এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • নতুন কিছু যে লিখব, শালারা সে উপায় রাখে নি!

    সুকি
    অন্যান্য | ০২ জুন ২০১৩ | ৬৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুকি | 212.16.***.*** | ০২ জুন ২০১৩ ২০:১২609089
  • নতুন কিছু যে লিখব, শালারা সে উপায় রাখে নি! হালার পো-রা সব লিখে রেখে গেছে – হালকা, ভারী, লম্বা, ছোট, বুকে পাথর চাপা, ফুরফুরে ইত্যাদি ইত্যাদি। কাকে যে গালগাল দেব বুঝতে পারি না – তার উপর আবার আছে মহাভারতের চাপ। সফিস্টিকেটেড পাতি লিখব – আঁতেল বাঙালি সমাজের সুরসুর করে উঠবে। যতই ঘুরতাল পাকানো অবৈধ সম্পর্ক বের করি না কেন, মহাভারতের আগে খাপ খুলবার যো নেই। শালারা পুরো ঘেঁটে রেখেছে! কেউ বুঝতে পারবে না এমন প্রবন্ধ লিখব – সে গুড়ে বালি। বাঙলায় লেখা কিছু থিসিস এবং গবেষণা মূলক প্রবন্ধ পড়ে দেখলাম ওখানেও পাত্তা করা যাবে না। তালপুকুর শুকিয়ে গেছে – কিন্তু পাবলিক এখন তাতে জল ঘোলা করে মনের সুখে মাছ ধরছে।

    আমি এ-ভাবেই তলিয়ে যাচ্ছি – গ্রামের ছেলে বলে, গ্রামে মানুষ হয়েছি এই সূত্রে উত্তজিত হয়ে ভাবলাম যে একটা স্মৃতিকথা টাইপের লিখলে কেমন হয়। গ্রামের খোরাক পাবলিকের কাছে হাজির করা যাবে। কিন্তু এই পথেও জটিলতা – খোরাকের শ্রেণীবিন্যাস, প্রাচীন ভারতীয় বর্ণাশ্রম প্রথার থেকেও তীর্যক। যাই খোরাক হাজির করি, অন্যে বলে তাদের ওখানে নাকি তার থেকেও বড় খোরাক ছিল। শালা তোদের ছোটবেলায় ক্যাপ্টেন হরি ছিল তোদের পথ দেখাতে?

    আর ভারতীয়ত্ব ফলাচ্ছ? প্রবাসী বাঙালী হয়েছ? সুপার মার্কেটের কাউন্টারে মেয়েটা হেসে কথা বলে তাই ফেসবুকে মতামত বিলোচ্ছ, পেপারে চিঠি ছাড়ছো যে সেখানে সবার সমান অধিকার? আমি নিজেও অবিশ্যি ভারতীয় বলে বেশ গর্ব অনুভব করি – বিশেষ কিছু তো আর নেই, কমতে কমতে এখন খাজুরাহ আর বাৎসায়ন-এ এসে ঠেকেছে। আলাপের তিন দিনের মাথায় যদি দুই ফরাসী তনয়া ডাইনিং টেবিলে বসে ডিনারের সময় কথা প্রসঙ্গে কামসূত্রের কোন একটা স্পেশাল মিলনের ভঙ্গি নিয়ে মতামত জানতে চায় কি করবি রে শালা? লিখে রাখতে পারিস নি যে বছর ২৫-এর বাঙালী যুবকের কি রেসপন্স দেওয়া উচিত? আসল কথা বিন্দুমাত্র না লিখে, ফালতু জিনিসে পাতা ভরিয়ে আমাদের জন্য আর কিছু লিখে রাখার বাকি রাখে নি।

    এলেন প্রথমে বলল ওই ভঙ্গিটা নাকি মারাত্মক – ১৮ নম্বর বা ওই ধরণের কিছু একটা হবে ফ্রেঞ্চ কামসূত্র ভার্সেন-এ। অলিভিয়া সঙ্গে সঙ্গে সহমত জানালো – এবং আরো যোগ করল যে ওই ভঙ্গির জন্য শরীর বাঁকাতে ওর সবচেয়ে বেশী কষ্ট হয়। এবার তুমি বল হে বাঙালী তোমার কেমন লাগে? বড় ডাইনিং টেবিলের উপর প্রায় উঠে পড়ে অলিভিয়া ভঙ্গিটা যথা সম্ভব পরিস্ফুটনের চেষ্টা করল। বাঙলায় একে ট্রান্সেলেট করা যাবে? কোন প্রবন্ধ বলবে না – পড়েছিল তোদের সাথে এক ক্লাসে ‘কাকা’? যে আমাদের পই পই করে বোঝাত ‘উত্থিত টেবিল পোজ’ কারে কয় ক্লাসের ফাঁকে, হোষ্টেলের আড্ডায়। কোথা হইতে যে কি হইয়া যায়!

    খালি ফুকো এই বলেছেন, ফুকো সেই বলেছেন! আরে তুই কি বলছিস? তোর কলম দিয়ে ফুকো বাঙলায় বলছেন, “ যৌনতা কোন গোপনীয়তা জমিয়ে রাখার আধার নয়, যেখান থেকে কেউ এসব সংকেত উদ্ধার করতে পারবে বা তা উদঘাটিত করে ব্যক্তি সম্পর্কে সত্য বের করে আনতে পারবে। যৌনতা এমন এক শাসনক্ষেত্র যেখানে জীবনের উপর ক্ষমতা দুই ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, এক হল মানুষের শরীরের গঠন সম্পর্কিত রাজনীতি বা আন্যাটমি পলিটিক্স এবং অন্যটি হল জনসূমহের জৈবরাজনীতি বা বায়োপলিটিক্স। এই দুই ক্ষমতা, অর্থৎ শরীরের অনুশাসন এবং জনসূমহের শাসনতন্ত্র সংগঠিত হয় যৌনতাকে কেন্দ্র করে এবং এই দুই ক্ষমতাই একে অন্যকে মদত দেয় ও আরো শক্তিশালী করে”।

    হুমমমম – বোঝা গেল, ইনফ্যাক্ট যৌনতা নিজেও মনে হয় এতো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে নি যে তার এতো এলেম। বলেছিলাম না শালারা কিছু লিখতে রাখতে বাকি রাখে নি।

    (ক্রমশঃ)
  • | 37.62.***.*** | ০২ জুন ২০১৩ ২১:২১609090
  • ঞ :))
  • ladnohc | 116.216.***.*** | ০৪ জুন ২০১৩ ০১:২৪609091
  • আর কিছু?
  • রাণা আলম | 111.2.***.*** | ০৪ জুন ২০১৩ ০৯:৩৮609092
  • অনেকদিন বাদে এত ভালো লেখা পড়লাম...

    পরতে পরতে রসগ্রহণ করেছি।মুগ্ধ হয়েছি।আরো লেখা পড়তে চাই...
    নইলে,ফুকো কে ফুঁকে দেরিদা তুলে তুলোধোনা করবো,আগাম হুমকি রইলো...
  • সুকি | 212.16.***.*** | ০৪ জুন ২০১৩ ১৭:৪৮609093
  • মাঝে মাঝে বড় কষ্ট হয় – ঢাউস ঢাউস তত্ত্ব কথা না ফেঁদে সহজ কথায় যদি আমাদের বয়সঃসন্ধিকালটাকে একটু ক্লীয়ার করে দিতিস তা হলে কি ক্ষতি হত? উডি অ্যালেন ইংরেজীতে বলেছেন যে ‘দি মোষ্ট এস্কপেনসিভ সেক্স ইজ্‌ ফ্রী সেক্স – এটা কেন তোরা বাংলায় আমাদের জানালি না? আমরা বাঙলা মিডিয়াম বলে, আমাদের কফি হাউস ছিল না বলে আমরা কি এতই ফ্যালনা? চন্দরার উচ্চারিত ‘মরণ’ না শিখিয়ে আমাদের যদি আরো একটু মাটির কাছাকাছি কিছু শেখাতিস ক্লাস টুয়েলভ্‌-এ, তাহলে পরবর্তী কালে আর এতো কনফিউজড থাকতাম না। শনিবারের পত্রিকায় পড়ছি, মাসিক ম্যাগাজিনে পড়ছি – প্রেমিকার সাথে প্রথম দিনে দেখায় এই কর না, এমনকি সরল বউকেও কিভাবে জটিল ভাবে ট্রিট করতে হবে এই সব। কেন তোরা সংক্ষেপে জানালি না যে মোদ্দা কথা হল আমাদের মধ্যে দুইটি নর্ম কাজ করে – একটা সোস্যাল নর্ম আর অপরটি হল মার্কেট নর্ম। এই দুটিকে বেফালতু মিশিয়ে ফেলেছ কি গোলমাল।

    ধর ডেটে গেছ, মেয়েকে খাওয়ালে, গিফট দিলে ঠিক আছে – তিন চার ডেটের পর বিনিময়ে কিস্‌ পেতে পার – এমনকি বেশী জমে গেলে ব্যাপারটা বিছানার আশপাশ পর্যন্তও গড়াতে পারে। কিন্তু ইনভেষ্টের বিনিময়ে সত্ত্বর কিছু না পেয়ে যদি অধৈর্য হয়ে খরচের কথা তুলে ধরেছ কি ব্যাস। পুরো ব্যাপারটা সোস্যাল নর্ম থেকে মার্কেট নর্ম-এ সিফট হয়ে যাবে। খাইয়ে আর গিফট দিয়ে চুমু আর শোবার তাল? মামদোবাজি? আমাকে এত সস্তা মেয়ে পেয়েছ? আমি রাস্তার মেয়ে? বউয়ের সাথে ব্যাপারটাও প্রায় এক - তবে সেই ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে সোস্যাল নর্মটা প্রকট থাকে।

    মার্কেট নর্ম থেকেই বাজারি কথাটা এসেছে কিনা জানি না – তবে বাজারি মেয়েরা কিন্তু এই সব ব্যাপারে ক্লীয়ার থাকে, বিশেষ করে ফ্লাইং মেয়েরা যারা দিনের বেলা কাজ শেষ করে রাতের বেলা সংসারে ফিরে যায়। এরা কিন্তু দেহ বিনিময় করে মার্কেট নর্ম অনুযায়ী – আগেকার দিনে বাঁধা বাবু এই সব শোনা যেত এখনো আছে হয়ত। সেই ক্ষেত্রে কিন্তু সোস্যাল আর মার্কেট নর্ম মিশে গিয়ে একটা বিচ্ছিরি ব্যাপার হবার সম্ভাবনা থাকে। বাঁধা বাবু মানে কি প্রত্যাশা বেড়ে যাচ্ছে? রতির পর যদি টাকা না দেওয়া হয় তা হলে কি হবে? এক গবেষকের লেখায় পাচ্ছি এই লাইনের মেয়েদের প্রতিশব্দের উদাহরণ হচ্ছেঃ
    আগুন, আনার কলি, কম্‌লি, খরশি, খাপচু, গুড গুডস্‌, গুড়িয়া, গোলাপজাম, চামকি, চাম্পি, চিকনা, চিজ, চিড়িয়া, চুটকি, চুলবুলি, চাঁদনি, ছাম, ছেমড়ি, জিটু, ঝিল্লি, তুবড়ি, দুগগি, নল, পাটি, পানসি, পিস্‌, ফান্টুস, ভাতি, মাল, মিছড়ি, রঙ্গিলা, লগদা ইত্যাদি।

    আমি এখন ভাবার চেষ্টা করছি এই নামের সাথে নর্ম গুলিয়ে ফেলে ছড়াবার কোন সম্পর্ক আছে কিনা? মানে খাপচু লাইনের মেয়ে হয়েও প্রেমে পড়তে পারে এমন সম্ভাবনা বেশী নাকি মিছড়ির? এই বিষয়ে আমি আগামী দিনে কিছু লেখার বাসনা রাখি।

    উপরিউক্ত চিন্তার থেকেও বেশী চিন্তায় ফেলেছে আমাকে ইদানিং বাঙালীর বিশেষ কিছু পাশ্চাত্য টাইপের যৌন জিনিস পত্র নিয়ে অতিরিক্ত মাথা ঘামানো। আরে বাবা ইংরেজরা আমাদের যৌনতা মেরে দিয়ে গেছে – এখন শুধু যাও কোনারক আর খাজুরাহের ছবি তোল! নইলে নবাব সিরাজদৌল্লার প্রজা আমরা, আর ‘গান্ডু’ আমাদের কাছে এখনও ‘এ’ মার্কা ছবি! বাঙ্গালী চিরকালই অসহিষ্ণু ছিল, ইদানিঙ রোগ বেড়েছে। দুম করে কিছু লিখে বা বলেই খালাস – পিরিওড। আর কোন কথা হবে না। আমি বলছি ওর ‘বলস্‌’ নেই তো নেই – প্যান্ট খুলে যাচাই করে দেখার দায় তোমার।

    গত সপ্তাহে আমাদের বাংলা সিনেমার এক প্রখ্যাত চলচিত্রকার মারা গেলেন। খুবই প্রতিভাবান ব্যক্তি ছিলেন, মার্জিত, সুশিক্ষিত। কিন্তু হোই – তাঁর সিনেমা নিয়ে বেশী আলোচনা নেই, যতটা তাঁর লিঙ্গ আছে কি নেই, ছিল কি না, থাকা উচিত কি না, থাকা বা না থাকার জন্য কি কি হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছু কিছু পাবলিকের মতে তিনি নাকি বাঙালী সমাজকে চেঞ্জ করে দিয়েছেন! জানি না ওই ভদ্রলোক নিজে কি চেয়েছিলেন – বা নিজে মনে করতেন কিনা যে তিনি অসীমসাহসী ছিলেন কিনা। কিন্তু কিছু পাবলিক সব ডিক্লেয়ার করে ‘পিরিওড’ বলে দিয়েছে। আর কিছু বলার নেই।

    আরে যৌনতা কেসটা কি সেটা বলবি তো? জিজ্ঞেস করলেই বলবে, আছে তোর সেই ‘বলস্‌’? তুই পারবি অমন চেঞ্জ হয়ে কোন সমালোচনাতেই বিচলিত না হয়ে থাকতে? না, তা পারব কিনা জানি না, ইনফ্যাক্ট মাথায় বীর্য উঠে গেলে কে যে কি পারবে সেটা তারা নিজেরাও জানবে না। এই ব্যাপারটাই ডিটেলসে পরীক্ষা করেছিলেন এম,আই,টির এক প্রোফেসর ড্যান এরাইলি – বিষয় হল ‘দি ইনফ্লুয়েন্স অব এ্যারাউজাল অন ডিসিসন মেকিং’। পরের বার এটা নিয়ে কিছু লিখব।

    আর সাহসের কথা? সে যদি বলেন তা ছিল আমাদের হুমায়ুন স্যারের। ৬০ এর কাছাকাছি গিয়ে বউকে ডিভোর্স-দিয়ে মেয়ের বন্ধুকে বিয়ে করে দুই-খান বাচ্ছা পয়দা করা। এতে ‘বলস্‌’ লাগে, ‘বলস্‌’ কেটে ফেলার জন্য সাহস লাগে এর থেকে অনেক কম। আর ‘বলস্‌’ লাগে তিরিশ বছর পরও ‘তোমাদের দাদা এই খেতে ভালোবাসতেন’ এই বলে বিজ্ঞাপন দিতে – সাহস লাগে সাহিত্য খ্যাতির চুড়োয় থেকে দুম করে শালীকে ভাগিয়ে বিয়ে করতে - এঁরা হচ্ছেন সাহসী, কারণ ওই যে, সোস্যাল নর্মকে এঁরা ঝটকা দিয়েছেন। সোসাইটি দুই বা ততোধিক ব্যক্তি জড়িয়ে গেলে যতটা চিন্তিত হয়ে পড়ে ততোটা হয় না একক-কে নিয়ে, তাতে আমার বলস্‌ থাকুক বা না থাকুক যেগুলো বড় জোর হালকা কমেডির বা খোরাকের বিষয়।

    (ক্রমশঃ)
  • সুকি | 212.16.***.*** | ০৮ জুন ২০১৩ ১৩:৫৬609094
  • তো ঠিক হল ‘দি ইনফ্লুয়েন্স অব এ্যারাউজাল অন ডিসিসন মেকিং’ নিয়ে পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষায় কিছু ছাত্রদের প্রশ্ন করা হবে যার উত্তর তারা দেবে অনুত্তেজিত (কোল্ড স্টেট) অবস্থায় এবং সেই একই প্রশ্নের উত্তর তারা দেবে উত্তেজিত (অ্যারাউজড স্টেট) অবস্থায়। পরীক্ষায় মেয়েদের নেওয়া হয় নি কারণ গবেষকরা আলোচনা (ছেলে এবং মেয়ে প্রোফেসর মিলে) করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে ছেলেদের সহজে উত্তেজিত করা যায় মেয়েদের থেকে এবং তার থেকেও বড় কথা খুব কম জিনিস পত্র সাপ্লাই করে ছেলেদের উত্তেজনা সৃষ্টি করা যায়, যেখানে মেয়েদের জন্য লিষ্টি বানিয়ে মাল সাপ্লাই করতে হবে। ছেলেদের শুধু প্লেবয় বা কিছু থ্রী এক্স ম্যাগাজিন/মুভি – সেখানে মেয়েদের জন্য ইনট্রুসিভ/এস্কট্রুসিভ মেটাল, লেদার, প্লাষ্টিক, পলিমার, কম্পোজাইট এই সব নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে।

    তবে কিছু কিছু ব্যাপারে আম্রেগীর সংরক্ষণশীল মনোভাব যে ভারতকেও টেক্কা দিতে পারে, তা আর একবার প্রমাণিত হল এই প্রোজেক্ট প্রপোজাল পাশ করাতে গিয়ে। স্কুল অব বিজনেসের কমিটি জানালো যে এই জাতীয় পরীক্ষা খুবই রিস্কী! কারণ এই পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে যদি কোন ছাত্রের নিজের উপর ঘটে যাওয়া, আপাতত সুপ্ত থাকা যৌন নিগ্রহের কথা মনে পড়ে যায়! কিম্বা এই পরীক্ষা দেবার পর যদি কেউ ঠাওর করে যে সে সেক্স অ্যাডিক্ট! বলাই বাহুল্য আজকাল যেখানে ইন্টারনেটে বাটনে চাপ দিলেই মিলিয়ন সংখ্যায় নগ্নতা, সেক্স সুলভ, সেই ক্ষেত্রে এটা মনে করা যেতেই পারে যে একজন ইউনিভার্সিটির ছাত্র অলরেডী নিজের সেক্স সংক্রান্ত অবস্থান নিয়ে মোটামুটি গেড়ে বসেছে, কবে কে পরীক্ষার সময় ম্যাগাজিন সাপ্লাই দেবে আর জন্য ওয়েট করে নেই!

    তবে যাই হোক, ওই প্রফেসর ফণ্ডিং ও পারমিশন পেলেন ওই ইউনিভার্সিটিরই মিডিয়া ল্যাব থেকে। পরীক্ষা হবে ঠিক হল বার্কেলেতে যেখানে ওই প্রোফেসর এর কোলাবরেশন আছে। তিন সেটে প্রশ্ন করা হয়েছিল – প্রথম সেটে প্রশ্নগুলি ছিল ব্যক্তির সেক্স ওরিয়েনটেশনের উপর, দ্বিতীয় সেটে প্রশ্ন গুলি ছিল অনৈতিক যৌন কার্জ কলাপ সম্পর্কিত, আর তৃতীয় সেটের প্রশ্নে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে অরক্ষিত যৌন সংসর্গে লিপ্ত হবার মানসিকতা বিষয়ে।
    এই সব প্রশ্নের উত্তর প্রথমে দিতে হবে কোল্ড স্টেটে – আর তার পরের বার (কিছু দিন পর) গবেষকরা ছাত্রটিকে একটি ল্যাপটপ ও সঙ্গে কিছু যৌন উত্তেজক মালপত্র। এই সব ছবি/মুভি দেখে ছাত্রটি নিজেকে উত্তেজিত করবে প্রথমে, আর তারপর হস্তমৈথুন (মাস্টারবেট) করতে করতে উত্তর দেবে (বীর্যক্ষলন হয়ে গেলে তখন কার মত টেষ্ট খতম, আবার পরে শুরু করতে হবে)। ল্যাপটপের স্ক্রীণে একে একে প্রশ্নগুলি আসতে থেকবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর দেবার পর পরের প্রশ্ন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ল্যাপটপের কী-প্যাডে প্লাষ্টিক প্রোটেক্টর লাগানো ছিল – টু বি ইন দ্যা সেফ সাইড। ওই ল্যাপটপ তো আবার অন্য ছাত্র কেও দিতে হবে!

    যারা যারা সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তাদের সাথে কোল্ড স্টেটে পৃথক ভাবে আলোচনা করা হয়েছিল এই মর্মে যে তারা নিজেরা কি মনে করে যে উত্তেজিত অবস্থায় ওই প্রশ্নের উত্তর কেমন দেবে। সাধারণ পাবলিকের কোল্ড স্টেটে যে মরালিটি থাকার কথা সেই অনু্যায়ীই এসেছিল উত্তরগুলো। যেমন সবাই বলেছিল যে যৌন উত্তেজনার মুখেও তারা যৌনতার দিক থেকে অনৈতিক কাজকর্ম করবে না, সব সময় সেফ সেক্সের দিকে প্রায়োরিটি থাকবে ইত্যাদি।

    কিন্তু সমীক্ষার পরে দেখা গেল যে – এই সব প্রেডিকশন, মানে আমরা কেমন আচরন করব যৌন উত্তেজনার মুখে, সে সবই আমরা যেমন ভেবেছিলাম কোল্ড স্টেটে তার থেকে অনেক আলাদা! তাই তো বলছিলাম মাথায় বীর্য উঠে গেলে আমরা অন্য বস্তু। এখানে শিক্ষিত, অশিক্ষিত বিষয়ে এনে ব্যাপারটা কনফিউস করার চেষ্টা করবেন না প্লীজ। বার্কেলে-তে ওই ছাত্র গুলি অ্যাকাডেমিক থেকে অন্তত অ্যাবোব অ্যাভারেজ ছিল। বীর্য মাথায় উঠলে সাধু, সন্ত, চণ্ডাল সব এক। এই জন্যি ভারতীয় সভ্যতার অনেক অংশ বীর্য কন্ট্রোলের উপর জোর দিয়েছে। আর এই খানেই বাউল মতের বিষয়ে আমি ধ্বন্দে থাকি – এরা আবার বীর্য উর্দ্ধক্ষেপের দিকে নজর দেয়, মানে বীর্য মাথার দিকে ঠেল! বিপদজনক ব্যাপার আর কি!

    যাই হোক কিছু উদাহরন দেখা যাক ওই ছাত্রগুলির প্রশ্ন কোল্ড আর হট স্টেটে কেমন আলাদা হয়েছিল। যেমন প্রথম সেটে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তুমি কি নিজেকে কল্পনা করতে পারছ একজন ৬০ বছরের মহিলার সাথে সেক্স করছ বলে? কোল্ড স্টেটের উত্তর আর উত্তেজিত অবস্থার উত্তরের মধ্যে ২২৯% পার্থক্য ছিল। তেমনই ১৬৭% পার্থক্য ছিল যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে পশুর সংস্পর্শে তোমার যৌন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এমনটা ভাবতে পারছ কি? ১২ বছরের মেয়ের উপর আকর্ষণ বোধ করবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরেও ১০০% পার্থক্য ঠাণ্ডা ও উত্তেজিত অবস্থার মধ্যে।
    দ্বিতীয় সেটের যৌন অনৈতিকতার প্রশ্নেও অনুরূপ পার্থক্য দেখা যায় – এক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তুমি কোন মহিলাকে কে জেনেশুনে ড্রাগ খাওয়াবে কি যাতে করে তার সাথে তোমার সেক্সের চান্স বেড়ে যায়? প্রায় ৪২০% বেশী ইতিবাচক উত্তর পাওয়া গিয়েছিল উত্তেজিত অবস্থায়। তেমনি জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তোমার ডেট যদি সেক্স করতে আপত্তি করে তার পরেও তুমি কি সেক্সের চেষ্টা করে যাবে? উত্তেজিত হয়ে বেশী পাবলিক হ্যাঁ বলেছে (১২৫% বেশী)।

    ইন্টারেষ্টিং বিষয়ে হল তৃতীয় সেটের প্রশ্নের (সেফ সেক্স সংক্রান্ত) উত্তরে উত্তেজনা বেশী প্রভাব ফেলতে পারে নি দেখা যায়! এটা দেখে আমি একটু অবাক হলাম – তারপর উৎসুক হলাম এই জানতে যে কি এমন প্রশ্ন যে যৌন উত্তেজনাও এফেক্ট ফেলে না! দেখলাম প্রশ্নের নমুনা হল – কনডোম ব্যবহারে সেক্সের আনন্দ কমে যায়। আরে গাধা, এটা তো ইউনিভার্সাল ট্রুথ! এটা আবার ফলাও করে জানতে চাইবার কি আছে?

    (ক্রমশঃ)
  • rivu | 78.232.***.*** | ০৯ জুন ২০১৩ ১০:১২609095
  • বাহ ইন্টারেস্টিং।
  • ladnohc | 116.212.***.*** | ০৯ জুন ২০১৩ ১১:৪০609096
  • মেয়েদের নিয়ে কোনো কম্ম হ​য় নি? ধুস সব অকম্মা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন