এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তিন বন্দোপাধ্যায় কাকে বেশী পছ্ন্দ?কেন?


    অন্যান্য | ০৮ জানুয়ারি ২০১৩ | ১২৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • sosen | 24.139.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:১৪585390
  • রঞ্জনদা এত হায়রোগ্লিফিক লিখেছেন?
    বিভূতি উপন্যাসে , ছোটগল্পে।
    তারাশংকর ছোটগল্পে, উপন্যাসে
    মানিক , একচুয়ালি অসাধারণ, কিন্তু ছোটগল্প আগে না উপন্যাস আগে কইতে পারুমনি।
    আর তারাশংকর -মানিক-বনফুলে তুলনামূলক আলোচনা হয়। বিভূতির হয়না। "তোমার তুলনা তুমি প্রাণ "
  • | 214.13.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:১৯585391
  • উমেশ, দুটো ই হোক। দুটো ই প্রিয়।
  • | 214.13.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:২১585392
  • সোসেন বনফুল আমার আরেক জন খুব প্রিয় লেখক। কিন্তু ছোটগল্প এ অসাধারন।

    উপন্যাস কয়েক টা খুব ভালো।

    তুমি লেখো না প্লিজ।
  • siki | 135.22.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:২২585393
  • আমার বউ। বন্দ্যো। আমার সবচে পছন্দের।
  • কৃশানু | 226.113.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:২৭585394
  • ওনার দু-একটা উপন্যাস বা ছোট গল্প আমাদেরও পড়তে দিও সিকিদা।
  • | 214.13.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:২৮585395
  • সোসেন আরেক জন পছন্দের ছোট গল্প লেখক

    নরেন্দ্র্নাথ মিত্র
  • dukhe | 212.54.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:৪১585396
  • কুড়িও কি বন্দ্যো? না বোধহয় -

    বন্দ্যো না
    কিন্তু সে মন্দ না

    অঞ্জন দত্তের সুরে সিকির গান। এর আগে "পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেবে" ইত্যাদিও গেয়ে নিতে পারে।
  • Kaju | 131.242.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৬:৪৩585397
  • না না কুড়ি তো কৌর। বন্দ্যো হবে কী করে ?
  • siki | 132.164.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৩৬585398
  • কুড়িকে নিয়ে বাজে ইয়ার্কি আমি একদম পছন্দ করি না।

    হায়। সে কুড়িও নেই, আমার সেই কোংপানিও নেই।
  • siki | 132.164.***.*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৩৯585400
  • রঞ্জনদাকে ইউনিকোড নন-ইউনিকোড ফন্ট নিয়ে দীর্ঘ জ্ঞান দিয়েছিলাম একদিন, ফোন করে। কিছুই কাজে লাগে নি দেখছি। দোষ হয়ে গেল মামুর কলের। :(
  • শঙ্কু | 127.199.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৩ ১৩:৫২585401
  • রঞ্জন্দার লেখাটার কিছু করা হবে না? পড়বার জন্য প্রান আইঢাই কচ্ছে যে...
  • siki | 132.177.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:০৮585402
  • করা যায়। তবে খচ্চা আছে। প্রথম পাপটি করেছে রঞ্জনদা বাংলাপ্লেন ফন্টে লেখা এখানে পেস্ট করে। বাংলাপ্লেন ইউনিকোড ফন্ট নয়। দ্বিতীয় পাপটি করেছে পিডিএফ থেকে কপি করে। পিডিএফ থেকে কপি হয় না, অনেক অক্ষর উড়ে যায়। যেমন সমস্ত হ্রস্ব ই উড়ে যায় পিডিফ থেকে কপি করলে।

    বাংলাপ্লেন থেকে ইউনিকোড কনভার্ট করে একটা পাপ আমি কাটিয়ে দিতে পারি। দ্বিতীয় পাপটা ম্যানুয়ালি কাটাতে হবে। আমার কাছে সময় নেই।
  • obo Ranjanda | 132.177.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:১১585403
  • প্রথম পাপ স্খালন :)

    ===================
    মানক বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ সাহত্যের রোমান্টক জগতে
    এক বৈজ্ঞানক মন
    ( ১)
    সময়টা ১৯২৮ সাল। বছর কুড় বয়সের একট ছেলে ""
    বচষনা'' পষনকার অফসে একট গল্প নয়ে ঢুকলো।
    বন্ধুদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে গল্পট সে সদ্য সদ্য লখে এনেছে। পড়ে প্রেসডেন্সী
    কলেজে অংক নয়ে। মনে রাখা দরকার তখন ঐ পষনকায় রবীন্দ্রনাথের "" যোগাযোগ''
    উপন্যাসট ধারাবাহকভাবে বেরু®&#৯৫৬;ছ।
    ছেলেটর ভাবভঙ্গী এমন যে লেখাটা এক্ষুণ ছাপালে ভালো হয়!
    প্রকাশত হল গল্প ""অতসীমামী''। কন্তু ছেলেট নজের আসল নাম প্রবোধ চন্দ্র
    বন্দ্যোপাধ্যায় না দয়ে লেখকের নাম দল মানক বন্দ্যোপাধ্যায়, বাড়র ডাকনাম
    থেকে।। মানকের আত্মবশ্বাস তখন আকাশছোঁয়া। এর ফলে মানক বজ্ঞানের পড়া
    ছেড়ে লেখাকেই পুরোপুর জীবকা হসেবে বেছে নলেন। কলেজে পড়ার সময়েই
    উপন্যাস লখলেন--"" দবারাষনর কাব্য''। পড়ে ""শনবারের চঠ'' পষনকার
    ডাকসাইটে সম্পাদক সজনীকান্ত দাস মশায় অবাক! এই উনশ-কুড় বয়সের
    ছেলেটার মনটা তো সরল নয়।
    এই উপন্যাসে বাংলাসাহত্য পেল এক নরাসক্ত প্রেমক
    হেরম্বকে। যে প্রাক্তন প্রেমকা ববাহত সুপ্রয়ার বাড়তে রাত কাটানোর সময়
    সুপ্রয়ার সোজাসুজ আমন্ত্রণ-- "" আপন একবার বললেই আপনার বছানায় উঠে
    বসতে পার'' শুনেও অনায়াসে প্রত্যাখান করে। আর তার আশ্রমবাসী কশোরী
    প্রেমকা আনন্দ? মেয়েট হেরম্বর প্রেম সম্পর্কে দার্শনক বক্তব্য শুনে তাকে ডাকে
    এক রাষেন চন্দ্রকলা নৃত্য দেখতে। ধীরে অত ধীরে সেই নাচ, এক আগুনের বৃত্তকে
    ঘরে। হেরম্ব সম্মোহতের মত দেখে। আনন্দ এক এক করে খসয়েফেলে তার
    বসন। সমর্পন করে অগ্নকে। তারপর যেন জীবনের শেষ শক্তটুকু দয়ে আগুনের
    মধ্যে পড়ে যায়। হেরম্ব শুধু দেখে। আনন্দ এই ভাবে তার প্রেমকে বাঁচয়ে দয়ে যায়।
    কোথায় মষ্ট মষ্ট প্রেমের গল্প! এই লেখার যে জাতই
    আলাদা।
    কলেজ পড়াশোনা ছাড়লেও মানক আজীবন
    নজেকে বজ্ঞানের ছাষন বলেই মনে করতেন। চলমান জীবনের পরবেশ ও
    চরষনগুলোর আচার-ব্যবহার--- এসবের সুক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ছল তাঁর প্যাশন। চেষ্টা
    করেছেন এর মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজতে, আর মানবজীবনকে তার সমগ্রতায়
    বুঝতে।
    আজ থেকে একশ বছর আগে জন্মানো এই
    লেখক লখেছেন প্রায় আটাশ বছর ধরে। আঠেরো থেকে রোগশয্যায় আটচল্লশ বছর
    বয়স অব্দ। জদ ধরে পড়াশুনো ছেড়ে সাহত্যচর্চায় আত্মনয়োগ করার সংকল্প
    নলেন। বাড়তে সাব-ডেপুট হাকম বাবা,আবহাওয়াবদ্‌ বড়দা, ডাক্তার মেজদা --
    - ফল অশান্ত। প্রথম কয়েকবছরের চাকরর কথা বাদ দলে সারাটা জীবন লেখাকে
    অবলম্বন করেই বেঁচে রইলেন। আর্থক সংকট নত্যসঙ্গী হয়ে রইলো। ফলে Øষনী-
    পুষনকন্যার সাথে অশান্ত। ডায়েরতে লখে গেছেন-- ওঁর এই স্বে&#৯৫৬;ছায় স্বীকারকরা
    গরীবর ভাগ অন্যেরা কেউ নতে চায়না যে! ফল অশান্ত। লখলেন ৩৫ট উপন্যাস,
    একট নাটক ও ১৬ট গল্পগ্রন্থ। লেখার আদর্শ নয়ে বাজারের সাথে আপোষ করতে
    অরাজী। ফলে বখ্যাত উপন্যাস "" পদ্মানদীর মাঝ'' ওনার জীবৎকালে সনেমা হতে
    হতে হোল না। ১৯৩৬ সালে লখলেন বাংলাসাহত্যের আর এক যুগান্তকারী
    উপন্যাস --""পুতুলনাচের ইতকথা''। আর তখনই জানলেন কছুদন ধরে যে মাথার
    যন্ত্রণায় ভুদছেন, মাঝে মাঝে অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা, তার কোন চকৎসা তখন
    পর্য্যন্ত মেডক্যাল সায়েন্স আবষ্কার করতে পারেন।
    তাহলে? পরষনাণ কোথায়?
    লেখা বন্ধ করা? "" কেন লখ'' প্রবন্ধে নজেই বলেছেন--" লেখক নছক কলম-
    পেষা মজুর।কলম-পেষা যদ তার কাজে না লাগে তবে রাস্তার ধারে বসে যে মজুর
    খোয়া ভাঙে তার চেয়েও জীবন তার ব্যর্থ, বেঁচে থাকা নরর্থক।''
    বজ্ঞানীর মন নয়ে মানক পড়তে শুরু করলেন মেডক্যাল
    ্‌সায়েন্সের বইপত্তর, জানলেন--রোগের নাম এপলেপ্স বা মৃগী। আরও জানলেন যে
    লেখা বা মস্তষ্কের ওপর অতরক্ত চাপ এই অসুখকে বাড়য়ে তোলে। এবার মানক
    ক করবেন? লেখা ছেড়ে দশটা-পাঁচটার কলম-পেষা চাকর?
    নজের প্রতভার ওপর আস্থাশীল আত্মবশ্বাসী মানক বেছে নলেন এক আত্মঘাতী
    পথ। বভন্ন মেডক্যাল বই ঘেঁটে সাময়ক প্রতষেধক হসেবে এক পেটেন্ট ওষুধ ও
    মদ্যপান। অনেক কছু বলার আছে যে! তাই সীমত আয়ুর মধ্যে সুস্থ হয়ে লখে
    যেতে হবে।
    বাক জীবন হয়ে দাঁড়াল এক লড়াই, একদকে চকৎসার-
    অতীত মৃগীরোগ আর একদকে সৃজনপ্রতভার লেখার চাপ। অনেকবার মৃত্যুকে খুব
    কাছ থেকে দেখলেন। আস্তে আস্তে শল্পচর্চা ও জীবনচর্চা, আত্মরক্ষা ও
    আত্মহনন এক হয়ে গেল। এই সময়েও পারবারক দায়ত্ব অস্বীকার করেন ন। বৃদ্ধ
    বাবা এসে রইলেন স্ব&#৯৫৬;ছল দুই বড় ছেলেকে ছেড়ে অসুস্থ, সাহত্যের সাধনায় মগ À
    মানকের সঙ্গে , ভাড়াবাড়তে। কখনও Øষনী অসুস্থ হলে মানক রান্না করে
    খাইয়েছেন বাবাকে, অসুস্থ Øষনীকে, ছোট ছেলেমেয়েদেরকে। চঠ লখেছেন
    আর্থক রূপে সম্পন্ন বড়দা সুধাংশুবাবুকে,- চকৎসার জন্যে একবছর মাসে মাসে
    একশ' টাকা সাহায্য চেয়ে। বড়দা তখন পুণাতে আবহাওয়াবদের চাকরতে
    সুপ্রতষ্ঠত। সাহায্য পেলেন না, পেলেন দাদার দেয়া জ্ঞান--- মানক অপদার্থ।
    আত্মসম্মানে ঘা' লাগল। মানক দাদাকে লখলেন--
    ""আপনাকে একট পয়সা কাহাকেও সাহায্য করতে হইবে না। আপন শুধু ধীরে
    ধীরে সকলের সঙ্গে প্রীত ও দরদের সম্পর্ক গড়য়া তুলুন''।
    মানক বঙ্গশ্রী প্রেসের চাকর ছাড়লেন, লেখা ছাড়লেন
    না। আত্মবশ্বাসে ভাঁটা পড়েন। ১৯৩৭ সনের চঠতে লখেছলেন---তন চার
    বছরের মধ্যে অধকাংশ সাহত্য সমালোচক স্বীকার করেছেন যে রবীন্দ্রনাথশরৎচ
    ন্দ্রের পরবর্তী যুগে উনই সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক। তবে জনতার কাছে পপুলার হতে
    সময় লাগবে। কাজেই আর্থক টানাটান। একদকে প্রকাশককে জানান-
    ""সম্মানমূল্যের জন্যে আম গল্প লখ না, গল্প লখয়া কছু "সম্মানমূল্য' প্রত্যাশা
    কর।'' আবার এও জানাতে ভোলেন না যে পারশ্রমকটা নগদ হাতে হাতে দতে
    হবে।
    পূব-বাঙলার কোন পষনকার প্রকাশককে জানান --""
    আম বাঙ্গাল। বাঙ্গাল দেশের কাগজের জন্য লেখার পারশ্রমক কমাইয়া দশটাকা
    পর্য্যন্ত করতে পার।'' কন্তু সেই প্রকাশক আট টাকা পাঠানোর কথা জানালে বরক্ত
    মানক জানান--প্রকৃত সাহত্য পষনকা হলে এবং তার আর্থক অবস্থা সত্য সত্য
    খারাপ হলে
    উন বনেপয়সায় ও লেখা দয়ে থাকেন। শেষে স্পষ্টাস্পষ্ট বলেন--- "" টাকা
    পাঠাইবেন না, বেশী টাকাও নয়। আমায় মার্জনা করবেন, আম আপনাদের লেখা
    দতে পারব না।''
    এইভাবেই লেখা চলতে থাকে। কন্তু অনয়মত আয়,বাবা ,
    Øষনী-ছেলেমেয়ের দায়-দায়ত্ব। ফলে চকৎসা ও চলে অনয়মত ঢঙে। কন্তু এই
    নতুন ধাঁচের লেখা একটু দেরতে হলেও একদন সাধারণ মানুষ বুঝবে এই ভরসা
    ছল।
    এই সময়ের কথা নয়ে মানকের আত্মীয় ও চল্লশ থেকে
    ষাটের দশকের সময়ের এক বশষ্ট কব যুগান্তর চষন²²বর্তী লখেছেন যে-
    "" এই অমানুষক প্রয়াসের ফলস্বরূপ ষন²মে অস্তত্ব সুদ্ধ বপন্ন হয়ে পড়ে।''---
    --- শেষ তন বছরের (১৯৫৪-৫৬) কছুকাল ইসলাময়া হাসপাতাল ও তারপর
    লুম্বনী পার্কের মানসক হাসপাতালে মাস-দুমাস চকৎসা করা হয়। এইসময় মানক
    মদ ছাড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। শেষে আশ্রয় পেতে চান কোন আধভৌতক মায়ের,
    সম্ভবতঃ কালীমায়ের কাছে। হার্মনয়াম বাজয়ে শ্যামাসঙ্গীত গাইতেন। ভাবতেন
    মায়ের দয়ায় এই নেশা ছেড়ে যাবে। তবে সামাজক-রাজনৈতক জীবনে মার্কস্‌বাদী
    বামপন্থায় আস্থা অটল ছল।
    কন্তু "" মায়ের দয়া'' ও তাঁকে মদ ছাড়াতে পারল না। ভয় পেতেন
    যে, যেকোন আরোপত চেষ্টার সামান্যতম চাপে হয়তো তাঁর অন্তঃপ্রকৃতর গঠন ও
    সৃষ্টময়তা নষ্ট হয়ে যাবে।''
    ১৯৫৬ সালের ২রা ডসেম্বরে তাঁকে সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায়
    নীলরতন সরকার হাসপাতালে আনা হল এবং ৩রা সকালে মানক শেষ নঃশ্বাস
    ত্যাগ করলেন।
    কোলকাতা থেকে বহুু হাজার মাইল দূরে আমাদের নউ ইয়র্ক
    শহরে আজ আমরা মানক নামের এই আশ্‌চর্য প্রতভার শতবার্ষকী উদ্‌যাপন
    করতে সমবেত হয়েছ। কন্তু এই স্বল্প সময়ে এমন বহুমাষনক গদ্যের পরচয় তুলে
    ধরা কঠন কাজ। বাঁধা গতের বাইরে এইলেখকের লেখার মাধ্যমে চলমান জীবনকে
    অপারেশন থয়েটারের টেবলে নর্মোহ বৈজ্ঞানকের চোখ দয়ে ডসেকশান করে
    দেখার প্রয়াস আর সেই সাধনায় নজের জীবনকেই বাজ ধরা--- এ এক
    ফেনোমেনন!
    কাজেই আমাদের সীমত সাধ্য ও সময়ের সীমাকে মাথায় রেখে
    আপনাদের সামনে আজ শোনাব মানকের লেখার কছু নর্বাচত অংশ। ধরা যাক,
    দুই মেজর উপন্যাস--- "" পদ্মানদীর মাঝ'' ও "" পুতুলনাচের ইতকথা''; আর
    একট ছোট উপন্যাস ""হরফ''। বাদ দেব না প্রথমদকের উপন্যাস ""জননী''কেও।
    এইভাবে আসবে ছোটগল্পের বশাল ঝাঁপ থেকে তুলে আনা সরীসৃপ, শৈলজ
    শলা,মাসপস, ছনয়ে খায়ন কেন, আর অবশ্যই
    বহুপঠত" ছোট বকুলপুরের যাষনী এবং নানা মঞ্চে অভনীত হারাণের নাতজামাই ।
    ভয় পাবেন না। আম এখানে বই থেকে পড়ে শোনাবো না।
    কাহনীর স্ট্রাকচারকে কথকতার ঢংয়ে শোনাবো এবং বখ্যাত কছু লাইনকে
    খানকটা জোর দয়ে , যেখানে সম্ভব একটু অভনয় করে আপনাদের মূল লেখার
    আত্মার সংগে পরচয় করানোর চেষ্টা করবো। তবে এই নর্বাচনের মধ্যে অবশ্যই
    একট যোগসূষন থাকবে, তাহল মানুষের অত্যন্ত কঠন পরস্থতর মধ্যেও বাঁচার
    ই®&#৯৫৬;ছ বা জজীবষা, আর নারীচরষন নয়ে মানক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চন্তা।
    একট গল্প বল । তখন দ্বতীয় বশ্বযুদ্ধের সময় মানক বাবু
    তৎকালীন নতুন বামপন্থী ঘরানার সাহত্যক গোপাল হালদারদের সঙ্গে"" প্রগত
    লেখক শল্পী সংঘের'' সাথে সষন²য় ভূমকায়। একবার এক সাহত্যপাঠের ঘরোয়া
    আসরে মানকবাবু একট গল্প পড়লেন। তারপর তার সমালোচনা করল এক সদ্য
    দাঁড়গোঁফ গজানো তরুণ। সে বল্লো--- মানকবাবুর লেখায় Øষনী-চরষনগুলো কস্‌স্যু
    হয় ন। নারীচরষেনর গভীরতা বোঝার ক্ষমতা মানকবাবুর নেই। মানকবাবু চুপ্‌চাপ
    শুনে বৈঠকের শেষে চলে গেলেন। পরে একজন মানককে বল্লেন-- ঐ এঁচোড়েপাকা
    ছেলেটকে আপন একট চড় কষালেন না কেন?
    মানক হেসে বল্লেন-- কেন চড় লাগাব? পাগল ছোকরা যে আমার
    সাহত্যচষেন²র সাথী, সেই অধকারেই সে আমার লেখার সমালোচনা করেছে।
    আমরা প্রথম কথা বলবো একট ছোটগল্প নয়ে যার নাম ""প্রাগৈতহাসক''।
    গল্পট ভারতের বভন্ন ভাষায় অনুদত। এছাড়া ইংরেজ,চেক ও ডাচ্‌ ভাষাতেও
    এর অনুবাদ হয়েছে।
    গল্পটর পৃষ্ঠভূম আজ থেকে আশ বছর আগের গ্রামবাংলা।
    সংক্ষেপে বলতে গেলে ভখু বাগ্‌দী এক অসাধারণ শক্তশালী পুরুষ যার পেশা
    হল ডাকাত।তার জীবনের চালকাশক্ত হল আদম প্রবৃত্ত। সব কছু ছনয়ে নাও,
    ভোগ কর।টাকাপয়সা ও নারী। তার কোন ববেকের বালাই নেই। Øষনীর চোখের
    সামনে স্বামীকে বেঁধে মারলে, ছেলের গা থেকে ফনক দয়ে রক্ত ছুটলে মার
    আর্তনাদ্‌---
    মশালের আলোয় এসব দেখে তার যেন নেশা হয়ে যায়। ধরা পড়ে জেলে গয়েছল
    মাষন একবার। কন্তু দু'বছরের মাথায় জেলের দেয়াল টপকে পালায়। নজের সঙ্গী রাখু
    বাগদীর বৌকে নয়ে সুন্দরবনের হাতয়া দ্বীপে আস্তানা গাড়ে। তারপর ছ'মাস গেলেই
    রাখুর বৌকে হাতয়ায় ফেলে এসে অন্যদল গড়ে ডাকাত করতে থাকে। এহেন
    ভখুও
    এবার বৈকুন্ঠ সাহার গদতে ডাকাত করতে গয়ে ফাঁপরে পড়ে যায়। সাহাবাড়র
    মেজভাইটর গলাট ও দা'য়ের এক কোপে দু'ফাঁক করে দেয় বটে, কন্তু ও ছাড়া
    গোটা দলটা ধরা পড়ে যায়। ও পালায়, পেছনে পুলশ। কন্তু কাঁধে বর্শার খোঁচা
    খাওয়া মারাত্মক ঘা'। পচে- পেকে- ফুলে একসা।
    পুরনো সঙ্গী পেল্লাদ পুলশের ভয়ে তাকে জঙ্গলে মাচা বেঁধে লুকয়ে
    রাখে। ঘন বরষা। মাছ-মশা-জোঁক। সাপ ও জংল জানোয়ারের ভয়।
    কন্তু ভখু? মানক বলেন---"" মরবে না।সে কছুতেই মরবে না। বনের পশু যে
    অবস্থায় বাঁচে না সেই অবস্থায়, মানুষ সে বাঁচবেই।''
    শেষমেশ ভখু বেঁচে ওঠে , কাঁধের ও হাতের ঘা শুকোয়। কন্তু চোটখাওয়া
    ডানহাতটা শুকয়ে যায়। ভখু নুলো হয়ে পড়ে। পালাতে পালাতে যায় অনেকদূর।
    কন্তু অচেনা জায়গায় না আছে মাথাগোঁজার ঠাঁই, না আছে পেটের ভাতের জোগাড়।
    খদের জ্বালায় দুর্দান্ত ডাকাত ভখু আস্তে আস্তে ভখার হয়ে যায়। ঐ নুলো হাত
    দেখয়ে সহানুভূত আদায় করে । আর ঐ পেশার ঘাঁতঘোত ষন²মে ষন²মে শখে নেয়।
    পেটের জ্বালা মেটে। এবার শরীরের জ্বালা বাড়ে। বাজারের সামনে পায়ে থক্‌থকে ঘা'
    ওলা এক যুবতী ভখারণীর দকে চোখ পড়ে। পাঁচী ওর ঘা' সারাতে চায় না। ঐ
    তার পুঁজ। ওরই জোরে অন্যের থেকে বেশ ভক্ষে পায়।
    ভখু বোঝায় যে ওর সঙ্গে থাকলে আর ভক্ষে করতে হবে না, তাই ঘা'
    সারয়ে ফেলতে কোন আপত্ত থাকার কথা নয়। ভব ভোলে না। পাঁচী জানায় কাল
    যদ ভখু ওকে ছেড়ে পালায় তাহলে ওর ঘা' আবার ফরে পাবে ক করে?
    --- ঘা সারলে তোর আর ভক্‌ মাগত অইবো না, -জানস্‌?
    আম তোরে রাখুম।
    ---- আম থাকল ত।
    --- ক্যান্‌? থাকব না ক্যান্‌? খাওয়ামু, পরামু, আরামে
    রাখুম, পায়ের পরন পা দয়া গাঁট হইয়া বইয়া থাকব। না করস তুই কয়ের লাগ?
    ----- দুদন বাদে মোরে যখন তুই খেদাইয়া দব , ঘা মুই তখন
    পামু কোয়ানে?
    ক্ষুণ À মনে ভখু ফরে যায়। দন কাটে। ভখু ভাবতে থাকে।
    অবশেষে কামের তাড়না ঘৃণাকে হারয়ে দল। ভখু ঘা' শুদ্ধু
    পাঁচীকে নতে রাজ। কন্তু গয়ে দেখে দের হয়ে গেছে। পাঁচী ইতমধ্যে আরেক
    ভখার ল্যাংড়া বসর মঞার সঙ্গে থাকতে শুরু করেছে।
    ---- আই&#৯৫৬;ছা, চল, ঘা লইয়াই চল।
    --- আগে আইবার পার নাই? যা, অখন মর গয়া, আখার
    তলের ছাল খা গয়া।
    -- ক্যান্‌? ছাল খাওয়ানের কথাডা কী?
    ---- তোর লাইগা হাঁ কইর‌্যা বইসা আছ ভাবছস তুই,
    বটে? আম উই উয়ার সাথে রইস। বসস্‌ যে? যা পলাইয়া যা, দেখল খুন কইরা
    ফেলাইবো কইয়া দলাম।
    ---- আরে থো, খুন অমন সব হালাই করতছে। উয়ার
    মতো দশটা মাইন্‌ষেরে একা ঘায়েল কইরা দবার পারতাম, তা জানস্‌? আম
    তোরে রাখুম।
    ---- ইরে সোনা! তামুক খাবা? ঘা দেইখ্যা পছাইছল, তোর লগে
    আর খাতর করে হালার পুত? উয়ারে ছাড়ুম ক্যান? উয়ার মতো কামাস্‌ তুই?
    ঘর আছে তোর? ভাগব তো ভাগ্‌, নইলে গাল দমু কইলাম।
    বসর থাকে মাসক আট আনা ভাড়ায় এক ঝুপড়তে। ভখু কাছে
    ঘেঁষতে গেলে বসর লাঠ তুলে ওর মাথাটা ছেঁচে দেবার সংকল্প জানায়।
    --সেলাম ময়া।
    --- ইদকে ঘুরাফরা ক জন্য? লাঠর একঘায়ে শরট ছেঁচ্যা দমু
    নে। ফের উয়ার সাথে বাতচত করল জানে মাইরা দমু, আল্লার করে।
    দুজনের মধ্যে একচোট গালাগাল হয়ে গেল। ভখুর হাতে লাঠ ও
    বসরের হাতে একটা পাথর থাকায় মারামার অব্দ গড়ালো না। ভখু যেতে যেতে
    শাসয়ে
    গেল,--- র, তোরে নপাত করতছ।
    ভখু ভাবে শীত এলে খোলা জায়গায় থাকা কঠন। রোজগার
    কমে আসছে। মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই আর দুবেলা খাওয়ার জোগাড় না থাকলে
    পাঁচী কেন, কোন যুবতী ভখরই সঙ্গে থাকতে রাজ হবে না। যেমন-তেমন ঘর
    একখানা যে চাই। নদীর ধারে খ্যাপার মত ঘুরতে ঘুরতে তার মনে হয় যে পৃথবীর
    যত খাবার ও নারী সব একা দখল করতে হবে। নইলে তৃপ্ত হবে না। বুকের মধ্যে
    এক নরুপায় হাহাকার জাগে--- বাঁ হাতটরে লইয়া ডানটরে যদ রেহাই দতা
    ভগবান!
    শেষে একদন এক রাতে ভখু চুপসাড়ে ঢুকে পড়ে ঘুমন্ত বসর ও
    পাঁচীর ঘরে। বাঁ হাতে ধরা এক ছুঁচলো লোহার শক ঢুকে যায় বসরের মাথায়, বেশ
    কয়েক ইঞ্চ! বসর ঘুমের মধ্যেই মারা যায়।
    একটমাষন হাতের সাহায্যে অমন জোয়ান মানুষটাকে ঘায়েল
    করে ভখুর আর গর্বের সীমা নেই। পরম তৃপ্তর সঙ্গে নজের কীর্ত দেখতে দেখতে
    পাঁচীকে বল্লো---- দেখছস্‌? কেডা কারে খুন করল দেখছস্‌? তখন পই-পই
    কইরা কইলাম। ময়াবাই ! ঘোড়া ডঙাইয়া ঘাস খাইবার লারবা গো, ছাড়ান দেও।
    শুইন্যা ময়াবাইয়ের অইল গোসা। কয় কনা, শর ছেঁইচা দমু! দেন গো দেন, শর
    ছেঁ&#৯৫৬;ছাই দেন ময়াবাই।
    বসরের মৃতদেহের সামনে মাথা দুলয়ে অট্‌ঠাসতে ফেটে পরে ভখু।
    তারপর হঠাৎ রেগে ওঠে--- ঠ্যাইরান বোবা ক্যান গো; আরে কথা ক' হাড়হাবাইতা
    মাইয়া! তোরে দমু নাক সাবাড় কইর‌্যা, --অ্যাঁ?
    ভয়ে কাঁপতে থাকা পাঁচীকে পঠে তুলে ভখু হাঁটতে শুরু করে। রাষেনর মধ্যেই
    নদীর ঘাট থেকে নৌকো চুর করে ভেসে যেতে হবে অনেকদূর। আকাশে নবমীর
    চাঁদ ওঠে।
    এবার আমরা শুনতে পাই মানকের অমোঘ নরাসক্ত কন্ঠস্বর,
    বধাতাপুরুষের মত।
    "" কন্তু যে ধারাবাহক অন্ধকার মাতৃগর্ভ হইতে সংগ্রহ করয়া দেহের
    অভ্যন্তরে লুকাইয়া ভখু ও পাঁচী পৃথবীতে আসয়াছল এবং যে অন্ধকার তাহারা
    তাহাদের সন্তানের মাংসল আবেষ্টনীর মধ্যে গোপন রাখয়া যাইবে তাহা
    প্রাগৈতহাসক, পৃথবীর আলো আজ পর্যন্ত তাহার নাগাল পায় নাই, কোনদন
    পাইবে না।''
    এবার এর বপ্রতীপে রাখব "" পুতুল নাচের ইতকথা'' উপন্যাসের নায়ক
    শশ ডাক্তারকে যে উনশশতকীয় মূল্যবোধের র‌্যাশনাল মানুষ। বুদ্ধজীবী। ভখুর
    মত শারীরক প্রবৃত্ত ও আবেগের বশ নয়, সে সব কছুতেই কার্যকারণ সম্পর্ক
    খোঁজে। তাই সে ডাক্তার পাশ করে কোলকাতায় গয়ে পসার বাড়ানোর চেষ্টা না
    করে পৈতৃক গন্ডগ্রাম গাওদয়ায় থেকে যায়। সাধ্যমত চেষ্টা করে গাঁয়ের হাইজনবোধ
    বাড়াতে, অন্ধবশ্বাস কম করতে। তার ছোট বেলার বন্ধু পরাণ বৃষ্টর সন্ধ্যায় বাজ
    পড়ে মারা গেলে সে তাদের পরবারের প্রায় ফ্রেন্ড- ফলজফার- গাইড হয়ে যায়।
    বন্ধুর বধবা কুসুম যেন একটু গা- ঘেঁষা, যেন একটু বাঁকা ভাবে কথা বলে।
    শশডাক্তার অসম্ভব নরাসক্ত থাকে। যখন কুসুম বলে --আপনার সঙ্গে এমন সন্ধ্যেয়
    কোথাও চলে যেতে ই®&#৯৫৬;ছ করে, ছোটবাবু! , শশ যেন বুঝেও বোঝে না।
    আবার কুসুম যখন বলে - আপনার পাশে দাঁড়ালে শরীরটা কেমন করতে
    থাকে, তখন বুদ্ধজীবী শশডাক্তার মনে মনে ভাবে---- শরীর! শরীর ! তোমার মন
    নাই কুসুম?
    নারীর আদম আহ্বানের প্রতদানে এই র‌্যাশনাল রেস্‌পন্স্‌! এতো কোন
    গাঁয়ের চাষী যুবকের সহজয়া প্রতষন²য়া নয়, এ'হল উনশশতকের ইংরেজ শক্ষায়
    শক্ষত ইউরোপীয় মননের প্রত&#৯৫৬;ছায়া। এইখানে মানকের দুই নায়ক আলাদা। ভখু
    আর শশী ডাক্তার যে একেবারে উত্তরমেরু-দক্ষণমেরু! তবু এই শেষ নয়, মলও
    আছে। ভখু আর শশী দুজনেই কঠন প্রতকূল পরবেশের মধ্যে হার না মেনে বেঁচে
    থাকে। নজের মত করে পারপার্শ্বককে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যায়।
    শশী বৃদ্ধ যাদবের গণনা-ই&#৯৫৬;ছামৃত্যু আদ কুসংস্কারের বরুদ্ধে দাঁড়ায়। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে
    দেয় --- সত্য কোন ক্ষমতা থাকলে যাদব নজের মৃত্যুর তারখ ফোরকাস্ট করে
    দেখান দেখ! যাদবের Øষনী ভয় পেয়ে যান। কন্তু বৃদ্ধ যাদবের অহংকার
    আকাশছোঁয়া! উন তারখ-দনক্ষণ ঘোষণা করেন- কবে উন একা ন'ন, গোটা
    যাদবদম্পত ই&#৯৫৬;ছামৃত্যু বরণ করবেন। চারদকে উত্তেজনা বাড়ে। কে জতবে প্রাচীন
    বশ্বাস না ক কোলকাতা থেকে ডাক্তর পাশ করা শশীর বজ্ঞানমনস্কতা? যাদবের
    Øষনী গোপনে শশীর হাত ধরে আকুল- বকুল করতে থাকেন--- ও বাবা শশ!
    তোর কথা ফরয়ে নে'।
    উন যে বাঁচতে চান, স্বামীকেও বাঁচাতে চান। কন্তু অন্ধবশ্বাসের জয় হোল।
    গোটা গাঁয়ের ভীড়ের সামনে যাদব-দম্পত দেহ রাখেন। পুণ্যাত্মা ও সতীর
    জয়জয়কারে
    গাঁয়ের বাতাস কেঁপে ওঠে। কন্তু ডাক্তারের চোখ মৃত্যুপথযাষনীর মুখে ফুটে ওঠা
    বন্দু-বন্দু ঘাম আর ঢুলুঢুলু চোখে অতরক্ত আফমের লক্ষণ ঠক চনে নেয়, মুখ
    বন্ধ থাকে। ডাক্তার বোঝে ---- এই অন্ধকার দূর করা সহজ নয়,অল্পদনের শৌখন
    ব্যসন নয়। তাই সে কোলকাতায় না গয়ে গাওদয়া গ্রামে স্থায়ীভাবে থাকবে ঠক
    করে। হার মানে না।
    ইতমধ্যে একবার যখন মানসক চাপে হার মেনে শশ কুসুমকে বলে ---
    যাবে বৌ আমার সঙ্গে? একবার আমার সঙ্গে যেখানে খুশ যেতে চেয়েছলে?
    কন্তু তাকে অবাক করে কুসুম জানায় আজ তা' সম্ভব নয়।
    কুসুম বোঝায়---- একটা লোহার পাষনকে অযতে Á খোলা জায়গায়
    রোদেজলে ফেলে রাখলে যেমন জং ধরে, মরচে পড়ে, তেমন ভালোবাসাও
    অবহেলায় আগের জৌলুস হারয়ে ফেলে। আজীবন টঁকে থাকে না।
    আমরা ভালবাসার এহেন পোস্ট্‌মর্টেমে অভভূত হই। কারণ,
    বাংলাসাহত্যে প্রেম বা ভালোবাসা যে অনেকসময়ই রোমান্টক আবেগে জব্‌জবে হয়ে
    থাকে।
    সাহত্যে বৈজ্ঞানক মননের বরল প্রয়োগ করেছেন মানক। তাই "" পুতুলনাচের
    ইতকথা''য় মানুষ কেবল অদৃশ্য হাতের সুতোর টানে ঘোরে না, বরং পরবেশ দয়ে
    নর্ধারত গন্ডীর মধ্যে স্বতন্ত্র অস্তত্বের তালাস করে। ঐ গন্ডীর বাইরে যেতে চায়---
    তা সে শশডাক্তারই হোক, ক যাষনাদলের নায়ক শশর বন্ধু কুমুদই হোক। আবার
    প্রাগৈতহাসকের ডাকাত ভখু সম্বন্ধেও একই কথা।
    (২)
    আগেই বলেছ আমাদের বশেষ আগ্রহ মানকের আঁকা নারীচরষনদের
    নয়ে। কেন বলুন তো? ক আছে এমন যা ২০০৮ এ পড়তে গেলেও আমাদের
    ধাক্কা দেয়? ভাবায়? বলছ, একটু গুছয়ে নতে দন।
    মানকের নারীরা কেউ ট্রাডশনাল মা- মাসমা- বৌদ ধাঁচে গড়া নয়;
    ওরা নয় ছুঁচের কাজ করে ""পত-পরম-গুরু'' লখে ফ্রেমে বাঁধয়ে দেয়ালে টাঙয়ে
    রাখনেওয়ালা "" বুক-ভরা-মধু, বঙ্গের বধূ''। ওরা আপনার -আমার মতই মানুষ।
    ওরা বাঁচে ওদের বাসনা-কামনা- তৃপ্ত-অতৃপ্ত সবকছু নয়ে, আপনার-আমারই
    মত। ওরা ভীষণ জীবন্ত। প্রতকুল পরবেশে ওরা বাঁচার তাগদে হংস্র হতে
    পারে, হতে পারে খুন। আসুন, ওদের কয়েকজনের সঙ্গে পরচয় কর।
    মানকের প্রথমদকের উপন্যাস "" জননী''। বধবা শ্যামা ছেলেমেয়েকে
    অনেক কষ্ট করে মানুষ করে। কন্তু বা&#৯৫৬;চাছেলে বধান জানলার শকের থেকে
    পোষাবেড়ালকে
    গলায় ফাঁস দয়ে ঝুলয়ে দেয় আর কাঁপতে কাঁপতে ওর মৃত্যুযন্ত্রণা দেখে। পোষা
    টয়েপাখর গলা মুচড়ে মেরে ফেলে আবার কাঁদে। শ্যামা স্তম্ভত। বধান বড় হয়।
    চাকর করে, বোনের বয়ে দেয়। শ্যামার সুখের দন এল বলে। কন্তু শ্যামা আবার
    শক্‌ খায় যখন বধান বয়ের জন্যে শ্যামার প&#৯৫৬;ছন্দের কশোরী মেয়েটকে বাতল করে
    ডবকা গড়নের কনককে বয়ে করে। শ্যামা ভাবে --- এক রুচ ছেলের! নতুন বৌ
    কনক শ্যামার মন পায় না। ও যখন ভরা যৌবন নয়ে ঘরের মধ্যে হাঁটে শ্যামা
    ভাবে, -- শরীরে এক আগুন নয়ে হেঁটে গেল বৌ? শ্যামা ভয় পায়, ছেলে
    হারানোর ভয়?
    তারপর একদন যখন প্রসববেদনায় ছট-ফট্‌ করতে করতে কনক
    অজ্ঞান হয়ে যায়, শ্যামার বুকের কানায় কানায় উপচে পড়ে মাতৃস্নেহ। মালসায়
    আগুন নয়ে কনককে কোলে শুইয়ে ও সেঁক দতে থাকে।
    একটা বেশ বড় মাপের গল্প "" সরীসৃপ'', ইংরেজ করলে ""
    রেপটাইলস্‌''।
    চারু ও পরী দুই বোন। পরী অনেক ছোট, চারুর কাছেই মানুষ।
    চারুর পাগল স্বামী মরতে বশবছর সময় নল। আর চারুর কোলে ছেড়ে গেল এক
    জড়ভরত ছেলে -- ভুবন। শ্বশুরের সম্পত্ত সামলে নল চারু, বোনের বয়ে দল।
    একদন পরীও বধবা হয়ে কয়েকমাসের কোলের ছেলে নয়ে দদর বাড় উঠলো।
    কন্তু সে বাড় আর দদর নেই। চারুর শ্বশুরের চামচার ছেলে বনমালী পাটের
    দালালী করে বড়লোক হয়েছে আর তরশহাজার টাকার সুদ ও আসল দেয় ন বলে
    চারুর বন্ধক রাখা বাড়ট কব্জা করেছে। বনমালী কারো সঙ্গে সোজাসুজ নষ্ঠুরতা
    দেখাতে প[রে না। ক্কন্তু চারুকে সরাতে চায়। তাই বলে --ছেলে ভুবনকে নয়ে তীর্থ
    করে এস।
    আর পরী নরুপায় হয়ে চায় যৌবনের মায়ায় বনমালীকে ভুলয়ে রাখতে।
    চল্লশবছরের চারু বোনের হাব-ভাব দেখে ভয় পায়। বনমালী যে ওদকে ঢলে পড়ছে।
    তাহলে চারু আর তার হাবা ছেলের ক গত হবে? মনে পড়ে --প্রথম যৌবনে
    বনমালী চারুর জন্যে হন্যে হয়ে পায়ে পায়ে ঘুরতো। তখন চারু মজা পেত,
    বনমালীর মনে লোভ জাগয়ে ওর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতো। আজ বগতযৌবনা
    চারু বনমালীকে বাঁধবে ক দয়ে? হেরে যাবে মেয়ের বয়সী ছোটবোন পরীর কাছে!
    চারু ডেস্‌পারেট্‌। শেষে তারকেশ্বরের তীর্থে ধর্মশালায় কলেরা মহামারী
    হয়ে দেখা দলে ওর থালায় কলেরারোগীর এঁটোভাত সাবধানে ঢেকে নয়ে
    কোলকাতায়
    ফরে আসে। ভাবে বোন পরীকে ঐ এঁটো- ভাত ভগবানের প্রসাদ বলে খাইয়ে দতে
    পারলেই কেল্লা ফতে! ভেদবম হয়ে পরীর ভবলীলা সাঙ্গ!
    পরীর হাতে পাথরের বাটতে ঐ ভাত দয়ে চারু বলে--- একহাতে নয়, দু'হাতে
    ধর্‌! ছেলের মা তুই, তোর তো সাহস কম নয় পরী! কপালে ঠেকয়ে খেয়ে ফেল্‌।
    ---- দুটো ভাত যে দদ!
    -----ভাত নয় প্রসাদ, খা!
    কন্তু কলেরা পরীর না হয়ে হল চারুর। বম করতে করতে মরে যাবার আগে শুনে
    গেল বনমালী বলছে-- ভুবনের জন্যে কোন ভয় নেই, ওর ভার আম নলাম।
    শুনল পরী বলছে--- ভুবনকে আম চোখে চোখে রাখব দদ, চোখের
    আড়াল করব না কখনো।
    এইখানে মানক বলছেন---মরে গেলেও চারু এদের একট কথা বশ্বাস করে
    ন। জীবনের চল্লশ বছরে মানুষের সংসারে থেকে মানুষের যে রূপ ও দেখেছে তা
    ভগবানও ভোলাতে পারবেন না।
    চারুর মৃত্যুর পর পরীর নশ্‌চন্ত হবার কথা। কন্তু ও দেখলো বনমালী
    ওর ঘরে আসা কময়ে দয়ে চারুর জড় ছেলে ভুবনকে নয়ে মেতে উঠেছে। পরী ভয়
    পেল। বনমালীকে ও বুঝতে পারে ন।
    "" চারু ছল বনমালীর প্রথম বয়সের নেশা। চারু ওকে নয়ে রীতমত
    খেলা করত; ওষুধের ডোজে আশা দয়ে ওর প্রেমকে বাঁচয়ে রাখত। বনমালীর
    একগ্রাসে পেট ভরানোর খদে বুনোজন্তুর মত চারুর সাবধানতার বেড়ার চারপাশে
    পাকখেয়ে বেড়াতো, দনের-পর-দন, মাসের-পর-মাস।''
    পরীর রূপ আছে, চারুর মত খেলানোর প্রতভা নেই,বনমালীর
    ছট্‌ফটে মনকে ও বেঁধে রাখতে পারলো না।
    ভুবন বোঝে ন মা মারা গেছে, ও মায়ের জন্যে ব্যাকুল হয়ে থাকে। বনমালী খেয়াল
    করে বলে--- তোকে একটা বাড় কনে দেব। পরী খেয়াল করে। এবার ও মরয়া হয়ে
    ওঠে। দুপুরবেলা চুপচুপ বলে---মার কাছে যাব ভুবন? আম যা&#৯৫৬;ছ, রেলগাড়তে
    করে তোকে মার কাছে নয়ে যাবো। কাউকে কছু বলসনে কন্তু, খবরদার! বল্লে
    নয়ে যাব না।
    তারপর হাওড়া স্টেশনে নয়ে গয়ে ফার্স্টক্লাসের একট টকট কনে ভুবনকে
    একট খাল কামরায় তুলে দেয় পরী।
    বলে--- কাল বকেলে ঠক ছ'টার সময় যেখানে গাড় থামবে সেইখানে নেমে যাব।
    ঘড় দেখে ঠক ছ'টার সময় নেমে যাব। গাড় না থামলেও লাফয়ে নেমে যাব। মার
    কাছে যা&#৯৫৬;ছস ক না, দেখস তোর কছু হবে না।
    বাড় ফরে দেখে দরজায় বনমালী স্বয়ং!
    ---ভুবনকে কোথায় রেখে এল পরী?
    ----- ভুবন? ভুবনের আম কী জান। বাড় নেই?
    বাড়তে ঢুকে পরী দেখে ওর দোতলার ঘর থেকে বনমালী সব জনসপষন সরয়ে
    দয়ে ওর জায়গা করেছে একতলায় ক্ষেন্ত ঝয়ের পাশের ঘরে।
    দন কাটে। একদন বনমালীর মা বল্লেন-- হ্যাঁ রে, ভুবনের কোন খোঁজ করল
    নে?
    বনমালী বল্লো--আপদ গেছে, যাক।
    গল্প শেষ। এবার আমরা মানকের গলায় শুন মহাকালের কন্ঠস্বর।
    "" ঠক সেই সময় মাথার ওপর দয়ে একট এরোপ্লেন উড়ে যা&#৯৫৬;ছল। দেখতে দেখতে
    সেট সুন্দরবনের ওপর পৌঁছে গেল, মানুষের সঙ্গ ছেড়ে বনের পশুরা যেখানে আশ্রয়
    নয়েছে।''
    বাংলা সাহত্যে আর একট ব্যতষন²মী গল্প "" শৈলজ
    শলা''। গল্পের নায়ক এক অববাহত কুদর্শন পুরুষ। পাহাড়ে বেড়াতে গয়ে এক
    ফেলেযাওয়া নবজাত শশুকে কুড়য়ে পেয়ে সে বুকে করে তুলে আনে, বাঁচয়ে
    তোলে। শশুট মেয়ে । নাম দেয়া হয় শীলা। বছর গড়য়ে যায়। এক এক করে। শীলা
    নায়ককে দাদু বলে ডাকতে শেখে, কৈশোর ছাড়য়ে যৌবনে পা দেয়, শরীরে যৌবন
    উঁক দেয়। কন্তু ধীরে ধীরে বার্ধক্যের দকে এগয়ে যাওয়া নায়ক শীলার জন্যে বুকের
    মধ্যে এক অদম্য কামনার ডাক শুনতে পায়। সে শীলাকে কোন বাইরের ছেলের সঙ্গে
    মশতে দেয় না। প্রায় বন্দী করে রাখে। শীলা হাসতে ভুলে যায়, রাত্তরে দুই ঘরের
    মাঝখানে দরজা বন্ধ করে শেকল তুলে দেয়। কামনায় আকুল নায়ক ডাকে- দরজা
    খুলে দে, শীলা। জবাব আসে- না, দাদু।
    ---- কথা শোন শীলা, এঘরে আয়।
    ----- এমন করলে আম আত্মহত্যা করবো দাদু।
    শেষ প্যারাগ্রাফে মানক নায়কের মুখে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলয়ে নেন-
    -- এইযে আম কচমেয়েটাকে আমার বুকের ওপর রাখয়া দুইহাতে ছেঁচতে
    চাই,ইহার মধ্যে আমও নাই, শীলাও নাই , আছে শুধু এক---।
    বাকটা পাঠকের কল্পনায় গড়ে উঠুক। এই গল্প আমাকে
    নবোকভের বখ্যাত "" লোলতা''কে মনে করায় না। বরং আমার মনে আসে আবার
    মানকেরই গল্প" প্রাগৈতহাসকের শেষটুকু।
    ( ৩)
    দ্বতীয় বশ্বযুদ্ধ ও ইংরেজ রাজত্বের শেষপর্যায়ে গোরাসৈন্যদের জন্যে
    বাজার থেকে তুলে নেয়া চাল আর ফুলে-ফেঁপে ওঠা কালোবাজার বাঙ্গলাদেশের
    মানুষের জীবনে নয়ে এল দুর্ভক্ষ, মৃত্যুর তান্ডব, মহামারী ও পেটের দায়ে শরীর
    বষন²। মানকের লেখায় এল পরবর্তন। এই সময়ের খন্ডচষন ফুটে উঠেছে
    অনেকগুলো গল্পের মধ্যে। আমরা বেছে নয়েছ দুট গল্প----"" মাসপস'' ও ""
    ছনয়ে খায়ন কেন''।
    বাপ-মা মরা আহ্লাদীর দুই বধবা মাসপস ছাড়া আর কেউ নেই।
    দুর্ভক্ষ কোন মতে ঠেকয়ে ছল তার বাপ। কন্তু তারপর কলেরায় বাপ-মা- ভাই
    শেষ হয়ে গেল। তার আগে দুর্ভক্ষের সময় বাঁচার জন্যে মাসপসকে প্রাণপনে
    লড়তে হয়েছে। কখনও ধান ভেনে, কাঁথা সেলাই করে, ডালের বড় বেচে,
    শাকপাতা- ফলমূল-ডাঁটা কুড়য়ে, এটাওটা যোগাড় করে। এদকে যখন খাবার
    জোগাড় করাই সমস্যা, জামাই জগুর লাথর চোটে গর্ভপাতে মরমর মেয়ে এসে
    হাজর।মাস-পসর সেবাযতে Á আহ্লাদী বেঁচে উঠলো। চারদকে না খেয়ে মরছে
    মানুষ। একদন মাস বল্লো পসকে-- একটা কাজ করব বেয়ান? তাতে তোরও
    দুটো পয়সা আসে, মোরও দুটো পয়সা আসে?
    সেইথেকে শুরু হয় গেরস্থের বাড়ত শাকসব্জ-ফলমূল নয়ে
    মাসপসর শালত বেয়ে শহরের বাজারে গয়ে বেচে আসা। নজেদের পেট ভরানো
    শুধু নয়, তাদের এখন আহ্লাদী আছে। খাল ঘরে আহ্লাদীকে রেখে যেতে সাহস হয়
    না। তাই শালত করে শহরে বেচতে যাবার সময়ও ওরা ওকে সঙ্গে নয়ে
    যায়।শ্বশুরঘরের কবল থেকে ওকে বাঁচাতে হবে, গাঁয়ের বজ্জাতদের নজর থেকে
    সামলে রাখতে হবে, কত দায়ত্ব তাদের, কত ভাবনা।
    রাষেন যখন গাঁয়ের লোক ঘুমু®&#৯৫৬;ছ তখন বাইরে থেকে হাঁক এল কানাই
    চৌকদারের।
    ----- কাছারবাড় যেতে হবে একবার।
    মাস বলে--এত রাতে? পস বলে-- মরণ নেই?
    ---- দারোগাবাবু এসে বসে আছেন বাবুর সাথে। যেতে একবার হবে গো
    দদঠাকরুণরা।বেঁধে নয়ে যাবার হুকুম আছে।
    মাসপস মুখে মুখে তাকায়। গাছের ছায়ায় তনচারজন ঘুপট মেরে আছে, দেখতে
    পেয়েছে মসপস। তারা যাবে কাছারতে চৌকদার আর পেয়াদার সঙ্গে। আর ওরা
    এসে আহ্লাদীকে তুলে নয়ে যাবে।
    মাস বলে---কাপড়টা ছেড়ে আস কানাই। পস বলে- সকড় হাত ধুয়ে
    আস।
    তাড়াতাড় ফরে আসে তারা। মাস আসে বঁটটা হাতে করে, পসর হাতে মস্ত
    কাটার। বলে--- এত রাতে মেয়েনোককে কাছারবাড় ডাকতে কত্তার লজ্জা করে
    না?
    কানাই বলে--- ভালয় ভালয় না গেলে ধরে-বেঁধে-টেনে-হঁচড়ে নয়ে যাবার
    হুকুম আছে , বলে রাখলাম।
    মাস বঁটটা বাগয়ে ধরে---- বটে? এসো! কে এগয়ে আসবে এসো! বঁটর এক
    কোপে গলা ফাঁক করে দেব।
    পস বলে--- আয় না বজ্জাত হারামজাদারা, এগয়ে আয় না, কাটারর কোপে
    গলা কাট দু'-একটার!
    মারাত্মক ভঙ্গতে বঁট-দা উঁচু হয় মাসপসর।
    তারপর দুজনে আশপাশের যত পড়শী আছে সবার নাম ধরে গলা
    ফাটয়ে হাঁক দেয়।
    -----ও বাবাঠাকুর! ও ঘোষমশায়! ও জনার্দন! ওগো কানুর মা! বপন! বংশী!
    আমার চোখে একট বেজোড় গল্প হল"" ছনয়ে খায়ন কেন''।
    সব ভয়ের দন, যন্ত্রণার দন একসময় শেষ হয়। মানুষের জীবন আবার ফরে
    আসে তার স্বাভাবক পুরনো ছন্দে। ( বশ্বজোড়া আর্থক ডপ্রেসনও একদন শেষ
    হবে।) চল্লশের মন্বন্তরের বা দুর্ভক্ষের সময় মাষন শেষ হয়েছে। যোগী ডাকাত
    লেখককে শোনা®&#৯৫৬;ছ তার টীকা।
    "" একজন নয়, দশজন নয়, হাজারে হাজারে , লাখে লাখে বরবাদ হয়ে গেছে।
    ভক্ষার জন্য হাত বাড়য়েছে, ফের চেয়ে কাতরেছে, কন্তু ছনয়ে নেবার জন্যে,
    কেড়ে নেবার জন্যে হাত বাড়ায় ন। দলে দলে মরছে তবু ছনয়ে খায়ন। কেন
    জানেন বাবু?''
    এই লাখটাকার প্রশ্নটাই লেখককে পথে নাময়েছে। উন উত্তর খুঁজতে
    খুঁজতে এসে পৌঁছেচেন নাম-করা-ডাকাত যোগীর ঘরে।
    লেখকের মনে নাম-করা-ডাকাতের চেহারা নয়ে যে কল্পনা ছল, অর্থাৎ,'' রণ-পা
    চড়া, লাঠ ঘুরয়ে বুলেট ঠেকানো, বড়লোকের ওপর ভীষণ নষ্ঠুর, গরীবের ওপর
    পরম দয়ালু, বরাট দেহ আর অমানুষক শক্ত'',"" যাদের হুঙ্কার শুনলে কয়েক মাইল
    তফাতে গর্ভপাত হয় Øষনীলোকের''--- এসব কছুই বাস্তবে মললো না।
    তবে হ্যাঁ, দুর্ভক্ষের সময় যোগীডাকাতও চুর-ডাকাত করে খাবার
    বলয়েছলো, কছু মেয়েকে দালালের হাত থেকে বাঁচয়েছলো। তারপর সরকার
    চালের নৌকোয় ডাকাত করতে গয়ে ধরা পড়ে দু'বছর জেল খাটে।
    যোগী বলে লেখককে, "" আম জান কেন ছনয়ে খায়ন, শুধুমাষন আমই
    জান, কেউ জানে না আর। আপনাদের মত অনেক বাবুরা আছেন। তারা খাল
    ঘুরয়ে পেঁচয়ে বড় বড় কথা বলেন। কেউ বলেন নরীহ গোবেচারা চাষীরা আইন
    ভাঙতে চায়না। কেউ বলেন চাষীরা অদেষ্ট মানে, কপালে যা লেখা আছে তাই হবে।
    আর কেউ বলেন-- না খেয়ে থাকাটা ওদের অভ্যেস আছে। তাই চাল ছনয়ে নয়ে
    খায়্‌ন।
    মনে সাধ হয় এদের চাঁছা গালে একটা থাপ্পড় দয়ে কানটা মলে দই!
    আরে, যে না খেতে পেলে মরে যাবে জানে, তাই মেয়ে-বৌকে ভাড়া দ®&#৯৫৬;ছ,
    সুযোগ পেলে, তার চেয়ে কমজোর সাথীর গলা টপে মেরে ফেলেছে যদ একমুঠো
    খুদ জোটে, তার কাছে আইন? জেলে যেতে পারলে তো তার ভাগ্য, খেতে পাবে,
    বাঁচবে।
    "" সদরে রলফখানা খুলেছে, খচুড় বল করে। ওখানে দেখ দু-
    একটা মেয়েছেলে ভাব জমাতে চেষ্টা করে মোর সাথে, ভাবে আমার সঙ্গত আছে
    দু'চার বেলা খাবারের। মেয়েছেলে? হাড়ে জড়ানো সটে চামড়া, তাতে ঘা-পাঁচড়া।
    চুলের জট খ্যাপার মত চুলকু®&#৯৫৬;ছ উকুনের কামড়ে। মাই বলতে লবঙ্গের মত শুকনো
    বোঁটা,
    পাছা বলতে লাঠর ডগার মত শুকনো হা&#১৩৩;। আর গায়ে ক দুর্গন্ধ, পচা ইঁদুর, মরা
    সাপের মত।''
    ইতমধ্যে প্রদীপ জ্বালয়ে লেখকের সামনে জল দয়ে যাওয়া
    যোগীডাকাতের পরবারকে লেখক দেখেন মনদয়ে।
    "" রোগা, ঢ্যাঙা, ছপছপে,-- তবে সুস্থ। কোরা কাপড়ের ভাঁজে
    ছোট মাই, আবার সন্তান আসতে চাইলে যা সুধায় ভরে উঠবে অনায়াসে।''
    লেখক যোগীর কথার ভাবে বোঝেন যে এই Øষনী বন্দ ঐ বশেষ পাড়া থেকে উদ্ধার
    করে আনা মেয়েদের একজন। এও চোখে পড়ে যে সে শগ্গর মা হতে চলেছে আর
    সেই বা&#৯৫৬;চার বাপ কে, তা'নয়ে যোগীর বশেষ মাথাব্যথা নেই।
    যোগী শোনায় নজের অভজ্ঞতার কথা। চালের গুদাম লুটে যখন
    লঙ্গরখানার জোলো খচুড়-খাওয়া লোকেদের ও পেটপুরে ভালকরে খাওয়ালো,
    তখন সবাই উৎসাহ পেয়ে যোগীর কথায় দলবেঁধে চালের লুকয়ে রাখা ভান্ডার
    লুটতে রাজ হয়ে গেল। কন্তু যোগী দল গড়ে ট্রেনং দয়ে তারপরে ডাকাত করবে
    ভেবে দের করতে লাগলো। ব্যাস্‌, কদন লঙ্গরের জোলো খচুড় খেয়ে লোকেদের
    উৎসাহে ভাঁটা পড়লো। কেউ রাজ হল না।
    এবার যোগীর তৃতীয় নয়ন খুলে গেল।
    "" সেদন বুঝলাম বাবু। একদন খেতে না পেলে শরীরটা শুধু শুকোয় না,
    লড়াই করে ছনয়ে খেয়ে বাঁচার তাগদও ঝময়ে যায়। দু-চারদনেকটু কছু খেতে
    পেলেই সেটা ফের মাথা চাড়া দয়ে ওঠে। এতো সহজ সোজা কথা!''
    (৪)
    দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতে ইউনয়ন জ্যাক নাময়ে ট্রাই-কালার
    ওড়ানো হল। কন্তু চাষীদের অবস্থার বশেষ হেরফের হল না। ভগৎ সংদের স্বপ À
    অপূর্ণ
    রয়ে গেল। ফসলের ভাগে চাষীর অধকার নয়ে সাম্যবাদী দলের নেতৃত্বে শুরু হল ""
    তেভাগা আন্দোলন''। মানক তখন সাম্যবাদী দলের সঙ্গে নজেকে জড়য়ে নয়েছেন,
    প্রগতশীল লেখক সংঘের কাজকর্মে সষন²য় ভূমকায় আছেন।
    বঙ্গদেশের হুগলীজেলার বড়া কমলাপুর গাঁয়ের কৃষক আন্দোল্‌ন(
    আজকের টাটার ন্যানো আন্দোলন-ফেম সঙ্গুরের খুব কাছে) তখন সবাইকে নাড়া
    দয়েছে। সংগঠন থেকে নর্দেশ এল--- মানকবাবু, যান; বড়া কমলাপুর গয়ে
    নজের চোখে দেখে আসুন, তারপর লখুন।
    অসুস্থ মানকবাবুর আর ফল্ডে যাওয়া হয়ন।
    কন্তু সাহত্যকের তৃতীয় নয়ন দয়ে দেখে মানক লখলেন দুটো অসাধারণ
    গল্প;--- "" ছোট বকুলপুরের যাষনী'' আর "" হারাণের নাতজামাই''।
    আজ থেকে বছর পঞ্চাশ আগে শ্রমক-কৃষক আন্দোলনের ছায়ায়
    বদলে যাওয়া জনজীবনের চালচষন।
    এক কাল্পনক গাঁ ছোট বকুলপুর। তার পাশে গজয়ে ওঠা কারখানার শ্রমক
    আন্দোলন, আর বন্দীনেতাদের ছাড়য়ে নেবার চেষ্টায় রেলস্টেশনের চত্বরে পুলশের
    সঙ্গে সংঘর্ষে রক্তঝরে,তারপর গাঁয়ের সীমানায় পুলশের ছাউন আর ঘরে ঘরে
    হানা। এটা আজকের ভারতবর্ষেও যে কোন রাজ্যের খবরের কাগজে দু'কলম খবর
    হতে পারে।
    কন্তু মানকের কলমের ছোঁয়ায় এই ঘটনাই হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের
    মধ্যে ঘুমন্ত মানবতার জেগে ওঠার গান। দেখুন, ক করে হল।
    ছোট বকুলপুরের মেয়ে আন্না বাপের বাড়র এলাকায় পুলশের সাথে জনতার
    সংঘর্ষ ও রক্তপাতের খবরে বচলত হয়ে বাপ-মা- ভাইবোনদের খবর নতে
    গাড়তে এসে কোলের বা&#৯৫৬;চা নয়ে স্বামী দবাকর দাসের সঙ্গে রাত্তরের রেলগাড়
    থেকে নামল। কোন গরুর গাড় ছোট বকুলপুর অব্দ যেতে রাজ নয়। শেষ অব্দ
    এক গাড় কমলপুর অব্দ যেতে রাজ হল। তারপর দুকোশ হাঁটতে হবে। কমলপুর
    পৌঁছতেই পুলশের প্রথম ছাউন।পুলশেরা অবাক। এমন অবস্থায় কেউ রাত্তরে
    সাহস করে ছোট বকুলপুর বেড়াতে আসে! নশ্‌চয় ছদ্মবেশে কোন বড় নেতা। ওরা
    জামাকাপড় হাঁটকায়, বড সার্চ করে, মাছের হাঁড় ভাঙে, না জেনে বা&#৯৫৬;চার গুয়ের
    কাঁথায় হাত দয়ে ফেলে। কন্তু সন্দেহজনক কছুই পায় না। কন্তু কোন সাধারণ
    মানুষের এত সাহস? ভয়ডর নেই? পুলশের হজম হয় না। কোথাও কোন ফাঁক
    আছে, পুলশেরা যেন একটু একটু করে হেরে যা®&#৯৫৬;ছ এই অত সাধারণ মানুষ
    দবাকর দাস আর আন্নার কাছে।
    সার্চের সময় মাছের হাঁড় ভেঙে যাওয়ায় দবাকর দাস পুলশকে
    বলে----দলে তো বাবুরা? গরবের পথ্যর দফা মেরে দলে তো? এখন রুগী বৌটা
    খাবে ক?
    -- বল ওহে দবাকর দাস! কুল-মজুরের বৌরা কবে থেকে শঙ মাছের
    ঝোল খা®&#৯৫৬;ছ হে? পাঁচ-ছ'টাকা শঙ্গ মাছের সের।
    --- শঙ- মাছ- খাওয়া মোদের বারণ আছে না ক বাবু?
    -----শাট্‌আপ!বেয়াদ্‌প!
    শেষে দবাকরের পকেটে স্টেশন থেকে কেনা তনখল পানের মোড়ক খুলে খেতে
    গয়ে দেখা গেল সেগুলো আসলে শ্রমক আন্দোলনের ইস্তেহারের কাগজ দয়ে মোড়া।
    ব্যস্‌, প্রমাণ পাওয়া গেছে।
    ---এটা কোথায় পেলে ?
    --- পানের দোকানে এই কাগজটা দয়ে জড়য়ে দল। আমরা
    ইস্তেহারের কছু জান না।
    --- আর ঢং কোরোনা। এবার আসল নাম বল দক!
    দবাকর আর আন্না পরস্পরের মুখের দকে তাকায়!
    ওপরের ওই একট পংক্ত দয়ে শেষ হয়েছে গল্পট। আমার ব্যক্তগত মত
    হল এমন অর্থবহ শল্পসম্মত সমাপনের মুন্সীয়ানা মানকের শেষের দকের
    গল্পরচনায় বরল। একট লাইনে ফুটে উঠেছে রাষ্ট্র নামক দানবের ইউনফর্ম-লাঠব
    ন্দুকের আড়ালে লুকয়ে থাকা ভয়।
    "'হারাণের নাতজামাই'' গল্পটা কন্তু মানকের লেখার স্টাইলের থেকে
    একটু আলাদা। মানক গল্পে নাটকীয়তাকে সযতে Á এড়য়ে যেতেন। কন্তু এই
    গল্পট? ঠক যেন নাটকের প্রয়োজনে লেখা। আপনারা যদ কেউ নাটকের সঙ্গে যুক্ত
    থাকেন তাহলে লোভ সামলাতে পারবেন না--- মা কালীর করেঃ))।
    কল্পনা করুন সাদামাটা খাল স্টেজ। ব্যাকস্টেজে একট চাষীর
    ঘরের আদল। এই হল হারাণের বাড়।দেখুন-- ব্যাক স্টেজে ডানদকে মাটর দেয়ালে
    হেলান দয়ে পঠ বাঁকয়ে হারাণ বসে আছে। বয়স নব্বই, কানে কালা।একটু পরে
    পরেই নজের মনে বলতে থাকে- হায় ভগবান! আসে নাই? হারামজাদাটা আসে
    নাই?
    হারাণ কে? ও হল এই চাষী পরবারের বুড়ো কর্তা। বাড়তে আছে ওর বধবা
    মেয়ে--- ময়নার মা। নাতন ময়না বাপের বাড় এসেছে ক'দনের জন্যে। বুড়ো আপন
    খেয়ালে খাল জোয়ান নাতর খোঁজ নেয়।-- আসে নাই? এখনও আসে নাই?
    গল্পের আসল চরষন হল ময়নার মা। ধান নজেদের গোলায় তোলা নয়ে
    চাষীদের আন্দোলনের অ্যাক্টভস্ট্‌। পুলশের ওয়ারেন্ট মাথায় নয়ে পালয়ে বেড়ানো
    কৃষকনেতা ভুবন মন্ডলকে ও নজের ঘরে লুকয়ে রেখেছে। খবর পেয়ে পুলশের
    দারোগা মন্মথ এসেছে সার্চ করতে, সঙ্গে দশট বন্দুক, একট পস্তল। ওদকে প্রায়
    শ'দেড়েক চাষী এসেছে দা'-কুড়ুল-কাটার নয়ে।
    গফুর চেঁচয়ে বলে-তল্লাস করত দমু না। প্রায় দেড়শ গলা
    সায় দেয়-- দমু না।
    টেন্‌শন বাড়ে, দারোগা মন্মথ প্রায় গুল চালানোর হুকুম দেবে, এমনসময় দেখুন
    স্পট্‌ লাইট বাঁহাতের উইংসে। ময়নার মা স্টেজে ঢুকছে খ্যান্‌খেনে আওয়াজে।
    ----- রও দক তুমরা, হাঙ্গামা কইরো না। চোর-ডাকাইত নাক, ঘরে আসামী
    রাখুম? বকালে জামাই আইছে, শোয়াইছ মাইয়ারে।দারোগাবাবু তল্লাস করতে চান
    তো করেন।
    ---- ভুবন মন্ডল আছে তোমার ঘরে?
    ----- দ্যাখেন আইসা, তল্লাস করেন। ভুবন কে? নাম তো শুন নাই বাপের কালে!
    মাইয়ারে বয়া সলাম বৈশাখে, দুই ভর রূপা কম দছ-জামাই ফর‌্যা তাকায় না।
    দুই ভরর দাম পাঠাইয়া দছ তবে আজই জামাই পায়ের ধূলা দছে।
    পুলশের দালাল গৌর সাউ বলে- - এত চুপেচুপে আসে কেন জামাই, ময়নার
    মা?
    গা জ্বলে যায় ময়নার মার। বলে--- মোর জামাই সদর দয়া আইছে! তোমার একটা
    মাইয়ার সাত জামাই, তাই চুপেচাপে আসে।
    এবার দেখুন সেন্টার স্টেজে ফোকাস্‌।দরজা খুলে বেরয়ে এসেছে রঙ্গীন শাড়
    জড়ানো ঘোমটা টানা অল্পবয়েসী চাষীবৌ ময়না। কন্তু সঙ্গের জামাইকে দেখুন। গায়ে
    চাদর জড়ানো, রুক্ষ চুল, খোঁচাখোঁচা দাড়গোঁফ। সত্য জামাই তো? কন্তু পাড়ার
    জনাকয়েক বুড়ো যে ঐ লোকটাকে জামাই বলেই আইডেন্টফাই করলো! ক করা
    যায়?
    এবার ময়নার মা মেয়েজামাইকে বলে---শীতে কাঁপন ধরেছে, ভেতরে গয়ে শো।
    তুমও শুইয়া পড় বাবা।আপনে অনুমত দ্যান দারোগাবাবু, জামাই শুইয়া পড়ুক।
    মেয়ে আর ভুবন ইতস্ততঃ করে। পুলসের সন্দেহ বাড়তে পারে। তাই
    ময়নার মা বরক্ত ভাব দেখয়ে বলে--গুরুজনদের কথা শোন, ঝাঁপ বন্ধ কইর‌্যা শুইয়া
    পড়।
    এবার আর পুলশের ভুবনকে জামাই না মেনে উপায় নেই। গাঁয়ে গঞ্জে কেউ অন্য
    পুরুষের সাথে সবার সামনে ঝাঁপ বন্ধ করে শুতে পারে নাক? পুলশ চলে যায়।
    পর্দা পড়ে।
    ইতমধ্যে দশ গাঁয়ে রটে যায় কেমন করে ময়নার মা কাল রাতে পুলশকে
    বোকা বানয়েছে। মুখে মুখে এ' খবর যায় ময়নার শ্বশুরবাড়তে, খবর যায় পুলশের
    বড় থানায় বড় দারোগার কানে।
    আবার পর্দা ওঠে। আসল জামাই জগমোহন এসেছে শ্বশুরের বাড়তে।
    ইতমধ্যে রাস্তা থেকে ময়নার ভাইকে ধরে নয়ে গেছে পুলস। আর হারান খাল
    বলে----
    আসে নাই? হারামজাদাটা আসে নাই? হায় ভগবান!
    জামাই আসে মেজাজ নয়ে, পুরুষের চরাচরত অধকারবোধ আর অহংকারে ঘা'
    লেগেছে।
    --- একটা কথা শুইনা আইলাম। মছা না খাঁট জগাইয়া যামু গয়া। মাইয়া নাক
    কার লগে শুইছল কাইল রাতে?
    ----শুইছল? মোর লগে শুইছল, আর কার লগে শুইবো?
    ----ব্রহ্মান্ডের মাইনষে জানে কার লগে শুইছলো।
    ময়নার মা অনেক বোঝায়।-- বড় ছোট মন তোমার। উঠানে মাইনষের
    গাদা, আম খাড়া সামনে, একদন্ড ঝাঁপ দছে ক না দছে, তুম দোষ ধরলা? অন্যে
    তো ধরে নাই।
    ---অন্যের ক? অন্যের বউ হইলে কইতো।
    এবার ময়না কাঁদে। বলে--মা-কালীর করা, শুই নাই। মার কওনে ঝাঁপটা
    দছলাম, বাঁশটাও লাগাই নাই।
    --- ঝাঁপ দছলা, শোও নাই! বেউলা সতী!
    এমনসময় পুলশ আসে, বড়দলবল নয়ে, তৈর হয়ে । ময়নার মা আজ
    কোন উপায় দেখতে পায় না।
    -----ক গো ময়নার মা, জামাই কোথা? বাঃ, তোর তো মাগ ভাগ্য ভাল, রোজ
    রোজ নতুন যামাই জোটে!
    হঠাৎ সবাইকে চমকে দয়ে জামাই জগমোহন লাফয়ে সামনে আসে----মুখ
    সামলাইয়া কথা কইবেন।
    পুলশ এবার জামাই-হারান- ময়না-ময়নার মা সবাইকে বেঁধে নয়ে যায়। কন্তু
    পুকুরপাড় অব্দ যেতেই কয়েক গাঁয়ের লোক পথ আটকায়। এমন সমাপনের
    জায়গায় এসে অনেকেরই এই গল্পটর ষাটের বা সত্তরের দশকে কোলকাতার গণনাট্য
    সংঘের জ্ঞানেশ মুখার্জী মশায়ের বখ্যাত নাট্যপ্রস্তুতর কথা মনে পড়বে।
    মানকের রচনায় ড্রামাটক এলমেন্ট নেই বল্লে ভুল বলা হবে।
    মানুষের জীবনপ্রবাহেই যখন আচমকা বাঁক, ছোট ছোট ঘুর্ণ, চোরাস্রোত--এ' সবের
    কোন
    কমত নেই তখন জীবনের ছব আঁকা আর তাকে নয়ে পটুয়ার মত ব্যাখ্যা করা
    লেখকের লেখায় নাটকীয় উপাদান কেন থাকবে না? আছে, কন্তু প্র&#৯৫৬;ছন্ন ভাবে।
    মানকের
    জীবনকালে সম্ভব হয় ন। কন্তু মৃত্যুর প্রায় তরশবছর পরে গৌতম ঘোষের
    পরচালনায় তৈর হয়েছে চল&#৯৫৬;চষন ""পদ্মা নদীর মাঝ''।
    পদ্মানদী ও তার পাড়ে জেলেদের বস্ত। কুবের, যুগল
    ও তার মত আরও অনেকে নদীকে আঁকড়ে বেঁচে থাকে।তাদের জীবকা --- নৌকো
    করে দুরন্ত পদ্মার বুকে ভেসে পড়া। ইলশ থেকে শুরু করে নানারকম মাছ ধরা ও
    বেচে ঘর সামলানো ও সংসার খরচা চালানো। কঠন জীবন, কঠন জীবকা। এর
    মধ্যেও
    মানবজীবনের ষড়রপু ও ষড়ঋতুর খেলা চলে। কুবের তার খোঁড়া মেয়ে গোপীকে
    নয়ে চন্তত। ওকে পার করতে যে অনেক টাকা লাগবে, যা গরীব মানুষের সাধ্যের
    বাইরে। তাই ও ডাক্তার-বদ্য করে যদ পা একটু ঠক হয়ে যায়। যুগল আশা দেয়---
    পা' ঠক হলে ও গোপীকে কাঞ্চনমূল্যে ঘরে তুলতে রাজী। কুবের লোভে পড়ে যায়।
    আর সাততাড়াতাড় মেয়ের পা ' ভালো করার স্বপে À ওকে দয়ে অমানুষক হাঁটাচলা
    করায়। অসুস্থ বৌ মালার বোন কপলা ওকে চুম্বকের মতন টানে।
    কপলা চরন্তন নারী, ছলনাময়ী। ভগ্নীপত কুবেরের চোখের ভাষা
    পড়তে তার এতটুকু অসুবধে হয় না। কুবেরের অসহায় লোভ, ভীরু মন নয়ে সে
    খেলা করে। স্নানের সময় কলসীনয়ে সাঁতার কাটতে কাটতে সে আহ্বান করে
    কুবেরকে। এই ডাকে সাড়া দেবে না এমন পুরুষ কোথায়? কুবের দেখে জলের
    মধ্যে কপলার জোড়া বুক ভাসে আর ডোবে। সম্মোহতের মত কুবের তাকয়ে
    থাকে। কপলা ডাকে-- ধর মাঝ, ধর! আমারে না কলসীটারে ধর।
    কুবেরের ঘোর কাটে। পাঠক শুনতে পায় কপলার খল্‌খলয়ে
    ওঠা---"" আরে পুরুষ!''
    কন্তু "" পদ্মানদীর মাঝ'' উপন্যাসের আসল চরষন হল হোসেন মঞা।
    হোসেন হল আজকের বশ্বজোড়া বজনেসের নেটওয়ার্ক দয়ে সাম্রাজ্য প্রতষ্ঠা করা
    ""এন্টারপ্রেনার'' দের উনশশতকীয় বাঙালী সংস্করণ। হোসেন মঞা জেলেদের দাদন
    দয়ে নৌকো-জাল দয়ে বশাল দল বানয়ে মাছমারার অভযানে পাঠায়। এমন এক
    দলের নেতা হল কুবের, হোসেনের "' কুবরভাই''।
    কুবের অভযান থেকে ফরে এসে টাকাপয়সার হসেব দতে গেলে
    হোসেন হাত নেড়ে থাময়ে দেয়। কুবের বোঝে না এটা হোসেনের বদান্যতা নয়।
    আসলে হোসেন জানে যে কুবেরের মত লোকেরা চাইলেও দু'-চার আনার বেশ
    চুর করতে সাহস পাবে না।
    হোসেন শল্পী, সে গীত রচনা করে। কন্তু সব ছাড়য়ে হোসেনের আসল
    পরচয় সে স্বপ্নদর্শী; কলম্বাস- ম্যাজেল্লান--ভাস্কো ডা গামাদের মত, ফোর্ডরক
    ফেলারদের মত। গভীর সমুদ্রে সুন্দরবনের কাছে সে কনেছে এক নর্জন
    জনমানব শূণ্য এক দ্বীপ, ময়নাদ্বীপ। তার স্বপ À --- সেখানে এক নতুন জনপদ গড়ে
    তোলা,যেখানে তার ই®&#৯৫৬;ছই হবে আইন। নজের লক্ষ্যে সে অবচল, সে রুথলেস্‌।
    গরীব জেলেদের সে ঋণ দয়ে নানান সাহায্য করে কৃতজ্ঞতার জালে বেঁধে
    ফেলে। তারপর চাপ দেয় --ময়নাদ্বীপে চল। সেখানে মুফতে পাবে, জম ,
    বাসস্থান।
    সেখানে জঙ্গল পরষ্কার করে ফসল ফলাও। সব তোমার । অন&#৯৫৬;ছাসত্ত্বেও মানুষ
    একজন- দু'জন করে যায়। পক্ষ বা মাসকালীন সময়ের অন্তরালে হোসেনের নৌকো
    সেখানে গয়ে পৌঁছে দেয় চাল-ডাল-নুন-তেল। এমন একবার এক যাষনায় হোসেনের
    সঙ্গী হয় কুবের। গয়ে দেখে এক আশ্‌চর্য ঘটনা। এক বৃদ্ধ মুসলমানের যুবতী ববর
    দকে হাত বাড়য়েছে এক জোয়ান ছেলে। তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে বারান্দায় খুঁটর
    গায়ে। হোসেন এসে শাস্ত দেবে এই আশায়।
    হোসেন এসে বলে-- আপনারা পুঙ্গর পুতরে কাইট্যা ফালাইয়া সমুদ্রের
    জলে ভাসাইয়া দলেন না ক্যান?
    শাস্ত দেয় যে ছেলেটকে খেতে না দয়ে এক কামরায় বন্দী করে রাখা হবে। কন্তু
    মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে কুবের দেখে যে ঐ বব নজে জোয়ানছেলেটর বাঁধন
    খুলে নজের হাতে ভাত খাইয়ে দ®&#৯৫৬;ছ। কুবের চুপচুপ এই খবর হোসেনকে দতে
    গেলে মঞা বলে--- যা দেখলা কাউরেও কইওনা কুবরভাই!
    পরেরদন দেখে ঐ বৃদ্ধ মুসলমানকে এক ছোট নৌকায় বসয়ে কছু খাবার
    ও জল দয়ে অকুলসমুদ্রে ভাসয়ে দেওয়া হল। কুবেরের বোধোদয় হয়। নতুন জনপদ
    গড়ে তুলতে চাই নতুন মানুষ, অনেক। জোয়ান ছেলে ও বব ময়নাদ্বীপের বুকে
    গড়ে তুলবে এক নতুন প্রজন্ম। তাই সেখানে আজ বৃদ্ধ লোকট অনাবশ্যক বোঝা
    মাষন।
    হোসেন মঞা কুবেরকেও টোপ দেয় ময়নাদ্বীপে স্থায়ীভাবে যাবার জন্যে।
    কুবের পদ্মার পাড় ছেড়ে কোথায় যাবে? কন্তু নর্মম হোসেনের জালে মাছের জন্যে
    জাল ফেলা কুবের ধরা পড়ে। কুবেরের ঘরের চালের বাতায় ঘট লুকয়ে রেখে
    হোসেন চুরর দায়ে কুবেরের জেলে যাওয়ার পরস্থত তৈর করে, বাঁচানোর
    অনুরোধ এলে মোক্ষম অØষনট ছাড়ে--- ময়নাদ্বীপ যাবা কুবরভাই?
    নরুপায় কুবের যেন ভগবানের ই®&#৯৫৬;ছর সামনে আত্মসমর্পণ করে। রাত্তরে
    শেষবারের মত যায় পদ্মার পাড়ে। গয়ে দেখে ওল্টানো ডঙনৌকোর ওপর সাদা
    কাপড় পরা এক নারীশরীর। কুবের ভয়ে কেঁপে ওঠে। কাছে গয়ে দেখে কপলা---
    বয়ে হয়ে শ্বশুরবাড় যাওয়ার পর অবুঝ অভমানী কুবের যাকে ভুলতে চাইছল।
    কপলা বলে-- ময়নাদ্বীপ যাইওনা মাঝ, জেল খাটো।
    কন্তু কুবের জেনে গেছে হোসেনরূপী ভগবানের সঙ্গে তার মত তু&#৯৫৬;ছ মানুষ
    লড়াই করে পারবে না। ঘটচুরর ছোটখাট সাজা ভুগে জেল থেকে বেরয়ে এলেও
    হোসেন
    আবার নতুন কোন প্যাঁচে ও বাঁধবে, ময়নাদ্বীপে নয়ে যাবে। এটাই ওর নয়ত।
    তখন কপলা বলে- চল মাঝ, তুম একা না, আম তোমার সঙ্গে যাব।
    পাঠকের অনুভূত হয় যেন ময়নাদ্বীপ নামক এক নতুন পৃথবীতে ঈশ্বর
    আদম-ঈভকে মানবসমাজ নর্মাণের আদেশ দয়ে পাঠালেন।
    পরশেষে একটা কথা বল। এত কমসময়ের পরধতে মানক
    বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত লেখকের লেখার স্বাদ নউইয়র্কের বাঙালীসমাজের কাছে পৌঁছে
    দেয়ার প্রয়াস অপূর্ণ হতে বাধ্য। অনেককছুই শোনানো হল না। বাদ পড়ল প্রথম
    দকের "" হলুদপোড়া'' গল্প বা "" চতুষ্কোণ'' উপন্যাস। যে উপন্যাসের নায়ক নারীর
    নগ্নশরীরের আকৃতর
    মধ্যে তার মনের সংকেত পড়ার চেষ্টা করে। পরের দকের অন্যধরণের লেখা ""
    হরফ'' বা "" চহ্ন'' নয়েও কছু বলা হল না।
    কন্তু যুগান্তর চষন²বর্তীর সংগে গলা মলয়ে বলা যায় যে আধুনক বাংলা
    সাহত্যে মানক বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাষন লেখক যন বশেষ স্থান ও কালে স্থাপত
    মানুষের অস্তত্বের তাৎপর্য সন্ধানে আজীবন এক ক্ষমাহীন ভাবনায় ভাবত ছলেন।
    আর এই সন্ধানে ভেঙে যা&#৯৫৬;ছল প্রচলত শল্পবোধ। আসুন, আজকে আমরা আবার
    নতুন করে মানককে পড়। নতুন শতাব্দীতে তাঁর লেখা আমাদের কছে নতুন অর্থ
    নয়ে ধরা দেবে এ আমার বশ্বাস।
    ---------*******------------
  • siki | 132.177.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:১২585404
  • সমস্ত "ত্র"গুলো ষন হয়ে যায় পিডিএফ থেকে কপি করলে। পষনকার আসলে পত্রকার। দবারাষনর কাব্য আসলে দিবারাত্রির কাব্য।

    এইভাবে পড়তে হবে।
  • প্পন | 126.203.***.*** | ১৩ জানুয়ারি ২০১৩ ২০:২৫585405
  • এটা আমিও করে দেখেছি। হ্রস্ব-ই-কারও মিসিং।
  • aranya | 154.16.***.*** | ১৪ জানুয়ারি ২০১৩ ২২:৪২585406
  • স্কুলে থাকতে তারাশঙ্কর প্রায় সব পড়েছি, তখন ভাল লাগত, এখন আর ফিরে পড়ার ইচ্ছে হয় না।

    মানিক-ও অপেক্ষাকৃত কম বরসে পড়া, সব নয়,কিছু, মূলত ছোটগল্প। বেশ ভাল লেগেছিল, কিন্তু এখন আর পড়তে মন চায় না।

    বিভূতিভূষণ - এখনও নিত্যসঙ্গী। আত্মার শান্তি, প্রানের আরাম। এর জাতের লেখক আর দেখিনি।

    শরদিন্দু - মহারথী তিন বন্দো-র মধ্যে ধরা না হলেও, গল্পকার হিসেবে আমার অত্যন্ত প্রিয়। সব পড়েছি, এখনও মাঝেমাঝে পড়ি। যোগ্য সমাদর পান নি। এখনকার লেখকেরা এর কাছ থেকে যদি গল্প বলার আর্ট-টা একটু শিখতে পারতেন ...
  • b | 135.2.***.*** | ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ ১১:২৪585407
  • শরদিন্দু কম্ফর্ট ফুড, ভাতে আলুসেদ্ধ মাখার মতো। নিরাশ করেন না। তবে রাতের পর রাত জাগিয়ে রাখতে পারেন না, হাতে গোনা কয়েকটি উদাহরণ বাদে।

    বিভূতিভূষণকে একটু এগিয়ে রাখবো কারণ ওনার গল্পহীন রচনার জন্যে। রবীন্দ্রনাথ কিম্বা তারাশঙ্করের (এবং পশ্চাৎপক্কতার দরুণ ও. হেনরি-র )গল্পে অভ্যস্ত থাকার দরুন পড়ে বেশ অসুবিধা হত প্রথমেঃ কোথায় সেই ধুঁয়াধার ন্যারেটিভের পরে ক্ষুরধার এন্ডিং? তারপরে মজতে থাকি ভন্ডুলমামার বাড়ি পড়ে। যেমন ভন্ডুলমামার বাড়ি ক্রমাগত আগাছায় ভরে যাচ্ছিলো, সেভাবেই ছোটগল্পকার বিভূতিভূষণ আমার দখল নিতে থাকেন, নিশ্চিন্ত ও অসীম ধৈর্য্য নিয়ে।

    ঝিটকিপোতার হাট নিয়ে সেই দুর্দান্ত রচনাটি মনে পড়ে। হাটে ব্যাপারিদের দর কষাকষি। পুরনো দিনের বনভোজনের স্মৃতি। ঘনঘোর বর্ষার মাঝে ঘেঁটকোল ফুলের কড়া গন্ধ। ঘটনার "ঘটা" নয়, সেরেফ ঘটনাশূন্য। একের পর এক ছবি। শুধু ছবি। আর সেজন্যেই শেষ হয় না কখনো।
  • aranya | 154.16.***.*** | ১৫ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:২৭585408
  • বি-কে ক।
  • aranya | 154.16.***.*** | ১৬ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:২২585409
  • মানিকের ক্লাসিক উপন্যাসগুলো - পুতুলনাচের ইতিকথা, পদ্মানদীর মাঝি ইঃ প্রথম পাঠে দূর্দান্ত লেগেছিল, হয়ত এখনও পড়লে যথেষ্টই ভাল লাগবে। কিন্তু বিভূতিভূষণ পড়লে একটা উত্তরণের অনুভূতি হয়, সেটা অন্য কোথাও তেমন পাই না।
  • কৃশানু | 213.147.***.*** | ১৬ জানুয়ারি ২০১৩ ০০:২৭585411
  • মানিকের অন্য রকম - চতুষ্কোণ। পড়া উচিত। প্রবল সমালোচনা হয়। এবং সেই সমালোচনার জবাব আবু সৈয়দ আয়ুব এর একটি লেখা। 'পথের শেষ কোথায়' বইটাতে মনে হয় ছিল।
  • | 233.229.***.*** | ১৯ জানুয়ারি ২০১৩ ১৯:০১585412
  • সত্যি বিভূতি পড়ার এই রকম একটা উপলব্ধি।

    মানিকের র নাতি TCS এ কাজ করতো। মুখের খানিক টা মিল আছে। আমি ওকে জিগিয়েছিলাম "তোমার লেখার কোন শখ নেই"? খানিক টা লাজুক হেসে বলেছিল না। ও রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের।

    আর শরদিন্দু ।কত ছোট ছোট আপাততুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে গল্প লেখা যায়। ভাবুন "চিড়িক্দাস"। সেই রোজ চা খেতে আসা কাঠবেড়ালী টি। তেমনি "আদিম"। সেই যুগে নাকি ভাই এর সাথে বোনের বিয়ে হওয়াই প্রথা ছিল। সেই গল্প টা পড়ে চমকে উঠতে হয়। আর ছোটদের নিয়ে গল্পগুলোঃ "ভল্লুসর্দার" বা নেতাইবাবু কে নিয়ে গল্প টার নাম কী যেন?

    ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস গুলো বারবার পড়েও পুরোনো হয় না।

    আর সদাশিব র গল্প গুলো। ইতিহাস আর গল্প কে এমন নিপুণ হাতে মিশিয়ে দেওয়া। সত্যি মিথ্যের ওপরে উঠে এক সুখপাঠ্য।
  • cb | 41.6.***.*** | ২০ জানুয়ারি ২০১৩ ০১:৫৮585413
  • শরদিন্দুর ঐতিহাসিক, নলেন গুড় বোঝেন ? সেইরকম অনেকটা :)

    এ দেশে এই একটাই বাংলা বই নিয়ে এসেছি, বড় আনন্দ দিয়েছে
  • | 233.238.***.*** | ২০ জানুয়ারি ২০১৩ ০৯:২৫585414
  • আমি অনেক দিন আগে নিয়ে গিয়েছিলাম।নিউইয়র্কে স্কুলের বন্ধু র বৌ ঝেঁপে দিল ঃ((
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.***.*** | ২০ জানুয়ারি ২০১৩ ১৯:১২585415
  • তিনজনকেই ভালো লাগে।
  • ~ | 147.157.***.*** | ২১ জানুয়ারি ২০১৩ ০৮:৩৯585416
  • কালিদাস রায় বিভূতিভূষণকে কি বলেছিলেন, সাগরময় ঘোষের 'হীরের নাকছাবি" দেখে কেউ যদি লিখে দেন সময় করে তো ভালো হয়। সবই বলা ছিল ...
  • | 214.13.***.*** | ২১ জানুয়ারি ২০১৩ ১০:৪৮585417
  • ~ আপনি লিখুন না। আমি পড়ি নি ও টা।
  • S | 138.23.***.*** | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ২০:৩৫585418
  • অনেককাল আগে পড়া হীরের নাকছাবি, হাতের কাছে বইটাও নেই, যেটুকু মনে আছে লিখছি -
    একদিন তারাশঙ্কর বিভূতিভূষণকে ডেকেছেন, এটা সেটা অনেক কথা বলার পর বললেন বুঝলে বিভুতি, দুনিয়া তো অনেক এগিয়ে গেল, বিশ্বযুদ্ধ হয়ে গেল আর তুমি এখনো কাশবন, ঘেঁটুফুল, চড়কের মাঠ ইত্যাদি নিয়ে পড়ে আছ। একটু বাইরের দুনিয়াটার দিকে তাকাও। তোমার লেখার মধ্যে তো এইসব কোনো ঘটনা নেই। তোমার মতন লেখক কি এই বদলে যাওয়া জগৎ নিয়ে কিছুই লিখবে না ? বিভূতিভূষন কিছু না বলে কালিদাস রায়ের কাছে এসে প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা দাদা, আমি বদলে যাওয়া দুনিয়ার গল্প লিখি না বলে কী আমার সাহিত্যের কোনো দাম নেই? কালিদাস রায় বললেন দেবী সরস্বতীকে তারাশঙ্কর যতই সোনার গয়না দিয়ে সাজাক, তুমি মায়ের নাকছাবিটিতে যে হীরেটি বসিয়েছ তার ঔজ্জ্বল্য কোনোদিন ম্লান হবে না। কারোর কথা শুনতে হবে না, তুমি তোমার মতন লিখে যাও।
  • | 132.167.***.*** | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ২০:৪৯585419
  • বাহ ভারী সুন্দর লিখেছেন S। সুন্দর উপমা টি দিয়েছেন।
  • ~/i | 147.157.***.*** | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০২:১৩585420
  • ঠিকই মনে আছে আপনার। ধন্যবাদ এস।
  • CHANDAN SARKAR | 76.54.***.*** | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ২০:১১585422
  • সকল বন্ধ্যোপাধ্যায়
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন