুস্করিনীর জল আরেকটুক দেরী করিলেই মাঘসন্ধ্যের শীতে পাইয়া বসিবে|

    ইহার পরবর্তী ঘটনায় নতুনত্ব বিশেষ নাই| পল্লীর নিস্তরঙ্গ জীবনে অবশ্য কিঞ্চিত ব্যাত্য়ায় ঘটিয়া গিয়াছে|এবত্সর সরস্বতী পূজার বৈকালে যেমন খুশি সাজো প্রতিযোগিতা হয় নাই| তামাশা দেখিতে আসা জনতা ইশকুল চত্বরে প্রবেশ করিয়া দারোয়ান-শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলের মৃতদেহ আবিস্কার করে| পংক্তিভোজের সারি ধরিয়া বমন-শোণিতে স্নাত শবস্তুপের মধ্যে রতনও ছিল | মুখমন্ডল শান্ত ও ভযের লেশমাত্র নাই| সত্কারকার্যের নিমিত্ত পাশের গ্রাম হইতে ঘোষেদের লরি ভাড়া করিয়া আনিতে হইয়াছিলো, সঙ্গে সিংজি ড্রাইভার| পরদিবস প্রাতে: রতনের পিতাকে কড়িকাঠ হইতে নাবাইবার সময় সিংজি সাহায্য করে | তাঁহার ফলিডল জুটে নাই|
  • dc | 132.164.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৫:৪৪704664
  • দেশজুড়ে গরুকে দেশের মা বলে ঘোষণা ও গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে জেলা প্রশাসনের সদর কার্যালয়ের বাইরে বিষপান করেন আট পশুপ্রেমী। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও তাদের নজর এড়িয়ে কীটনাশক খান তাঁরা। পুলিশকর্মীরা বাধা দেওয়ার সুযোগই পাননি। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখানে ৩৫ বছর বয়সি হিন্দাভাই ভামবাদিয়া নামে তাঁদের মধ্যে একজন মারা যান। বাকিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছেন এসিপি কল্পেশ চাভদা।

    ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে যান রাজকোটের প্রাক্তন কংগ্রেস এমপি কুন্দভারজি বাভালিয়া ও গোসেবা আয়োগ চেয়ারম্যান বল্লভভাই কাঠিরিয়া। কিন্তু তাদের সেখানে ঢুকতে বাধা দেয় একদল বিক্ষোভকারী।

    গরুকে রাষ্ট্রমাতা-র স্বীকৃতি চেয়ে আন্দোলনের পিছনে রয়েছে গোরক্ষক সমিতি নামে একটি সংগঠন। তারা ভামবাদিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে গুজরাত বনধের ডাক দিয়েছে।

    কিন্তু ওখানে আত্মহত্যার চেষ্টা হতে পারে বলে সূত্র মারফত আগাম খবর থাকা সত্ত্বেও কী করে পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত হবে বলে জানা গিয়েছে।
  • Byaang | 132.172.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৭:০০704665
  • ভজো দুর্দান্ত! ঃ)
  • সে | 198.155.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৯:০১704666
  • স্টিফেন কিং ঘরানার লেখা।
  • সে | 198.155.***.*** | ১৮ মার্চ ২০১৬ ১৯:০৩704667
  • বা সেই সব জাপানি গল্পের মতো যেখানে বাচ্চাকে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে মেশিন চালিয়ে দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।

    অসুস্থ লাগে।
  • ভজো | 212.62.***.*** | ১৯ মার্চ ২০১৬ ২০:২৩704668
  • সাংসারিক
    -----------

    ফ্রিজে তো কিছুই নেই !
    আছে, চিলারে দেখো | চোখে দেখতে পাও না ?

    শর্মী চিলার টেনে বের করে | ঠাস বরফে আটকে রয়েছে | এত পেছনে চলে গ্যালো কীকরে | মহীন আজকাল না ঝাঁঝিয়ে কোনো কথার উত্তর দেয় না | চুপচাপ রান্নাঘরে
    গিয়ে মাইক্রো প্রি হীট করে মাংস ঢুকিয়ে দেয় | ওঘরে তখনও গজ গজ করছে মহীন | আটশো লিভার আনতে কত ঝন্ঝাট পোয়াতে হয়েছে জানা নেই তো ! ঐযে পুলুর মাসিমা ,বুড়ি আর মড়ার জায়গা পেল না | একেবারে বড় রাস্তার ওপরে ! কলজে ফল্জে গুলো তো ডিপার্টমেন্ট এর লোকেই নিয়ে নিলো | হাবুলের মা রান ধরে বসে আছে | উফফ আটশ মাংস দেবে তাও যেন দয়া করে ! গুনে গুনে দুবোতল ব্লাড দিইচি !! আজকালকার দিনে এত সস্তায় ব্লাড কোথায় পাবে শুনি ? পুডিং খাওয়ার শখও আছে আবার ......কাবার্ড হাতড়ে ব্লাড ডোনেশন কার্ড বের চেক করতে থাকে মহীন | চার ইউনিট এই মাসের বরাদ্দ | শর্মী চুপচাপ মেটের তাল কেটে চলেছে | কিচেনের দরজা ধরে দাঁড়িয়ে মহীন একটু নীচু গলায় বলে : কাঁচালংকা বেশি দিও কেমন |

    শর্মী কোনো উত্তর দেয় না | সব্জীর ঝুড়ি থেকে দুমুঠো লঙ্কা তুলে নেয় | সব্জি ছাড়া আর কিই বা আছে খাওআর | কলের মাংস কিনে খাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই | কপাল ভালো হলে পাড়াপ্রতিবেশী কেও চোখ বোজে | পলক ফেলার আগে সেটুকু বিলিব্যবস্থা হয়ে যায় | মহীন তো জানলে আবার দৌড় লাগাবে | হাবুলের মা গতরাত্রে মারা গ্যাছে| আত্মহত্যা | বিলিও হয়ে গ্যাছে | সে নাকী বিশাল কেচ্ছা | পশুপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থার সদর দপ্তর থেকে দুজন শিশু মুরগি চুরি করে এনে লুকিয়ে লুকিয়ে একা খেয়েছিলো | সন্ধেবেলা রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর থেকে দুটো লোক এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে |পশুহত্যা-নাশকতা-পশুদের উদ্দেশ্যে দুর্ব্যবহার-গ্রহবিরোধী কার্যকলাপ চার ধারার মামলা | লোকদুটো চলে যেতেই সটান ঝুলে পরে হাবুলের মা | ভাবতে ভাবতেই ঘামতে থাকে শর্মী | কতদিন বাদে মাংস এলো ঘরে | তাও মাত্র এইটুকু | মহীনের ওজন কমেছে বলে বেশি ব্লাড দিতে পারেনা | ওষুধ খেয়ে মাসে ছ ইউনিট অবধি উঠেছে | শর্মীর নিজের ব্লাড দেওয়া বারণ | শরীর দুর্বল | পেটভাড়া দেওয়ার পর থেকে ওষুধ খাওয়াও বারণ | দুমাস বাদে টাকাগুলো পেলে একদিন কলের মাংস এনে খাবে | কতরকম গন্ধ স্বাদ তার ! স্বপ্নে ডুবে যায় শর্মী | রঙ্গীন প্যাকেট মোড়া কলের মাংসের ঘ্রাণে | লুকিয়ে লুকিয়ে খেতে হয়না |

    মহীনের মেজাজ ঠান্ডা হয়েছে | টিভি দেখছে সোফায় বসে | হাফপ্যান্ট পরা পা দুটো কিচেন থেকে দেখতে পায় শর্মী | লুনাস চ্যানেলের রিপোর্টার এক বাইসন এর সাক্ষাত্কার নিচ্ছেন কোনো এসাইলাম থেকে | নতুন সরকার আসার পর পশু অধিকার আইনে নতুন কত কী এসেছে তাই নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাইসন ভদ্রলোক | প্রতিটি বাইসন শিশুর জন্যে ট্রেডমিল ও তৃতীয় বিশ্বকে বিশেষ বাইসনাধিকার আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছিলেন , মহীন চ্যানেল বদলে দিলো | এবার লাইভ সকার চলছে |

    কিচেন থেকে শুধু মহীনের পা নাচানো দেখা যায় | একসময় ফুটবল খেলতো মহীন | এখনো কাফ মাসল জুড়ে বেশ উঁচু হয়ে থাকে হাঁটলে | আড়াইশো গ্রাম হবে ? নাহ, পাঁচশো | যতই হোক ফ্যাট হবেনা বেশি | পেটের মধ্যে ভাড়াটে টা নড়েচড়ে ওঠে | কুচি করা মেটের স্তুপে মশলা মাখাতে থাকে শর্মী |
  • T | 190.255.***.*** | ১৯ মার্চ ২০১৬ ২২:১৪704669
  • উরিত্তারা!
  • ভজো | 212.62.***.*** | ২০ মার্চ ২০১৬ ১৪:০২704651
  • মালার প্রেম
    -------------
    কেলাশ সেভেনে পড়িবার কালে, সেফটিপিন দ্বারা তর্জনী বিদ্ধ করিয়া প্রেমপত্র লিখিবার কারনে বাপের কাছে চোরের মার জুটিয়াছিল | অপরাধটি রক্তপাত না প্রেমপত্রজনিত তাহা মালা বয়েসকালেও বুঝে নাই | কিন্তু শিশুমনে তীব্র অপমানের জ্বালা চিরস্থায়ী হইয়া গিয়াছিল | শিশুবয়েসের প্রনয়টি অবশ্য স্থায়ী হয় নাই | কালেজে পড়িতে আবার এক যুবকের সহিত দুই মাসের মেলামেশা | তাহার অধিক সম্ভবও ছিলনা | কলিকাতা শহরের শীতে দুই মাসের অধিক ঠোঁট ফাটা থাকেনা যে ! রক্তের দূরাগত লবণ-স্বাদ মালাকে চুম্বকের মত টানিত | সাধারণ চুম্বনে সে আশ মিটেনা |

    লোকেশের সঙ্গে মালার বর্তমান সম্পর্কটি সেই সূত্রেই | ব্লাড ব্যাঙ্কে ম্যানেজারির কথা শুনিয়াই মালা হাঁ বলিয়া দিয়াছিল | ব্যাংক কর্মচারী অপরের অর্থ নিজগৃহে আনিতে পারেনা ঠিকই কিন্তু অর্থঋণ লইবার ঘোঁতঘাত উহারা সাধারণের অপেক্ষা বেশি জানে | লোকেশ রক্ত সংগ্রহের উপায় জানিবে না ? এই কয় বত্সর পাঁঠা-মুরগি-মত্স্য সর্বপ্রকার রক্ত চাখিয়া তো দেখিল , মনুষ্য রক্তের ন্যায় বিজাতীয়গন্ধবিহীন ও সুস্বাদু রক্ত আর নাই | মালা আর যাহাই হউক কল্পকাহিনীর ভ্যাম্পায়ার নহে যে কলিকাতার রাস্তায় রক্তের খোঁজে শিকার ধরিয়া বেড়াইবে |রক্তদান সমিতির দলে ভিরিয়াও বিশেষ লাভ নাই | অতএব লোকেশ |

    ফল হাতে নাতে পাওয়া গিয়াছে | সেই সঙ্গে একটি সমস্যাও ঘটিয়াছে | কোনো এক বান্ধবী শ্রমনার নাম করিয়া মালা গত মাসে দুই বোতল রক্ত তুলিয়াছে | চিকিতসকের পত্রটি অবশ্যই জাল | লোকেশ দেখিয়া আন্দাজ করিতে পারে নাই | কিন্তু সমস্যা হইলো দ্বিতীয়বার রক্ত সংগ্রহের কালে মালা আগের পত্রটি হারাইয়া ফেলায় | কোন গ্রুপের রক্ত চাহিয়াছিল আগের বার ?একেবারে মনে নাই ! লোকেশ কি স্মরণ করিয়া রাখিয়াছে ?না হইলে এত জোর দিয়া বলিল কেন যে চিকিত্সকের পত্র বিনা রক্তের ব্যবস্থা করিতে পারিবে না ! একই ব্যক্তির জন্যে হইলেও|

    তাহার পর এক হপ্তা মালা লোকেশের ফোন উঠায় নাই | মেসেজ এর উত্তর দেয় নাই | পোলু পাল, কলিকাতা রক্তবন্ধু সমিতির সর্বভারতীয় সম্পাদক | মালার পূর্বপরিচিত | তাহাকে ফোন করিলে কোনো ব্যবস্থা হইবে ? লোকটি মহা ঘোড়েল | কাগজের গোলমাল বুঝিলে রক্তের বিনিময়ে কী চাহিবে ঠিক নাই | পয়সা লইয়া রক্তদাতা যোগান দিবার দুর্নাম তাহার এমনিতেই রহিয়াছে | এইসব সাতপাঁচ ভাবিতে ভাবিতে এক্সাইড এর মোড় পার হইতেছিল মালা | গ্রীষ্মের সন্ধ্যে সাত | সংস্কৃতিপায়ী নরনারীর দল আলিঙ্গনাবদ্ধ হইয়া সদন-আকাদেমির প্রাঙ্গনে চলিয়াছে | যাহার যেমন পিপাসা | শুধু মালার পিপাসা মিটাইবার কোনো ব্যবস্থা নাই |

    সদন মেট্রো ইস্টিশানের বাহিরে ছোলাওয়ালাকে খুচরা দিবার সময় মালার স্নায়ু চঞ্চল হইলো | অটোমবিল কেলাব হতে যে ব্যক্তিটি বাহির হইয়া ঝটিতি কালো মারুতিতে উঠিল সে পোলু পাল | তাহা কোনো আশ্চর্য্যের বিষয় নহে | লক্ষনীয় এই, যে মারুতিটি লোকেশের | মালা নাম্বার দেখিলে সচরাচর বিস্মৃত হয়না | উপরন্তু এই কালো মারুতিতেই গত তিন মাস এদিক সেদিক ঘুরিয়াছে | লোকেশ তাহার মানে পোলুর পরিচিত| মূহুর্তে আশাগ্নি জ্বলিয়া উঠিল | লোকেশ যদি পোলুর দুর্নীতির সহকারী হয় তাহা হইলে ইহাদের ব্ল্যাকমেইল করিয়া রক্ত আদায় করা যাইতে পারে | গাড়িটি তো হাজরার দিকেই গেল | লোকেশের ফ্ল্যাটবাড়িটিও হাজরায় | মালা সেখানে অদ্যপি যায় নাই তবে ঠিকানা সংগ্রহে আছে |

    নেশা যখন আকর্ষণ করে তাহার সম্মুখে সাধারণ যুক্তি বুদ্ধি খাটেনা | হাজরায় লোকেশের একাদশতলস্থিত ফ্ল্যাটে বেল বাজাইবার মুহূর্ত অবধি মালা মনে মনে কিরূপ ব্ল্যাকমেইলের প্যাঁচ কষিয়াছে তাহা পাঠককে জানাইয়া লাভ নাই| অলীক ও নির্বুদ্ধিতা মনে হইবে | পোলু পালের দুর্নীতির কোনো প্রমান মালার নিকট নাই | লোকেশ দরোজা খুলিয়া প্রথমটা খানিক বিভ্রান্ত হইলেও ভালোভাবেই তাহাকে বসার ঘরে আমন্ত্রণ জানাইলো| মৃদু বাহারি আলো |সোফায় পোলু বসিয়া একটি ইংরাজি পত্রিকা ঘাঁটিতেছে | টেবিলে ওয়াইনের বোতল ও দুইটি পানপাত্র | সান্ধ্য স্বাস্থ্যপান শহুরে জীবনের অঙ্গ তাই লুকাইবার প্রয়োজন বোধ করে নাই | তবে পুরুষদের পক্ষে নারীকে সরাসরি মদ্যপানে আহবান জানানো বোধকরি এখনো বঙ্গসমাজের শিষ্টাচার বহির্ভূত তাই লোকেশ যথারীতি ঠান্ডা -লেমন জুস ইত্যাদি প্রস্তাবে কিঞ্চিত ব্যস্ত হইয়া পরিল | মালা কিছু বলিল না | ইহারা সম্ভবত কোনো হিসাবপত্র করিতেছিলো পানপর্বের পূর্বে| টেবিলের উপর প্যাড-ফর্ম-রসিদ ইত্যাদি রাখা | সেসব একহস্তে মুঠ করিয়া তুলিয়া , ওয়াইনের বোতলটি বগলদাবা করিয়া ব্যস্তসমস্ত লোকেশ মালাকে বলিল : তুমি বসো | আপিসের কাগজপত্র রেখে আসি গে | হেহে সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে, ব্যাচিলর মানুষ বোঝোই তো ! বাক্যের শেষাংশে পোলু ও হে হে তে যোগদান করিল | মালা কিছু বলিল না | পোলু লোকেশকে অনুসরণ করিয়া পার্শ্ববর্তী কক্ষটিতে মিলাইয়া গেল |

    মালার মস্তিস্কে এখনো কোনো স্থির মতলব আসে নাই | ইহাদের দুই নম্বরী কাগজপত্র তাহা হইলে এই ফ্ল্যাটেই থাকে| পুলিশকে দিয়া রেইড এর ভয় দেখাইবে ? তাহাতে যদি কার্যসিদ্ধি না হয় | সরাসরি আবার নুতন কাহারও বিপদের গল্প ফাঁদিয়া রক্ত চাহিবে ? যদি ধরিয়া ফেলে ! বসিয়া বসিয়া চিন্তায় কন্ঠ্য শুস্ক হইয়া আসিল | জলের বোতলের দিকে হাত বাড়াইয়া থামিয়া গেল মালা | লোকেশের পানপাত্রে অর্ধনিঃশেষিত রেড ওয়াইন | মালার ঝুঠা খাইবার অভ্যেস নাই লোকেশ জানে | তবু এই মুহুর্তে, হয়ত মৃদু আলোকে বিচ্ছুরিত লোহিতবর্ণের কারণেই লোকেশের পানপাত্রটি তাহাকে জলের বোতল অপেক্ষা অধিক আকর্ষণ করিতেছে | এ জিনিস পূর্বে কদাপি পান করে নাই | এক ঝোঁকে তুলিয়া লইয়া লম্বা চুমুক দিলো মালা |

    দীর্ঘ এক মুহুর্তের বিরতি | নরম গদিওয়ালা কুর্সীতে আরামে এলাইয়া বসিল | তৃপ্তিতে তাহার চক্ষু বন্ধ | আর কোনো দুশ্চিন্তা নাই | খেয়াল করে নাই কখন পার্শ্বের কক্ষ হতে লোকেশ ও পোলু আসিয়া তাহার দুই পাশে দাঁড়াইয়াছে |

    লোকেশ হাসিয়া বলিলো : আরেকটু দি ? এটা আজকে বিকেলের ফ্রেশ | বকুলতলা জাগরণী সংঘের | আগেরবারের মত কেমিক্যাল মেশানো নয় | হে হে পোলুদা এনেছে |

    পোলু পাল সম্মুখে আসিয়া পুরুষসুলভ ভদ্রতায় মৃদু বাও করিলো | তিনটি পাত্র ভরিয়া উঠিল মালার চক্ষের সামনে | সমবেত উল্লাসধ্বনিতে মুখরিত হইলো একাদশ তলের ক্ষুদ্র ফ্ল্যাটবাড়িটি | বাহিরে তখন গতানুগতিক শহর | সন্ধ্যের ফুটপাথে একমাত্রিক মাতাল , গলদঘর্ম উপরিপ্রত্যাশী সেপাই, বা হয়ত হাজরা মোড়ের ট্রাফিক রুদ্ধ এম্বুলেন্সে শেষ প্রহর গনিতেছে কোনো অন্তিমযাত্রী |
  • blank | 11.39.***.*** | ২১ মার্চ ২০১৬ ০০:০৬704652
  • জ্জিও
  • ভজোর জন্য | 132.177.***.*** | ২২ মার্চ ২০১৬ ১৮:১৩704653
  • তুলে দেওয়া হল।
  • শ্রী সদা | 24.96.***.*** | ২২ মার্চ ২০১৬ ২১:৩৭704654
  • অমানুষিক। মানে লিট্যারালি। চলুক, চলুক।
  • ভজো | 212.62.***.*** | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১১:৩৫704655
  • রাত্রিবাস
    -----------

    "ই কেয়া পিকচার লাগাকে রাখা ভাই ? ডরাউনি পিকচার নাহী দেখনে কা " | "ও কন্ডাক্টর ,চেঞ্জ কর ইয়ে ফিলিম | রাতকো নিদ নাহী আয়েগী" | সমবেত ক্যাচকেচিতে ঝিমুনি চটকে গ্যালো|
    বাস চলেছে ব্যাঙ্গালোর টু মুম্বাই|সন্ধের দিকে সবে এট্টু ঝিমিয়ে নিচ্ছি আর শালারা কানের কাছে কেত্তন জুড়েছে | ভিডিও কোচের স্ক্রীন জুড়ে এক কোলবালিশের মত ম্যাক্সি পরিহিত নায়িকা হাতে চাক্কু নিয়ে অন্ধকারে কাকে খুঁজছে | জানলার ওপাশে ছায়া সরে সরে যাচ্ছে | আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যাত্রীদের চিল্লৌত| একটু আগেই আরেকটা সিনেমায় নায়ক পেঁদিয়ে খানবিশেক লোককে লাশ বানালো | সবাই বেশ সিটিফিটি দিচ্ছিল| এখম আবার এদের ডর জেগেছে | ড্রাইভার কেবিন থেকে কন্ডাক্টর বেড়িয়ে এসে নতুন সিডি বেছে আবার চালু করে দেয় | ফ্যামিলিওয়ালী পিকচার | যাকবাঁচা গ্যাছে| একটা দাদু টাইপ লোক ,মরছে | মরছে তো মরছেই | ক্ষেতি-বাড়ি-হাভেলি সব দান করে দিচ্ছে হেঁচকি তুলতে তুলতে| ফেমিলিশুদ্ধু লোক হাঁ করে আছে কখন বুড়ো মরবে | তো মিনিট দশেক হেজিয়ে, কালকোঠরি কে পাস মাত জানা ,বলে সে হতভাগা চোখ বুঝলো | আমার সামনের সীটের মহিলা চিল চিল্লে তাঁর পাশেই বসা হাসব্যান্ড কে বললেন " কালকোঠরি ! ফির ডরনেওয়ালী বাত !! আপ কুছ বোলতে কিউ নাহীঈঈঈঈ" | প্রমাদ গুনলুম | আবার শুরু হবে | সিনেমায় তখন বুড়োর সম্ভবত নাতনি তার বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে মহব্বত জাদুঊঊঊঊ বলে বিকট গান জুড়েছে | লোকজন শান্ত| নাচতে নাচতে দুজন আবার হাভেলির অন্ধকার কোনে যাচ্ছে |

    হঠাত নায়িকার চিত্কার | আমার দুটো সীট আগে একটা বাচ্চা ফাটিয়ে কেঁদে উঠলো | বচ্ছর সাতেক বয়েস | মাম্ম্মীইই ডররররররর......ব্যাস তার মা তার বাপ আবার চেঁচামেচি| আবার বেড়িয়ে এলো কন্ডাক্টর | একটু স্মার্টনেস দেখিয়ে বলল : আরে ইসমে ডরনেইয়ালি কা হায় ? ও বাচ্চু ও হো রো মাত ও হো | বাচ্চাটা হঠাত উঠে দাঁড়ালো সীটের ওপর,তারপর সটান একটা আঙ্গুল ভরে দিলো কন্ডাক্টর এর চোখে | আর তার মুখ দিয়ে কলের জলের মত বমি এসে পরলো চারপাশে |অনেক অনেক না হজম হওয়া পটেটোচিপস| বাসে উঠে থেকে গিলে চলেছে |ওদিকে কন্ডাক্টর এর চোখের মণি বেড়িয়ে এসেছে | সে পাগলের মত চিল্লাচ্ছে | যাইহোক একজন যাত্রী হামে দেখনে দো বলে সামনে এগিয়ে গ্যালো | তারপর চোখ থেকে ঝুলন্ত মনিটা খাবলে নিয়ে নিজের মুখে পুরে দিলো | লজেন্সের মত চুষে বাসের অন্যদের দিকে ফিরে বললো : আচ্ছা হায় ! আমার সামনের সীটের মহিলা ততক্ষণে আবার চিত্কার জুড়ে দিয়েছে ভয়ে | তার হাসব্যান্ড বোঝাচ্ছে :তু ইধার মাত দেখ | সে উল্টে চিত্কার দিয়ে গলা টিপে ধরলো : কবসে বোল রাহী হু আপ কুছ করতে কিউ নাহী | গোটা বাসে হুলস্থুল লেগে গ্যালো | টিভি স্ক্রীনের দিকে আর কেও তাকাচ্ছে না | যে যাকে পারছে কামড়াচ্ছে | সামনের সীটের মহিলা দেখলুম লোকটির জুগুলার ভেইন এটাক করেছে | ঘুমিয়ে থাকা বাচ্চাগুলো জেগে উঠে পটেটো চিপস বমি করছে আর সামনে যাকে পাচ্ছে লাফিয়ে উঠে গলার কাছে কামড়ে ধরছে | ড্রাইভার হু হু করে বাস ছোটাচ্ছে কেবিনের দরজা বন্ধ করে দিয়ে| দুটো দামড়া লোক ,তাদের একজনের গলায় কিচেন নাইফ,আরেকজনের চোখে ডটপেন ঢোকানো , আমাকে এসে জিজ্ঞেস করলো : আপকো ডর নাহি লাগ রহা হায় ! কী উত্তর দেব ভেবে পাচ্ছিনা ,এমন সময় একজন দশাসই মহিলা ঝাঁপিয়ে পরলো তাদের ওপর |গোটা বাসের লোক চেঁচাচ্ছে ডরাও মাত ডরাও মাত আর অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ছে একে অপরের ওপর | ডটপেন চোখে লোকটার কব্জি কামড়ে ধরেছে মহিলা | ফিনকি দিয়ে রক্ত এসে লাগলো আমার চশমায়|

    এই ভয়চক্র কোথায় শেষ হয়েছিল আমি জানিনা | ইমার্জেন্সি গেটের ধার ধরে সীট বুক করা পুরনো অভ্যেস | সেদিন সেই সুবাদেই প্রাণে বেঁচে যাই | চলন্ত বাস থেকে লাফ দেওয়ায় হাত পায়ে ফ্র্যাকচার এবং তাই নিয়েই দুটো গাড়ি পাল্টে , লীলাবতী তে সাতদিন কাটিয়ে আবার বাড়ি ফিরলুম | কাগজে একটা রাত্রিকালীন বাস দুর্ঘটনার খবর বেরিয়েছিল , এই পর্যন্ত|
  • পুপে | 74.233.***.*** | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১৫:৩৬704656
  • আজই রাতের বাসে হায়দ্রাবাদ যাচ্চি। :-০ :'(
  • dc | 132.164.***.*** | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১৫:৫২704657
  • লাস্টের গল্পটা তেমন জমেনি, কেমন যেন প্রেডিক্টেবল হয়ে গেছ ঃ(

    তবে এই লং রুটের বাস জার্নিগুলোয় ভিডিও চালিয়ে রাখাটা যে কি দুর্বিষহ! মানে ধরুন শুধু এটুকু একটা গল্প লিখলেনঃ

    "চেন্নাই থেকে স্লিপার বাসে চড়লাম, কাল ভোরে ব্যাঙ্গালোর পৌঁছবো। বাস আউটার রিং রোড ছাড়িয়ে যেতেই কন্ডাক্টর সামনের দরজা খুলে ভেতরে এসে ঢুকল, একটা সিনেমা চালিয়ে দিল।"

    ব্যস, এটুকু লিখলেই সেটা হরর গল্প হয়ে যাবে।
  • de | 69.185.***.*** | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১৬:০৫704658
  • হ্যাঁ - গোঁপালা মোটা ভুঁড়িঅলা হিরো নেচে নেচে চুলে ফুলালা হিরৈনের সঙ্গে তামিল গান কচ্চে - একবার একটা বাসে কন্টিনুয়াস এই জিনিস দেখতে হয়েছিলো - সাউথে সেই থেকে বাসে চড়ি না। পয়সা বেশী খরচ করে গাড়ি বুক্করি!
  • dc | 132.164.***.*** | ২৩ মার্চ ২০১৬ ১৬:০৮704659
  • :d

    আরেকটা লাইন লিখলে হররটা পুরো র‌্যামসে ব্রাদার্স লেভেলে চলে যাবেঃ "চারপাশের লোক সেই সিনেমাটা হাঁ করে গিলতে লাগলো।"
  • Div0 | 132.172.***.*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০০:০২704660
  • একক, লাইক আই সেইড, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়োচিত সাধু-চলিত। বুকমার্ক করে রাখলাম। আর কনটেন্ট তো মারহাব্বা! দৌড়োক এই থ্রেডটা। #মালারপ্রেম। সো ড্যাম ডিফারেন্ট ফ্রম সো কলড বাফি-দ্য-ভ্যাম্পায়ার-স্লেয়ার স্টোরিজ! :)
  • Arpan | 24.195.***.*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০০:১৮704662
  • লাস্ট গল্পটা তাড়াহুড়ো করে লেখা মনে হল। শেষটা আরো সম্ভাবনাময় ছিল।

    টইটা জাস্ট অসাম শালা হচ্ছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন