এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে : উত্তরবঙ্গের দু'এক টুকরো

    Dj
    অন্যান্য | ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ | ৩৩৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • sch | 126.202.***.*** | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৬:৫৯625080
  • না না লিক্ষতে থাকুন - প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে চেক করি আপনি কি লিখলেন। অনেক দিন এমন সহজ সুন্দর লেখা পড়ি নি
  • kumu | 133.63.***.*** | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৯:১২625081
  • এ জীবনে আর হবে না।তাই আপনাদের লেখা পড়ে পড়ে ভেবে নিই কেমন এইসব অদেখা স্বর্গ।
    আপনার লেখা বড় মায়াময়।
  • san | 69.144.***.*** | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৭:৫৬625082
  • বাকিটা অবশ্যই লিখবেন কিন্তু।
  • Dj | 128.102.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০২:১৬625083
  • সকলকে অনেক ধন্যবাদ। একটু পরেই তুলে দেব শেষটুকু।
  • Dj | 128.102.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০২:৪৪625084
  • গাড়ি আবার ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে নামতে থাকে, আমরা যে যার উইন্ডো থেকে বাইরে চেয়ে থাকি, শূন্যতা গ্রাস করেছে প্রত্যেককেই - বুঝতে পারি, কেউ একটাও কথা বলি না। শঙ্করদা বলেছিল, দশ বছর পরে আসলেও রাহী আমাদের ঠিক চিনে নেবে। দ-অ-শ বছর! সেতো বিশাল সময়! মনে মনে আমরা প্রত্যেকেই ভেবে নিই - ফিরে আসতেই হবে এখানে, খুব শিগ্গিরই, রাহীর জন্য, এই উষ্ণপ্রাণ মানুষগুলোর জন্য, নিজেদের হারিয়ে ফেলা এই মাটি-পথের বরা মাঙ্গয়ার জন্য। নাই বা চিনুক রাহী আমাদের, আবার করে প্রেমে পরব নাহয়.. পেশক রোড ধরে উঠতে থাকে গাড়ি, রাস্তা এখানে অনেকটাই ভালো, একসময় লামাহাট্টায় দাঁড়ায়। আমাদের ঘোর কাটে। এখান থেকে দেখা যায়, তিস্তা আর বড়-রঙ্গীত মিলেছে ওই নিচে পাহাড়ি বাঁকে। নানা মানুষ বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে দাঁড়িয়ে নিজেদের ছবি তুলতে ব্যস্ত, স্ক্রীন জুড়ে ফুটে থাকে নিজেদের মুখ, দাঁড়ানোর ভঙ্গী। নদী দুটো যেখানে মিশেছে, তার পাশে বেশ চওড়া বালিয়াড়ি, দূর থেকে দেখা যায় ভিতরের দিকে ছোট্ট ছোট্ট দুটো ছাউনি, গড়ে উঠছে ইকো-ট্যুরিজম। কল্পনা করি নিজেকে ওই জায়গাটায়, পাহাড়ের কত গভীরে এই চিলতে জায়গাটুকু, বালিয়াড়ির ওপরে দাঁড়ালে তিনদিকে মাত্র সত্তর মিটার দুরত্ব থেকে উঠে গেছে ঘন সবুজ পাহাড়- অন্তত আড়াইশ মিটার উচ্চতায়! বয়ে চলেছে তিস্তা আর রঙ্গীত - কি দারুণ নিস্তব্ধতা আর একাকিত্ব! বর্ষায় হয়ত দেখা যাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ, পাগলাঝোরায় ভেসে যাবে বালিয়াড়ি। গাড়িতে উঠি, রাস্তায় দু'এক জায়গায় সাজানো বাগান, দুরের পাহাড় দেখার টেলিস্কোপ বিশেষ টানে না আর, বুড়ি ছুঁয়ে এগিয়ে চলি, ঘুমে পৌঁছাই। এইখানে চাররাস্তার মোড় থেকে (কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং চলে আসা হিল কার্ট রোড পেরিয়ে) আমরা সোজা চলে যাব সুখিয়া রোড ধরে। দৃশ্যপট বদলাতে থাকে আবার, দুদিকে খাদ, আমরা মেঘ কেটে চলতে থাকি একটা পাহাড়ের পিঠের ওপর দিয়ে। বরা মাঙ্গয়া থেকে জোরপোখরি সাকুল্যে আটচল্লিশ কিলোমিটার মত, লেপচাজগৎ পরবে জোরপোখরির আট কিলোমিটার আগেই, কিন্তু পূর্বপরিকল্পিত স্থানটিকে ছুঁয়ে আসার লোভ সামলাতে পারিনা কেউই। সুখিয়ায় চোখে পরে অনেক বাজার-দোকান- শীতবস্ত্রের, শাকসবজির। সান্দাকফু ট্রেক করতে আসা মানুষেরা শিলিগুড়ি থেকে নেপাল বর্ডার ধরে চলে আসেন সুখিয়া, এখান থেকে গাড়ি নিয়ে আবার পাড়ি দেন মানেভঞ্জন। সুখিয়াতেও আপনি পেয়ে যেতে পারেন ট্রেকিং-এর সমস্ত সাজ-সরঞ্জাম, কিনতে তো পারেনই, ভাড়াও নিতে পারেন। সুখিয়া থেকে একটা সরু রাস্তা এঁকেবেঁকে উঠে গেছে জোরপোখরি পর্যন্ত, মোটে দুই কিলোমিটার, কিন্তু জনমনিষ্যিহীন রাস্তায় সূর্যের আলো ঢুকতে দেয় না দুধারে আকাশ পর্যন্ত উঠে যাওয়া পাইন গাছ, হঠাৎ করে রহস্যময় হয়ে ওঠে পরিবেশ, গাছগুলোর গুড়ি বেয়ে, ডালপালা বেয়ে মোটা শ্যাওলার ঝুরি নেমেছে, দারুণ তুষারপাতের চিহ্ন সর্বত্র। হয়ত আর মাসখানেক পরেই সাদা রঙ ঢেকে দেবে যাবতীয় উদ্ভিদকুল, কনকনে হাওয়া আর ঘন চাদরের মত মেঘে মিলে চলছে তারই আয়োজন। এর পরের ছবি আমার বহু চেনা, মাসখানেক ধরে এই জায়গাটা ইন্টারনেটে দেখতে দেখতে ছবি সাজিয়েছি আমি। ওই তো সপ্তদশ শতকের ভিলাটার মত বাড়িটার দোতলায় আমাদের রাজকীয় ঘর, ঘর থেকেই পর্দা সরিয়ে চেয়ে থাকব অসীমের দিকে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে, ডানদিকে খাদের ধার থেকে ওই নিচে আলোর পসরা নিয়ে সন্ধ্যেবেলা হাজির থাকবে মিরিক, বাড়ির সামনে লেক দুটোর একটাও ছবি তুলব না আমি, ওই সিমেন্টের পাঁচমাথা সাপ ব্যাটাটা পুরো ছবিটাই বিগড়ে দিয়েছে, কিন্তু এই মেঘের রাজ্যে জলে নামা রাজহাঁসগুলো কিন্তু দুর্দান্ত লাগবে, দোতলায় ঘরটা থেকে বাঁদিকে পুরোটা দেখা যাবে না ওই ক’টা পাইন গাছের জন্য, তাই ভোরবেলা অন্ধকার থাকতে থাকতে ট্রাইপড বসিয়ে ফেলতে হবে কাঠের ব্রীজটার ওপর, এই তো এবার কাঞ্চনজঙ্ঘা তার ছানাপোনাদের নিয়ে বসে আছে, পুরো ওয়ানএইট্টি ডিগ্রী ভিউ; সব স-ব কটা ছবি আবার ভেসে ওঠে মাথায়। আপন মনে হাসি, মেঘলা আকাশ, বেরিয়ে পরি লেপচাজগতের পথে।

    লেপচাজগতের ফরেস্ট রেস্ট হাউসটা একদম খাদের ধারে, বাইরে থেকে দেখতে মোটেও আশাবব্যঞ্জক নয়, কিন্তু ঘরগুলো দেখলে চমকে উঠতে হয়। কি বিশাল ঘরগুলো ছয়দিক কাঠে মোড়া। দুদিকে দেয়ালজোড়া কাঁচের জানলা দিয়ে প্রকৃতি ঝাঁপিয়ে পরে ঘরের মধ্যে। প্রতিটা ঘরে ফায়ারপ্লেস একটা আলাদা গাম্ভীর্য এনে দেয়। এমনসময় রাই স্যারের ফোন আসে, জানতে চান আমরা ঠিকমত পৌঁছালাম কিনা, রাহীর খবর জিগ্যেস করলে জানান যে ও খাওয়াদাওয়া করেছে, মনখারাপ ভাবটাও কেটেছে এখন। মনটা হঠাৎ করে ভালো হয়ে যায়। মংপং-এর মত এখানেও সাত-তাড়াতাড়ি রান্নাবান্না সেরে কুক, কেয়ারটেকাররা কেটে পরে। আমাদের বেডরুমটা একটা বিশাল লিভিং রুম পেরিয়ে, রাতে এই জনপ্রাণীহীন প্রান্তরে ফায়ারপ্লেসের আগুনে কালো হয়ে যাওয়া দেওয়ালগুলো অভিশপ্ত মনে হয়, লুসির গা ছমছম করে এই আলোঅঁধারির খেলায়। আবিষ্কার করি, বিছানায় গায়ে দেওয়ার জন্য দেওয়া আছে একটা লেপ, তিনটে কম্বল; প্রয়োজন পড়লে কাবার্ডে রাখা থাকে আরো একটি লেপ! এছাড়াও সন্ধ্যে থেকেই চলতে থাকে রুম হীটার। ভোরবেলা হি হি কাঁপতে কাঁপতে উঠে পরি, ছাদে পৌঁছে যাই, গতকালের উপচে পরা মেঘের পর বিশেষ আশা নিয়ে যাই না যদিও। কিছুক্ষণ পর যেন কিছু দেখা যায় ওই অন্ধকারে, আকাশের গায়ে কোনা কোনা ঢেউ, বুঝতে পারি, এ জিনিস বেশিক্ষণ থাকার নয়, ট্রাইপড বসিয়ে শাটার স্পীড অনেক কমিয়ে দিই, পাহাড়ি হাওয়ায় তবু প্রতিটা ছবিই কেঁপে কেঁপে যায়, হতাশ হয়ে পরি। আকাশ জুড়ে ফুটে আছে, স্ফিংসের মত রাজকীয়তায় বসে আছে কাঞ্চনজঙ্ঘা, দুপাশে যত দূর চোখ যায়, জেগে থাকে ছোট বড় অনেক অনেক শৃঙ্গ, আকাশে মেঘের তিলমাত্র নেই, আর আমি একটাও ঠিক মত ছবি তুলতে পারি না। দার্জিলিং-এর দিকের পাহাড়টা ফরসা হয়ে আসতে থাকে, আমি বুঝি আর সময় নেই, একটু পরেই মেঘের আড়ালে ঢেকে যাবে স্ফিংস। তখন কি আর জানতাম বেলা এগারোটা পর্যন্ত জেগে থাকবে কাঞ্চনজঙ্ঘা তার সমস্ত সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে! আমি পেয়ে যাব সহস্রবার তোলা ছবিগুলোর একএকটা প্রতিরূপ, আমার সামান্য এই কম্প্যাক্ট ক্যামেরা দিয়েই! সূর্যের প্রথম আলোয় চূড়োটুকু, সোনাগলা গা, বিস্তীর্ণ পর্বতমালা, এমনকি বেডরুমের পর্দা সরিয়ে ট্রাইপডে বসানো ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা দেওয়া পাহাড়ের ভিন্টেজ শটটাও!

    গল্পটা এখানেই শেষ করে দেওয়া যেত। আসলে আমাদের এবারের জার্নিটা তো সমৃদ্ধ হওয়ার, রহস্যময়ী প্রকৃতির অপার কারুণ্যে-উদারতায় বিশ্বাস জন্মানোর.. এর পরেও আমরা মা'কে বিশ্রামে রেখে সারা দুপুর হেঁটে আসি জনহীন পাহাড়ি পথ, কোনো প্রত্যাশা নিয়ে নয়, না কোনো ছবি সংগ্রহের লোভে। পরদিন দার্জিলিং পৌঁছে প্রাণপণে পেতে চাই অনুরাগ বসুর সেই চোখ যা দিয়ে তিনি ধরেছিলেন বরফি'র এই বিস্ময়কর ফ্রেমগুলো। কেভেন্টার্স, ঘড়িবাড়ি, সেনাচাউনির মত দার্জিলিং-এর ট্রেডমার্ক বাড়িগুলো ঢেকে আসে নিত্যনতুন কনস্ট্রাকশনে, ইলেকট্রিক তারের জঙ্গলে, হাঁপিয়ে যাই। আগের ছ'টা দিন আমার একটাও ফোন আসেনি, মেল চেক করিনি, গুরুচন্ডালিও খুলিনি, টিভি ছিল না বলে খবর দেখিনি, ইন্ডিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনাল ম্যাচের রেসাল্টও জানি না, খবরের কাগজ পরিনি, কোনো জায়গাতেই আমরা ব্যতীত অন্য কোনো অতিথি থাকেননি, জানিনা একেই নির্বাণ বলে কিনা.. ম্যালে সন্ধ্যেবেলা দুপাশে বিনুনি দোলানো উলের টুপি পরা বাঙালি ভদ্রলোক আসেন আমাদেরও বাঙালি দেখে আলাপ করতে, সঙ্গে অনেক বিগশপার হাতে নিয়ে পরিবারবর্গ।
    একগাল হেসে জিগ্গেস করেন, "কোত্থেকে আসছেন আপনারা?"
    আমি বলি "লেপচাজগৎ"।
    - কি জগৎ?
    - লেপচাজগৎ।
    বলে টুক করে চলে আসি ওখান থেকে। লুসি অবশ্য বলে ওনার বিনুনির দুলুনি থেমে গিয়েছিল, আর চোয়াল ঝুলে পরা ব্যাপারটা নাকি দেখবার মত হয়েছিল।

    কে জানত কার্শিয়াং পর্যন্ত টয় ট্রেনে তিন ঘন্টার সফরটাও ছিল আমার সাথে সবারই বাল্যকালের স্বপ্ন- মা'র, লুসির, মৌএর; যেন আমরা সবাই একবার করে ছুঁয়ে দেখি ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া ভীষণ প্রিয় কোনো খেলনা। শিয়ালদাগামী দার্জিলিং মেলে আমাদের সাথে বাড়ি ফেরে একঝাঁক মধ্য কুড়ির ছেলেমেয়ে, সান্দাকফু ট্রেক সেরে। সকলে বলতে থাকে নিজেদের ট্রেকিং-এর অভিজ্ঞতা, মা'ও যোগ দেয় ওদের সাথে। সমান উচ্ছ্বলতায় শোনায় তিস্তা ট্রেকিং-এর গল্প, বরা মাঙ্গয়া ট্রেকিং-এর গল্প, মা'র বয়স কমতে থাকে, পৌঁছে যায় ওদের মতই নিজের বিনুনি দোলানো বয়সে। আমি পেয়ে যাই এই সমগ্র জার্নিটার শ্রেষ্ঠ উপহারটা, আগলে রাখি তাকে।

    আমাদের সকলকেই ফিরতে হয় চিরাচরিত দৈনন-দীনতায়..
  • Dj | 128.102.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০২:৫৩625085
  • পুনশ্চঃ
    গাছপালার প্রতি লুসির দারুণ উত্সাহ দেখে রাই স্যার একটি জারবেডার চারা জল-মাটি-সার দিয়ে মুড়ে উপহার দিয়েছিলেন, ট্রেনে ওঠার সময় চারটে পাতাই শুকিয়ে এসেছিল, মনে হয়নি আর বাঁচবে বলে। লুসির বাবার তত্বাবধানে সবকটি শুকনো পাতাই ঝরে গিয়ে নখের মত দুটি তাজা পাতা বেরিয়েছে। গাছটা বেঁচে যাবে।

    রাহী ভালো আছে। ভোলু কারো পোষ্য নয়, তাই ওর কোনো খবর পাইনি।

    কৃতজ্ঞতা:
    আমার যাত্রাসঙ্গীরা। সমমনস্কতায় তারা উপভোগ করেছে প্রতিটা ছোট ছোট ঘটনা।

    গুরুচন্ডালি। বিগত প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমি গুরুচন্ডালির নীরব পাঠক। বিশেষ কিছু লেখা হয়নি কারণ ভয় ছিল ভাবনার দৈন্যতা প্রকাশের। দোনমনায় ছিলাম, এটা ইংরেজিতে লিখব, না বাংলায়। একমাত্র গুরুচন্ডালির অমোঘ আকর্ষণেই বাংলায় লেখা হয়ে গেল।

    সিকি'র ট্র্যাভেলগগুলো আমার বিশেষ অনুপ্রেরণা। উত্তরবঙ্গ, আন্দামান, লাদাখ ভ্রমণ আমি অনেকবার পড়েছি, সহজাত দক্ষতায় ছবির মত সাজিয়ে তুলতে পারেন ঘটনাস্রোত।

    আপনারা সবাই, যারা ধৈর্য্য ধরে পড়লেন, উত্সাহ দিলেন।
  • 4z | 194.148.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:০৮625086
  • অক্ষরগুলো পুরো ছবি হয়ে চোখের সামনে ফুটে উঠল। খুব ভাল লাগল।
  • i | 147.157.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:১৩625087
  • খুব ভালো লাগল পড়তে। খুবই ভালো।
  • sch | 126.202.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:২৪625088
  • খুব ভালো লাগলো। একটু ছবি দিলে আরো ভালো লাগতো
  • | 24.97.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ১১:৪৭625090
  • অসম্ভব ভাল লাগল। ভীষণই ভাল
  • kumu | 133.63.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ১২:১৫625091
  • বড় ভাল লাগলো বললে কিছুই বলা হয় না।নিজে গেলেও হয়তো এত উপভোগ করতে পারতাম না, আপনার লেখা পড়ে যতখানি করলাম।আপনার যে চোখ আছে তা তো সকলের থাকে না।
    ভালো থাকুন আপনার মা, লুসি , আপনার বোন, আপনি, রাই সাহেব, রাহী , ভোলু, ও আর সবাই।
  • π | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ১২:১৮625092
  • এ লেখায় তো আর ছবি লাগেনা।
  • sch | 126.202.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৮:২১625093
  • না ছবি সত্যি ই লাগে না - তবে ওই রাহী, ভোলু ওদের দেখতে একটু ইচ্ছে করে -- ছবি তো তখনই হয়ে গেছে যখন বলেছেন

    "হলুদ রঙের ক্যামেল অথবা ক্যামলীন প্যাস্টেল রঙের বাক্সটার কথা মনে পরে? ওই যেটার ওপর প্যাস্টেল রঙেই একটা বাড়ি আঁকা থাকত?"...

    কি অনাড়ম্বর ভাষা অথচ কতো কথা বলে দিলেন --- এ লেখাখানা অনেক দিন মনে থাকবে - অনেক দিন
  • san | 133.63.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৯:৪৯625094
  • খুব সুন্দর লেখা। আরো লিখবেন।
  • I | 24.99.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ২২:৫১625095
  • লেপচাজগতের কথা আর একটু লিখতে পারতেন। একবার বসন্তে যাবেন। কী মারকাটারি রংয়ের রডোডেনড্রন আর ম্যাগনোলিয়া ফুটতে পারে, দেখলে তাক লেগে যাবে মশায়।
    ওখানকার বস্তিতে একটি মেয়ে থাকে (মানে সে সময় ছিল, তার নাম লিখলাম না)- যারা পরিযায়ীতে মেয়েটির কথা লিখেছিল বলে আমরা বিশেষ করে তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। দেখা গেল, বাংলোর কেয়ারটেকার তার জ্যাঠা হন সুবাদে। আমরা মেয়েটির বাড়ি (এক কামরা কুঁড়ে বলা ভালো) গিয়েছিলাম। খুব ভালো অ্যাথলিট ছিল সে কৈশোরে, রাজ্য অ্যাথলেটিক মীটে প্রাইজ পেয়েছিল। তারপর খিদে, তারপর বিয়ে, মাতাল স্বামী, আগুনে পুড়ে যাওয়া শংসাপত্র; হয়তো পদকগুলো বেচে দেওয়া হয়েছে। এখন সে ( মানে তখন) বন থেকে কাঠকুঠো কুড়িয়ে আনে, তাই বিক্কিরি করে। স্বামী রাস্তা সারাইয়ের কাজ করে, মদ খায়। আর সে তাও হাসে। অচেনা মানুষ দেখা করতে এসেছে বলে খুশী হয়। কলকাতার কাগজে তার ছবি ও নাম বেরিয়েছে শুনে খুশী হয়। আমরা তার সঙ্গে ছবি তুলি। ছবি পাঠিয়ে দেব, প্রতিশ্রুতি দিই। আর যথারীতি সব ভুলে যাই। ছবিগুলো প্রিন্টই হয় না আর কোনোদিন। মনের মধ্যে রয়ে যায়, ম্যাগনোলিয়া গাছের নীচে একটি কিশোরীকল্প নেপালী মেয়ে, আর তার পাশে তার নতুন পাওয়া বাঙালী বান্ধবী; দুজনেই খুব হাসছে। আর তাদের পায়ের কাছে টুপটাপ করে ঝরে পড়ছে হালকা গোলাপী ম্যাগনোলিয়া, গন্ধহীন। রং বিবর্ণ হতে হতে ম্যাজেন্টা; হাত দিয়ে ছুঁলে প্রজাপতির ডানার মত গুঁড়ো ঝরে পড়ে। বহুদিন বাদে সে উঠে আসবে একটা নাম-না-জানা লোকের নাম-না-জানা প্রথম গল্পে, নাম বদলে।

    আর সুখিয়া থেকে জোরপোখরি যাওয়ার ঐ রাস্তাটা যে কী, যে না গেছে, তাকে বোঝানো যাবে না। রাস্তার এক জায়গায় একলা একটা কবরখানা রয়েছে যেখানে নানা রংয়ের রিবন-বাঁধা পাথরের টুকরোর তলায় দিব্যি হাত-পা ছড়িয়ে ঘুম দিচ্ছে মানুষজন; নড়লে-চড়লে মড়মড় করে হাড়গোড়ের আওয়াজ হয়। একটু মন দিয়ে চেষ্টা করলেই শুনতে পাওয়া যাবে, এত নৈঃশব্দ। অন্ধকার আর ঘন সবুজ পাইনবন, দুধারেই। নীচু থেকে একজন মানুষ উঠে আসছে, তার গায়ে লাল-হলুদ-সবুজ চকরাবকরা সোয়েটার। সুখিয়া থেকে টার্ণ নিয়ে জোরপোখরির রাস্তায় উঠতেই রি রি করা নির্জনতা গপ করে গিলে খেয়ে নেবে, আর নিস্তার নেই; পেছনে ফিরে তাকাই বারে বারে। মানুষের ঘর-গেরস্থালি ঐ দূরে পড়ে আছে সুখিয়াপোখরিতে। ধোঁয়া-কুকুরের ডাক-কুঁকড়ো-জিপের হর্ণ। সভ্যতা। কপিলাবস্তু। কন্থক ও ছন্দক মাথা হেঁট করে ফিরে চলে যাচ্ছে। এক কাপ গরম কফি ও ধোঁয়া ওঠা মোমোর জন্য নির্বাণ তাচ্ছিল্য করে ঘন্টাকয়েক পরে ফিরে আসবো, এমন পাষণ্ড।
  • Dj | 128.102.***.*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ২৩:৩৭625096
  • কিচ্ছু না, কিচ্ছুটি লিখতে পারিনি আমি.. ইন্দ্রদার লেখা পড়ে ঘাড়-মাথা-শিরদাঁড়া দিয়ে নেমে যায় ঠান্ডা স্রোত। কত যে বিস্ময় ছিল সুখিয়া থেকে জোরপোখরি যাওয়ার রাস্তাটায়!

    কেয়ারটেকার জ্যাঠামশাই ভদ্রলোক রিটায়ার করেছেন, হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে, লাঠি নিয়ে খুব ধীরে চলাফেরা করেন। আমাদের নিয়ে যান বাড়িতে, তার মনেস্ট্রি দেখাতে। চিলতে থাকার জায়গা, তারমধ্যেই হাতের তৈরী কার্পেটে, ঝাড়লন্ঠনে সাজানো। পদকগুলোও মনে হয় আছে ঐখানেই। বসন্তে রডোডেনড্রন আর ম্যাগনোলিয়ার কথাও ওনার কাছেই প্রথম শুনি। কথায় কথায় সন্ধ্যে হয়ে আসে, ইদানিং চিতার উত্পাত বেড়েছে বলে ওনার ছেলেকে বলেন আমাদের ছেড়ে আসতে। অনেক কষ্টে ওনাকে বিরত রাখি। আর এই মানুষগুলোর বিক্ষুব্ধ সময়েও অমলিন চিরন্তন হাসির সামনে নিজেদের কি দীন মনে হয় না! আমারো তো ওনাকে মনেস্ট্রির ছবি পাঠানোর কথা..

    তেত্রিশ বছর কেটে যাবে, আমিও কথা রাখব না..
  • Dj | 128.102.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ ০১:২৫625097
  • লেখাটা পুরোটা পড়ে এবার মনে হচ্ছে আরো কয়েকটা ছোট ছোট ভালো লাগার গল্প মিস করে গেছি.. সে যাগ্গে। আর ছবিগুলোতে যে হাতই দেওয়া হয়নি এখনো, এই উইকএন্ডে করে ফেলতে হবে কিছু একটা।
    নাম-না-জানা লোকের নাম-না-জানা প্রথম গল্পটি কি গুরুচন্ডালিতেই আছে? আমি কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজে চলেছি ইন্দ্রদা..
  • I | 122.79.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ ২০:৫০625098
  • ডাকিনীতন্ত্র দিয়ে সার্চ মেরে দেখতে পারেন
  • Dj | 128.102.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৪:০৫625099
  • এই ফাঁকে কি হয়ে গেল কি বলব! লেখক ধরে সমগ্র শেষ করার মত ইন্দ্রনীল ঘোষদস্তিদারের প্রায় সব লেখা পড়া হয়ে গেল! তাদের মধ্যে সুজন-সুজাতা-হেমা এসেও হানা দিয়ে গেল কোনো এক ফাঁকে। এবার রোমন্থনের সময়..
    ভালো থাকুন ইন্দ্রদা।
  • 4z | 152.176.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৩:২২625102
  • বাঃ
  • Blank | 69.93.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১১:৫০625103
  • বাঃ ট্রাইপড খানিও দারুন
  • sch | 126.203.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৩:০২625104
  • অসাধারণ ছবি - প্রেজেন্টাশানও খুব সুন্দর আর সব থেকে ভালো লাগলো ভোলুর ছবি
  • I | 24.99.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৪৮625105
  • আহা, বড় ভালো ছবি তুলেছেন ! আমার স্লো কম্পুতে ভালো করে যদিও সব ছবি দেখা গেল না।
  • de | 130.62.***.*** | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ২০:০৪625106
  • ভারী সুন্দর ছবি আর লেখা! খুব ভালো লাগলো!
  • Dj | 128.102.***.*** | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০১:১৬625107
  • খবর পেলাম শঙ্করদা আর রাহী এখন ঘুমিয়ে আছে বরা মাঙ্গয়ারই কোথাও মাটির নিচে। ঘুমোও শঙ্করদা। আমাদের তো ক্ষতবিক্ষত হতে নেই.. দুটো দিন তোমার সঙ্গ পেয়ে আমরা সম্বৃদ্ধ হই, কিন্তু তোমার পরিবারের তো এখনো অনেক পাওয়ার বাকি তোমার থেকে.. আর রাহী, তুই জানিস না, অভিমান আমরাও করতে পারি, আমার ম্যাপে আর থাকবে না বরা মাঙ্গয়া বলে কোনো জায়গা, কোনদিনও যাবো না তোর ওখানে, তোর কথাও বলব না কাউকে আর, কক্ষনো কোনদিন..

    আপনাদেরও সাবধান করে দিই, ভুলেও যাবেন না বরা মাঙ্গয়া ফার্মহাউসে.. একদম ফাঁদে পরে যাবেন, আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে যাবেন মায়াজালে.. জানিনা এর নিস্তার আছে কিনা..
  • 4z | 152.176.***.*** | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০১:২৭625108
  • এ বাবা!! কি হল?
  • sch | 132.16.***.*** | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:৩৫625109
  • Dj -- কি হল????
  • Blank | 180.153.***.*** | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১৯:৫৪625110
  • কি হলো !!
  • | ***:*** | ২৭ আগস্ট ২০১৯ ১৪:২৬625112
  • তুললাম
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন