এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চুপসায়রের রূপকথা

    Binary
    অন্যান্য | ১৮ নভেম্বর ২০১০ | ৯৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Binary | 198.169.***.*** | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ২৩:৩০468270
  • বাইশতলা অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং-এর সামনে পাঁচ নম্বর রোড, অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং-এর সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাঁদিকে কুড়ি পা হাঁটলে, সাইডওয়াকের ধারে স্টীলের খুঁটির মাথা নীল রং-এর সাইনবোর্ড, 'বাস স্টেশন', নীচে নম্বর ১৩০৪। বাস দাঁড়ানোর জায়গাটুকু বাদ দিয়ে, আগে, পেছনে সারদিয়ে গাড়ী পার্ক করা। আসেপাসের বাড়ী গুলো কোনোটা সওদাগরি অফিশ, কোনোটা ব্যাংক, কোনোটা সেয়ার বাজারের দালালের অফিশ, একটা গ্রিল স্টেক রেস্টুর‌্যান্ট, একটা টিমহর্টন কফিশপ, একটা ম্যাকডোনাল্ড। সাইডওয়াক ধরে, কাজেরদিনে, স্যুটটাই পরা, কাঁধে বিজব্যাগ ঝোলানো, লম্বা-বেঁটে-মোটা-রোগা কাজের লোকেদের হনহনিয়ে চলাফেরা। এই মহল্লায়, ঐ বাইশতলা অ্যাপার্টমেন্টটাই একমাত্র রেসিডেন্সিয়াল। কাঁচের সদর দরজার বাইরে ডানপাশে নেমপ্লেটের পাশেপাশে ঘন্টির বোতাম আর উপরে সিকিউরিটি ক্যামেরা। কাঁচের দরজা পেরিয়ে লবিতে চারটে হাইব্যাক কালো চামড়ার সোফা, দেওয়ালের গায়ে দুটো কালো পালিশ করা কর্নার টেবিল। ছড়ানো ছেটানো কিছু ম্যাগাজিন, বই, টেলিফোন ডাইরেক্টারি, একটা ডাইন্যাক্স কোম্পানীর পুরোনো সিডি প্লেয়ার। মেঝের কার্পেটটা পুরোনো, জায়গায় জায়গায় লোম ওঠা, তবে পরিস্কার, কেয়ারটেকার ফাঁকিবাজ নয়। হলদেটে দেওয়ালে নাম-না-জানা আর্টিস্টের তিনফুট-বাই-চারফুট তেলরং-এর ছবি। ছবিতে চারপাঁচটা সাদা রেড ইন্ডিয়ান তাঁবু, যাকে বলে টিপি, বাচ্চা কোলে রেডইন্ডিয়ান মা, মাথায় পালকের টুপি পরা, কুড়াল কাঁধে রেডইন্ডিয়ান পুরুষ, তার চওড়া চোয়াল, চওড়া কাঁধ আর ভীষণ রাগী চোখ।

    এই অ্যাপার্টমেণ্ট বিল্ডিংটা মুলত: বয়স্ক বুড়োবুড়িদের থাকার জন্য। সদরের বাইরে, ছোট্টো পোর্টিকোতে কালো বর্ডার দেওয়া সাদা অ্যালুমিনিয়ামের বোর্ডে মাঝেমাঝে নোটিশ ঝোলে, 'অ্যাপার্টর্মেন্টস অ্যাভেলেবেল ফর রেন্ট', নীচে ছোটো করে লেখা, 'সিনিয়র সিটিজেন প্রেফার্ড, নো-পেট বিল্ডি'ং। তো, যারা এখানে থাকে, তাদের বয়স প্রায় সবার-ই সত্তরের কাছাকাছি। অনেকেরই আশির ঘরে, কারো বা নব্বই-ও পেরিয়েছে । এদেশে আবার, পঁয়ষট্টি নাহলে বুড়ো বলা চলে না। ঐ বয়স পর্জ্জন্ত সকলেই প্রায় পুরোদমে কর্মরত। ডাউনটাউনের এই রকম জায়াগায় বুড়োবুড়িদের থাকার প্রধান কারন হল, হাত বাড়ালেই সেভেন-ইলেভেন-উটিলিটি-কন্‌ভিনিয়েন্স স্টোর আর পা বাড়ালেই বাস স্টেশন। আর ফোন করলেই, প্রতিবন্ধী সার্ভিসের নীল ট্যাক্সি।

    নীচের লবিতে, সকাল সাড়েআট্টা-নটা-র পর থেকেই বুড়ো বুড়িদের গুলতানি। টাকমাথা, সোনালী চশমা, ধুসর টিসার্ট, ভুঁড়ির ওপরে কষে বেল্ট বাঁধা, গম্ভীর মুখ, যার নাম ডেনিস, যার মুখের কোঁচকানো চামড়া দেখে মনে হয়, বয়স আশি, তাকে প্রায় প্রতিদিন-ই কোনার সোফায় বসে থাকতে দেখা যায়, সকাল ন'টা থেকে দুপুরে লাঞ্চের আগে পর্জ্জন্ত। আরো দুজন বুড়োবুড়ি, হতেও পারে বরবউ, হতেও পারে সঙ্গি-সঙ্গিণী, তারাও আসে সকাল-সকাল, দুজনার হাতেই, চাকা লাগানো ওয়াকার, দুজনেই হাঁটে কষ্টেস্‌ষ্টে, পা ঘষেঘষে। এছাড়া, সর্বদা পানামা টুপি আর গলায় কম্ফর্টার জড়ানো, খাকি হাপপ্যান্ট আর ক্রিসড নেভি সার্টের ওপর কার্ডিগান পরা চিকন মুখের, খোনা গলায় অনর্গল স্থানীয় খবর আলোচনা করে চলা, রজার, সেও সত্তরের শেষ প্রান্তে। এরা সক্কলেই ভরসক্কালে লবিতে সোফা দখল করে থাকে, আর সদর দিয়ে আসা-যাওয়া করা চেনা-অচেনা সক্কলকে হেঁড়ে-পাতলা গলায়, 'মর্নিং', 'নাইস ওয়েদার - ইহ ?' বলে খোঁচা মেরে মেরে সময় কাটায়।

    টীমহর্টনে ভোরবেলার শিফট শেষ করে ১৩০৪ স্টপ থেকে সকাল সাড়ে নটার বাড়ী ফেরার বাস ধরে সুমনা। ইউনিভার্সিটি-র দুই আর তিন নম্বর গেট, কনফিডারেশন মল হয়ে শহরের দক্ষিণ প্রান্তে বাড়ীর সামনের স্টপে পৌঁছাতে সময় লাগে, পাক্কা, পঁয়তাল্লিশ মিনিট। ১৩০৪ নম্বর ট্যান্ডে-ই ডায়ানে-র সাথে আলাপ, সুমনার। ঐ বাইশতলা বাড়ীর বাসিন্দা ডায়ানে। ছিপছিপে লম্বা। রোগা-ই বলা যায়। কটাচুল, পাকা না কাঁচা বোঝার উপায় নেই, পেছনে টেনে, চুন্নি ঝুঁটি বাঁধা। রোগাটে গালে চর্বি নেই, বলি রেখাও বিশেষ নেই। তবে ডায়ানে নিজেই বলেছে ওর নাকি বয়স পঁচাশি। চোখে আই লাইনার। নকল ভুরু। কোনোদিন কালো ফ্রেঞ্চ কোটের সঙ্গে ম্যাচিং কালো ফর্মাল ট্রাউজার, পায়ে কালো হিল, ইটালিয়ান লেদার ব্যাগ। গরমে কোনোদিন কটন সিল্কের জংলা স্কার্টটপ। শীতকালে ওভারকোটের নীচে জর্জিয়া বুট, গলায় ম্যাচিং স্কার্ফ।

    ডায়ানে বলে, ও থাকে, কুড়ি তলায়। রোজ সকালে কুড়ি তলা নাকি হেঁটে-ই নীচে নামে । কুড়ি তলার অয়াপার্টমেন্টে একাই থাকে ডায়ানে। সাত বছর আগে ওর বর মারা গেছে। মারা যাওয়ার সময় বরের বয়স হয়েছিলো, বিরাশি। স্বাস্থ্য নাকি ভালই ছিলো তার। ডাকাবুকো ছিলো নাকি। মারা যাওয়ার আগের বছরেও নাকি হার্লে-ডেভিডশন চালিয়ে ক্যাম্পিং-এ গেছে ব্যানফ ন্যাশনাল পার্ক। ডায়ানের কথায়, 'হি উড নট ডাই, ইউ নো, গট নিউমোনিয়া ইন উইন্টার, .... ' । বরের কথা বলতে গেলে, খালি গলা ধরে আসে ডায়ানে-র, 'উই লিভড ফিফ্‌টি ইয়ার্স টুগেদার, ইউ নো ....'। ওরা আদতে জার্মান, বাংলায় হিসাব করলে কুড়ি বিঘে মত চাষের জমি ছিলো ওদের। ছেলেমেয়েরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওয়েস্টকোস্ট, ইস্টকোস্ট। বর মারা যাওয়ার পর জমি বিক্রি করে দিয়েছে, ডায়ানে। এখন এই ডাউনটাউনের এই আস্তানায়।

    রোজ সকালে সাড়ে নটার বাস ধরে ডায়ানে-ও, সুমনার সাথেই। নেমে যায় কনফিডারেশন মলে। মলের পাশের লুথারিয়ান চার্চে , রিফুজিদের ভাষা শিক্ষার ক্লাশে ভলেন্টারি সার্ভিস দেয় ও। আর মাঝে মাঝে মলের ফুড কোর্টে আড্ডায় বসে, আরো কিছু ওয়াকার, লাঠি হাতে বা কষ্টেস্‌ষ্টে হেঁটে আসা বন্ধু-বান্ধবির সাথে। মাঝে মাঝে কনফিডারেশন মলের ফুডকোর্টে-ও দুপুরের দিকে ডায়ানের সাথে দেখা হয়েছে সুমনার। ডায়ানে আলাপ করিয়ে দিয়েছে, ওর বন্ধুদের সাথে, বব, ট্রেভিস, আইরিন, ডোনা ....। সবার, পাত্‌লা চুল, নীল চোখ আর কোঁচকানো গালে অমলিন ঠাকুরদা-ঠাকুর্মার হাসি। সবার নিজেদের একলা অ্যাপার্টর্মেন্ট বা একলা বাড়ি। সবাই সিনিয়ার সিটিজেন ডিস্কাউন্টে পঁচাত্তর সেন্টে কফি খায় আর চার্চ থেকে আনা হ্যাম স্যান্ডুইচ।

    এই বসন্তের শেষদিকে, এক দুপুরে কনফিডারেশন মলেই বব-এর সাথে আলাপ করিয়ে দিলো ডায়ানে। ছোটখাটো নার্ভাস টাইপ। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। গালে দাড়ি, সাদা। বয়স ঐ ডায়ানের কাছাকাছি। বয়সের তুলনায় ভারী গলা আর হাত বাড়িয়ে 'হাউ আর ইউ, ইয়াং লেডি .....', বলার সময় সুমনা লক্ষ্য করে কঙ্কালসার হাতের কব্জিতে, রিস্টব্যান্ড। বব, স্টারফোনিক্সে নিউজ এডিটার ছিলো , এখন কখোনো-সখনো, ফ্রিলান্স করে। ডায়ানের মুখে গোলাপী হাসি। গালে কুড়ি বছুরে গোলাপী আভা। বব, ওর নতুন সঙ্গি, মানে যাকে বলে বয়ফ্রেন্ড। ওরা ঠিক করেছে, সামনের গ্রীষ্মে একসঙ্গে ওয়েস্টকোস্ট যাবে ডায়ানের ছেলেমেয়েদের কাছে, তারপর একসঙ্গে রকি পাহাড়ে হাইকিং-এ। বব-এর একটা পঁয়ষট্টি সালের ফোর্ড পিকাপট্রাক আছে, তাতেই যাবে ওরা ওয়েস্টকোস্ট পনেরোশো কিলোমিটার হাইওয়েতে। একটু ঘোর লাগা, অবিশ্বাসের মন নিয়ে বাড়ি ফেরে সুমনা। সত্যি সত্যি ওদের বয়স আশির ওপরে তো ? চোখের ওদের এখোনো এত সবল তো ? হাড়ে এত জোর ওরা কোথায় পায় ? আর মনে ? মনের বয়স কি বাড়ে না ওদের ? এর পরেও মাঝে মাঝে দেখা হয় ওদের সাথে। নদীর ধারে মিওয়াসিন ট্রেলে-এ হাত ধরাধরি করে হাঁটছে বুড়োবুড়ি। ডায়ানের হাল্কা পায়ে উড়ু উড়ু ছটফটানি। মুখে 'একা একা হয়ে না থাকার' স্বর্গীয় হাসি। ডায়ানে ঠাট্টা করে বলে, ওর বড় ছেলে নাকি বলেছে, 'গেট ম্যারেড মম, আই উইলবি দ্য বেস্ট ম্যান ......'।

    শীতের সুরুতে, বেশ কিছুদিন ডায়ানের সাথে আর যোগাযোগ নেই সুমনার। আসলে সুমনার ভোরবেলার শিফ্‌ট পরিবর্তন হয়ে গেছে সন্ধে বেলায়। তারপর, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এক বুধবারের দুপুরে কন্‌ফিডারেশন মলের ফুডকোর্টে ডায়ানের সাথে দেখা হয় সুমনার। ডায়ানের সাথে ডোনা। ওরা পঁচাত্তর সেন্টের ফ্রেঞ্চ-ভ্যানিলা কফি নিয়ে বসে আছে। একথা-সেকথার পর বব-এর কুশল জিজ্ঞাসা করে সুমনা। একটু চুপ থেকে গভীর বিষাদ ভরা চোখে ডায়ানে বলে, 'হি কুড নট সার্ভাইব দিস উইন্টার, ইউ নো, গ্‌ট নিউমোনিয়া, পাস্‌ড অ্যাওয়ে লেট নভেম্বর .....'।

    সেদিন বাড়ী ফিরে ঘরের হিটিং-টা একটু বেশী করে দিয়ে অনেক্ষন চুপ করে সোফায় বসে থাকে সুমনা। কিরকম খালি খালি লাগে ওর নিজের-ই। আবার সেই, কুড়ি তলা অ্যাপাট্‌র্মেন্ট বিল্ডি-ংএর সিঁড়ি দিয়ে নেমে ১৩০৪ বাসস্টেশনে যাবে ডায়ানে। রোজ। একদম একা একা।

    "চলো একসাথে, খুঁজে আনি গিয়ে, ছোট্টবেলার আদর্শলিপি, বর্নমালার বই ........"
  • nirab | 128.2.***.*** | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ২৩:৫১468278
  • শীতের শুরুতে জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায় এই লেখাটি অপুর্ব লাগল। বড়ো বিষণ্ন, মনখারাপ করা এই গোধূলীবেলা।
  • ranjan roy | 122.168.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ০০:১২468279
  • এইনিয়ে আমি বোধহয় তিনটি লেখা পড়েছি বাইনারির।সমস্ত লেখাতেই ফুটে ওঠে গোধূলির রঙ।
    আমি জানি এইরকম লেখা রোজ রোজ টুথপেস্টের মতন লেখা যায় না।
    তবু চাইব আপনি আরো ঘন ঘন লিখুন। আপনার লেখায় ফুটে ওঠে মানবজীবনের অসম্পূর্ণতা, পূর্ণতা প্রাপ্তির প্রয়াস আর আধুনিক জীবনের গ্রীক ট্র্যাজেডি।
  • Samik | 122.162.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ০৮:২৮468280
  • একঘর। শুধু এইসবের জন্য আমি গুরুতে আসি বারবার।
  • d | 14.96.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১০:৫০468281
  • ওহ! বাইনারি কত্তদিন পর!!
  • Manish | 59.9.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১১:৪৬468282
  • সুন্দর পরিচ্ছন্য লখা।
  • um | 115.113.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১৫:৪০468283
  • অসাধারন!
  • de | 59.163.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১৬:১৯468284
  • বাইনারি! কত্তদিন পর লেখা পড়লাম, মনটা ভারী হয়ে গ্যালো!
  • Bratin | 122.248.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১৬:৫৬468285
  • মন খারাপ করে দেওয়া লেখা.....
  • shrabani | 124.3.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১০ ১৭:৩৩468271
  • বাইনারী অনেককাল পর.......। এই শীতের কথাটা এদেশেও খুব শুনি, হয়ত যেখানে শীত বেশী সেখানেই শোনা যায়....
  • Shibanshu | 59.93.***.*** | ২০ নভেম্বর ২০১০ ১৩:৩৮468272
  • কুয়াশা এভাবে নামে
    প্রণয়ের ঘরে
    তারও তো ঘর চাই
    উষ্ণ জ্বালানি আর
    জানালার বাইরে তপ্ত রোদ

    আমরা কুয়াশাকে জানি
    জানি তার বিবর্ণ বিষাদ
    তাকে চলে যেতে বলি
    বার বার
    আমাদের উঠোন পেরিয়ে

    তবু সে ফিরেই আসে
    আমাদের ঘরে
    তারও তো ফিরে যেতে
    চাই কোনও
    ভাঙা কুঞ্জবন

    এর পর একদিন
    আমাদেরও নিয়ে যাবে
    দেখো....
  • de | 59.163.***.*** | ২২ নভেম্বর ২০১০ ১০:৪৩468273
  • বা:! শিবাংশুদা!
  • M | 59.93.***.*** | ২৩ নভেম্বর ২০১০ ০৯:৪৫468274
  • মন ছুঁয়ে যাওয়া!!!!! বাইনারী আর শিবাংশুদা............. দুজনের ক্ষেত্রেই...............
  • np | 128.2.***.*** | ৩০ নভেম্বর ২০১০ ২২:৩৯468275
  • কোন কোন সকাল এতো বিষন্ন হতে পারে, এদেশে না এলে নীপা বুঝতে পারত না। সেপ্টেম্বরের শুরুতে শীত এসে গেছে তার হিমেল হাওয়াকে সঙ্গী করে। গাছের পাতাগুলো রঙ বদলাচ্ছে দ্রুত। কেউ হলুদ, কেউ লাল, কেউ বা কমলা রঙে মুড়ে নিয়েছে নিজেকে। রঙ শুকিয়ে শীর্ণ বিবর্ণ হয়ে যাবার আগে এক প্রস্থ রুজ লিপস্টিক মেখে রুপসী সাজার অক্লান্ত চেষ্টা। হু হু করে বাতাস বয়ে যায়। ঝরে পড়ে শিথিল পাতা। পাতাহীন গাছগুলিকে বড় অসহায়, একাকি লাগে। ধুসর মেঘে ঢেকে থাকে চরাচর।

    যখন সুসময় ছিল, তখন এই বিষন্ন শীতকাল দেখার ফুসরত ছিল কই। পড়াশুনা, আড্ডা,বন্ধুবান্ধব আর সে। সময় যে কি করে কেটে যেত। প্রতীক্ষা ছিল কাছকাছি আশার। না সেই শুভ মুহুর্ত আর আসেনি নীপার কাছে। প্রতীক্ষার অবসরে সে যে কখন দুরে সরে গেছে, বিন্দুমাত্র বুঝতে পারেনি, বা বোঝার মতো মানসিকতা ছিল না তার সেই সময়। বিশ্বাসের বাঁধন কেটে পালিয়ে গেছে অচিন পাখি।

    নীপা বাঁচতে চায় নতুন করে। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসটা খুঁজে পায়না কিছুতে।
  • Manish | 59.9.***.*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১০ ০৯:৪৬468276
  • বা: বা: , নয়া পয়সা চালিয়ে যান।
  • hu | 22.34.***.*** | ২৪ মে ২০১২ ০২:০৩468277
  • কি সুন্দর লেখা! মন খারাপ হওয়ারই কথা। কিন্তু ভালোও লাগল। মৃত্যু নয়, জীবনেরই গল্প।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন